ভূমিহীন ছিলাম না, বর্তমানে ভূমিহীন

27924-1 আমি ভূমিহীন ছিলাম না। এদেশের আরও দশজনের মতো আমারও বাপ-দাদার ভিটেমাটি ছিলো। বাড়ি ছিলো। সুন্দর পরিপাটি উঠোন ছিলো। থাকার মতো ঘর ছিলো। কিন্তু আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর ধরে আমরা এদেশে ভূমিহীন নাগরিক হয়ে বসবাস করছি। বর্তমানে আমার বাবা, মা, বড় দাদা, বেঁচে নেই। আমার বাবার পুরিতে পুরুষ বলতে আমিই একমাত্র পুরুষ। আমরা ছিলাম দুই ভাই, চার বোন। দু বোনের মধ্যে দুইজন পরলোকে, আর দুই বোন এখনো বেঁচে আছে। আমি ছিলাম আমাদের সংসারে সবার ছোট। আমি ভূমিহীন বাস্তুহারা হয়ে পরের বাড়িতে ভাড়া থেকে কোনোরকমভাবে বেঁচে আছি।

ভূমিহীন হওয়ার ইতিহাস:
আমার নাম শ্রী নিতাই চন্দ্র পাল। তবে সবাই আমাকে “নিতাই বাবু” বলেই ডাকে। তাই আমি নিতাই বাবু নামে সবার কাছে, আর সবখানে এই নামে পরিচিত। আমার বাপ-দাদার ভিটেমাটি ছিলো নোয়াখালী জেলার বজরা রেলস্টেশনের পশ্চিমে মাহাতাবপুর গ্রামে। আমার জন্ম ১৯৬৩ সালের ৮ জুন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা সপরিবারে গ্রামের বাড়িতেই ছিলাম। আমি তখন তৃতীয় শ্রেণি পাস করে সবেমাত্র চতুর্থ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু করেছিলাম। তখনই লেগে যায় স্বাধীনতার দাবিতে তুমুল যুদ্ধ। তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান’র (বর্তমান বাংলাদেশ) আপামর জনতা ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর উপর।

চলতে থাকে যুদ্ধ আর যুদ্ধ। চারদিকে জ্বলতে থাকে আগুন, আর পাক বাহিনীদের গুলিতে মরতে থাকে অসংখ্য নিরীহ মানুষ। আমার বাবা তখন চাকরি করতেন নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চিত্তরঞ্জন কটন মিলে। আর বড়দা চাকরি করতেন নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানাধীন আদর্শ কটন মিলে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে দু’জনেই বাড়িতে আসতে পারছিলেন না। এরমধ্যে বাবাকে না জানিয়ে আমার বড়দা চলে যায় ভারতে। ভারতে গিয়ে বড়দা নাম লেখায় কোনোএক শরণার্থী শিবিরে। এর একমাস পর বাবা অতি কষ্টে সহকর্মীদের কাছ থেকে ধারদেনা খালি হাতে বাড়িতে আসে। বাড়িতে এসে ধারদেনা করে মুড়ির ব্যবসা শুরু করে।

মনে পড়ে, একদিন বাবার সাথে আমিও বাজারে যেতে বায়না ধরলাম। বাজারটা ছিলো আমাদের বাড়ির পশ্চিমে আমিষারা বাজার। আমার মর্জিতে বাবা আর আমাকে সাথে না নিয়ে পারলেন না। খুব খুশি মনে বাবার সাথে চলে গেলাম আমিষারা বাজারে। বাজারে আরও আরও মুড়ির ব্যবসায়ীদের সাথে আমার বাবাও মুড়ির বস্তা খুলে দাঁড়িপাল্লা রেডি করে মুড়ি বিক্রি করার জন্য দাড়িয়ে আছে। আমিও দাড়িয়ে আছি বাবার সাথেই। আরও আরও মুড়ির ব্যবসায়ীদের মতো আমার বাবাও মাত্র কয়েক সের(কেজি) মুড়ি বিক্রি করেছে মাত্র। এমন সময়ই বাজারে লেগে যায় হুলুস্থুল, আর দৌড়াদৌড়ি!

