যুদ্ধ ১০ শেষ পর্ব

27568 আজ যুদ্ধ সম্পর্কিত আমার লেখার শেষ দিন। এর মধ্যেই এই লেখা সম্পর্কে বহু ফোন পেয়েছি। হুমকি পেয়েছি লেখা বন্ধ করার জন্য। ফেসবুক একবার বাহাত্তর ঘন্টার জন্য ব্লক করেছে। এখনো পর্যন্ত অ্যাকাউন্ট রেস্ট্রিকটেড করে রেখেছে ওরা যাতে বেশী মানুষের কাছে এই লেখার নোটিফিকেশন না যেতে পারে। কিন্তু সেদিন বলেছিলাম সেই বিখ্যাত পুরুষের মহান উক্তি আমার লাইটহাউস। শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, “তোমরা আমাকে দাবায়ে রাখতে পারবা না।” তাই লেখা বন্ধ করি নি। ফলস্বরূপ পেয়েছি অসংখ্য পরিচিত, অপরিচিতের সমর্থন। তাঁদের অনেকেই আমাকে বহু তথ্য যুগিয়েছেন, যা আমার অজানা ছিল। আজ সকালেই বন্ধু সুভাষ বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করে অনেক অজানা তথ্য জানালেন আর জানালেন দু হাত তুলে সমর্থন। এই সব প্রশ্রয় সম্বল করে আমি এগিয়ে যাই। এই ভালোবাসাই আমার পুরস্কার। আমার আর কোনো সরকারি পুরস্কারের দরকার নেই।

274572 ইতিহাস বলছে ১৯৯১ থেকে ২০০২ পর্যন্ত যুদ্ধ হয়েছে ৭৯ টি এবং ২০০৩ থেকে ২০২১ পর্যন্ত যুদ্ধ হয়েছে ১১৬ টি। এই সব যুদ্ধের মধ্যে অধিকাংশই ছোট ছোট দেশের নিজেদের মধ্যে বড় শক্তিধর দেশের উস্কানিতে বা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সাহায্যে সংঘটিত হয়েছে। আর এদের মধ্যে বেশ কিছু যুদ্ধ এখনো চলছে। মানব সভ্যতায় যুদ্ধের ইতিহাস বেশ প্রাচীন। বলা যায় পুরাতন প্রস্তর যুগ থেকে নূতন প্রস্তর যুগে উন্নীত হওয়ার সময় থেকেই বিভিন্ন গোষ্ঠীর শিকারের তাগিদে এলাকা দখলের লড়াই থেকেই বৃহৎ যুদ্ধের সূচনা। আর সেই থেকে ঠিক কত যুদ্ধ হয়েছে তার সঠিক হিসাব কেউ দিতে পারবেন না। তবে যে কোনো যুদ্ধের পিছনে আছে অনন্ত অধোগামী লোভ। এখনো যে সব যুদ্ধ চলছে তার পিছনে একই কারণ।

