ঘাতক সরে যাও আমাদের পিতার সমাধি থেকে

ফুলে-ফুলে ঢেকে আছে
আজ পিতার সমাধি,
ফুলের ছড়াছড়ি চারপাশে,
শুধু ফুল আর ফুল
আজ আমাদের পিতার সমাধিতে!
আর ফুল হাতেই দাঁড়িয়ে আছে
এই বাংলার ঘাতক ক’জন,
ওরাও এসেছে পিতার সমাধিতে,
হোক না কুলাঙ্গার,
তবুও এসেছে পিতার সমাধিতে!

স্বার্থের বেড়াজালে আটকে পড়ে
কাঁপছে পাপীর দেহ থরথর,
ফুল হাতে এসেছে তবুও পিতার সমাধিতে,
অথচ পিতার ঘাতকদের সঙ্গে
সবসময় চলছে এদের ব্যবসায়িক লেনদেন!
এরা আমাদের জনকের নাম মুখে আনে
স্বার্থের নেশায়—আর অসংখ্য লোভে,
আমাদের জাতির জনকের স্বপ্নগুলো
মুছে দিতে চায় অচেনা প্রেমিকগুলো,
আর এরাই এখন ভিড় করেছে
আমাদের পিতার সমাধিস্থলে।

আমাদের জনকের জন্ম না হলে
আমরা পেতাম না নিজেদের পরিচিতি,
আর বিশ্ব থেকে চিরতরে হারিয়ে যেতো
আমাদের ঐতিহাসিক অস্তিত্ব,
আমাদের পিতা বাঙালির অস্তিত্বকে
বিশ্বে করেছেন সম্মানে সমাসীন,
তিনি আমাদের পিতা
তিনি আমাদের জাতির পিতা
নাম তাঁর শেখ মুজিব,
আর উপাধি আছে ‘জাতির জনক’ ‘বঙ্গবন্ধু’,
এশিয়া থেকে ইউরোপ তাঁকে কুর্নিশ করে
মহাসম্ভ্রমে আর নিঃস্বার্থ ভালোবাসায়,
আফ্রিকা, আমেরিকার বিবেকগুলো
তাঁকে দেখে উঠে দাঁড়ায় সসম্ভ্রমে,
আর সবাই বলে: জয় শেখ মুজিব,
আর জয় হোক বাঙালির।

আমাদের পিতা শুধু বাংলাদেশের,
আমাদের পিতা শুধুই বাঙালি-জাতির,
আমাদের পিতা শুধুই শোষিত-বঞ্চিত মানুষের,
আমাদের পিতা জন্মেছিলেন শুধু বাংলাদেশের জন্যে,
আর তোমরা পিতার নামে করছো
নিজেদের মহাসুখের স্বার্থ-আবাদ!
আজ তাঁর নামে দেশপ্রেমের অভিনয় করছে
মুখচেনা কিছু পাপী, আর কিছু সুবিধাবাদী,
সুবিধাবাদী-দালালগুলো ফুল হাতে আজ
সবার আগে-আগে যাচ্ছে
আমাদের পিতার সমাধিতে,
ওদের এখনই বের করে দাও
আমাদের জনকের সমাধিস্থল থেকে,
আর ওদের হাত থেকে তোমাদের প্রবল শক্তিতে
ওদের লোকদেখানো-মিথ্যাপ্রেমের ফুলের তোড়া
জোর করে কেড়ে নাও তোমরা,
আর জেগে ওঠো আজ বাংলার দেশপ্রেমিকেরা,
আর দেশবিরোধী ঘাতক সরে যাও
আমাদের পিতার সমাধি থেকে,
আর এখনই বেরিয়ে যাও তোমরা।

সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।

সাইয়িদ রফিকুল হক সম্পর্কে

সাইয়িদ রফিকুল হক ( Syeed Rafiqul Haque) তিনি একজন সাহিত্যসেবী, গ্রন্থপ্রেমিক ও রাজনীতি-সচেতন মানুষ। বাংলাদেশ, বাংলাভাষা ও বাংলাসাহিত্য তাঁর কাছে সবসময় প্রিয়, এবং এই তিনটি তাঁর কাছে চিরদিন পবিত্র শব্দ। তিনি বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে সংঘটিত মহান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষশক্তি। তাঁর লেখালেখিতেও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনার ছাপ সুস্পষ্ট। আর তিনি সবসময় ঘৃণা করেন রাজাকার, ধর্মান্ধ ও ধর্মব্যবসায়ীচক্রকে। ধর্মবিশ্বাসে তিনি ত্বরীকতপন্থী সুন্নীমুসলমান। আর জীবনের সর্বক্ষেত্রে তিনি একজন পুরাপুরি আস্তিক। তিনি জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক। একজন খাঁটি বাঙালি ও বাংলাদেশী। সাহিত্যচর্চা: তিনি নামে-বেনামে ও ছদ্মনামে লেখালেখি করছেন দীর্ঘদিন যাবৎ। মূলত তিনি কবি, লেখক ও ঔপন্যাসিক। তিনি স্কুলজীবন থেকে আপনমনে সাহিত্যচর্চা করছেন। তখন লেখাপ্রকাশের তেমন-একটা সুযোগ না থাকায় তিনি তাঁর লেখাসমূহ প্রকাশ করতে পারেননি। বর্তমানে ‘শব্দনীড় ব্লগ’সহ বিভিন্ন ব্লগে তাঁর লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। তাঁর লেখার মূল বিষয়: মানুষ, মানবতা আর দেশ-জাতি-সমকাল। আত্মপ্রচারবিমুখ এক কবি তিনি। স্কুলজীবন থেকে সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করে অদ্যাবধি কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস ইত্যাদি রচনায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। পনেরো বছর বয়সে কবিতা লেখার মাধ্যমে তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। তিনি লিখেছেন অনেক। কিন্তু প্রকাশ করেছেন খুব কম। ইতঃপূর্বে কয়েকটি সাহিত্যপত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে তাঁর লেখাসমূহ আধুনিক-ব্লগগুলোতে প্রকাশিত হচ্ছে। এজন্য তিনি ব্লগগুলোর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। তিনি বাস্তববাদী লেখক। আর তাঁর লেখায় কোনো কৃত্রিমতা নাই। তাঁর প্রায় সমস্ত লেখাই দেশ ও জাতির জন্য নিবেদিত। তাঁর লেখার বিষয়: কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস ইত্যাদি। তিনি ‘মানবজীবনের গল্প’ রচনায় যথেষ্ট পারদর্শী। এ পর্যন্ত তাঁর রচিত গল্পের সংখ্যা ৩২টি। আর উপন্যাসের সংখ্যা ১৮টি। ছড়াসাহিত্যেও তিনি সমভাবে পারদর্শী। শিক্ষা: প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রতি তাঁর কোনো আগ্রহ নাই। তাঁর কাছে সার্টিফিকেট-সর্বস্ব সাধারণ শিক্ষার চেয়ে কঠোর সাধনায় অর্জিত প্রকৃত জ্ঞানের মূল্য অনেক বেশি। তিনি নিজেকে সবসময় একজন স্বশিক্ষিত মনে করেন। তবে প্রচলিত প্রথার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাভাষা ও সাহিত্যবিষয়ক উচ্চতর গবেষণাকর্মে নিয়োজিত। জন্মস্থান: বাংলাদেশ। তাঁর জীবনের লক্ষ্য: লেখালেখির মাধ্যমে আমৃত্যু দেশ, মানুষ আর মানবতার পক্ষে কাজ করা।

2 thoughts on “ঘাতক সরে যাও আমাদের পিতার সমাধি থেকে

  1. আমাদের জনকের জন্ম না হলে আমরা পেতাম না নিজেদের পরিচিতি। সঠিক।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।