কী হলো? লোকজন দৌড়াদৌড়ি করছে, আর বলছে, ‘পাকবাহিনী বাজারে হানা দিয়েছে’। আমার বাবা তাড়াতাড়ি করে মুড়ির বস্তা বেঁধে ফেললো। কিন্তু মুড়ির বস্তা মাথায় উঠিয়ে দেয়ার মতো কোনও লোক এগিয়ে আসছিল না। আমি বাবার জামা চেপে ধরে দাড়িয়ে আছি। এমন সময়ই দুই-তিন জন পাকবাহিনী এসে তাদের হাতে থাকা রাইফেল দিয়ে আমার বাবার বুকে পিঠে তিন-চারটা বাড়ি মারল। তখন আমি হাউমাউ করে কাঁদছিলাম। আমি তখন ভেবেছিলাম ওরা পাকবাহিনীরা হয়তো আমার বাবাকে মেরেই ফেলবে। এই ভেবে আমি কাঁদতে কাঁদতে যিনি (পাকবাহিনী) আমার বাবাকে রাইফেল দিয়ে মারছিল, তার পায়ে জড়িয়ে ধরে বাবাকে না মারার জন্য আকুতি মিনতি করতে লাগলাম।পাকবাহিনী যিনি বাবাকে মারছিলেন, তিনি আমার কান্না দেখে বাবাকে আর না মেরে চলে যায়।

পাকবাহিনীরা চলে যাবার পর দেখি, আমার বাবা তখনও মুড়ির বস্তার পাশে মাটিতে শুয়ে আছে। আমি কাঁদতে কাঁদতে বাবার হাত ধরে টানতে লাগলাম। বাবা তখন আমাকে ধরে আস্তেধীরে উঠে বসলো, কিন্তু দাঁড়াতে পারছিলেন না। বাবার দু’চোখ বেয়ে তখন জল ঝরছিল। মুহুর্তের মধ্যেই পুরো বাজারের চারদিক তখন মানুষ শূন্য হয়ে গেলো। মুড়ির বস্তা মাথায় উঠিয়ে দেয়ার মতো কোনও লোক ধারেকাছেও নেই। অনেকক্ষণ পর একজন মহৎ মানুষ আমাদের সামনে দিয়ে তাড়াহুড়ো করে হেঁটে যাচ্ছিল। আমি তখন কেঁদে কেঁদে ও-ই লোকটাকে আমাদের মুড়ির বস্তাটা বাবার মাথায় উঠিয়ে দেয়ার জন্য মিনতি করলাম। আমার কান্না আর আমার বাবার অবস্থা দেখে লোকটার দয়া হলো। লোকটা ধরাধরি করে বাবার মাথায় মুড়ির বস্তাটা উঠিয়ে দিলে। তারপর আমি আর আমার বাবা সেদিন খুব কষ্ট করে বাড়িতে ফিরে আসি।

বাড়িতে আসার পর আমার বাবা পুরোপুরিভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লো। বাবার সেই অসুস্থ শরীর সুস্থ হয় প্রায় একমাস পরে। একমাস পর বাবা আবারও অন্যের কাছ থেকে ধারদেনা করে এক মণ মুড়ির ধান কিনে আনে। সেই ধান সিদ্ধ করে শুকিয়ে নিজেদের ঢেকিতে ধান ভাঙে। সেই ধান ভাঙানো চাল দিয়ে আবার মুড়ি তৈরি করে ভয়ে ভয়ে গ্রামের আশেপাশে থাকা বাজার গুলোতে গিয়ে মুড়ি বিক্রি শুরু করে। এরপর থেকে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পুরোটা সময় আমাদের সংসার এভাবেই কষ্টেসৃষ্টে চলতে থাকে।

১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে এদেশের নিরস্ত্র মুক্তিবাহিনী পাক বাহিনীদের পরাস্ত করে বিজয়ের নতুন পতাকা উত্তোলন করে। দেশ পরাধীন মুক্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ নামে বিশ্ব মানচিত্রে স্থান পায়। এর দিনেক পনেরো দিন পর আমার বাবা গ্রামের বাড়ি থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয় এবং নিজের কর্মস্থলে যোগদান করে। আমার বড় দাদাও ভারত থেকে এসে নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানাধীন আদর্শ কটন মিলে নিজের কর্মস্থলে যোগদান করে।

