চিরকুট: ১৫। তারিখ ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৬ বাংলা
এই শহরের বিলবোর্ডে আমার প্রেমের বিজ্ঞাপন।
প্রিয় তিলোত্তমা।
জৈষ্ঠ্যের এ ঘুমন্ত গভীর রাত্রির শেষ প্রহরে সাদা রঙের হাসনাহেনা ফুলের ভাঁজে লুকিয়ে পড়া রাত্রিভর পবিত্র ঘ্রাণের শুভেচ্ছা নিও পত্রারম্ভে। কেমন আছো সে প্রশ্ন আজ আর তোমার আকাশে প্রজাপতি হয়ে করলাম না। আলহামদুলিল্লাহ আমি বেশ ভালো আছি। ব্যস্ত এ শহরে ব্যস্ততাকে তস্কর করে তোমাকে আর নিয়মিত লেখা হয় না।
এক জীবনক্ষুধা,
আমিও জীবন দেখেছি,দেখেছি জীবনের স্থবিরতা আর অস্থিরতা, নতুন ভাষা পেয়েছে বহু জীবনরা, আমি ছাড়া। পৃথিবী নামের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সমাজরূপি আদালতের কাছে প্রতিনিয়ত প্রশ্নবিদ্ধ আমি। জানালার পাশে বসে তাকিয়ে থাকাটা এখন আর গুরত্ব পায়না আমার কাছে, কারণ জানালার ওপাশে যে এখন কেউ নেই। গতকাল চাঁদটা ছিল, আজ তো তাও নেই। এই শহরে অনেকদিন জোনাকিদের সাথে সাক্ষাত হয়নি। শপিংমলের চত্বরে ছোট গাছের ডালে ডালে কৃত্রিম টিপটিপ আলো জোনাকদের কথা মনে করিয়ে দেয়।
হে সমুদ্রবিলাসী,
তোমার মত আমিও সমুদ্র ভালবাসি। এক রাশি নীলচে সমুদ্রের তলদেশে কত কি রহস্য লুকিয়ে, আমি যে ওদের রহস্য ভেদ করতে পারিনা। সমুদ্র যেন বিশালত্বের মুগ্ধময়ী ছবি, ওর দিকে তাকালে মন ভালো হয়ে যায় আমার। রাতের শান্ত আঁধারে চেরি ফুল যেন এলোকেশের মত দুলছে। আমি আকাশে গাঁ বেয়ে নামা অাঁধারের মিছিল দেখছি।
সেই প্রিয়মানবী,
এই শহরের বিলবোর্ডে আমার নামে বিজ্ঞাপন তোমাকে খামছে ধরে না?
দূর থেকে আমি ঊষ্ণ নিঃশ্বাস ফেলছি তোমার ঘাড়ে, তুমি কি অনুভব করোনা। মিথ্যাবাদিতার রন্ধ্রে মিথ্যেবাদী চোখ এখনো স্বপ্ন দেখায়। নতুন ঘ্রাণের মাত্রা আর ঘেঁটেঘুঁটে খুজতে মন চাইনা। পুরনো ঘ্রাণের রেশ এখনো কাটেনি, আসলে আমি যেমন ভেবেছি তোমায়, তুমি আসলে তেমন নও।
অকারণে সবকিছু কি ভুলে যাওয়া যায়?
কবিতার ট্রামলাইন,
হঠাৎ কখনো তোমায় নিয়ে কোন কবিতার লাইন মনে হলে,পকেটের কাগজ কলম হয়ে যেও তুমি,আমি কবি হয়ে যাবো! আজও ব্যাথায় পতিত বুকে কেউ কেউ সুখ বিলাই তা যেন শুধু চোখের ক্ষুধা। বারবার ব্যর্থ হয়েছি তবে আমি হেরে যেতে চাইনা, আমি জিততেই চাই তোমার ব্যয়বহুল ট্রয় নগরীতে।
থাক সে ইচ্ছেগুলো গোপন……..
