চিরকুট: ১০। তারিখ: ১৪ বৈশাখ ১৪২৬ বাংলা।
প্রিয় নির্ঝরিনী
পত্রের শুরুতে জানাই কুয়াশাচ্ছন্ন রোদ্দুরে অষ্ট পাপড়ি মেলে ফোটা উর্ধ্বমুখী রক্তবর্ণী কসমস ফুলের মাতাল করা সদ্য ঘ্রাণ বিলানো শুভেচ্ছা। ব্যস্তময় দিবার দিন ও রাত্রির সন্ধিক্ষণে সমুদ্রের তলদেশে ডুবে যাওয়া সূর্যকে সাক্ষী রেখে তোমায় স্মরণ করছি। কেমন আছো আমার আকাশের ধ্রুবতারা? আমি খুব ক্লান্ত ও মনমরা। আমি আর আগের মত নেই, হয়ত অনেকটা বদলেছি। বদলে যাওয়ার কারণটা বুঝি কারো দেওয়া অভিমান। পথহারা বিষণ্নতায় প্রাগুক্ত স্মৃতিগুলো শার্টের পেছন থেকে টেনে ধরছে আমায়। আমার বৃদ্ধা আঙুলের মন্থর স্পর্শ তোমার অধরে ছড়াবে হাসির প্লাবণ, সে ইচ্ছে ভেঙে গেছে কাঁচের দণ্ডে। গল্পের শেষে সবাই ফাঁকিতে মত্ত, কেউ দাঁড়াবে না গল্পের শেষে। তাই তো গানটা ভীষণ গাইতে ইচ্ছে করছে …
“পৃথিবীতে কেউ ভালো তো বাসে না
এ পৃথিবী ভালবাসিতে জানেনা!'”…..
নিঃস্বার্থে ভালবাসা ছড়াতে জানে কেবলি ফুল, তাদের কোন অহংকার নেই বা কাউকে অবহেলা করার ইচ্ছে নেই। বরং কখনো কখনো এই পুষ্প কারো জন্য অবহেলায় শুকিয়ে যায় কখনো ধূলোয় লুটিয়ে পড়ে। আমার ভালবাসার গগণ খুঁড়ে দেখি তুমি নামক অনুভূতি ছাড়া কিছুই নেই। তবুও তুমি ভাবছো এ আমার মিথ্যেমুখ।
তুমি জানো না, কতটা ভালবাসলে তোমাকে হারানোর শংকায় কাটে বিনিদ্র রাত হিম তটিনী। হয়ত হৃদয় ভাঙার শব্দ দূষণে আমি দূষিত তোমার শহরে, তুমি স্মৃতির অনলে করে যাও দগ্ধ। তুমি বুঝবে সেদিন যেদিন আমার জন্য ভিজবে তোমার উৎসুক অক্ষি। শেষ সন্ধ্যা দ্বীপের হিম বাতাসে আমার জলে ভেজা চোখ খোঁজে তোমার অমলিন হাসি, জানো কি ভাল লাগে ওই সলাজ হাসির তুফান। তুমি কার আকাশে উড়াও ঘুড়ি আমার অগোচরে?
ওহে আমার ছায়ামানবী! তোমার নীল কথনের মাত্রারিক্ত দহনে আমি হয়েছি বড্ড নীল বিষাক্ত।
পত্রের জবাবের আশায় অপেক্ষা করেছি বহুদিবস। তুমি না ধরা দিলেও তোমার মুখ ভাসে আমার ধূসর পাণ্ডুলিপির পাতায় পাতায়। তোমার নামে লিখা হয় অসংখ্য চিরকুট। আমি তোমাকে নিয়ে লিখা কাগজের চিরকুটের শব্দগুলো যেন চুপিসারে গান গাই আমার কর্ণকুহরে। ছদ্মবেশী পাগল তোমাকে ভালবাসে বলেই আজও কাউকে ভালবাসেনি। শেষ প্রহরের ক্লান্ত প্রহরী আমি তোমার অপেক্ষায় এখনো থাকি, শুধু তোমাকে একটাবার দেখার জন্য। স্মৃতির উষ্ণ দ্বীপে তোমার হাতের আঙুলের ছাপ লেগে আছে আমার গালে। আজও খুঁজি সে স্পর্শ তোমার শূন্যতার আড়ালে। কুয়াশার ভীড়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম অনেকক্ষণ হৃদয় নামের মহাসাগরের তীরে, সে সাগরের জলোচ্ছ্বাসের আঘাতে আমি লণ্ডভণ্ড তোমার ঠুনকো আঘাতে।
নীল গল্পের ছেড়া পাতাতে তোমার আঁচড়ে গল্পটা রঙিন হয়েছিল, গল্পটা শুধু তোমার আমার। দাপিয়ে বেড়ানো প্রজাপতির মত তোমার কাছে বারংবার ছুটে আসি রোদ্দুরে তোমার শহর ছুঁতে। মনের গোপন বার্তা তোমার ঠিকানায় পৌছে ঠিক, তবে মনের ঠিকানায় তার বুঝি আজও কোন দিশে মিলেনি। নিরাশায় চলছে জীবনের নৌকা মাঝ সমুদ্রে, নৌকাটি আমার দিকশূন্য, সে তার ঠিকানা খুঁজে পেতে চায়, সে তোমাকে নিয়ে জয় করতে চায় বিশ্ব অহংকারকে।
