যত কফি তত আয়ু

যত কফি তত আয়ু

আপনি কি কফিতে আসক্ত? তাহলে সুখবর! দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা প্রমাণ করেছে যে, দিনে অন্তত এক কাপ কফি শরীরের জন্য খুব উপকারী। কয়েক কাপ হলে আরো ভালো।

কফি শরীরের জন্য ক্ষতিকর, এমন ধারণা চালু আছে অনেকেরই মাঝে। কিন্তু সাত লাখ মানুষের ওপর চালানো দু’টো গবেষণা তা ভুল প্রমাণ করেছে। দীর্ঘমেয়াদি এই গবেষণাগুলোতে দেখা যায়, কফি পান অনেক রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়, বিশেষ করে সঞ্চরণশীল ও গ্যাস্ট্রো-ইন্টেসটাইনাল রোগগুলোর ক্ষেত্রে।

‘ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার’ এবং ‘ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন’-এর গবেষণাটিতে কফি পানের অভ্যাস ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি তুলনা করা হয়। যেমন ইটালিতে কেউ হয়ত এসপ্রেসো পছন্দ করেন, আবার লন্ডনে কেউ কাপুচিনোর ওপর চড়ে বসেছেন। গবেষকরা ইউরোপের দশটি দেশের ৫ লাখেরও বেশি মানুষের ওপর এই গবেষণাটি করেন।

দ্বিতীয় গবেষণাটিতে বিভিন্ন জাতি, তাদের জীবন পদ্ধতি ও রোগের ঝুঁকির সঙ্গে কফির সম্পর্ক নির্ণয় করার চেষ্টা করা হয়৷ সাদা অ্যামেরিকান, আফ্রিকান-অ্যামেরিকান। কফির কাপে সাধারণ সব ডিজাইনে সবাই অভ্যস্ত। সাউথ কোরিয়ার বারিস্তা লি ক্যাং বিন চাইছিলেন বাড়তি কিছু করতে। কী করা যায় ভাবতে ভাবতেই একসময় মাথায় আসলো এক বুদ্ধি। ম্যাড়মেড়ে ডিজাইন বাদ দিয়ে তাই হাতে নিলেন রং-তুলি। সিউলে খুলে বসলেন ক্যাফে সি থ্রু।

জাপনিজ-অ্যামেরিকান এবং ল্যাটিনোদের মধ্যে করা এই গবেষণায় দেখা যায়, এদের মধ্যে যারা দিনে অন্তত এক কাপ কফি খান, তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি যারা কফি খান না তাদের চেয়ে ১২ ভাগ কম। ইউনিভার্সিটি সাউথ ক্যারোলাইনা এই গবেষণাটি করেছে। গেল সোমবার গবেষণা দু’টি ‘অ্যানালস অফ ইন্টারনাল মেডিসিন’-এ প্রকাশিত হয়েছে।

দু’টো গবেষণাতেই দেখা যায়, দিনে তিন কাপ বা তার চেয়ে বেশি কফি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে সবচেয়ে ভালো। সেক্ষেত্রে কফিটি ক্যাফেইনসহ না মুক্ত তাতে কিছু আসে যায় না। কফিতে প্রায় ১,০০০ রাসায়নিক পদার্থ আছে। ক্যাফেইন ছাড়াও এতে আছে পলিফেনল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে এমন আরো যৌগ, যেগুলো শরীরের জন্য উপকারী। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষকদের মতে, কফিপানকারীদের লিভার ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক বেশি। তবে কফির ঠিক কোন উপাদানটি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এমন অবদান রাখছে, তা এখনো বের করতে পারেননি গবেষকরা।

১৬ বছর ধরে চলা এই গবেষণায় যদিও দেখা গেছে কফি পানে স্বাস্থ্য সুবিধা পেয়েছেন অনেকেই। গবেষকরা অবশ্য এমন গ্যারান্টি দিচ্ছেন না যে, কফি খেলেই কারো স্বাস্থ্যের ব্যাপক উন্নতি ঘটবে। তবে কে জানে, গবেষণার ফল দেখে কফি পাগলরা হয়ত আরেকবার তাদের খালি মগ ভর্তি করে নিয়েছেন।

4 thoughts on “যত কফি তত আয়ু

  1. হালকা হালকা জানলেও তথ্যটি বিশদ ভাবে জানলাম আজ। কফি আমার প্রিয়। :)

  2. কফিপানকারীদের লিভার ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক বেশি। তবে কফির ঠিক কোন উপাদানটি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এমন অবদান রাখছে, তা এখনো বের করতে পারেননি গবেষকরা। দুঃখজনক। :(

  3.  

    আমি তো তাহলে কচ্ছপের মত দেড়শ বছর বাঁচবো ! 
    প্রচুর কফি খাই। 
    কিন্তু এত বেঁচে করব টা কি ! 

  4. আমি দৈনিক কমপক্ষে ০৫ কাপ কফি পান করি। পোস্টের আলোচনা এবং সম্ভাবনাও পড়ে আশান্বিত হলাম। তবে বিষয়টি আরও অথেনটিক হলে বাড়তি কিছু কাল বেঁচে থাকার স্বপ্নটা তড়ান্বিত হতো। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Confused.gif.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।