সন্তানের বন্ধুটি কেমন কৌশলে জেনে নিন

বাবা-মায়ের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পত্তি তাদের সন্তান। সন্তানের কল্যাণের জন্য নিজের জীবন তুচ্ছজ্ঞান করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেন না তারা। তাই তো
সন্তানদের নিয়ে বাবা মায়েদের চিন্তার কোনও শেষ নাই।

আর যদি সন্তান হয় টিনএজার তাহলে তো কোনও কথায় নেই। বয়ঃসন্ধিকাল শৈশব ও কৈশোরের মধ্যবর্তী একটি মানসিক ও সামাজিক ক্রান্তিকাল।

এসময় কিশোর-কিশোরীরা শরীরের ভেতরকার পরিবর্তনকে একটু একটু করে উপলব্ধি করতে শেখে। নিজের মধ্যে বাস করা আরও একটি সত্তার অস্তিত্ব আবিষ্কার করে।আর এই সময়টাতেই বড় ধরণের ভুলগুলো করে থাকে ছেলে-মেয়েরা।

কখনও তারা না বুঝে নিজের অগোচরে ভুল করে, আবার কিছু ভুল করে বন্ধুদের সংস্পর্শে এসে। তাই এসময়টা বাবা-মাকে খুব সাবধান থাকতে হয়।

এসময় সন্তানের ভুলগুলো শুধরে দেয়ার পাশাপাশি তাদের পারিপার্শিক পরিবেশ বা বন্ধদের সম্পর্কে জানতে হবে। পরখ করতে হবে সারা দিন আপনার সন্তান যে বন্ধুটির সঙ্গে মিশছে সে আসলে কেমন? জনেন তো ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ’, তাই আপনার সন্তানের বন্ধুটি কেমন তা কৌশলে অবশ্যই জেনে নিন।

এখন কথা হলো, কীভাবে জানবেন আপনার সন্তানের বন্ধুটি আসলে কেমন? কীভাবে বুঝবেন আপনার সন্তানের বন্ধুটি আপনার সন্তানের উপযুক্ত কিনা?

এ নিয়ে এতো চিন্তার কিছু নেই, বিশেষজ্ঞরা সন্তানের বন্ধুকে পরখ করতে কিছু উপায় বাতলে দিয়েছেন নিম্নে তা আলোচনা করা হলো:

* আপনার সন্তান যদি ভাইবোনের সঙ্গে হাসি মুখে খেলা করে বা তার সব কথা শেয়ার করে, তাহলে আপনার সন্তান ভাল বন্ধুদের সংস্পশেই আছে। সন্তানের এ রকম আচরণে বুঝবেন সে তার বন্ধুদের কাছে ভালো কিছু শিখছে।

* একজন ভাল বন্ধু কখনই আপনার পরিবার নিয়ে নেতিবাচক কথা বলবে না। সন্তানের মতো তার বন্ধুটিও আপনার পরিবার সংস্কৃতি, বিধি, প্রত্যাশাকে আপন করে নেবে। একজন ভাল বন্ধু এমন কোনও কাজ করবে না যা আপনার পরিবারের ঐতিহ্যকে কটাক্ষ করে।

* ভালো বন্ধু পরিবারের বিপদে বা যেকোনও সম্যসায় আপনার সন্তানের পাশে থাকবে। আপনার সন্তানের বিপদে বন্ধুটিকে যদি পাশে পান, তবে বুঝে নেবেন সে ভালো বন্ধুর সঙ্গেই রয়েছে।

* ভাল বন্ধু কখনই আপনার সন্তানের সাফল্যে হিংসা করবে না। বরং তার সাফল্যে সেও খুশি হবে।

* হঠাৎ করে যদি আপনার সন্তান খুব বেশী মিথ্যা কথা বলা শুরু করে তখনি বুঝে নেবেন সে খারাপ সঙ্গী বা বন্ধুর পাল্লায় পড়েছে। এসময় তাকে বুঝিয়ে কার সঙ্গে মিশছে জেনে নিন। কারণ শুরুতেই সাবধান হতে হবে। পরে সন্তান খারাপ সঙ্গে মিশে গেলে তাকে ফেরানো কষ্ট হবে।

