খনা ও খনার বচন সম্পর্কে আমাদের সকলেরই কম বেশী ধারণা আছে। খনার বচন মূলত কৃষিতত্ত্বভিত্তিক ছড়া। আনুমানিক ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দীর মধ্যে রচিত। অনেকেই ধারনা করেন এগুলি কোন একক ব্যাক্তির লেখা নয়, বরং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনের বলা বা লেখাগুলি খনার নামে প্রচলিত হয়েছে। যাইহোক, এই বিতর্কে না যাই।
আমাদের পরিচিতো অনেক খনার বচন আছে, সেখান থেকে কিছু কিছু বচন এখানে শেয়ার করবো ব্যাখ্যা সহ।
১। উঠান ভরা লাউ শসা,
খনা বলে লক্ষ্মীর দশা।
ব্যাখ্যা : যে বাড়ির উঠানে বাড়ির বৌঝিরা সবজী ফলায় সেই বাড়িতে কখনোই অভাব দেখা দেয় না।
২। যে চাষা খায় পেট ভরে
গরুর পানে চায় না ফিরে
গরু না পায় ঘাস পানি
ফলন নাই তার হয়রানি।
ব্যাখ্যা : নিজের গরুর যত্ন না নিয়ে শুধু আরাম আয়েশে ঢুবে থাকলে সেই কৃষকের কপালে হয়রানির শেষ নাই।
৩। যদি বর্ষে ফাল্গুনে
চিনা কাউন দ্বিগুণে।
ব্যাখ্যা : ফালগুন মাসে বৃষ্টি হলে চিনা আর কাউনের ফলন ভালো হয়।
৪। সকাল শোয় সকাল ওঠে
তার কড়ি না বৈদ্য লুটে
ব্যাখ্যা : রাতের বেলা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে সকাল সকাল উঠে পড়লে শরীর সুস্থ থাকে।
৫। যে করে পরের আশ
সে খায় বনের ঘাস।
ব্যাখ্যা : কাজ না করে অন্যের আশায় বসে থাকলে কপালে খাবার জোটে না।
৬। হাত বিশ করি ফাঁক
আম কাঁঠাল পুঁতে রাখ
ব্যাখ্যা : আম আর কাঠাল গাছ লাগানোর সময় ২৫/৩০ ফুট দূরে দূরে লাগাতে হয়।
৭। আউশ ধানের চাষ,
লাগে তিন মাস।
ব্যাখ্যা : আউশ ধান চাষ করলে ৩ মাসেই ফসল ঘরে তোলা যায়।
৮। বাঁশের ধারে হলুদ দিলে,
খনা বলে দ্বিগুণ বাড়ে।
ব্যাখ্যা : বাশ ঝারের ধারে হলুদের চাষ করলে তার ফলন ভালো হয়।
৯। সকল গাছ কাটিকুটি
কাঁঠাল গাছে দেই মাটি।
ব্যাখ্যা : কিছু কিছু গাছ আছে যেগুলির ডাল কেটে দিলে ফলন ভালো হয়। কিন্তু কাঠালের বেলা তার উলটা। ফলন ভালো পেতে হলে কাঠাল গাছের গোড়ার মাটি আলগা করে নতুন মাটি দিয়ে দিতে হয়।
১০। হালে নড়বড়, দুধে পানি
লক্ষ্মী বলে ছাড়লাম আমি।
ব্যাখ্যা : যে কৃষকের চাষের হাল নড়বড়ে, দুধের সাথে পানি মিশায় সেই কৃষকের উন্নতি হয় না।
বি.দ্র. ছবি গুলি নেট থেকে সংগ্রহীত।
ভালো লাগলো ছবিসহ খনার বচন । শুভেচ্ছা জানবেন /
ধন্যবাদ মন্তব্য আর ভাল লাগা জানানোর জন্য।
চমৎকার প্রকাশ
শুকরিয়া
উঠান ভরা লাউ শসা, খনা বলে লক্ষ্মীর দশা।
– মা আমার লক্ষী বা সুবোধ যেটাই হোক বাড়ির আঙ্গিনায় এমনটাই করতেন।
একটা সময় আমাদেরও ছিল এমনাটাই।
দস্যু ভাই আর একতা বাদ পরে গেছে মনে হয়ঃ
যদি বর্ষে আঘুনে, রাজা যায় মাগনে
যদি বর্ষে পৌষে, আগুন জ্বলে তুষে
যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্য রাজার পূণ্যি দেশ।
তৃতীয় পর্বের জন্য এটা সিলেক্ট করা আছে। সাত নাম্বারে।
বেশ ভাই বেশ। খনার বচন আমার খুবই পছন্দের। চালিয়ে যান সঙ্গে আছি।
অনেক খনার বচনেরই ব্যাখ্যা আমার নিজের জানা নাই। এই সুযোগে যদি কারো কাছ থেকে সেগুলি জানার সুযোগ হয়, সেটা একটা বড় পাওনা হবে।
মুগ্ধ হলাম ছবি দা। আপনার পোস্ট শব্দনীড় এর মূল্যবান আকর্ষণ।
প্রসংশার জন্য ধন্যবাদ।
তবে আমার মনে হয় কবিতার মাঝে আমার এই পোষ্টগুলি "বকের ঝাঁকে কাকের মত"।
উদ্ধৃত অংশ আর ব্যাখা সাথে ছবি আপনার পোস্টটি মনোগ্রাহী করে তুলেছে। মন ফ্রেশ হলো।
শুভ সকাল।
ছবির প্রতি আমার আলাদা একধরেন আকর্ষণ আছে। তাই ছবি জুড়ে দেই সাথে।