মাসেকখানি পর আমার বাবা ও বড়দা যুদ্ধ চলাকালীন নয় মাসের বেতন একসাথে পেয়ে যায়। আর সেই টাকা থেকে কিছু টাকা তাঁরা হাতে রেখে বাদবাকি টাকা বাড়িতে পাঠায়। সেই টাকা হাতে পেয়ে আমার মা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ধারদেনা করা মানুষের দেনা পরিশোধ করে কোনরকমভাবে সংসার চালাতে থাকে। এভাবে কেটে গেলো আরও কয়েকটি মাস।

এরমধ্যে গ্রামে দেখা দেয় চোর-ডাকাতের উৎপাত। সেই উৎপাত আমাদের বাড়িতেই বেশি দেখা দিলো। কারণ, যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আমাদের বাড়িতে প্রতিদিন সন্ধ্যায় থেকে গভীর রাত পর্যন্ত স্থানীয় মুক্তিবাহিনীরা আড্ডা দিতো। এই আড্ডাকে অনেকেই মনে মনে ভাবতো, আমাদের বাড়িতে মুক্তিবাহিনীরা ক্যাম্প বসিয়েছে। আসলে কিন্তু তা নয়! মূলত মুক্তিবাহিনীরা সন্ধ্যাকালীন সময়টাই শুধু আমাদের বাড়িতে বসে আমার বড় জেঠার সাথে সময় কাটাতেন।

যুদ্ধকালীন সময়ে আমাদের বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের আড্ডার মূলকারণ ছিলো আমার বড় জেঠা। আমার বড় জেঠামশয় একসময় তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান সরকারের পুলিশে চাকরি করতেন। তিনি উর্দু ও হিন্দি ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারতেন। আবার তিনি ছিলেন খুবই রসিক মানুষ। রসিকতা ছিলো আমার জেঠার নিত্যসঙ্গী। সেই কারণে স্থানীয় মুক্তিবাহিনীরা প্রায় প্রতিদিনই সন্ধ্যার পরপর আমাদের বাড়িতে এসে বাড়ির উঠোনে বসে গল্পগুজব করতো। তাদের সেই গল্পের ফাঁকে আমার মা, নাহয় আমার জেঠিমা চা’র আয়োজন করে সবাইকে চা দিতো। চা পান করার সাথে চলতো হুক্কা টানার ব্যবস্থা। এভাবে রাত গভীর পর্যন্ত চলতো সেই আড্ডা।

সেই আড্ডাই কাল হয়ে দাঁড়ায় দেশ স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে। স্থানীয় রাজাকার বাহিনীরা মনে করতো আমাদের বাড়িতেই ছিলো মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প। এরকম মনে করা থেকেই স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে গ্রামের আরও আরও বাড়ি থেকে আমাদের বাড়িতেই ছিলো ডাকাতদের সবচেয়ে বেশি হানা।

একপর্যায়ে চোর-ডাকাতের উৎপাত থেকে বাঁচতে আমার জেঠা-সহ আমার বাবা কাকারাও পুরো বাড়ি স্থানীয় বাদশা মিয়া নামে এক কন্ট্রাক্টরের কাছে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেয়। আমার দুই জেটা চলে যায় ভারতে, দুই কাকার মধ্যে ছোট কাকা চলে যায় পার্বত্য চট্টগ্রাম গুঁইমারা বাজার। মেজো কাকা পারি জমায় চাঁদপুর। আমরা মনে হয় ১৯৭৩ সালের মাঝামাঝি সপরিবারে চলে আসি নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানাধীন লক্ষ্মণ খোলা গ্রাম সংলগ্ন আদর্শ কটন মিলে। সেই থেকে আমরা হয়ে যাই ভূমিহীন।

