ঋণ
কখনও কখনও এমন রাত আসে, যেসব রাতে, একলা চাঁদের চুপচাপ বসে থাকতে ইচ্ছে করে। এখনও সেসব রাত আসে, গতকালও এসেছিল। মান, অপমানের তুলাদণ্ডে অপমানের পাল্লাই ভারি থেকেছে সবসময়। সময়ের নদী তিরতির করে পায়ের পাতার নীচে আকুল হয়ে দাঁড়ায়। স্রোতের মতো এগিয়ে যায় সময়, বাঁধের পর বাঁধ দিয়ে যাই। বড্ডো ভিড় জমে গেছে অবহেলার।
অপমানের আগুনে ভস্মীভূত অভিমান। বুকের ভিতর উপচে ওঠে আকাশ, ঢেউ এর মাথায় বজরা ভাঙে তুফান। ঝড় উঠে মনকে গুঁড়ো করে। মাথার ভিতর গর্জে ওঠে সাপ, অভিশাপে ছাই হয়ে যাক শরীর, আগুন নয়, দাবানলের মতো সব কিছু নিঃশেষ হোক।
মাঝে মাঝে চুপচাপ হয়ে যাই। যেমন গতকাল ছিলাম।একলা জাগা রাত, ছাদে বসে কতক্ষণ যে কেটে গেছে! এইসব সময় গুলো দাদুকে বড্ডো মনে পড়ে। মন খারাপের সময়ে দাদুর কোলে মাথা রেখে চুপচাপ শুয়ে থাকতাম। চোখের জল দাদু মুছিয়ে মাথা হাত বুলিয়ে দিতো। ভীষণ খটখটে রোদ চারপাশে। ছায়া দেওয়ার গাছটাই যে নেই। কখনও কখনও সব কিছু অসহ্য হয়ে ওঠে, মনে হয় আগুন জ্বেলে ছাই হয়ে যাই।
আগুনে তো শুধু নিজেকেই পোড়াতে চেয়েছি। দাদু বলতেন, “আত্মাকে কষ্ট দিওনা কখনও”, আত্মা কে তাতো জানি না, তাকে কি ভালোবাসতে ভুল হয়ে গেল? তার কষ্টে আজ তাই এ দূর্বিষহ প্রায়শ্চিত্ত। একটু একটু করে মুছে গেছে চাওয়া, স্বপ্ন, ইচ্ছেনদী। চুপ থেকে আরো বেশি নিস্তব্ধতায় ডুবি। আলো চেয়েছিলাম, যাতে ভুলে থাকতে পারি সব যন্ত্রণা। বেশ তবে, অন্ধকার গাঢ় হয়ে আসুক। এ শুধু আমার প্রায়শ্চিত্ত, তাই আমি পরীক্ষা দিই। শুধু যন্ত্রণায় জ্ঞান হারাবার আগে মৃত্যুর মুখোমুখি বসতে চাই।
কোটি জন্ম অব্যক্ত চোখের জল, লক্ষ জন্ম ছটফট যন্ত্রণার, হাজার জন্ম পাপস্খলণ শেষে, শতেক জন্মে কৃতজ্ঞতা, ঋণশোধ!
এজন্মটা এভাবেই কাটুক নাহয়।
___________
রিয়া চক্রবর্তী।
লেখায় আপনার প্রত্যয় ভালো লেগেছে কবি রিয়া রিয়া। পরীক্ষিত সময়ও এক সময় নিজের থাকে না; এমন হতেই পারে। তাই বলে থেমে যাওয়া চলবে না। পথ হোক সামনের। আগামীর।
সুন্দর মন্তব্য। ধন্যবাদ কবি সুমন আহমেদ দা।
কোটি জন্ম অব্যক্ত চোখের জল, লক্ষ জন্ম ছটফট যন্ত্রণার, হাজার জন্ম পাপস্খলণ শেষে, শতেক জন্মে কৃতজ্ঞতা, ঋণশোধ!
এজন্মটা এভাবেই কাটুক নাহয়। কাটুক।
হ্যাঁ। এটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি বন্ধু। যে ভাবে কাটে কাটুক।
এক এক চাঁদ দেখার চেয়ে কষ্টকরে ঘুম পড়া অনেক ভাল কারণ
চাঁদ বড়ই নিঠুর সে কখনই কাছে আসবে না ঠিক কি না
তাই চাঁদ কে নিয়ে আর ভাবি না———————
আপাতত না ভাবাই ভালো কবিবাবু।
একটি সময়ে এসে আমাদের মনোবেদনা বলার জায়গা কমে যায়।
ধন্যবাদ প্রিয় কবি দিদি ভাই।
দুঃখ-তাপে ব্যথিত চিতে
নাই বা দিলে সান্ত্বনা,
দুঃখে যেন করিতে পারি জয়।
সহায় মোর না যদি জুটে
নিজের বল না যেন টুটে,
সংসারেতে ঘটিলে ক্ষতি
লভিলে শুধু বঞ্চনা
নিজের মনে না যেন মানি ক্ষয়।
লভিলে শুধু বঞ্চনা
নিজের মনে না যেন মানি ক্ষয়। ঠিক তাই আনু দা।
এজন্মটা এভাবেই কাটুক নাহয়। বাকিটা বাকিতে থাক।
কাটুক জীবন এভাবেই।
আমিও চাই আপনার লেখার দাদুর মতো আমার দুই নাতিন আর এক নাতিও এমনি করে আমাকে মনে রাখুক। আপনার লেখা তৃতীয় প্যারা যেন আমার নাতি নাতিনদের জন্য লেখা।
ঈশ্বর আপনার ইচ্ছে পূরণ করুন দা। নিরন্তর শুভকামনা।
এসব সাহিত্য খুব বেশী বুঝি না আর সংসারী না হওয়ায় এসব সম্পর্কের ঘোরপ্যাচ আমার কাছে অদ্ভুত লাগে। যেটা বুঝি একটাই জীবন। মৃত্যুর পর কি আছে সেটা নিয়ে বহু বিতর্ক বহু সন্দেহ আছে, তাই যে জীবনটা হাতে নাতে পেয়েছি সেটাকে জটিল করার মানে দেখি না। লক্ষ্য যদি সংসারী হওয়া থাকে তাহলে সেটাতে মনপ্রাণ দেই। আর লক্ষ্য যদি এত কিছু থাকে তাহলে জটিলতা বাড়িয়ে লাভ কি!!
আসলেই সংসারী দর্শন বেশ দুর্বোধ্য লাগে
ভাল বলেছেন উদাসী দা। আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
খুব ভালো লাগলো। পাঠে মুগ্ধ হলাম।
প্রিয়কবিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
জয়গুরু!
ধন্যবাদ প্রিয় কবি দা।