মনসা মঙ্গল কাব্য….. জয় জয় মা মনসা মা মনসার পূজা (ধর্মীয় কবিতা) প্রথম পরিচ্ছেদ

মনসা মঙ্গল কাব্য….. জয় জয় মা মনসা
মা মনসার পূজা (ধর্মীয় কবিতা)

কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

মনসার এক সঙ্গিনী নেতার পরামর্শে মনসা মর্ত্যে নেমে আসেন মানব ভক্ত সংগ্রহের উদ্দেশ্যে। প্রথম দিকে মানুষ তাকে উপহাস করত। কিন্তু যারা মনসার ক্ষমতা অস্বীকার করল, তাদের জীবন দুর্বিসহ করে তুলে মনসা তাদের বাধ্য করলেন তার পূজা করতে। মুসলমান শাসক হাসানের মতো বিভিন্ন জাতির মানুষকে মনসা তার ভক্ত করে তুললেন। কিন্তু চাঁদ সদাগর তার পূজা করলেন না। মনসা লক্ষ্মী ও সরস্বতীর মতো একজন দেবী হতে চাইছিলেন। তাতে সফল হওয়ার জন্য চাঁদ সদাগরের হাতে পূজাগ্রহণ তার কাছে বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু চাঁদ সঙ্কল্প করেছিলেন, তিনি মনসার পূজা করবেন না। মনসা চাঁদকে ভয় দেখানোর জন্য একে একে চাঁদের ছয় পুত্রকে হত্যা করলেন। শেষে মনসা ইন্দ্রের রাজসভার দুই নর্তক-নর্তকীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। এঁদের নাম ছিল অনিরুদ্ধ ও ঊষা। অনিরুদ্ধ চাঁদ ও তার স্ত্রী সনকার সপ্তম পুত্র রূপে জন্মগ্রহণ করলেন। তার নাম হল লখিন্দর। ঊষা বেহুলা নামে জন্মগ্রহণ করলেন। লখিন্দর ও বেহুলার বিবাহ হল। মনসা লখিন্দরকে হত্যা করলেন। কিন্তু বেহুলা স্বামীর মৃতদেহ নিয়ে নদীতে ভেসে চললেন। শেষে তিনি চাঁদের সাত পুত্রের প্রাণ ও হারানো সম্পদ পুনরুদ্ধার করার উপায় জেনে ফিরে এলেন। চাঁদ মনসার দিকে না তাকিয়েই বাঁ হাতে তার দিকে ফুল ছুঁড়ে দিলেন। মনসা এতেই খুশি হলেন। তিনি চাঁদের পুত্রদের জীবন ফিরিয়ে দিলেন এবং তার হারানো সম্পদও ফিরিয়ে দিলেন। মঙ্গলকাব্যে রয়েছে, এরপর মনসার জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পেল।

(প্রথম পরিচ্ছেদ)

আজি মনসার পূজা পূণ্য শুভক্ষণ,
সকলেরে মা মনসা দেন দরশন।
জয় জয় মা মনসা, বিষহরি জয়,
যেবা পূজা করে তব, কাটে সর্পভয়।

চাঁদ সদাগর করে পূজা মনসার,
সেইহতে পূজা মর্ত্যে হইল প্রচার।
লখীন্দর বেহুলার বাসর ঘরেতে।
প্রবেশিল কালীনাগ ক্ষুদ্র ছিদ্রপথে।

চাঁদ কভু মনসার পূজা নাহি করে,
সর্প দংশনে পুত্র মরে বাসর ঘরে।
জয় জয় মা মনসা প্রণমি তোমায়,
তব কৃপাবলে চাঁদ পুত্র ফিরে পায়।

বাম হস্তে পূজে চাঁদ মা মনসাকে,
পূজার প্রচার তাই হল মর্ত্যলোকে।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

3 thoughts on “মনসা মঙ্গল কাব্য….. জয় জয় মা মনসা মা মনসার পূজা (ধর্মীয় কবিতা) প্রথম পরিচ্ছেদ

  1. আপনি অনেক ধর্মীয় লেখা লিখেন দাদা । সাদা মনের মানুষ। 

     

  2. কবিতায় আপনাকে ধন্যবাদ প্রিয় কবি মি. লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।