হত্যাকাণ্ডের তখনো কিছুটা সময় বাকি। সাদা শার্টের আস্তিন কনুই পর্যন্ত গোটানো শেষ, মগে আধ খাওয়া কফি। বহুকাল তেল না দেওয়া কাঁধ ছুঁই ছুঁই ধূসর এলোমেলো চুল, ভাবলেশহীন দৃষ্টিতে যেন তীক্ষ্ণ ছুরির ফলা। মধ্যবয়সী মানুষটার চেহারায় তবুও কেমন এক মায়া। দেখলেই বুকের ভেতরটায় শুধু হু হু করে।
ঘরময় দামী এক্সপ্রেসো কফির ঘ্রাণ আর সিগারেটের ধোঁয়া গৌধুলীলগ্নের আলো আঁধার যে পরিবেশ তৈরি করেছে তাতে সুইস নাইফ হাতে থাকলে যে কারোরই খুন করার জন্য হাত নিশপিশ করারই কথা। রফিক একটার পর একটা সিগারেট জ্বালাচ্ছে, আর জীবনানন্দের কবিতা পড়ছে। সামনের চেয়ারে হাত পা বাঁধা মুখ বন্ধ শিখা দেখছে আর অপেক্ষা করছে। এমন একটা পরিস্থিতিতে দুই ঘন্টা ধরে আটকে এভাবে আটকে থাকা কোন সহজ কথা নয়। কিন্তু বুঝা যাচ্ছে লোকটা কিছুক্ষণের ভিতরেই কিছু একটা করবে। লোকটার কাছে আর মাত্র দুইটা সিগারেট আছে, যারা চেইন স্মোকার তাদের কাছে সময় মতো সিগারেট না থাকাটা অনেক বিপদজনক। সেই হিসাবে দুইটা সিগারেট শেষ হতে দশ পনেরো মিনিট লাগার কথা।
আর মাত্র পনেরো মিনিট, তারপরই সব শেষ। ধারণা মতো শেষ সিগারেটা মাঝামাঝি জ্বলছে। নীরবতা ভেংগে লোকটা কবিতার বইয়ের থাকে চোখ না সরিয়েই জিজ্ঞেস করলো- “নাম কি?” কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে উত্তর না পেয়ে, শিখার দিকে তাকিয়ে দেখে বললো, ওহ তোমার তো মুখ আটকানো। এই বলে সে শিখার মুখ খুলে দিল।
তুমি চিৎকার করবে না জানি, সাহসী মানুষকে আমি পছন্দ করি। চিৎকার করার ইচ্ছা থাকলে তুমি আগে থেকেই হাত পা খোলার চেষ্টা করতে। যে এরকম পরিস্থিতিতে শান্ত থাকতে পারে সে অবশ্যই সাহসী, Am I right?
একথা বলেই লোকটা প্রচন্ড শব্দে হা হা হা করে হাসতে লাগলো। এই প্রথম শিখার ভিতরে প্রচন্ড ভয় লাগলো, এই লোকটা কোন স্বভাবিক মানুষের হতে পারে না। এই লোকটা গাছ থেকে মরিচ তোলার মতোই টুপ করে মানুষ মেরে ফেলতে পারে।
লোকটা ভীষণ বিপদজনক মনে হচ্ছে।
ধন্যবাদ…
আজ আপনার হাতে গদ্য উঠে এসেছে দেখে ভাল লাগলো কবি দা।
ধন্যবাদ…
এমন লোক কোল্ড ব্লাডেড মার্ডারার হয়।
ধন্যবাদ…
অবাক হয়ে দৃশ্যটি কল্পনা করলাম মি. রোমেল আজিজ।
ধন্যবাদ…