শ্রমিকের বুকের রক্তে

এই শ্রমিকের বুকের রক্তে
গড়ে উঠছে সভ্যতারাজি,
বিশ্বগড়ার কারিগরেরা
তবুও কত অসহায় আজি!
ওরাও মানুষ—তবুও দেখি
পড়ে আছে আজও মৃতপ্রায়,
দিবস এলে শুনি শুধু
লোকদেখানো হায়-হায়!
কর্তারা আজ নিজের স্বার্থে
খুলেছে যে লাভের কারখানা,
শ্রমিক মরছে ধুঁকে-ধুঁকে
আর যে মালিক মেলছে ডানা!
ফার্মে বলো কারখানায় বলো
সবখানে বসে আছে আজাজিল,
ওই শ্রমিকের ভাগ্যমারার
ওরা সবাই হিংস্র বাজ-চিল!
হায়নাগুলো এখন দেখি
অনেক বড় শিল্পপতি!
কাঁচা-টাকার লোভে-পাপে
ঠিক নাই ওদের মতিগতি।
এই দেশেতে শিল্পপতি
সব দেখি চোরের খনি!
কে হবে আজ অভাগা দেশে
ওই শ্রমিকদের চোখের মণি?
দিবস এলে তোরা সবাই
লোকদেখানো মানবপ্রেমিক!
আসলে যে তোদের হাতেই
মরছে আজি বাংলার শ্রমিক।
আজ শ্রমিকের বুকের রক্তে
গড়ে উঠছে পৃথিবীর সব,
তবুও দেখি এই শ্রমিকদের
মুখে নাই কোনো কলরব!
কবে আসবে আবার সুদিন
আইন হবে শ্রমিকের পক্ষে,
সারাবাংলার অসহায় মানুষ
পাবে একটু রক্ষে!

সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
২/০৫/২০১৭

সাইয়িদ রফিকুল হক সম্পর্কে

সাইয়িদ রফিকুল হক ( Syeed Rafiqul Haque) তিনি একজন সাহিত্যসেবী, গ্রন্থপ্রেমিক ও রাজনীতি-সচেতন মানুষ। বাংলাদেশ, বাংলাভাষা ও বাংলাসাহিত্য তাঁর কাছে সবসময় প্রিয়, এবং এই তিনটি তাঁর কাছে চিরদিন পবিত্র শব্দ। তিনি বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে সংঘটিত মহান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষশক্তি। তাঁর লেখালেখিতেও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনার ছাপ সুস্পষ্ট। আর তিনি সবসময় ঘৃণা করেন রাজাকার, ধর্মান্ধ ও ধর্মব্যবসায়ীচক্রকে। ধর্মবিশ্বাসে তিনি ত্বরীকতপন্থী সুন্নীমুসলমান। আর জীবনের সর্বক্ষেত্রে তিনি একজন পুরাপুরি আস্তিক। তিনি জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক। একজন খাঁটি বাঙালি ও বাংলাদেশী। সাহিত্যচর্চা: তিনি নামে-বেনামে ও ছদ্মনামে লেখালেখি করছেন দীর্ঘদিন যাবৎ। মূলত তিনি কবি, লেখক ও ঔপন্যাসিক। তিনি স্কুলজীবন থেকে আপনমনে সাহিত্যচর্চা করছেন। তখন লেখাপ্রকাশের তেমন-একটা সুযোগ না থাকায় তিনি তাঁর লেখাসমূহ প্রকাশ করতে পারেননি। বর্তমানে ‘শব্দনীড় ব্লগ’সহ বিভিন্ন ব্লগে তাঁর লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। তাঁর লেখার মূল বিষয়: মানুষ, মানবতা আর দেশ-জাতি-সমকাল। আত্মপ্রচারবিমুখ এক কবি তিনি। স্কুলজীবন থেকে সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করে অদ্যাবধি কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস ইত্যাদি রচনায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। পনেরো বছর বয়সে কবিতা লেখার মাধ্যমে তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। তিনি লিখেছেন অনেক। কিন্তু প্রকাশ করেছেন খুব কম। ইতঃপূর্বে কয়েকটি সাহিত্যপত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে তাঁর লেখাসমূহ আধুনিক-ব্লগগুলোতে প্রকাশিত হচ্ছে। এজন্য তিনি ব্লগগুলোর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। তিনি বাস্তববাদী লেখক। আর তাঁর লেখায় কোনো কৃত্রিমতা নাই। তাঁর প্রায় সমস্ত লেখাই দেশ ও জাতির জন্য নিবেদিত। তাঁর লেখার বিষয়: কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস ইত্যাদি। তিনি ‘মানবজীবনের গল্প’ রচনায় যথেষ্ট পারদর্শী। এ পর্যন্ত তাঁর রচিত গল্পের সংখ্যা ৩২টি। আর উপন্যাসের সংখ্যা ১৮টি। ছড়াসাহিত্যেও তিনি সমভাবে পারদর্শী। শিক্ষা: প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রতি তাঁর কোনো আগ্রহ নাই। তাঁর কাছে সার্টিফিকেট-সর্বস্ব সাধারণ শিক্ষার চেয়ে কঠোর সাধনায় অর্জিত প্রকৃত জ্ঞানের মূল্য অনেক বেশি। তিনি নিজেকে সবসময় একজন স্বশিক্ষিত মনে করেন। তবে প্রচলিত প্রথার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাভাষা ও সাহিত্যবিষয়ক উচ্চতর গবেষণাকর্মে নিয়োজিত। জন্মস্থান: বাংলাদেশ। তাঁর জীবনের লক্ষ্য: লেখালেখির মাধ্যমে আমৃত্যু দেশ, মানুষ আর মানবতার পক্ষে কাজ করা।

4 thoughts on “শ্রমিকের বুকের রক্তে

  1. আইন হোক শ্রমিকের পক্ষে। সময়কে ভালো বলে নিজেকে দ্বিধায় না রেখে;
    মন্দ বলে নিজেকে তৃপ্ত রাখা সদঅভ্যাস। জীবন বহমান। সময়ের সাথে জীবন বদলায়।

    1. “আইন হোক শ্রমিকের পক্ষে।” ঠিক তা-ই।

      অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আর সঙ্গে রইলো শুভেচ্ছা। আরhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif

  2. ওরাও মানুষ—তবুও দেখি
    পড়ে আছে আজও মৃতপ্রায়,
    দিবস এলে শুনি শুধু
    লোকদেখানো হায়-হায়!

    আসলেই আমরা লোক দেখানো উৎসব করি যেন।

    শুভ কামনা রইল আপনার প্রতি।
    আশা করি শব্দনীড়ে আপনার পথ চলা হবে আনন্দের।

    1. সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
      আর সঙ্গে রইলো শুভেচ্ছা।
      শুভকামনা আপনার জন্য।https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।