শরতের আগমনী ……. সোনাঝরা রোদ নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা এসেছে শরৎ (অষ্টম পর্ব)

শরতের আগমনী ……. সোনাঝরা রোদ
নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা
এসেছে শরৎ (অষ্টম পর্ব)

সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে, শুভ্র কাশের আঁচল উড়িয়ে, কণ্ঠে শিউলি ফুলের মালা দুলিয়ে শরৎ আসে প্রকৃতি জুড়ে। মাঠে সবুজ ধান ক্ষেতের নয়নাভিরাম দৃশ্য, ধানের শীষে আগামী দিনের ফসলের বারতা। শরতের শান্ত ও স্নিগ্ধ রূপ মনে এনে দেয় এক প্রশান্তির পরশ। দিনের উজ্জ্বল রোদ্দুরের ঝিকিমিকি আর রাতের ধবল জ্যোৎস্নাস্নাত রূপ মনোহরা।

ফুলের মধ্যে শিউলিকে নিয়ে পৌরাণিক উপাখ্যান আছে, যে বেদনা বয়ে বেড়ায় শিউলি। একবার এক রাজকন্যা প্রভায় মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়ে সূর্যের। সূর্য প্রত্যাখ্যান করে মর্তবাসিনীর হৃদয়ের আবেগ। বঞ্চনায় আত্মহনন করে অভিমানী রাজকন্যা। তার চিতাভষ্ম থেকে জন্ম নেয় এক বৃক্ষ। দিনে দিনে বৃক্ষটি বেড়ে ওঠে। শিশিরভেজা এক মৌসুমে বৃক্ষের শাখা-প্রশাখায় ফুটল মিষ্টি সৌরভ ছড়ানো শুভ্র ফুলের রাশি। তবে ফুলগুলো ফুটল রাতের নিভৃতে। ঝরে পড়ল দিনের আলো ফোটার আগেই। যেন সূর্যের আলো তাকে স্পর্শ করতে না পারে। নিশুতি রাতের এ ফুলই শিউলি শেফালি নামেও পরিচিত।

নিশির শিশিরভেজা ফুলগুলো ঝরে পড়ে সূর্যোদয়ের আগেই। গাছতলা ভরে ওঠে স্নিগ্ধ ফুলের সমারোহে। ভোরে ঘুম থেকে জেগে শিউলি কুড়াতে যাওয়ার উৎসাহ আনন্দ চিরকালের। আজও প্রবীণ ও মধ্যবয়সীদের অনেককে স্মৃতির পাতা মেলে ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেই ফুল কুড়ানোর ছোট্টবেলায়। কুলা-ডালায় শিউলি ফুল নিয়ে আজও মালা গাঁথতে বসে অনেকে।

বাংলা কবিতার আসরের সকল শ্রদ্ধেয় কবিগণকে জানাই শারদ-শুভেচ্ছা। বাংলা কবিতা-আসরের জয় হোক, বাংলা কবিতার জয় হোক, কবিদের জয় হোক। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!

নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা
এসেছে শরৎ (অষ্টম পর্ব)

শারদ প্রভাতে আজি কমল ফুটিল,
মধু লোভে অলিদল আসিয়া জুটিল।
পাখি সব গীত গায় সুমধুর সুরে,
আগমনী গান ভাসে দূর হতে দূরে।

সকালের সোনা রোদ নদীজলে ঝরে,
ধারে ধারে কাশ ফুল অজয়ের চরে।
নদী তীর সুশীতল পাখি গীত গায়,
সাদাপাল তুলে মাঝি তরী বেয়ে যায়।

দিঘি জলে সাঁতরায় মরালের দল,
মরালীর পাছে ধায় করে কোলাহল।
ফুল বনে ফুল ফুটে সৌরভ ছড়ায়।
রাঙাপথে গরুগাড়ি দ্রুতবেগে ধায়।

শিশিরের বিন্দু ঝরে ঘাসের আগায়,
শরতের রং লাগে স্নিগ্ধ হাওয়ায়।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

1 thought on “শরতের আগমনী ……. সোনাঝরা রোদ নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা এসেছে শরৎ (অষ্টম পর্ব)

  1. "ফুল বনে ফুল ফুটে সৌরভ ছড়ায়। রাঙাপথে গরুগাড়ি দ্রুতবেগে ধায়।
    শিশিরের বিন্দু ঝরে ঘাসের আগায়, শরতের রং লাগে স্নিগ্ধ হাওয়ায়।" https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।