ভালবাসা। খুব ঝামেলার জিনিস, সে তুমি যাকেই ভালোবাসো না কেন। যে পেয়ে যায় ( বলে মনে করে) তার কাছে ভালবাসা ঘর কা মুরগী, ইচ্ছে হলেই জবাই যোগ্য। এভরিথিং টেকেন ফর গ্রান্টেড।
মানুষ নিজের প্রয়োজনে নিজে ভালবাসে। প্রায়শঃই একতরফা।
প্রাথমিকভাবে মনে হতে পারে, হয়ও, দুদিকে খোল দিব্য বাজছে। খোলের ছাউনি যোগাতে প্রাণান্ত।
সবচেয়ে বড়ো যন্ত্রণা ‘আগলানো’। যে ভালবাসে, সে ভাবে, ভাবতে ভালবাসে, সে আমার, কেবলই আমার।পৃথিবীর সব কিছুর মতোই এই আগলবেড়াও ভঙ্গুর। তখন ভাঙা বেড়া আগলে, হ্যাঁ আগলেই, মুখে রক্ত উঠে প্রাণ যায়,পর পিরিতী ন যায়। কী ঝামেলা!!!
মানুষ ছেড়ে পশু পাখী গাছপালা যাকেই ভালবাসবেন, তাকে নিয়ে ঘোর অশান্তি। মনে হয়,আমার প্রাণের বিনিময়ে হলেও ওরা বেঁচে বর্তে আনন্দে বাঁচুক। হয় ঠিক উল্টোটা। ভালবাসা যখন তুঙ্গে, তখনই খসে যায় কেউ না কেউ। কী অশান্তি, কী যন্ত্রণা… শুধুই ভালবেসে যেচে সেধে আনা কান্নার পাহাড়।
নির্জীব কাউকে ভালবাসবেন? পেন, পেন্সিল, কি একটা খাতা? সেই ক-বে প্রাণ দিয়ে আগলে রেখেছিলাম দুটো পেন, উইনসাঙ্ আর কিংসিং। কালো বডি সোনা মোড়া মাথা। তার একটা গেলো চুরি হয়ে। ওই নির্জীব পেনটার জন্য কেঁদেকেটে সাগর বইয়ে দিয়েছিলাম। খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে বকুনি খেয়েছি মায়ের কাছে।
রইলো বাকি এক। সবেধন নীলমনি আমার। বুকে আঁকড়ে রাখা যক্ষের ধন। একটা একটা করে পরীক্ষা পাশ করেছি, আর ভালবাসা দৃঢ় হয়েছে ততো। ইলেভেনে উঠে ঠিক করে নিয়েছিলাম, বিয়ের রেজিষ্ট্রেশনের সইটা এই পেন দিয়েই সারবো। আগলাতে চেয়ে প্রাণপাত করেছিলাম তো। সেটাও পারিনি।
ভালবাসা সৃষ্টিই হয় বিচ্ছিন্ন হবার জন্য, যে কোনো প্রকারে।
তবু ভালো না বেসে তো এই তেপান্তর পার হওয়াও দুষ্কর।
.
ছবি : ফেবু থেকে নিয়েছি, ডঃ আদিত্য মুখোপাধ্যায়ের তোলা।
ভালোবাসার চমৎকার বিশ্লেষণ। অভিনন্দন কবিবন্ধু রত্না রশীদ ব্যানার্জী।