যে কোনো দেশে এক‌টি ভোট সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পরে যে হারজিতের বিশ্লেষণ হয় তাতে যেমন কোনো এক‌টি কারণ থাকতে পারে না, যুদ্ধের ক্ষেত্রেও ঠিক একই ব্যাপার। কোনো যুদ্ধ মাত্র এক‌টি কারণের উপরে নির্ভর করে হয় না। ছোট বড় অসংখ্য কারণ, অসংখ্য স্বার্থ তার পিছনে কাজ করে। বর্তমানে যে যুদ্ধটি সর্বত্র আলোচিত হয়ে চলেছে তা হলো রাশিয়া – ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধের পিছনেও আছে অসংখ্য কারণ। সোভিয়েত ইউনিয়ন থাকাকালীন তার সঙ্গে পশ্চিমী শক্তির ঠান্ডা লড়াই চলছিল এবং যার পরিণতিতে সোভিয়েত সংঘ ভেঙে যায় এ কথা আগেই বলেছি। সেই সোভিয়েত থাকাকালীন সময়ে ১৯৫৪ সালে তৎকালীন সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট নিকিতা ক্রুশ্চেভ তাঁদের রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাজের সুবিধার জন্য রাশিয়া প্রদেশ থেকে ভেঙে ক্রিমিয়াকে ইউক্রেন প্রদেশের সঙ্গে সংযুক্ত করেন। সোভিয়েত ভেঙে যাওয়ার পরে দেখা যায় তার সর্ববৃহৎ প্রদেশ রাশিয়ার চারদিকে যে সব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের সৃষ্টি হলো সেগুলি প্রায় সবই NATO জোটভুক্ত দেশগুলির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। আর সোভিয়েতকে ভয় পাওয়া পশ্চিমী শক্তির জোট সোভিয়েত ভেঙে যাওয়ার পরেও রাশিয়াকে ভয় পেতে শুরু করল, তার একমাত্র কারণ দেশটির আয়তন এত বড় এবং সেখানে থেকে যাওয়া প্রাক্তন সোভিয়েতের অস্ত্রভাণ্ডার এতটাই বেশী যে NATO জোটের আশংকা হয়েছিল সোভিয়েত ভেঙে যাওয়ার পরেও বাকি পৃথিবীর উপরে তাদের আধিপত্য বিস্তারের পরিকল্পনা সম্ভবতঃ কার্যকর হতে বাধা দেবে রাশিয়া। ফলস্বরূপ রাশিয়ার চারপাশে একের পর এক অস্ত্র ও সেনাঘাঁটি তৈরী করে দেশটিকে মানসিক চাপের মধ্যে রাখার চেষ্টা করতে থাকল NATO। এদিকে ২০১৪ সালে রাশিয়া দাবী করে বসল ক্রিমিয়ার। তাদের দাবী ছিল ক্রিমিয়া রাশিয়ারই অংশ যা শাসনতন্ত্রের সুবিধার জন্য ইউক্রেনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছিল।

এই দাবী শুধুমাত্র এক খণ্ড জমির জন্য ছিল না। এর পিছনেও ছিল বহু জটিল অংক। প্রথমতঃ ক্রিমিয়া এবং ইউক্রেনের দক্ষিণ পূর্বের ভূমির নীচে আছে বৃহৎ প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার। যা ছিল রাশিয়া এবং NATO জোট উভয়েরই প্রাথমিক লক্ষ্য। দ্বিতীয়ত, ইউক্রেনের অধিবাসীদের এক বড় অংশ সোভিয়েত ইউনিয়ন থাকাকালীন সময়ে রাশিয়া থেকে আগত, যারা এখনো রুশভাষী। তৃতীয়ত, ক্রিমিয়া ইউক্রেন থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন এক অংশ যেখানে অস্ত্র ও সেনাঘাঁটি বসাতে পারলে সরাসরি রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর উপরে মিসাইল হানা করা সম্ভব। এছাড়াও বহু কারণ ছিল সেদিন ক্রিমিয়া সম্পর্কিত। যাইহোক ২০১৪ তে ক্রিমিয়ার অধিবাসীদের এক বড় অংশ বিদ্রোহ ঘোষণা করে ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে চায়। এই সুযোগ হাতছাড়া না করতে চেয়ে সেদিন কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ক্রিমিয়াতে ঢুকে বিদ্রোহীদের সাহায্য করে রাশিয়ান সৈন্যবাহিনী এবং ক্রিমিয়া ইউক্রেনের দখল থেকে চলে আসে রাশিয়ার দখলে।

“The 1954 transfer of Crimea, home to the Black Sea Fleet, from the Russian SFSR to the Ukrainian SSR came at the direction of Soviet premier Nikita Khrushchev. It was viewed as an insignificant “symbolic gesture”, as both republics were a part of the Soviet Union and answerable to the government in Moscow. Crimean autonomy was re-established after a referendum in 1991.

Although an independent country since 1991, as a former soviet socialist republic, Russia considers Ukraine part of its sphere of influence. Iulian Chifu and his co-authors say that, in regard to Ukraine, Russia pursues a modernized version of the Brezhnev Doctrine on “limited sovereignty”, which dictates that the sovereignty of Ukraine cannot be larger than that of the Warsaw Pact prior to the demise of the Soviet sphere of influence with the Revolutions of 1989. This claim is based on statements of Russian leaders that possible integration of Ukraine into NATO would jeopardize Russia’s national security.