বড়দা’র চাকরির সুবাদে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করি আদর্শ কটন মিলের শ্রমিক কলোনিতে। ১৯৭৪ সালে আমি লক্ষ্মণ খোলা ফ্রি প্রাইমারি স্কুল চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হলাম। লেখাপড়া অতি কষ্টে ঠিকঠাকমতো চলছিলো। প্রাইমারি পাস করে ঢাকেশ্বরী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়েও ভর্তি হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ আদর্শ কটন মিলের শ্রমিক কলোনিতে থাকা অবস্থায় আমার বাবা পরলোকগমন করেন। শেষ হয়ে যায় আমার লেখাপড়া!নতুন করে শুরু হয় বড়দা’র পাশাপাশি সংসারের আহার যোগাড়ের ধান্দা।

লেখাপড়ার পাশাপাশি আদর্শ কটন মিলের গেইটে বাদাম বিক্রি-সহ আরে অন্যান্য কাজ করতে থাকি। সময়তে রাজ জোগালির কাজ, আবার সময়তে আদর্শ কটন মিলে দৈনিক ১২ টাকা হাজিরায় কাজও করেছি অনেকদিন। কিন্তু কয়েক মাস পর হঠাৎ আদর্শ কটন মিলস সরকার কর্তৃক যখন বিক্রি হয়ে গেলে, আমরা সপরিবারে নিঃস্ব হয়ে পড়ি।

তখন আমার লেখাপড়ার ইতি টেনে সপরিবারে চলে যাই শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম পাড় নগর খাঁনপুর। নগর খাঁনপুর ছোট একটা ঘর ভাড়া করে থাকতে থাকি। এই ভাড়া থাকাকালীন অবস্থাতেই অবিবাহিত দুই বোনের বিয়ে দিই, মানুষের কাছে হাত পেতে সাহায্য তুলে। তখন আমার বড়দা কিল্লার পুল ফাইন টেক্সটাইল মিলে তাঁতের কাজ করে। আমি চালাতাম নারায়ণগঞ্জ শহরে রিকশা। রিকশা চালানো বড় পরিশ্রম! প্রতিদিন রিকশা চালানো যেতো না। যেদিন রিকশা না চালাতাম, সেদিন কিল্লার পুল ফাইন টেক্সটাইল মিলে গিয়ে বড়দা’র সাথে তাঁতের কাজ শিখতাম। একসময় আমি তাঁতের কাজ শিখে রিকশা চালানো বাদ দিয়ে টেক্সটাইল মিলে কাজ করতে থাকি।

এরপর ১৯৮৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে আমি বিক্রমপুর সুবচনী নয়াবাড়ি গ্রামের এক দরিদ্র হিন্দু পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করি। শুরু করি নতুন জীবন নতুনভাবে আবিষ্কার করার চেষ্টা। কিন্তু না, ভাগ্য আমার অনুকূলে ছিলো না। আমার এক মেয়ে এক ছেলে। দশ দুয়ারে হাত পেতে মানুষের সাহায্য সহযোগিতায় মেয়ে বিয়ে দিয়েছি, ২০০৭ সালে গোপালগঞ্জ সদর থানার এক গ্রামে। ২০১১ সালের মে মাসে আমার একমাত্র ছেলে হঠাৎ মারা যায়।তখন আমরা স্বামী-স্ত্রী হয়ে যাই নিঃস্ব এতিম। আমাদের সমাধিতে প্রদীপ জ্বালানোর মতো আর কেউ রইল না।

