মধ্যরাতে ভয়ে ভয়ে চোখ তুলে দেখি,
অসংখ্য প্রিজম ফুটে আছে পুনর্ভবা নদীপারে
আর ঠিক ডাঙায়, জলের সমতলে,
হাওয়ায় হাওয়ায় করতালি-
অবিশ্রাম বর্ষণের মধ্য দিয়ে
তুখোড় তরুণ আলোকের অধ্যাপনা ভেসে যায়।
ধীরে ধীরে বিবর্তিত হতে থাকে রং
এত রং, এত আলোবিচ্ছুরণ,
লোভাক্রান- ক্ষুদ্র মৎস্য আমি, তাই দেখে
সমস্ত স্মারক ভেঙে ভেঙে
ঘেষটে ঘেষটে উঠে এসেছি ডাঙায়।
জলের বিপুল ভরকন্দ্রে আলোড়ন ওঠে
সহস্র বছর ধরে জাল আর উত্তেজিত লেজের বিক্রিয়া
আঁশটে, কানকোয় বারংবার ঘর্ষবিদ্যুৎ জ্বলে উঠবার কাল
বিস্মরণ, অসম্ভব সাদা বিম্মরণ
জ্বলে শুধু গোলার্ধে গোলার্ধে !
ডাঙায় প্রথমে খসে গেল বাঁকা লেজের অহং
ধীরে ধীরে গুল্মীভূত হলো দেহ
কামারশালার গনগনে কান-লোহা,
আগুনের ফুল আর ফুলকার অক্সিজেনে সখ্য হলো
আবহে আগুন লাগল
প্রেক্ষিতে প্লাবন।
সহসাই,
ভূমিগর্ভে কক্ষে কক্ষে ছটফট চৌকাঠ ভাঙার শব্দ
পিতা তার দুই বোবা কন্যা নিয়ে মার্চের দুপুর চিরে
সাঁই-সাঁই সোজা শুদ্রপাড়ার টিনের চাল ছুঁয়ে উড়ে যায়
মুহূর্তের মধ্যে ঝলসানো হবে লাস্যময়ী তরুণীর ঝাঁক
কঙ্কালের লোভে বসে বসে ওই ঝিমাচ্ছে
পৃথিবীর নিঃস্ব প্রাণিবিজ্ঞান।
দূরে উঁচু-নিচু উপত্যকা, খুব অস্পষ্ট গৃহগামী মানুষের রেখা
পাঠাগার থেকে চোখ মুছে ফেরে ব্যাধ
ধাতুবিষে বেঁকে বেঁকে ওঠে মুদ্রা
এলোমেলো এলোমেলো হন্যমান নীল উড়োহাঁসের চিৎকার
আজ কি ত্র্যহস্পর্শ?
এত ঝুঁকে ঝুঁকে হাঁটছে কেন চাঁদ ত্রিশূলবিদ্ধ?
শজারুরা ধাবমান হলো দু্রত
উচ্ছ্রিত কাঁটায় কাঁটায় আটকে থাকল
দীর্ঘ লাল তোয়ালের উচ্ছ্বাস।
নাকি পুনর্ভব হবো ওই পুনর্ভবা জলে?
কবিঃ মাসুদ খান ( জন্মঃ জয়পুরহাট ২৯/৫/১৯৫৯ )
প্রিয়বরেষু শামান সাত্ত্বিক কবি লেখক মাসুদ খান এর লিখা পড়বার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন জন্য কবি’র ত্রিজ কবিতাটি শেয়ার করলাম। আগামীতে কবি মাসুদ খান নিয়ে পোস্ট দেবার ইচ্ছে রইলো। ধন্যবাদ সবাইকে।