* আপনার সন্তান হঠাৎ জেদি হয়ে গেছে। সে আপনার কথা শুনছে না। আপনি না বলার পরও একই কাজ বার বার করছে? তবে বুঝে নেবেন সে এই কাজগুলো অন্য কারোর কাছ থেকে শুনে বা দেখে করছে।

* যদি আপনি বুঝে যান সন্তানের বন্ধুটি খারাপ, তবে তাকে তা বুঝিয়ে বলুন। কখনোই তাকে বন্ধু ছাড়াতে বাধ্য করবেন না। এতে ভাল হওয়ার চেয়ে খারাপ হওয়ার আশংকাই বেশী থাকে।

সন্তানকে সবার সঙ্গে মেশার স্বাধীনতা দিন। তাকে পছন্দ মতো বন্ধু বেছে নেয়ার সুযোগ দিন। শুধু আপনি সাবধান থাকুন! কৌশলে তার পছন্দের বন্ধুটিকে চিনে নিন।

আপনার যতো ব্যস্ততাই থাক না কেন? সন্তানের কথা ভেবে এতোটুকু পরিশ্রম তো করতেই পারেন, কারণ সন্তানটি আপনার খারাপ সঙ্গে পড়ে গেলে আপনারই ক্ষতি।
সূত্রঃ যুগান্তর

10 thoughts on “সন্তানের বন্ধুটি কেমন কৌশলে জেনে নিন

  1. আজকাল আমরা সবাই যান্ত্রিক হয়ে পড়েছি। একাধিক সন্তানদের প্রতি সুখেয়াল দেয়ার মতো সময় আমাদের অনেক অভিভাবকদের নেই। সময়াভাবে অসহায় হয়ে পড়েন। ঘরে যদি শিশু কিশোরদের সময় আনন্দে কাটে তাহলে তো আজকালকের জামানায় খুবই ভালো। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ প্রিয় বন্ধু। আমরা সবাই যেন ভালো থাকি। :)

    1. মা বাবা সবাই face book, Zeebangla, Star TV এবং নানা অপকর্মে বেশী সময় দিচ্ছে, তারপরে আবার যাতায়াতে চলে যায় দিনের একটা বিড়াট অংশ কাজেই সন্তানের দিকে নজর দেয়ার সময় কোথায়?

  2. ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে সন্তানের প্রতি পিতামাতার সঠিক দৃষ্টি এড়িয়ে চলা চলবে না।

  3. সন্তানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকা প্রয়োজন । সে যেনো একটা সিগারেট খেলেও মা বাবা বোঝেন যে সিগারেট খেয়েছে । সেও যেনো নির্ভয়ে বলতে পারে । এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছেলেমেয়েকে বোঝা যায় আবার তার বন্ধুবান্ধবকেও বোঝা যায়  কেনোনা সে মাবাবার সাথে ফ্রেন্ডলি হলে বন্ধুদের কথাও সে অবলীলায় বলবে । যে কোনো ব্যথা বেদনার আশ্রয়স্থল মা বাবা । সে কষ্ট পেলেও মাবাবার সাথে শেয়ার করবে আনন্দ ও শেয়ার করবে । এভাবে সন্তানকে টেককেয়ার করলে সন্তান বিপথে যাবে না । গেলেও ফিরে আসবে মাবাবার মায়ায় । 

    ভালো থাকুক সবার সন্তান । 

    খালিদ ভাই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট । শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ০০

  4. সন্তানের সাথে পিতামাতার সম্পর্ক যেন বন্ধুত্বের হয়। আমার মেয়ে আমার বন্ধু। :)

  5. বাবা মা সন্তানদের বন্ধু হতে পারলে; ভাই বোনেরা একে অপরের বন্ধু হতে পারলে অনেক আশংকাই কমে যায়। এজন্য বাবা মাকে সন্তানদের নানান বয়সের নানান সময়ের সম্ভাব্য ক্রাইসিসগুলি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে; পাশে থাকার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। 

    খুব দামি পোস্ট খালিদ ভাই।

    1. মিষ্টি ভাই, মা বাবাও এক সময় তার সন্তানের বয়স পার করে এসেছে কাজেই তাদেরতো কিছু অজানা থাকার কথা নয়।

      ধন্যবাদ Mr. Sweet man!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।