উমেদার ফুলের তোড়া,
প্রতীক্ষায় ঝুলে থাক সে, আমিও যে তোমার অপেক্ষা ভেবে বেশ ভালো লাগে। এই শহরের ভালবাসার মিছিলে আমার হাত ধরুক কেউ, কেউ হাসি হয়ে যাক আমার শুকনো ঠোঁটে। মন বলে খোঁজও প্রেম প্রস্তরে,নির্জনতার বুনোসুরে তুমিও পেয়ে যাবে প্রিয়মুখ। একদিন সুকোমল মাটির ঘ্রাণে আমি তুমি হেঁটে যাবো প্রিয় মেঠোপথ ধরে।
শোন এ প্রেম নিখাদ নির্ভেজাল করেছি আমি, তুমি জলঘোলা করোনা।
আমাকে প্রেমের গভীরে টেনে নিয়ে গেছে সুতোহীন কবিতা, সে কবিতার মায়ার জাল আমাকে বন্দি করে। মনের ঘরের ঝুলকালি গুলো ভেঙে ফেলবো কি দিয়ে? তুমি ছাড়া যে এ ঘরে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে মাঝে মাঝে।
নিভন্ত অন্ধপ্রদীপ,
অন্ধ ঘরে জ্বালবো প্রদীপ, রাতগুলো এখন আর বিষণ্ন লাগে না। ভাগ্যিস কোন কলসে ধরে রাখেনি চোখের পানি, অশ্রুসিক্ত সে চোখের পানি দেখলে তুমিও কেঁদে ফেলতে। আমি জানি রিক্ত কবির বুকে নামে তপ্ত কবিতা, তবে পালকবিহীন বিহগের মত না। ব্যর্থতার সাইনবোর্ড থেকে আমার নামটা মুছে ফেলবো কোন একদিন। শোনো ওহে প্রিয় ইরা, ভালবাসা দরজা খুলে প্রবেশ করেনা, ভালবাসা বাতাসের মত ঢুকে পড়ে।
হে অসত্যালাপী,
জানি মাথার পিছনে ঝুলছে মৃত্যু নামক নোটিশটা, তবুও কত স্বপ্ন দেখা এই স্বপ্নের শহরে। সব ছাপিয়ে জন্ম-মৃত্যুর এ নির্মমতা আর আনন্দ আমাকে ভাবিয়ে যায়, এটা যে চিরন্তন সত্য। বিস্মৃতির আড়ালে থেকে যায় কত না বলা কথা, সে কথা তুমি মানবী জানতে চাওনি, ইশারায় বুঝতেও চাওনি। একদিন ঠিক ফিরে যেতেই হবে চিরস্থায়ী গন্তব্যে, যেখানে আর কোনদিন মৃত্যু হবেনা আমার। নিজেকে শুধরে নেবার যুদ্ধে, প্রতিনিয়ত জয়-পরাজয়ের লড়াই।
এ শহরের বিলবোর্ড
তোমার শহরের বিলবোর্ডে প্রেমের বিজ্ঞাপন আমার, সে বিলবোর্ড কি তোমার নজরে পড়েনা? চার পয়সা দামি এ চিরকুট লেখকের চিঠি তোমার মনের বিলবোর্ডে কবে জায়গা পাবে?
