জয়নব এখন কোথায় যাবে?

জয়নবের স্বামী জয়নবকে ছেড়ে চলে গেছে আজ থেকে প্রায় পাঁচ বছর আগে। সেই সব দিনগুলোর কথা ভাবতেই এখনো গা শিউরে ওঠে তার। সে এক চরম ক্রান্তিকাল, হঠাৎ করে ছোট্ট ছোট্ট দুটো দুধের বাচ্চা নিয়ে নিষ্ঠুর পৃথিবীর মুখোমুখি হয় সে। সেইসব দিনগুলোর কথা জয়নব কোনদিনই ভুলতে পারবে না। যদিও সে ভুলতে চায় বারবার। কে আর দুঃখের দিনের কষ্টের দিনের কথা মনে রাখতে চায়।

তখনকার কথা ভাবলে এখনও গা মাথা ঝিমঝিম করে। কি কষ্টের সেইসব দিনগুলি যে কিভাবে পার করেছে তা একমাত্র আল্লাহই জানে। তখন দুনিয়াটাকে তার শুধু মনে হতে কবরের মতো আঁধার। যদিও সে কোনদিন কবরের কঠিন আঁধার দেখেনি তবে অমাবস্যার রাতে চোখ বন্ধ করে কবর কবর খেলা সে অনেকবার ই করেছে বড় ভাইজানের সাথে।

একা নয় সে সাথে দু দুটো বাচ্চা, না আছে আয়, না আছে রোজগার। ঘর ভাড়া, খাওয়া খরচসহ কত না খরচ কি দিয়ে সে কি করবে? কে তাকে কাজ দেবে? কে দেখবে এই দুধের শিশু দুটো। ছোট্ট দুটো দুধের শিশুর কান্নায় পরিবেশ আরো ভারি করে তুলতে লাগলো প্রতিটা মুহুর্ত। নিজে না হয় না খেয়ে থাকতে পারে কিন্তু এই বাচ্চাদের মুখের আহার সে কোথা থেকে জোগাড় করবে? কে তার সহায় হবে? কি যে কঠিন অবস্থা। কি করে আর বোঝাবে।কাকেই বা বোঝাবে? ভিক্ষা ছাড়া মনে হয় উপায় নাই। কিন্তু সামর্থ মানুষকে কি কেউ ভিক্ষা দেয়?

যদিও ততদিনে এই পোড়া শহরে তার অবস্থান বছর চারেক হয়ে এসেছে, তবুও পথ ঘাট কিছুই চেনে না সে। যে কটাদিন সে বাইরে কোথাও গেছে সাথে ছিলো তার স্বামী। সে কোন পথ ঘাট চেনার প্রয়োজনও বোধ করেনি। মজনু মিয়ার উপরে ছিলো তার অগাধ বিশ্বাস। শহরে আছে কি গ্রামে সেটা নিয়েও তার মাথা ব্যথা ছিলো না কোনো। ছোটবেলা থেকেই তার ছিলো ভাত কাপড়ের কষ্ট। এখন সেটা আর নাই এটুকুতেই সন্তুষ্টি তার। ঘর সামলাতে আর রান্নাবান্নাতে সময় কেটে গেছে নিরন্তর। অন্য কথা ভাববার সময় কোথায়। সেই সাথে ছিলো স্বামীর গভীর ভালোবাসা। সব ঝুপড়িতে মারপিটের আওয়াজ আসতো প্রতিদিন ই শুধু মজনু মিয়া তার গায়ে কোনদিন হাত তোলেনি। ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছে অন্তর।

জয়নব খুব অল্প বয়সে প্রেমে পড়ে মজনু মিয়ার। গ্রামের স্কুলে যাবার পথেই দেখা হতো রোজ। মজনু মিয়া বরাবর ই কথার বেশ পটু। যাকে বলে চোখে মুখে কথা। খুব সহজে জয়নবকে ভুলিয়ে ভালিয়ে একদিন শহরে নিয়ে চলে আসে। বাপ বলতে বাপ ছিলো না আর মা তো সৎমা। অভাবের সংসারে তার কথা কেই বা ভাববে ? জয়নব চলে আসাতে বরং তারা খুশিই হয়েছে। একটা মুখতো কমলো। পথের কাঁটাও দুর হলো। বাস্তব সত্য বড় নির্মম।

প্রথমদিকে মজনু মিয়ার ব্যবহার তাকে এই ঝুপড়ির পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে বেশ খানিকটা সহায়তা করে। আসলে ভালোবাসা অন্যরকম জিনিস। ছোট বেলা থেকেই সৎমায়ের সংসারে ভালো মুখ সে কোনদিন পায়নি। বাবা তো আরেকজন। কোনদিন একটাকার লেবেনচুস ও কিনে দেয়নি। ভালোবাসা ভালোমুখ তো দুরের কথা। মজনু তাকে সত্যি সত্যি ভালোবেসেছিলো। এজন্য তো শত চেষ্টা করেও মজনু মিয়াকে এক ফোঁটা গালি দিতে পারে না সে।