Following the dissolution of the Soviet Union in 1991, Ukraine and Russia retained very close ties for decades. Yet there were several sticking points, most importantly Ukraine’s significant nuclear arsenal, which Ukraine agreed to abandon in the Budapest Memorandum on Security Assurances (December 1994) on condition that Russia and the other signatories would issue an assurance against threats or use of force against the territorial integrity or political independence of Ukraine. In 1999, Russia signed the Charter for European Security, where it ‘reaffirmed the inherent right of each and every participating State to be free to choose or change its security arrangements, including treaties of alliance, as they evolve’.

Another point was the division of the Black Sea Fleet. Ukraine agreed to lease a number of naval facilities including those in Sevastopol, so that the Russian Black Sea fleet could continue to be based there together with Ukrainian naval forces. Starting in 1993, through the 1990’s and 2000’s, Ukraine and Russia engaged in several gas disputes. In 2001, Ukraine, alongwith Georgia, Azerbaijan, and Moldova, formed a group called GUAM Organization for Democracy and Economic Development, which Russia saw as a direct challenge to the Commonwealth of Independent States, the Russian-dominated trade group established after the collapse of the Soviet Union.
Russia was further irritated by the Orange Revolution of 2004, in which the pro-European Viktor Yushchenko was elected president instead of the pro-Russian Viktor Yanukovych. Moreover, Ukraine continued to increase its cooperation with NATO, deploying the third-largest contingent of troops to Iraq in 2004, and dedicating peacekeepers to NATO missions such as the ISAF force in Afghanistan and KFOR in Kosovo.”

ইউক্রেনের উপরে NATO জোটের এই প্রভাব ভালো চোখে দেখেনি মস্কো। তাই ক্রিমিয়াকে ইউক্রেন থেকে আলাদা করে তারা ক্ষান্ত থাকল না। কড়া নজর রাখল ইউক্রেনের উপরে আর যে মুহূর্তে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেস্কি ইউক্রেনকে NATO জোটে নেওয়ার জন্য আবেদন জানালেন তখন শিয়রে সমন দেখল রাশিয়া। আর শুরু হয়ে গেল একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে আরেক বৃহৎ যুদ্ধ।

এই যুদ্ধের ফলাফল কি হবে কিম্বা কতদিন স্থায়ী হবে তা এখন অজানা। ইতিমধ্যেই NATO জোটের প্রধান দেশ আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য দেশগুলি ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের আবেদন সত্বেও সরাসরি যুদ্ধে যুক্ত হতে অরাজী হয়েছে, তার একটিই কারণ, তা হলো এরকম হলেই শুরু হয়ে যাবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং আজকের ভয়াবহ অস্ত্রের সম্ভারে পূর্ণ পৃথিবীর পরবর্তী অবস্থা কি হবে তা কেউ বলতে পারবে না। আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলি নানারকম অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে রাশিয়ায় বিরুদ্ধে। কিন্তু সর্বশেষ খবর অনুযায়ী রাশিয়ার পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের উপরে যে আমেরিকান নিষেধাজ্ঞা জারী হয়েছে তা খারিজ করে দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কারণ তাদের দেশগুলির ৬৫ শতাংশ পেট্রোলিয়াম ও গ্যাস আসে রাশিয়া থেকে, যা বন্ধ হলে অচল হয়ে যাবে ইউরোপ।

