এলোঝেলো

এলোঝেলো

অনেকদিন ধরেই আমার ল্যাপটপটা খারাপ। নিজেই দায়ী তার জন্যে, অনেক সিনেমা ডাউনলোড করে ফেলেছিলাম। এখন এতটাই অলস হয়েছি যে সারানোর জন্য ল্যাপটপ হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছেনা। অনেক গুলো লেখা বাকি। আজকাল আর লিখতেও ইচ্ছে করে না। বড় বেশি আলসে সময়। অবসরও অবকাশ চায় যে এখন। সময় আর কাটে না। আর যখনই এমন হয় আমি কেমন জানি ভিন গ্রহের বাসিন্দা হয়ে যাই। মনে হয় পালিয়ে যাই সব কিছু ছেড়ে। (অবশ্যি মনে মনে বহুকাল হল পলাতক)।

আজকাল স্বপ্নেও পালাই। কোথায়? সেইসব আগেকার নদী পাহাড় উপত্যকার কাছে, আমার স্বপ্নের সেই ছোট্ট গ্রামের কাছে। যেতে আর পারি কই? সেসব স্বপ্নও কোথায় চলে গেছে ভেসে। একটা বাড়ি। তারমধ্যে কতগুলো ঘরের মধ্যে একটা ঘর। খানকতক আসবাব, কিছু দরকারি–অদরকারি জিনিস। আর চারটে বড় বড় জানলা, এখন এই সময়ে সেইটাই আমার সব। আর এই ফোনটা। যদিও বড় বিরক্তিকর তবুও আমার সঙ্গী সে।

চুপচাপ থাকি। একটা সোওওওওওজা রাস্তা ধরে খালি চুপচাপ হাঁটতে ইচ্ছে করে, হেঁটে যাই কখনো একা একা। রোজ ভাবি আজ বেড়িয়ে পড়ব। কিন্তু হয়ে আর ওঠে না। এ যেন সেই ছোটবেলার বেড়ু বেড়ু খেলার মতন। একটা ব্যাগে একটা জামা, ইস্কুলের টিপিনের বাক্স, আরও কিছু জিনিস ভরে একটা চেয়ারকে ট্রেন মনে ভেবে, কু ঝিক ঝিক। কোথায় কোথায় চলে যেতাম।

কি যে হল, বড় বেশি তাড়াতাড়ি বড় হয়ে গেলাম। এ খুব অন্যায়। ভাল করে চেটেপুটে সবকটা চকলেট জমিয়ে নেওয়ার আগেই দেখি কোনফাঁকে বিতিকিচ্ছিরি বিদঘুটে রকমের বড় হয়ে গেছি।সেদিন তাই শপিংমল থেকে এক প্যাকেট টক-ঝাল-মিঠে লজেন্স কিনে এনেছি। এনে সামনের টেবিলে রেখে দিয়েছি। এদিক সেদিক ঘুরছি-বসছি-পড়ছি-গান শুনছি- ভ্যাবলা হয়ে তাকাচ্ছি-আনতাবড়ি ভাবছি-আর ফাঁকে ফাঁকে একটা করে লজেন্স টুপটাপ করে মুখে পুরে দিচ্ছি। আর রাংতাগুলোকে জমিয়ে রাখছি একটা কৌটোতে, লাল-নীল-সবুজ-সোনালি-রুপোলী-চকচকে রাংতা সব। সেই ছোট্ট বেলার মতো।

বেশ লাগে মাঝে মাঝে নিয়ম ভেঙে ফেলতে।

6 thoughts on “এলোঝেলো

  1. এলোঝেলো’য় আমাদের অনেকের জীবন। এরই মধ্যে বেঁচে থাকা। এভাবে বেঁচে থাকা।

    1. ধন্যবাদ কবি দা। অনেকদিন পর আপনাকে দেখে ভাল লাগলো। প্রণাম।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।