বর্ণশূন্য শ্বাস বাস

বর্ণশূন্য শ্বাস বাস

পারমিতা! আছ পারমিতা!
দেখ, বিকেলের রোদ কমছে।
জানলায় বসে কা কা ডাকা কাক
রাজকীয় বেশ ফেলে ফুটপাতে।

শীত কেন আজ আমাকেই খোঁজে
জুলপিতে রূপো ক্যাসিনো সাজায়।
আছ পারমিতা! পারমিতা আছ!
বুকের আঁচড়ে টিটেনাস থাবা।
মন নামে নাকি কস্তুরী বাঈ
ঘুঙুর বাঁধছে গোলাপ দুপায়ে।
পারমিতা! কই পারমিতা আছ!
মর্গ টেবিলে সংখ্যা হয়েছি।

অক্ষর শুধু হিজিবিজি দাগ
কাটে একমনে কালো পর্দায়।
রাস্তাটা কেন শ্যাওলা পিছল
ছোটবেলা টুকি দিয়েই পালায়।

পারমিতা! প্লিজ শোন পারমিতা!
শ্বাস চলে গেলে ভয় পাই জান!
হিসেবের খাতা আগুনে পুড়েছে
পারমিতা নিশি ডাকে যে মিলায়।

সৌমিত্র চক্রবর্তী সম্পর্কে

পরিচিতিঃ জন্ম বিহারের এক অখ্যাত বনাঞ্চলে বাবার চাকরীস্থলে। রসায়নে স্নাতকোত্তর এবং ম্যানেজমেন্ট পাশ করে কিছুদিন সাংবাদিকতা। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারী উচ্চপদস্থ কর্মচারী। একাধারে নাট্যকার, কবি এবং গল্পকার। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, পুস্তক পর্যালোচনা, বিভিন্ন ধরনের লেখা ছড়িয়ে আছে দেশ বিদেশের অসংখ্য পত্র পত্রিকায় ও সংবাদপত্রে। উৎপল দত্ত সহ বহু বিখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্বের কাছে শিখেছেন থিয়েটার। বহু বিচিত্র ও ব্যাপ্ত ময় তাঁর জীবন। বন, জঙ্গল, পশু, পাখি, বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে তাঁর দীর্ঘকালের নিবিড় ও অন্তরঙ্গ পরিচয়। কবিতা ও বিভিন্ন লেখা লেখিতে তিনি মস্তিস্কের থেকে হৃদয়ের ভুমিকাকে বড় করে দেখেন। কবিতা, গল্প, নাটক এবং মুক্তগদ্য মিলিয়ে এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা নয়। প্রকাশিত গ্রন্থগুলি হলো বইছে লু, থিয়েটার কথা, তিতলিঝোরা, নীলপাখিকে উড়ো চিঠি, রাত্রি আমার নৈশপ্রিয়া, ব্রিজের নীচে বৃষ্টি, ২ একাঙ্ক, প্রতিলিপি এবং বেবুশ্যে চাঁদ, খণ্ড ক্যানভাস। ইতিপূর্বে অঙ্গন সহ কয়েকটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। বর্তমানে অক্ষর বৃত্ত পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। নেশা ফটোগ্রাফি ও ভ্রমণ।

10 thoughts on “বর্ণশূন্য শ্বাস বাস

  1. 'পারমিতা! কই পারমিতা আছ! মর্গ টেবিলে সংখ্যা হয়েছি।' পারমিতা কথন অসাধারন। :)

  2.  

    পারমিতা! প্লিজ শোন পারমিতা!
    শ্বাস চলে গেলে ভয় পাই জান! — চমৎকার 

  3. রাস্তাটা কেন শ্যাওলা পিছল
    ছোটবেলা টুকি দিয়েই পালায়।

     

    * অসাধারণ বাণীবিন্যাস…

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।