জমাট বাঁধা রক্ত দিয়ে তোমার নামে বিলবোর্ড করেছি রঙিন।
রগ কেটে সেলাই করেছি সে বিলবোর্ডের পোস্টার। তুমি চাইলে সেখানে বুক বিদীর্ণ করা ভালবাসার হৃৎপিণ্ড রাখবো। তোমার ভালবাসার বৃষ্টির অপেক্ষাতে আমার হৃদয়ের মরুভূমি। আজ না হয় কিছু কথা থেমে থাক। তুমি যদি স্বপ্ন দেখতে পারো, তবে আমার দেখতে আপত্তি কোথায়? আমি না হয় কারো স্বপ্নবাজ হয়েই থেকে যাবো এই কোলাহলপূর্ণ অন্ধকার শহরে।
ভালো থেকে হৃদয় সমুদ্রের সমুদ্রবিলাসী।
ইতি
তোমার গোলাপ বাগানের কর্মচারী।
অসম্ভব রকমের সুন্দর একটি জীবন কাব্য উপহার দিয়েছে মি. শাহাদাত হোসাইন। কত কত রকমের উপমা আর কথার সমারোহ। বাপরে … লিখতে হলে অনেক কথা জানতে হয় দেখছি। অভিনন্দন রইলো। গ্রেট। আজকের দিনের সেরা গদ্য।
ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগ মোডারেটর। আজকের দিনের সেরা গদ্য মন্তব্য পেয়ে চিরকুট স্বার্থকতা খুজে পেয়েছে। ভালবাসা জানিবেন নিরন্তর।
ইতি গোলাপ বাগানের কর্মচারী'র মনোকথা আজ কিন্তু সুন্দর ফুটিয়েছেন শাহাদাত ভাই।
শুভেচ্ছা জানিবেন সুমন ভাই। মন্তব্য ভালবাসায় সিক্ত হলাম। ভালবাসা নিরন্তর।
পড়লাম। (এই একটি শব্দ কখনও মন্তব্য হতে পারে না)
শ্রেফ এই একটি শব্দ দিয়ে আপনার পোস্টের মন্তব্য শেষ করে দিতে পারতাম। কিন্তু বলা হতো না, আজকের পোস্ট ভীষণ সুন্দর হয়েছেন। সুন্দর যে লিখেছেন সেটা আপনিও জানেন। শুভেচ্ছা।
প্রিয় দিদি রিয়া,আমার পড়লাম মন্তব্য নিয়ে আপনি অনেক অভিমান প্রকাশ করেছেন। এই পড়লাম মন্তব্যের পিছনেও রহস্য রয়েছে। সত্য কথা বলতে আমি এই পড়লাম মন্তব্য সে সব পোস্টেই করি যেসব পোস্ট কয়েকটি শব্দের কারনে মন্তব্য করার ইচ্ছা রাখিনা বলে। যে কোন লিখায় এমন শব্দ বা এমন বাক্য প্রয়োগ করা ঠিক মনে করিনা আমি যে সব শব্দ শুনতে খারাপ লাগে। অভিমান করবেন না দিদি। আর এই পড়লাম মন্তব্যের অর্থও এমন বুঝবেন না যে না পড়েই মন্তব্য দিয়েছে। আমি আপনার পোস্ট পুরোটাই পড়েছি। আশা করি বোঝাতে পেরেছি।
আজকে তো মন জিতে নিলেন শাহাদাত ভাই। বিশেষ ভালোবাসা।
সরি শাহাদাত হোসাইন ভাই। আপনি আমার লেখাটি পড়েন নাই। আমি লক্ষ্য করেছি ৩ মিনিটে আপনি ৫টি পোস্টে মন্তব্য করেছেন। আগামীতে আপনার জন্যও পড়লাম কথাটি আমার উপহার থাকবে। ভালোবাসা সহ।
