ছোটবেলার পড়া– এক-এ চন্দ্র, দু’য়ে–পক্ষ

ছোটবেলার পড়া– এক-এ চন্দ্র, দু’য়ে–পক্ষ

১। একে চন্দ্র—একটি চাঁদ, রাতের আকাশের চাঁদ।
সূর্যও একটি, সূর্যকে কেন দিয়েছে বাদ?
চাঁদ জ্ঞানময় তাই হয়েছে চাঁদ!
চাঁদ দেখায়ে মেটায় শিশুর মনের স্বাদ,
মা বলে আকাশে ঐ দেখা যায় চাঁদ।

২। দু’য়ে পক্ষ – কৃষ্ণপক্ষ, শুক্লপক্ষ, পক্ষ নিরপেক্ষ।
আমাবস্যা আর পূর্ণিমা, চাঁদের এই দুই পক্ষ।
অনেকেই হয়েছে এর পক্ষ বিপক্ষ।
যে বুঝেছে সে হয়েছে জ্ঞানীবান দক্ষ
যার জ্ঞান নেই, তার নেই পক্ষ বিপক্ষ।

৩। তিন-এ নেত্র–ত্রিনয়ন,, দেবতাদের তিন চোখ।
দেখা যায় দুর্গা, কালী, মহাদেবের তিন চোখ।
এই হলো ত্রিনয়ন, তিন চোখ।
প্রতিটি মানুষেরও থাকে তিন চোখ, জ্ঞানও এক চোখ।

৪। চার–এ বেদ– হিন্দু ধর্মের ধর্মগ্রন্থ বেদ।
রয়েছে চার ভাগে বিভক্ত বেদ।
ঋক্‌, সাম, যজুঃ ও অথর্ব মিলে চতুর্বেদ।
চারটি ধর্মগ্রন্থ, এর মূলে রয়েছে বেদ।

৫। পাঁচ-এ পঞ্চবাণ–মদনদেবের পুষ্পধনুর পাঁচটি বাণ।
সম্মোহন, উন্মাদন, শোষণ, তাপন ও স্তম্ভন।
যে বুঝেছে সে হয়েছে মহাজ্ঞানী শক্তিমান।
কামের অধিষ্ঠাতা দেবতা, পঞ্চশর বা পঞ্চবাণ।

৬। ছ’য়ে-এ ঋতু-ছয় ঋতু ঘিরে আমাদের জীবনের মূলমন্ত্র।
গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, বসন্ত।
গ্রীষ্মে গরম, বর্ষায় বৃষ্টি, শরতের পর হেমন্ত,
শীতে ধরে কাঁপন, ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় বসন্ত।

৭। সাত-এ সাত সমুদ্র– পৃথিবীর আধি সাতটি সমুদ্র।
পুরাণেও বর্ণিত রয়েছে সাত সমুদ্র।
লবণ, ইক্ষুরস, সুরা, ঘৃত, দধি, ক্ষীর ও স্বাদূদক।
এগুলোর দর্শনপ্রাপ্তি সম্ভব নয় বলে, একসাথে সাতসমুদ্র।

৮। আটে-এ বসু–বা অষ্টবসু, দক্ষ প্রজাপতির কন্যা বসু।
বসুর আট পুত্রের নামই অষ্টবসু
ভব, ধ্রুব, সোম, বিষ্ণু, অনল, অনিল, প্রত্যুষ, প্রভাস
এরা সকলেই দেবতা, আটজন মিলে হয়েছে অষ্টবসু।

৯। ন’য়ে-এ নবগ্রহ–মহাকাশের মহাজাগতিক বস্তু গ্রহ।
সূর্যের চারপাশে থাকা নয়টি গ্রহ।
পৃথিবী, বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুন আর প্লুটো নিয়েই হয়েছে নয়ে-এ নবগ্রহ।

১০। দশ-এ দিক– জানি পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণদিক।
কোথায় গেলে খুঁজে পাই বাকি ছ’দিক?
ঈশান, অগ্নি, নৈঋ’ত, বায়ু, ঊর্ধ্ব আর অধঃ ৪+৬=১০দিক।
চারদিক খুঁজে পাওয়া গেল ছ’দিক, হলো দশ-এ দিক।