ডাইনি রাবেয়ার জন্যই তো মজনু মিয়া বিবাগী হলো। ওর কথা মনে হলেই জয়নব আগে একপ্রস্থ গালি দিয়ে নেয়। কিছু অভিশাপও দিতে ভোলে না্। এছাড়া কি বা করার আছে তার। গালাগালি অবশ্য সে গ্রাম থেকে শিখে আসেনি, এখান থেকেই শিখেছে। যত রকমের গালাগালি খিস্তি খেউড় আছে, সব এই বস্তির লোক জানে। শেখা কোন ব্যপার না। প্রথম প্রথম এইসব গালাগালি শুনে সে দুই হাতে কান চেপে ধরতো। ছি ছি কি সব ভাষা! মানুষ এতো নোংরা কথা কিভাবে বলতে পারে! তারপর আস্তে আস্তে সব সহ্য হয়ে গেছে।

কিন্তু রাবেয়াকে নিয়ে যখন মজনু মিয়া দেশান্তরি হলো তখন আপনা আপনি এই সব খিস্তি খেউড় বেরিয়ে এলো তার মুখ থেকে। কোথেকে এলো জয়নব তা নিজেও জানে না। টানা কয়েকদিন সে মুখ চালালো অদৃশ্যের উদ্দেশ্যে। সে কি একটা অবস্থা! যে না দেখেছে সে বলতে পারবে না। সে সময় জয়নব ছিলো একটা ঘোরের মধ্যে। ভালো মন্দ ভেদাভেদ কোন কিছুই কাজ করতো না তার মাথায়।
এতে অবশ্য জয়নবের লাভই হয়েছে আর কিছু না হোক সে মনে খানিকটা শান্তি পেয়েছে। না হলে সে তো মরেই যেতো কষ্টে। মনের কষ্ট বেরিয়ে এসেছে মুখের ভাষায়। তা সে যতোই অশ্লীল হোক না কেন।

ছোট ছোট ঝুপড়ি ঘর সারিবদ্ধভাবে পর পর। প্রত্যেক ঝুপড়িতে ছয় থেকে আটজনের সংসার। রান্না বাড়া সব ঝুপড়ির সামনে। গ্রামের মেয়ে সে, শহরের হালচাল তার কাছে বিচিত্র লাগে। এখানকার মানুষগুলো তার চাইতে ও বিচিত্র। আর কিছু না হোক খোলামেলা পরিবেশে সে মানুষ। এতো গাদা গাদি করে সে বাধ্য হয়ে ই থাকে। মজনু মিয়া কত আশার বানী তাকে শোনাতো। একটু ফোঁটা জমি কিনবে দুজনে। তাদের নিজের বাড়ি হবে। বাচ্চারা সাহেবদের ইস্কুলে পড়বে।
সব মিথ্যা! সব মিথ্যা করে দিয়ে মজনু মিয়া রাবেয়াকে নিয়ে কোন অজানায় হারিয়ে গেলো কে জানে? কি করে এতো সহজে ভুলে গেলো তাকে? কি করে পারলো? ভাবতেই চোখে হড়হড়িয়ে জল চলে আসে জয়নবের।
মজনু মিয়াকে সে কিছুতেই দোষ দিতে পারে না। আসল বেয়াদব তো ওই রাবেয়া। হারামজাদিরে কোন দিন যদি সে সামনে পায় তবে সে আগে ওর চুলের গোছা ধরে মনের মতো করে ঘুরিয়ে ছাড়বে। ছাড়বে ই। ভাবতে ভাবতে আরেক প্রস্থ সে গালি দিয়ে ওঠে।

ভালোবাসা সবসময় এমনই হয়, ভালো মন্দ বোঝার ক্ষমতা সাময়িক বিলুপ্ত করে দেয়। জয়নবের চোখও সেই রকম অন্ধই ছিলো। মজনু মিয়ার ভালোবাসার আড়ালের শয়তানি সে ধরতে পারেনি। মজনু মিয়া তার সাথে কখনো বেইমানি করতে পারে। একথা অবশ্য এখনো বিশ্বাস করে না জয়নব। সব দোষ সে রাবেয়ার ই দেয়। আরে পুরুষ মানুষ তো একটু গা বাওয়া স্বভাবের ই হয়। তাই বলে তুই এতো প্রশ্রয় দিবি? কেন রে অভাগীর ঘরের অভাগী। দুনিয়ায় কি আর যুবক ছেলে চোখে পড়েনি। মজনু মিয়ারেই পড়লো।কার সুখের ঘর ভাঙতে হলো!