আমার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ভাবনা:
বর্তমানে দুঃখ-কষ্টের মাঝেই পরের বাড়িতে ভাড়া থেকে দিনাতিপাত করছি। বয়স হয়েছে ৬০ এর কাছাকাছি। চাকরি করি ছোটখাটো একটা সমবায় সমিতিতে। বেতন নামমাত্র বললেই চলে। নিজের সহধর্মিণীও ছোটখাটো একটা গার্মেন্টসে চাকরি করছে। সহধর্মিণীর শারীরিক অবস্থাও ভালো নয়! ক’দিন পর পরই অসুস্থ হয়ে পড়ে। দু’জনেরই জীবনের পথচলা হয়তো শেষ হতে চলছে। কিন্তু ভবিষ্যত কী? যদি এরই মধ্যে সহধর্মিণী দুনিয়ার মায়া ছেড়ে চলে যায়? তা হলে তো এই বুড়ো বয়সে আমি পথের কাঙাল। আর যদি আমার কালকেই চাকরিটা চলে যায়, তা হলে আমার আবার রিকশা নিয়ে শহরে ঘুরতে হবে। আর নাহয় ভিক্ষার ঝুলি কাঁধে নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে, তা একশো-তে-একশো। আর যদি আমি দুনিয়ার মায়া ছেড়ে চলে যাই, তা হলে আমার সহধর্মিণী বুড়ো বয়সে হবে ভিখারিণী। এছাড়া আর কোনও উপায় নেই। তাই আমি মনে করি উপায় শুধু একটাই। আর তা হলো মমতাময়ী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করা।

আমার বর্তমান মনোবাসনা:
বর্তমানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। তিনি আমার মতো এদেশের হাজার হাজার অসহায় গরীব ভূমিহীন মানুষকে ঘর উপহার দিয়েছেন। হয়তো আরও দিবেন। মমতাময়ী জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, “এদেশে কেউ গৃহহীন ভূমিহীন থাকবে না”৷ তা হলে এদেশের আরও আরও অসংখ্য ভূমিহীনদের মধ্যে আমিও একজন ভূমিহীন নাগরিক। আমিও তো একটা ঘর পাওনা।

যদি আমি অধম মমতাময়ী জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের একটা ঘর পেতাম, তা হলে ভবিষ্যতে ভিক্ষা করা থেকে বাঁচতাম। আর জীবনের অবশিষ্ট সময়টুকু নিশ্চিন্তে কাটাতে পারতাম। খেয়ে থাকি আর না খেয়ে থাকি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে তো প্রাণ ভরে শ্বাস নিয়ে ঘুমাতে পারতাম। কিন্তু আমার এই আর্জি এই বাসনা কি কখনো পূর্ণ হবে। আমার এই আর্জি কি মমতাময়ী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হবে? এজন্য কেউ কি আমাকে সাহায্য সহযোগিতা করবে?

নিতাই বাবু
০১/০৫/২০২২ইং।

নিতাই বাবু সম্পর্কে

নিতাই বাবু ২০১৫ সালে তিনি শখের বশে একটা ব্লগে রেজিষ্ট্রেশন করে লেখালেখি শুরু করেন।তিনি লিখতেন নারায়ণগঞ্জ শহরের কথা। লিখতেন নগরবাসীর কথা। একসময় ২০১৭ সালে সেই ব্লগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ব্লগ কর্তৃক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জনাব সাঈদ খোকন সাহেবের হাত থেকে ২০১৬ সালের সেরা লেখক সম্মাননা গ্রহণ করেন। সাথে নগর কথক উপাধিও পেয়ে যান। এরপর সেই ব্লগে লেখালেখির পাশাপাশি ২০১৮ সালের জুলাই মাসে তিনি শব্দনীড় ব্লগে রেজিষ্ট্রেশন করেন। শব্দনীড় ব্লগে উনার প্রথম লেখা "আমি রাত জাগা পাখি" শিরোনামে একটা কবিতা। তিনি চাকরির পাশাপাশি অবসর সময়ে লেখালেখি পছন্দ করেন এবং নিয়মিত শব্দনীড় ব্লগে লিখে যাচ্ছেন।

2 thoughts on “ভূমিহীন ছিলাম না, বর্তমানে ভূমিহীন

  1. যাপিত জীবনের স্পর্শকাড়া চালচিত্র। ভূমিহীন ছিলাম না, বর্তমানে ভূমিহীন …

    দুঃসময়ে শুধু আশ্বাস নয়; সত্যিকারের শুভাকাঙ্খী এগিয়ে আসবে এই প্রত্যাশা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    1. আমি এখন সকলের আশীর্বাদ প্রার্থী। আশা করি আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত করবেন না। শুভকমনা থাকলো, দাদা।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।