যে কোনো যুদ্ধ চলার সময়ে এক পক্ষ অন্য পক্ষের প্রতি মানবতাবিরোধী নানারকম কাজের অভিযোগ আনে। এই যুদ্ধের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয় নি। ইতিমধ্যেই অভিযোগ এসেছে রাশিয়ার আক্রমণের জন্য বারো লক্ষ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে, ইউক্রেনের এক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মারক সৌধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কতিপয় সাধারণ মানুষ মারা গেছেন যুদ্ধে ইত্যাদি ইত্যাদি। এই ক্ষতির নিন্দা করছি আমি, ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সর্বাত্মক সহানুভূতি। কিন্তু আরেক দিকে দৃষ্টিপাত করতে চাই। মনে আছে কি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে পরাজিত জার্মানির সেনানায়কদের বিচার হয়েছিল আন্তর্জাতিক আদালতে এবং তাঁদের শাস্তি হয়েছিল। অথচ পরবর্তীতে ভিয়েতনাম যুদ্ধে ভয়াবহ ধ্বংস, হত্যা, ধর্ষণ লীলা চালিয়েও পরাজিত হওয়ার পরে মার্কিন বা ফ্রান্সের রাষ্ট্রনায়ক ও সেনানায়কদের কোনো বিচারের সম্মুখীন হতে হয় নি। বলতে কি কারো সেই বিচারের প্রসঙ্গ উত্থাপনের সাহসই ছিল না, কারণ তারা বৃহৎ শক্তি। ইরাক যুদ্ধের পরে বাগদাদে খলিফা হারুন অল রশিদের সময়কালের মিউজিয়াম ধ্বংসের ছবির কথা মনে আছে? সেই সময়ের বহু সংবাদপত্রে ছবি সহ খবর প্রকাশিত হয়েছিল। প্রায় তিন হাজার বছরের পুরোনো বাগদাদের প্রাচীন লাইব্রেরী ও স্মৃতি সৌধগুলি লুট ও ধ্বংস করেছিল একের পর এক মার্কিন সেনাবাহিনী। তাদের কোনো বিচার হয় নি। আফগানিস্তানে মার্কিন ও পাক মদতপুষ্ট মুজাহিদীন বাহিনী তাদের উপস্থিতিতেই বামিয়ানে আড়াই হাজার বছরের বিশালকায় পুরোনো প্রাচীন বুদ্ধমূর্তি ধ্বংস করেছিল। এক‌টি শব্দও খরচ করে সেই ধ্বংস আটকানো বা তার নিন্দা করা হয় নি মার্কিন তরফ থেকে। বাংলাদেশে মার্কিন মদতপুষ্ট পশ্চিম পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং রাজাকার – আলবদর বাহিনী প্রায় তিরিশ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা করেছিল, ধর্ষিতা হয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন প্রায় চার লক্ষ বাঙালি রমনী, সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান (যা পরবর্তীতে বাংলাদেশ) হয়ে গেছিল ধ্বংসস্তুপ। অথচ পরাজিত পাক বাহিনীর বিচারের জন্য এগিয়ে এসে দাবি করে নি কোনো মার্কিন মানবতাবাদী। সমগ্র দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের প্রত্যেক দেশে অজস্র মানবতাবিরোধী হত্যা, ধ্বংস চালিয়েছে মার্কিন সেনা বা তাদের মদতপুষ্টরা। কিউবাতে ৯০ বছরের জীবনে সেই দেশের প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোকে ৬৩৮ বার হত্যার চেষ্টা করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর চরেরা এই চেষ্টা চালায়। ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুরতার সঙ্গে হত্যা করা হয় চে গুয়েভারাকে। তল্পিবাহক পিনোচেত এর দ্বারা হত্যা করা করা হয় চিলির পাবলো নেরুদাকে। আন্তর্জাতিক আদালতে, রাষ্ট্রসংঘে এক‌টি শব্দও উচ্চারিত হয় নি সেদিন। এরকম অজস্র উদাহরণ ছড়িয়ে রয়েছে প্রত্যেক যুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ে। যুদ্ধ অবশ্যই মানবতাবিরোধী। কিন্তু তার জন্য সেই প্রত্যেক পক্ষই দায়ী হওয়া উচিৎ যারা যুদ্ধকে অবশ্যম্ভাবী করে তোলে এবং নিজেরা ধ্বংস করে।

