ছড়ার একমাত্র ছন্দ স্বরবৃত্তচালের নতুন এক পদ্যরীতি হচ্ছে ‘শামেরিক।’ এর চরিত্রগত কাঠামো হবে স্রেফ ছড়ারই আদলে।
শামেরিক মূলত ব্যঙ্গাত্মক, রসাত্মক, ঘৃণাত্মক, প্রতিবাদী ও অর্থবোধক ছড়া যা কক+খখ+কক চালের। এর ১ম দু’পঙক্তি ও শেষ দু’পঙক্তির মাত্রাসংখ্যা হয় মোট ১৪ বা ১৫টি করে।
কক চালের এই ৪পঙক্তিতে চারমাত্রার তিনটি করে পর্ব এবং ২ বা ৩মাত্রার ১টি করে অতিপর্ব থাকে। আর খখ চালের ৩য় ও ৪র্থ পঙক্তিতে চারমাত্রার দুইটি করে পর্ব থাকে যাদের মোট মাত্রাসংখ্যা হয় ৮টি করে।
১ম, ২য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ পঙক্তির অন্ত্যমিল থাকে হুবহু একই ও নিখুঁত। আবার তুলনামূলকভাবে ও অপেক্ষাকৃত ছোট ৩য় ও ৪র্থ পঙক্তির অন্ত্যমিলও হয় আরো ভিন্ন ও নিখুঁত।
আবার খখ চালের ৩য় ও ৪র্থ পঙক্তির অন্ত্যমিল মুক্তস্বর বা বদ্ধস্বরে হলেও কক চালের অন্ত্যমিল হবে সবসময়ই মুক্তস্বরে।
আয়ারল্যান্ডের লিমেরিকো শহরের নামের সাথে মিল রেখে লিমেরিক এর নামকরণ করা হয়। কিন্তু লিমেরিকের সাথে সঙ্গতি রেখে এটির নামকরণ “শামেরিক” করা হলেও লিমেরিক থেকে এটি অনেকটাই ভিন্ন। কারণ লিমেরিকে অন্ত্যমিল, স্বর, মাত্রা, পর্ব, অতিপর্ব ইত্যাদি কাঠামোগত সুনির্দিষ্ট হিসেবের বালাই যেমন নেই তেমনই তাতে ব্যাঙ্গাত্মক চরিত্র থাকলেও প্রতিবাদী ও ঘৃণাত্মক চরিত্র থাকে না মোটেই। এর নামটি অবশ্য আমারই দেয়া।
ছড়াকাররা ভাল্লাগলে আপনারাও শামেরিক লেখা শুরু করে দিতে পারেন ।
এবার দেখুন আমার ২টি শামেরিক:
১. #নেতা
শাহ আলম বাদশা
কেমন নেতা, বিপদ এলে কর্মীরা যায় পালিয়ে
আবার আসে তোমায় যখন দুশমনে যায় জ্বালিয়ে
হাত-উঁচিয়ে ঢোলটা বাজায়
জাতে ওঠার খোলটা বাজায়
তোমায় কেমন যায় ভুলিয়ে শ্লোগান ও তালিয়ে!
দুধের মাছি, এদের আগে নাও ওরে নাও ঝালিয়ে।।
২. #চিল ও কান
শাহ আলম বাদশা
লোকটা এসে খবর দিলো কান নিয়েছে চিলে
তাই না শুনে আমারতো ভাই চমকে ওঠে পিলে।
কানহারালে শুনবো কীসে
পাই না ভেবে হারাই দিশে
চিলটা কোথায়? চলেই গেছে অইদূরে চাটখিলে।
কানহারিয়ে কাঁদতে থাকি চোটটা যে পাই দিলে!!
জানলাম।
ধন্যবাদ
লিমেরিক এবং শামেরিক বিষয়টি বুঝলাম বাদশা ভাই।
২টি শামেরিক অনন্য লিখনের পরিচয় পাওয়া যায়। অভিনন্দন জানাই কবি।
বিদেশী লিমেরিককে আজীবন অনুসরণ না করে বাংলাকরণ কি ভালো নয়? এখন মৌলিক কিছু হয়ে গেল। ধন্যবাদ
সঠিক বলেছেন।
জানলাম অনেক কিছু
শুভকামনা থাকলো।
ধন্যবাদ অশেষ
জানলাম এবং ভাল লাগল।
ভাল্লাগায় ধন্য হলাম
কবিতায় এতো হিসেব কষতে আমার ভালো লাগে না । আজকাল একদল ছন্দকে অস্বীকার করেই চলছে – তবু ছন্দ যখন কবিতা শাসন করে মনে হয় একটা নির্দিষ্ট ছকে বন্দী হয়ে গেলাম । তবে আমি কোনো দলে নেই । ছন্দ থাকুক সেও ভালো না থাকলেও যদি কবিতা হয়েই যায় সেও মন্দ কি !
কিন্তু আপনি বেশ খেলতে পারেন কবিতা নিয়ে । ভালো লাগল । শুভেচ্ছা জানবেন ।
হা হা, নাচের, হাঁটার, হাসির, শিশুর কান্নার এমনকি বৃষ্টিরও মনকাড়া ছন্দ আছে বলেই তা ভাল্লাগাগে। তাই কবিতায় ছন্দ নাথাকার সুযোগ নেই। তাহলে আর কবিতা হবে না, হবে গদ্য। ধন্যবাদ