নিতাই বাবু সম্পর্কে

নিতাই বাবু ২০১৫ সালে তিনি শখের বশে একটা ব্লগে রেজিষ্ট্রেশন করে লেখালেখি শুরু করেন।তিনি লিখতেন নারায়ণগঞ্জ শহরের কথা। লিখতেন নগরবাসীর কথা। একসময় ২০১৭ সালে সেই ব্লগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ব্লগ কর্তৃক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জনাব সাঈদ খোকন সাহেবের হাত থেকে ২০১৬ সালের সেরা লেখক সম্মাননা গ্রহণ করেন। সাথে নগর কথক উপাধিও পেয়ে যান। এরপর সেই ব্লগে লেখালেখির পাশাপাশি ২০১৮ সালের জুলাই মাসে তিনি শব্দনীড় ব্লগে রেজিষ্ট্রেশন করেন। শব্দনীড় ব্লগে উনার প্রথম লেখা "আমি রাত জাগা পাখি" শিরোনামে একটা কবিতা। তিনি চাকরির পাশাপাশি অবসর সময়ে লেখালেখি পছন্দ করেন এবং নিয়মিত শব্দনীড় ব্লগে লিখে যাচ্ছেন।

7 thoughts on “ছোটবেলার পড়া– এক-এ চন্দ্র, দু’য়ে–পক্ষ

  1. অসাধারণ আয়োজন। শিক্ষণীয় পোস্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ মি. নিতাই বাবু। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    1. সুন্দর মন্তব্যের জন্য আমার শ্রদ্ধেয় কবি দাদাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সাথে অনিঃশেষ ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা ।

  2. শুভেচ্ছা জানবেন কবি নিতাই বাবু। নিঃসন্দেহে শিক্ষণীয় কথা-কাব্য। 

    1. গতরাতে আপনার করা মন্তব্যের উত্তর দিতে গিয়ে দেখি যে, মন্তব্য হারিয়ে গিয়েছে। আমি রীতিমত হতবাক হয়ে শ্রদ্ধেয় রিয়া দিদির মন্তব্যের জবাবে হারিয়ে যাওয়া মন্তব্যের কথা উল্লেখ করেছিলাম। কেন যে এমন হলো, তা আমি বুঝতে পারিনি শ্রদ্ধেয় সৌমিত্র দাদা। আশা করি আপনি নিজগুনে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেছেন বলে মনে হয়। ভালো থাকবেন শ্রদ্ধেয় দাদা।

  3. ছোটবেলা শিখেছিলাম এক থেকে দশ পর্যন্ত (দশকিয়া) মুখস্ত করার পদ্ধতি,
    অনেকটা ছড়ার মতো: ভীষণ মজা পেতাম।
    — একে চন্দ্র — দু'য়ে পক্ষ
    — তিনে নেত্র — চারে বেদ
    — পঞ্চবাণ — ছয়ে ঋতু
    — সাতে সমুদ্র — অষ্টবসু
    — নয়ে নবগ্রহ — দশে দিক।

    নস্টালজিক হলাম নিতাই দা। :)

    1. মূল্যবান মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় রিয়া দিদি। 

      শ্রদ্ধেয় দিদি, মোবাইলের সমস্যার কারণে শ্রদ্ধেয় সৈমিত্র দাদার করা মন্তব্যখানি ডিলিট হয়ে গেছে। যা আমার অনিচ্ছাকৃত। সৌমিত্র দাদা যেন কিছু মনে না করে। এখানেও জানালাম, দাদার পোস্টেও একটা মন্তব্যে জানিয়ে দিচ্ছি। আপনিও একটু বুঝিয়ে বলবেন, শ্রদ্ধেয় দিদি।

  4. চমৎকার, অতি চমৎকার।
    দুই-এ- পক্ষ।
    নানান পক্ষের পাকে ১৫ দিনের পক্ষ খুঁজে পাওয়া দায়।

     

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।