পৃথিবীটা যতটা নিষ্ঠুর মনে হয় আসলে ততটা সে নিষ্ঠুর বা অবিবেচক নয়। শুন্যস্থান বরাবরই পুরণ হয়ে আসে। যেমন দুখের পরে আসে সুখ। এক্ষেত্রে সুখ না হলেও স্বস্তি কিছুটা হলে ও এলো।

পাশের ঝুপড়ির রাহাতন। খুব ঝগড়াটে টাইপের মহিলা। কথায় কথায় দ্বন্দ ফ্যাসাদ তার লেগেই থাকে। বলা চলে বেশির ভাগ সময় সেই দ্বন্দ ফ্যাসাদের মুল কারণ হয়, যে কেউ তাকে তার আচরণে বিরক্ত হয়। অবশ্য সবাই তাকে ভয়ও পায় তার কিন্তু একটা মারাত্মক গুন ও আছে। যা অত্যন্ত মানবিক, যে তার মনের নাগাল পায় সেই বোঝে আসলে সে কেমন মানুষ।মনটা তার কত বড়। আসলে পোড় খাওয়া মানুষ বরাবরই একটা শক্ত গোছের হয়। কলহ প্রিয় হয় খানিকটা। অন্তত এই ধরনের বস্তির পরিবেশে এই টাইপের অনেক মানুষ নিত্য চোখে পড়ে। যারা অন্যের বিপদে জান প্রাণ দিয়ে দেয়।

সেই রাহাতন যেন ত্রাণ কর্তা হয়ে এলো জয়নবের জীবনে। জয়নব ও তার মাসুম বাচ্চার জন্য জীবন লড়িয়ে দিলো নিঃস্বার্থভাবে। যেনো আল্লাহর তরফ থেকে এলো কোন মহামানবী। জয়নব কোনদিনও ভুলবে রাহাতনের কথা। পুরো দুই মাস তিনজনের সংসারের ভার নিয়ে নিলো সে নিঃস্বার্থ ভাবে। তারপর কাজ খোঁজা, কাজে গেলে বাচ্চাদের দেখাশোনা করা। সব দায়িত্ব নিয়ে নিলো নিজ কাঁধে।
সেই থেকে জয়নব অল্প খায় অল্প পরে কিন্তু আল্লাহর রহমতে বেশ ভালো আছে।

মানুষ বেশির ভাগ সময় ভাবে এক, হয়ে যায় আরেক। দিন এনে দিন খেয়ে ভালোই চলে যাচ্ছিলো জয়নবের। বস্তির কিছু উঠতি পোলাপানের কিছু ঝামেলা বাদে অন্য কোন ঝামেলা ছিলো না তেমন একটা। রাহাতনের অবিরাম সমর্থন তার জীবনটা নিরবিচ্ছিন্ন ভালোই চলছিলো বলা যায়।
প্রতিদিন যেমন কাজে যায় তেমনই রাহাতনের কাছে ছেলে মেয়ে দুটোকে রেখে কাজে বের হলো জয়নব। এখান থেকে ফিরতে ফিরতে এগারোটা বেজে যাবে তার পর অন্য আরেকটা বাসা। তিনটা নাগাদ ফিরে আসে সে বাড়িতে প্রতিদিন সব কাজ শেষে। ছেলে মেয়ে দুটোও বেশ শান্ত ,এইটা কপালের জোর বলতে হবে, না হলে কি যে হতো আল্লাহ ই জানে।

ইদানিং রাস্তা ঘাটে বড্ড লোকজন কম দেখা যায়। জয়নব শুনেছে করোনা নামে কি একটা অসুখে নাকি মানুষ ঠুস ঠাস করে মরে যাচ্ছে। কে জানে আল্লাহ কি রোগ দিলো। রাহাতনের পরামর্শে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলা শিখে নিয়েছে সে। গতকাল বস্তিতে কিছু লোক এসেছিলো তারাও অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়েছে। সাবান মাস্ক এসব দিয়ে গেছে।

এতো সব কথা শুণে তার যে ভয় একেবারে করেনি তা কিন্তু নয়। কিন্তু ভয় পেয়ে বাড়ি বসে থাকলে তো আর তিন তিনটা পেট চলবে না। তাই সে নিয়ম মেনেই কাজেই বেরিয়েছে। মুখে থুতু এলেও তা গিলে ফেলছে। হাতে পরিষ্কার সুতি কাপড় রেখেছে। ট্যিসু কেনার টাকা তার নাই । মুখে সে একেবারে হাত দিচ্ছে না। ছোট দুটো বাচ্চার জন্য হলেও তাকে ভালো ভাবে বাঁচতে হবে।

