বর্ষা বিলাস
গজলটা টা আমার খুবি প্রিয় কিছু গজলের মধ্যে একটা। একসময় বৃষ্টিতে ছাদে উঠে ভিজতাম। এখন আর ভেজা হয় না আগের মতো। আর বৃষ্টিও আর আগের মতো আমায় কাছে ডেকে না। অভিমানে অনেকটাই দূরে চলে গেছে। এখন যদিও সবদিনগুলো একই রকম কাটে, সেই থোর বড়ি খাড়া আর খাড়া বড়ি থোর। গ্রীষ্মের কাঠ ফাটা রোদ, বর্ষার ঝড় বৃষ্টি আর শীতের হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা একই রকম যায়। সেই দিনগুলো আজও খুব মিস করি। আজকাল যখন রাতের বেলায় বৃষ্টি হলে, জানালার ধারে বসে বৃষ্টি দেখি। কখনো আবার একা একা বৃষ্টিতে রাতের অন্ধকারে ঘরে আবছা আলোয় গজল শোনা গুলাম আলি কিংবা জগজিৎ সিং।
“ইয়ে দৌলত ভি লে লো শহরত ভি লে লো
ভালে ছিন লো মুঝসে মেরি জাবানী
মগর মুঝকো লৌটা দে
বচপন কার শাওন ওহ
কাগজ কি কাস্তি ওহ বারিস কা পানী।”
রাতের হাজার তারাদের বুকে লুকিয়ে সারারাত বৃষ্টি রিমঝিম। খুব ভোরে ঘুম ভেঙে শুনি তখনও বৃষ্টির টুপটাপ। বিছানায় শুয়েই তাকিয়ে আছি জানলার বাইরে। ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টিতে ভিজতে চাইতো মন তোর সাথে। কাপাসিয়া মেঘের চোখে কাজলের ঘনঘটা।
এমন বৃষ্টি স্নাত স্নিগ্ধ সকালেও অস্থির লাগে কারো? উঠে পরলাম চটপট। মনে হয় যেন কতকিছু করার ছিলো, করা হয়নি কখনো, অনেক স্বপ্ন ছিলো যা অধরাই রয়ে গেছে, অনেক চাওয়া ছিলো যেগুলো অর্জনের জন্য প্রচেষ্টাও করতে পারা যায়নি! আয়নায় তাকিয়ে সদ্য ঘুম থেকে ওঠা মুখ দেখে আবিষ্কার করলাম কপালে দুটো ব্রণ জ্বলজ্বল করছে। হয়তো কোনো খুচরো পাপের ফল। ভোরের আলো যেমন সুন্দর, যেমনই তাতে আছে নতুন করে আশায় বুক বাঁধার স্বস্তি, তেমনি আছে অস্থির এক ভালোলাগা। পৃথিবীর এমন ভোরগুলো ভীষণ সুন্দর। এক অদ্ভুত সুন্দর, স্নিগ্ধ। মোতির দানার মতো টিপটিপ করে পাতায় পাতায় ঝরে পড়ছে বৃষ্টি।
জানলা খুলে দিয়ে বুকে ভরে নেবো ভিজে মাটির আতর। ভীষণ ইচ্ছে ছিলো তোর সাথে বৃষ্টি ভেজার। তোর সাথে কবিতা যাপনের, তোর সাথে গানের, তোর সাথে রঙ তুলি ক্যানভাসের। ইচ্ছেরা থাকে ইচ্ছে হয়েই। ‘কেউ কথা রাখে না, কেউ কথা রাখে নি’। একা একা কত কি যে ভাবি, এমন অনেক অর্থহীন লেখা, দিনলিপি, রোজনামচা, বিচ্ছিন্ন আবেগের টুকরো কথা, কত্তো কি। এইসব মিলেমিশে একটাই আরাধনা তৈরি করে হৃদয়ে। তোর বুকে মাথা রেখে বাঁচতে চায় অবুঝ মন।
এখন আমি বদলে গেছি অনেক। দায়িত্ব বেড়েছে অনেক বেশি। বলেছিলাম একদিন ঠিকই মুছে যাবো তোর জীবন থেকে, মন থেকে। আমাকে তখন আর মনেই পড়বে না। হয়তো আমার জন্য চোখের কোণে একটুও জলও আসবে না যেদিন আমি হারিয়ে যাবো এই পৃথিবী থেকে। অবহেলার নৌকোয় ভাসতে ভাসতে মেঘেরা হয়তো সেদিন অঝোর ধারায় ধুইয়ে দেবে আমার যত অপমান, অভিমান!
“তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে,
তারার পানে চেয়ে চেয়ে
নাইবা আমায় ডাকলে।”
____________
রিয়া রিয়া চক্রবর্তী।
আমাদের ভালোবাসা আর সম্মানে আজীবন বেঁচে থাকুন কবি রিয়া চক্রবর্তী।
অনুপ্রাণিত হলাম কবি সুমন আহমেদ ভাই।
youtu.be/ZjxTmYGwOss
কাপাসিয়া মেঘের চোখে কাজলের ঘনঘটা। জীবন হোক আনন্দঘন প্রিয় কবিবন্ধু।
বিশেষ ধন্যবাদ প্রিয় বন্ধু। ভাল থাকুন।
প্রাণ কেড়ে নিলেন কবি।
ধন্যবাদ আবু সাঈদ আহমেদ দা।
এইসব মিলেমিশে একটাই আরাধনা তৈরি করে হৃদয়ে। তোর বুকে মাথা রেখে বাঁচতে চায় অবুঝ মন। আপনার মন ভীষণ সরল কবি রিয়া দি।
আপনার মন্তব্যে আপ্লুত হলাম কবি সাজিয়া আফরিন দিদি ভাই।
জীবনানুভূতির অসাধারণ প্রকাশ কবি রিয়া আপু।
ধন্যবাদ কবি শাকিলা তুবা দি।
আপন জীবনের অনুভূতিগুলো শব্দে শব্দে অসাধারণ প্রকাশ। শুভেচ্ছা শ্রদ্ধেয় কবি রিয়া দিদি।
আন্তরিক শুভেচ্ছা প্রিয় কবি দা।
অন্যরা যা দেখে হিংসা করে সেটা নিয়েও হতাশ মানুষ। মানুষ নিজেকে নিয়ে খুব বেশি রকম সিরিয়াস, তাই হতাশাবাদ গ্রাস করে প্রায়ই। বাংলা সিনেমাগুলো এভাবেই তৈরি করা হয়, যেন দর্শক কে ভিকটিমের মত হতাশাবাদে আচ্ছন্ন করে। অবচেতনে গেঁথে যায় হতাশাবাদ, দু:খ বিলাসের আকাঙ্ক্ষা।
আমার চোখ সব সময়ই ভিন্ন কিছু দেখে। দেখলাম ছবিটা খুব সুন্দর, আয়নায় চোখটা যতটুকু দেখা যাচ্ছে সেটা আরো সুন্দর। রিয়া দেবীর জয় হোক।
সুন্দর মন্তব্য আসিফ দা।
প্রকৃতির সৌন্দর্যের রানী বর্ষা।
পোষ্টে ভাল লাগা।
আন্তরিক শুভেচ্ছা প্রিয় কবি দা।
কি অসাধারণ উপস্থাপনা…
দারুন লেগেছে পড়তে , বারবার মনে হচ্ছিলো কথা গুলো আমারই কথা ।
ধন্যবাদ দিদি
আন্তরিক শুভেচ্ছা প্রিয় কবি দা।