লিখতে লিখতে পত্রের শেষ প্রান্তে আমি উপনীত, মাগরিবের আযান আমায় ডাকছে, সে আযানের ডাকে প্রার্থনারত অবস্থায় চোখের শীতল অশ্রু ঝরিয়ে মনিবের কাছে তোমাকে চাইবো। মনের অনেক কথাই এখনো বাকি, সেগুলো অন্য কোন দিন তোমায় শোনাবো।
ভালো থেকো ওহে আমার জীবনের চিরকুটের বিপরীত চরিত্র।
ইতি –
ভিনদেশী তারাদের বন্ধু।
সুন্দর মনোমুগ্ধকর চিঠি। ভাষার প্রাঞ্জলতা মন ছুঁয়ে গেলো ।
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় রুকশানা হক,সালাম ও শুভেচ্ছা জানিবেন। আপনার সুন্দর মন্তব্য আমার জন্য আর্শীবাদ স্বরূপ।
এমন চিঠি বারবার পড়লে ও আর একবার পড়ার রেশ রয়ে যাবে। শুভকামনা রইলো। মেঘ প্রিয় বালক, ভাই।
ভালবাসা জানিবেন প্রিয় আদেল,চিরকুটের প্রেমে পড়েছেন মন্তব্য পড়লেই অান্দাজ করা যায়। ভালবাসা নিরন্তর।
চিঠি গুলোন তো সুন্দর হয় বটেই; পাশিাপাশি এখানে অসংখ্য উপমা থেকে শেখার অনেক কিছু আছে। ভালো লাগা প্রকাশ করছি মি. মেঘ প্রিয় বালক। ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ দিয়ে মাননীয় ব্লগ মোডারেটরকে ছোট করবোনা,আপনি কাল থেকে আমার আইডি ঠিক করার চেষ্টা চালিয়েছেন,আপনার এ পরিশ্রম বৃথা যাবেনা এ গ্যারান্টি আমার। শব্দনীড় আপনার পরিশ্রমেই প্রসারিত হচ্ছে সবার মাঝে। ভালবাসা ও লাল গোলাপের শুভেচ্ছা জানিবেন।
লাল গোলাপের শুভেচ্ছা আপনাকেও মি. শাহাদাত হোসাইন।
নিঃস্বার্থে ভালবাসা ছড়াতে জানে কেবলি ফুল, তাদের কোন অহংকার নেই বা কাউকে অবহেলা করার ইচ্ছে নেই। বাহ্। বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন আজও মেঘ প্রিয় বালক ভাই।
ধন্যবাদ সুমন আহমেদ ভাই,হাজার হাজার মাইল কিলোমিটার দূর থেকে আমি লিখি আপনারা পাঠ করে সুন্দর মন্তব্য করেন,সত্যিই আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য পড়ে লিখার আগ্রহ আরো বেড়ে যায়।
আজকের চিরকূটে মাতাল হলাম বালক ভাইজান। ভালোবাসা নেবেন।
প্রিয় সৌমিত্র,বরাবরের মতই আজকের মন্তব্যও পড়ে সুন্দর ভালো লাগা কাজ করছে। বকুলের ঘ্রান ছড়ানো শুভেচ্ছা জানিবেন।
“পৃথিবীতে কেউ ভালো তো বাসে না
এ পৃথিবী ভালবাসিতে জানেনা!'”…..
বড় দাগা পেয়ে বাসনা তেজেছি
বড় জ্বালা সয়ে কামনা ভুলেছি
অনেক কেদেছি কাঁদিতে পারিনা
বুক ফেটে ভেঙ্গে যায় মা….
বহুদিন পর এই সুর কাব্যটি স্মৃতিতে ফিরে এলো দাদা।
ধন্যবাদ প্রিয় দিদি রিয়া,চিরকুট পাঠে স্মৃতির কাব্য তুুুুলে ধরেছেন, অংশটুকু বেশ ভালো লেগেছে,একেবারে হৃদয় স্পর্শী লাইন।
ভালো থাকুক আপনার জীবনের চিরকুটের এই বিপরীত চরিত্র।
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় শাকিলা তুবা,লাল গোলাপের শুভেচ্ছা জানিবেন।
বালক ভাই। বড়দের মতো লিখে ফেলেছেন দেখছি।
এই মাঝে মাঝে একটু আকটু বড়দের মত হয়ে যায় আর কি! ধন্যবাদ চিরকুট পাঠে ও মন্তব্যে
অসাধারণ চিঠি ভাইয়া।
ধন্যবাদ প্রিয় সাজিয়া আফরিন,শুভেচ্ছা জানিবেন,ভালবাসা নিরন্তর।