চতুর্দশ প্রজন্ম

চতুর্দশ প্রজন্ম

মার্চের এক বিকেলে আপনি হারিকিরির উপত্যকায় বসে ভাবলেন – এই অচূর্ণ বিয়োগ ব্যথায় উপশমের মলম লাগালেও ব্যথা যাবে না। অতএব হে ভগিনী এবং ভাই সকল আসুন পতাকা তলে সমবেত হই – কাঁচা মাংস ভক্ষণ করে সংহতি প্রকাশ করি। পাখির ডানায় লুকিয়ে রাখি নারী পতিতাদের। পুরুষ সকল তাদের চতুর্থ স্তন নিয়ে বন্দনা করুক ‘আরো বন্দনা করুক পৃথিবীর বাসে চড়ে যে নারী ইজ্জত হারায় তার নিতম্বের’। যে খোলা কমলা ফেরিওয়ালার কাঁধে চড়ে পৃথিবীর ওজন মণ্ডলে ভাসছে তারা আজ বলুক – নারী পুরুষ মিলিত হয়ে জন্ম নেবে নতুন এলিয়েন – ওরা আমাদের চতুর্দশ প্রজন্ম — —
**

রিও

রিওয়ান রাওয়ান থেকে একদম ছোট শব্দ রন হলে রাওয়ান বলেন – সবচাইতে ভালো হয় আমাকে রিও বলে ডাকলে। আসলে সে একজন বিজ্ঞ রিকসাওয়ালা। প্রতিদিন হাঁটে – অথবা রিকসায় যায় অথবা দৌড়ায় অথবা লনের সামনে হাঁটে। হাঁটার সাথে সাথে তার চেহারা বদলে যায় একদম তেল চর্বির সাথে একাকার –
একটা মার্সিডিজ হলে বেশ মানাতো। এটা সে প্রায়ই ভাবে যদিও রিকসাটা তার তিন চাকার এবং অবহেলার জন্য তার স্ত্রী আর নাতিপুতি মানান সই। কিনতু সাথে দিয়ে যখন যায় একটা ডালপালায় ঘেরা শতবর্ষী বট গাছ তখন সে একটু আকা বাঁকা হয়ে দেখে। এখানের পুকুরটা বেশ দেখতে সে ভাবে আর বলে আসলে সে বলে না ভেতর থেকে তাকে নবী ডাকে – এটা সে ভাবে অথচ তাকে কেউ ডাকে না। ডাকটা কি আকস্মিক নাকি সজনে ডাঁটার মত শুধু সিজনাল ?

12 thoughts on “চতুর্দশ প্রজন্ম

  1. ভীষণ কঠিন একটি লিখা। একবার পড়লাম। পরে আবার আসবো। 

    1. চতুর্দশ প্রজন্ম আবার পড়লাম। এখানে বাস্তবতা চিত্রিত হয়েছে।
      আমার অচেনা নয়। গুড জব আপা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Confused.gif.gif

      1. ধন্যবাদ মুরুব্বী । কৃতজ্ঞ এতো কষ্টের জন্য । শুভকামনা জানবেন । 

  2. গদ্য কবিতার এই ধারাটি আমার কাছে ভীষণ পছন্দ দিদি ভাই। মুগ্ধ। 

  3. বার কয়েক পড়তে হবে। কমেন্ট করলাম না আপু। বুঝে করবো।    

  4. অতোশত বুঝিনা, গদ্য কবিতার বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছেন কবি নাজমুন নাহার। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

  5. অনুমানে বুঝতে চাই না নাহার আপু। কবিতার নামের গুঢ়ার্থ ছুঁয়ে গেলে চলবে না। সরল কথায় সারকথা জানতে চাই। :) 

  6. এক

    কবিতা দুটো পড়ে যারপরনাই মুগ্ধ হয়েছি। “চতুর্দশ প্রজন্ম”এ যে ছবিটা এঁকেছেন তার একাংশ আমি চোখে ভাসিয়ে অপার সুখ পেয়েছি এবং অপর অংশে বিষন্ন হয়েছি।

    প্রায় ওরকম কিছুর স্বাদ আফ্রিকার অতি আদি এক জনগোষ্ঠীতে পেয়েছিলাম। কাঁচা মাংস, জঙ্গলে অথবা উপত্যকায় বসে জলের বদলে রক্তপান ওসবের উপস্থিতি ছিল। ওরা আদি হলেও এখনকার সভ্য মানুষের মতো অসভ্য নয়! ওরা পরিচ্ছদবিহীন হলেও নগ্ন নয়! চতুর্থ স্তন অথবা সভ্য মানুষের মতো “পৃথিবীর বাসে চড়ে” নিতম্বের সম্মান কেড়ে নেয়না!

    বিদ্রুপ যে প্রতিবাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মাধ্যম এই কবিতা তার বড় সাক্ষী। অপার মুগ্ধতা রাখলাম কবিতার ভাব ও ভাষ্যে!  

     

    দুই

    কবিতা যদি ভাবের শিল্প হয় “রিও” তার পারফেক্ট উদাহরণ। শব্দে শব্দে ব্যঞ্জনা, বাক্যে বাক্যে বহুস্বর। অসাধারণ সব ভাবনার সমারোহঃ এই হাঁটে, এই দৌঁড়ায়, এই রিক্সায় যায়, এই মনে হয় মার্সিডিজে তাকে বেশি মানায়!

    এখানের পুকুরটা বেশ দেখতে সে ভাবে আর বলে আসলে সে বলে না ভেতর থেকে তাকে নবী ডাকে – এটা সে ভাবে অথচ তাকে কেউ ডাকে না। ডাকটা কি আকস্মিক নাকি সজনে ডাঁটার মত শুধু সিজনাল ?” —-কী অসাধারণ এক ভাবনার জগত বানিয়েছেন! খুব করে যদি চিন্তা করি, মনোজগতটা এমনি; নির্দিষ্ট ফ্রেমে ফেলা যায়না।

    সুগভীর ভাব কাব্যদ্বয়ে ভীষণ মুগ্ধ !

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।