এর মধ্যে কাছাকাছি পথ চলতি একজন জোরে হেঁচে উঠতেই সে বিরক্ত চোখে তাকালো। পাগলা ব্যাটারে মনে হয় এখনি দুই গালে দুই থাপ্পর মেরে দেই্। অনেক মানুষ আছে বোঝালেও কিছু বোঝে না। পাগল ছাগল একেকটা। বাচ্চা দুটোর জন্য ইদানিং তার খুব চিন্তা হয়। তার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে ওদের কি হবে?
বাসাটা চারতলাতে। জয়নব মনিভাবীর দেওয়া গতদিনের দুখানা ট্যিসুর একখানা দিয়ে তিন তলার কলিংবেল টেপে ধরে। অন্য ট্যিসুখানা সে গেট লক খোলার জন্য রেখে দেয়। অনেকক্ষন হয়ে গেলেও সাড়া শব্দ না পেয়ে একটু অবাক ই হয় জয়নব। তবে বেশ কিছুক্ষণ পরে অবশ্য দড়িতে চাবি ঝুলিয়ে দেয় মনি ভাবি। সবাই মনে হয় ঘুমাচ্ছিলো, কি করে যে এতো বেলা পর্যন্ত ঘুমায় কে জানে?
সব নিয়ম মেনে জয়নব বাসায় প্রবেশ করতেই মনি ভাবী গম্ভীর মুখ দেখে সে একটু থমকে দাঁড়ায়। কি হলো আবার? সে প্রশ্ন করে..।
-কিছু হয়েছে ভাবি? মনটা খারাপ?
-না কিছু হয়নি? আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেস করবো জয়নব।
-কি বলেন ভাবী, একটা কেন, একশো কথা জিজ্ঞেস করেন? কি হয়েছে?
-এই কাজটা চলে গেলে কি তোর খুব সমস্যা হবে।
জয়নবের মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পড়লো এসব সে কি শুনছে? আর কাজ চলে যাবে মানে কি? সে তো সর্বসাকুল্যে দুটো বাসাতে কাজ করে।

-হ্যাঁ ভাবী কাজ না করলে খাবো কি?
কিন্তু জয়নব আমি তো তোমাকে আর কাজে রাখতে পারছি না। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি খুব খারাপের দিকে। তুমি হয়তো জানো। তার উপরে তুমি থাকো বস্তিতে। তোমার ভাই তোমাকে ছাড়িয়ে দিতে বলেছে। অবশ্য তোমার এই মাসের বেতনের পুরো টাকাটাই পাবে। আশা করি সমস্যা হবে না।
সব তো সিদ্ধান্ত মনি ভাবী নিয়েই নিয়েছে। এতে তার আর কিবা বলার থাকবে। আসলে গরীবের আল্লাহ ছাড়া কেউ নাই। তার খানিকটা ভয় করতে লাগলো। এবার বুঝি না খেয়েই মারা যেতে হবে। সামনে কি হবে কে জানে? আরেকটা বাসা আছে সেটাও হয়তো ছাড়তে হবে।তারপর?
অনেকেই গ্রামে ফিরে যাচ্ছে? সে কোথায় যাবে ? কোথায়?

10 thoughts on “জয়নব এখন কোথায় যাবে?

  1. পরিচিত প্লট পরিচিত সব চরিত্র। অবসরে পড়তে ভালোই লাগলো ইসহাক ভাই।

    1. কেমন আছেন সৌমিত্রদা? আশা করি ভালো আছেন।
      অনেকদিন পরে আপনাকে পেয়ে ভালো লাগলো।
      ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
      সতর্ক থাকুন আপনজন নিয়ে।
      শুভকামনা।

      1. সম্প্রতি অসুস্থকাল কাটিয়ে উঠলাম। আশীর্বাদ চাই।

      2. আশীর্বাদ রইলো প্রিয় দাদা।
        সতর্ক থাকুন আপনজন নিয়ে।
        শুভকামনা।

  2. আমাদের প্রত্যেকের গন্তব্যই যেন অনিশ্চিত। দূর্দিনেও সুখময় থাকুন মি. ইসিয়াক।

    1. আপনি ও ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।
      সতর্ক থাকুন আপনজন নিয়ে।
      দোয়া রইলো।
      আল্লাহ আমাদের সহায় হোন

  3. সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে উপযোগী লেখা, গল্প হিসেবে প্রথমদিকে মূল প্রতিপাদ্যের চেয়ে খুব বেশী বর্ণনামূলক হয়ে গেছে। ভালোই লেগেছে।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।