প্রিয় সৌমিত্র,ভবিষ্যৎ পোস্টে আপনার পড়লাম এমন মন্তব্য দেওয়াকে অগ্রিম সাধুবাদ। পড়লাম মন্তব্য তখনি দেই,যখন লেখায় কিছু শব্দ আমার কাছে খারাপ মনে হয়। লেখায় এমন কোন শব্দ প্রয়োগ না করাই ভালো আমার মতে যে সব শব্দ শুনতে খারাপ লাগে। কত মিনিটে কতটি মন্তব্য দিয়েছি এমন কোন হিসাব আমি করিনি। নেটওয়ার্ক দ্রুত হওয়ার কারনে হয়তো আমি পোস্ট দ্রুত পড়েছি এটি আমার মনে আছে। আমি সময় দেখে মন্তব্য করিনি। আর দ্বিতীয় কথা হলো পড়লাম মানে এই না যে আমি পোস্ট পড়িনি। আমি পোস্ট না পড়ে মন্তব্য দেই না। ভালবাসা সহ শুভেচ্ছা জানিবেন প্রিয়। মন্তব্য দেওয়া না দেওয়া আপনার স্বাধীনতা। অপার বাংলার প্রতি ভালবাসা রয়েছে আমার মনে। একদিন আমি যাবো সে শহরে। সেখানের মানুষদের কথাবার্তা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।
মনযোগ দিলাম আপনার লিখায়। আল্লাহ আপনার মনন এবং প্রজ্ঞায় বরকত দিন।
ধন্যবাদ প্রিয় সাজিয়া আফরিন। আমিন। একজন লেখকের জন্য এমন মন্তব্য এই প্রথম পড়লাম। আপনার প্রতি শ্রদ্ধা আরো বেড়ে গেলো। ছোট ভাইয়ের ভালবাসা জানিবেন প্রিয় বড় আপু।
শুভেচ্ছা জানবেন কবি ভাই।
ধন্যবাদ প্রিয়, ভালবাসা নিরন্তর।
শব্দনীড়ে এত কবিতার ভীড়ে কবিতা ভিন্ন অন্য কিছু দেখলে মনটা ভরে যায়।
ধন্যবাদ।
ভালবাসাময় মন্তব্যে শিক্ত হলাম। নবপাঠক ভালবাসা ও শুভেচ্ছা জানিবেন।
বিলবোর্ডে আমাদের প্রেমের বিজ্ঞাপন ভাস্বর হয়ে থাক।
ধন্যবাদ আবু সাঈদ আহমেদ, শুভেচ্ছা জানিবেন। ভালবাসা নিরন্তর।
তোমার হৃদয়ের গোলাপ বাগানের বিনা বেতনের মালী।
হুম, খুব চমৎকার লিখেছেন। প্রতিটা স্তবকই খুব সুন্দর করে আবেগগুলি ফুটিয়ে তুলেছে।
ভাল লাগল, ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ প্রিয় যুনাইদ,ভালবাসা জানিবেন,সুন্দর মন্তব্য মানে লিখার প্রতি ভালবাসা রেখে যাওয়া।
চমৎকার অনুভূতির শৈল্পিক প্রকাশ মুগ্ধ করলো। জীবনের এতো সব কোলাহল কাব্যিক উপমায় গাঁথা না হলে হয়তো অসম্পূর্ণ থেকে যেতো কাব্য পাঠের আনন্দ। চমৎকার !
শ্রদ্ধেয় প্রিয় কবি,আপনার মন্তব্যটি আমার নজরের অগোচলে রয়ে গেছে জানাই ছিলোনা। ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এই মহা ভুলটি। সত্যি আমি খেয়াল করিনি। আপনার করা মন্তব্যের জবাব দিবো না এটা কখনো গ্রহনযোগ্য নয় আমার কাছে। বরাবরের মতই আপনার মন্তব্য আমার জন্য আর্শীবাদ স্বরূপ। আমি আবারো বলছি বিষয়টি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখে অবুঝ লেখককে ক্ষমা করবেন প্রিয় শ্রদ্ধাভাজন। ভুল হয়ে গেছে অনিশ্চাকৃত।
কখনো কখনো এমনটা হয়ে যায়। এ নিয়ে মন খারাপের কিছু নেই ভাই। শুভকামনা সবসময়ই থাকবে।
শেষ করলাম বেশ কয়েক বার তবু আবার ইচ্ছে করছে আর একবার পড়ি, চিঠি লেখার তেমন কেউ নেই বা লেখার বয়স এখন আর নেই। থাকলে কপি করে দিয়ে দিতাম। শুভকামনা রইলো প্রিয়, শাহাদাত হোসাইন।
ধন্যবাদ ওহে প্রিয়। মন্তব্য পড়ে খুশী হলাম পাহাড় সমান।ভালাবাসা নিরন্তর।