যুদ্ধ কখনো কোনো স্থায়ী সমাধান আনে না। একটা যুদ্ধ পরবর্তী যুদ্ধের প্রস্তুতি মাত্র। সর্বশেষ যুদ্ধের যে ছবি আমাদের কাছে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে কয়েক লক্ষ নিরীহ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে শরণার্থী হয়েছেন, ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে অজস্র বাড়ি, অফিস, স্মারক। মারা গেছেন এবং যাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। মনে রাখতে হবে দু দেশের যে সৈন্যরা মারা গেছেন বা যাচ্ছেন তাঁরাও কারো সন্তান, কারো বাবা – মা, তাঁরাও মানুষ। সুতরাং মানুষ মারছে মানুষকে সামান্য লোভের জন্য, স্বার্থের জন্য। অথচ প্রত্যেকটি দেশ যদি নিজের সম্পদ নিয়ে সুখী হতো, যদি বিভিন্ন মানবতাবাদী আবিষ্কারের মাধ্যমে নিজেদের উন্নত করার কাজে ব্যস্ত থাকত, যদি অন্যের সম্পদের জন্য লোভ না করে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিত, তাহলে এত ধ্বংস, এত হত্যা, এত রক্তপাত মানুষকে দেখতে হতো না। অথচ অবুঝ লোভী মানুষের জন্যই তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। দেখা যাক আগামী পৃথিবীর আগামী প্রজন্ম কখনো এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে কি না! আমরা আশায় বাঁচি।

পাঠককে ধন্যবাদ ও প্রিয়তে জানিয়ে আজ আপাতত বিদায় নিলাম। ফিরে আসব ফের কোনো অবিচারের প্রতিবাদ জানিয়ে।

(শেষ)

সৌমিত্র চক্রবর্তী সম্পর্কে

পরিচিতিঃ জন্ম বিহারের এক অখ্যাত বনাঞ্চলে বাবার চাকরীস্থলে। রসায়নে স্নাতকোত্তর এবং ম্যানেজমেন্ট পাশ করে কিছুদিন সাংবাদিকতা। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারী উচ্চপদস্থ কর্মচারী। একাধারে নাট্যকার, কবি এবং গল্পকার। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, পুস্তক পর্যালোচনা, বিভিন্ন ধরনের লেখা ছড়িয়ে আছে দেশ বিদেশের অসংখ্য পত্র পত্রিকায় ও সংবাদপত্রে। উৎপল দত্ত সহ বহু বিখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্বের কাছে শিখেছেন থিয়েটার। বহু বিচিত্র ও ব্যাপ্ত ময় তাঁর জীবন। বন, জঙ্গল, পশু, পাখি, বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে তাঁর দীর্ঘকালের নিবিড় ও অন্তরঙ্গ পরিচয়। কবিতা ও বিভিন্ন লেখা লেখিতে তিনি মস্তিস্কের থেকে হৃদয়ের ভুমিকাকে বড় করে দেখেন। কবিতা, গল্প, নাটক এবং মুক্তগদ্য মিলিয়ে এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা নয়। প্রকাশিত গ্রন্থগুলি হলো বইছে লু, থিয়েটার কথা, তিতলিঝোরা, নীলপাখিকে উড়ো চিঠি, রাত্রি আমার নৈশপ্রিয়া, ব্রিজের নীচে বৃষ্টি, ২ একাঙ্ক, প্রতিলিপি এবং বেবুশ্যে চাঁদ, খণ্ড ক্যানভাস। ইতিপূর্বে অঙ্গন সহ কয়েকটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। বর্তমানে অক্ষর বৃত্ত পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। নেশা ফটোগ্রাফি ও ভ্রমণ।

1 thought on “যুদ্ধ ১০ শেষ পর্ব

  1. যুদ্ধ শিরোনামের এই ধারাবাহিক প্রচুর কষ্টসাধ্য এক একটি এপিসোড সেটা কিন্তু ইতিহাসের তথ্য উপাত্তের মিশেলে স্পষ্টতঃ বুঝে নেয়া যায়। শ্রমসাধ্য এমন একটি ধারাবাহিক চালিয়ে যাওয়াও যথেষ্ঠ কঠিন।

    মন্তব্য বা শব্দ উচ্চারণকারী পাঠকের সংখ্যা কম হলেও অনুসন্ধিৎসু পাঠক নিশ্চয়ই খুঁজে নেবেন তাদের প্রয়োজনীয় অংশ বিশেষ। বিশেষ ধন্যবাদ প্রিয় সৌমিত্র চক্রবর্তী। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।