ফুল ফোটে না হিংসার মনোভূমিতে

তোমার বুকের হিমশীতল গভীরে ফুল হয়ে ফুটতে চেয়েছিলাম। আর সুবাস ছড়াতে চেয়েছিলাম চিরদিন তোমার স্বপ্নের পৃথিবীতে। আমার সেই স্বপ্ন ঝরে গেছে অকালে শুধু তোমার ভুলে। তবুও তোমাকে কখনও ভুল বুঝিনি। আর আশায়-আশায় পার করেছি কত দিবস-রজনী।

ফুলের মালা হতে চাইনি, ছিঁড়ে যায় বলে। ফুল হতে চেয়েছিলাম তোমার মনের গভীরে। আর সুবাস ছড়াতে চেয়েছিলাম। আর শুধু ভালোবাসার ফুল ফোটাতে চেয়েছিলাম।

তোমার মনে ফুলের চাষ হয় না, তা আগে জানতাম না। ভুল করে তবুও সেখানে ফেলেছিলাম নাম-না-জানা কত সুগন্ধি ফুলের বিচি। তবুও ফুল ফোটেনি। হিংসাভূমিতে কখনও ফুল ফোটে না। জানলাম পরে, তোমার স্বপ্নের পৃথিবীটা ভরে আছে শুধু হিংসা-বীজে। সেখানে প্রতিনিয়ত জন্মাচ্ছে শুধু হিংসার বিষবৃক্ষ। তাই, সেখানে কখনও ফুটবে না ভালোবাসার ফুল।

তোমার মনে অনেক ব্যাধি। আর সেখানে হয়তো জমে আছে কোনো ভয়ানক কালব্যাধি। তাই, খুব সংগোপনে তোমার মনের গহীনে ঢুকে ফোটাতে চেয়েছিলাম সুগন্ধি ফুল। পৃথিবী অবাক করে দেওয়ার মতো ভালোবাসার ফুল।

পারিনি। আমি তোমার মনের গহীনে কোনো ফুল ফোটাতে পারিনি। কেউ পারে না, আর কেউ পারবে না হিংসার মনোভূমিতে ভালোবাসার একটি ফুলও ফোটাতে।

অনেক আশা, অনেক বিশ্বাস ঝেড়ে ফেলে আবার নতুন করে পথ চলতে শুরু করেছি। এই জীবনে কখনও যদি খুঁজে পাই এমন কোনো পবিত্র হৃদয়ভূমি, সেখানে অনেক আশায় করবো ভালোবাসার চাষ। আর সেখানে ফুটবে আমার হাজার-হাজার সুগন্ধি ফুল হাসি মুখে। এমন একটি সুন্দর হৃদয়ভূমির জন্য বসে আছি অনেক আশায় বুক বেঁধে।

তোমার বুকের হিমশীতল গভীরে আর ফুটবে না ফুল। সেখানে এখন হিংসার বেশুমার আনাগোনা। আর সেখানে কখনও জাগবে না একটু ভালোবাসা।

ফুল ফোটে না হিংসার মনোভূমিতে।

সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
২৩/০৭/২০১৭

সাইয়িদ রফিকুল হক সম্পর্কে

সাইয়িদ রফিকুল হক ( Syeed Rafiqul Haque) তিনি একজন সাহিত্যসেবী, গ্রন্থপ্রেমিক ও রাজনীতি-সচেতন মানুষ। বাংলাদেশ, বাংলাভাষা ও বাংলাসাহিত্য তাঁর কাছে সবসময় প্রিয়, এবং এই তিনটি তাঁর কাছে চিরদিন পবিত্র শব্দ। তিনি বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে সংঘটিত মহান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষশক্তি। তাঁর লেখালেখিতেও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনার ছাপ সুস্পষ্ট। আর তিনি সবসময় ঘৃণা করেন রাজাকার, ধর্মান্ধ ও ধর্মব্যবসায়ীচক্রকে। ধর্মবিশ্বাসে তিনি ত্বরীকতপন্থী সুন্নীমুসলমান। আর জীবনের সর্বক্ষেত্রে তিনি একজন পুরাপুরি আস্তিক। তিনি জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক। একজন খাঁটি বাঙালি ও বাংলাদেশী। সাহিত্যচর্চা: তিনি নামে-বেনামে ও ছদ্মনামে লেখালেখি করছেন দীর্ঘদিন যাবৎ। মূলত তিনি কবি, লেখক ও ঔপন্যাসিক। তিনি স্কুলজীবন থেকে আপনমনে সাহিত্যচর্চা করছেন। তখন লেখাপ্রকাশের তেমন-একটা সুযোগ না থাকায় তিনি তাঁর লেখাসমূহ প্রকাশ করতে পারেননি। বর্তমানে ‘শব্দনীড় ব্লগ’সহ বিভিন্ন ব্লগে তাঁর লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। তাঁর লেখার মূল বিষয়: মানুষ, মানবতা আর দেশ-জাতি-সমকাল। আত্মপ্রচারবিমুখ এক কবি তিনি। স্কুলজীবন থেকে সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করে অদ্যাবধি কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস ইত্যাদি রচনায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। পনেরো বছর বয়সে কবিতা লেখার মাধ্যমে তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। তিনি লিখেছেন অনেক। কিন্তু প্রকাশ করেছেন খুব কম। ইতঃপূর্বে কয়েকটি সাহিত্যপত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে তাঁর লেখাসমূহ আধুনিক-ব্লগগুলোতে প্রকাশিত হচ্ছে। এজন্য তিনি ব্লগগুলোর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। তিনি বাস্তববাদী লেখক। আর তাঁর লেখায় কোনো কৃত্রিমতা নাই। তাঁর প্রায় সমস্ত লেখাই দেশ ও জাতির জন্য নিবেদিত। তাঁর লেখার বিষয়: কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস ইত্যাদি। তিনি ‘মানবজীবনের গল্প’ রচনায় যথেষ্ট পারদর্শী। এ পর্যন্ত তাঁর রচিত গল্পের সংখ্যা ৩২টি। আর উপন্যাসের সংখ্যা ১৮টি। ছড়াসাহিত্যেও তিনি সমভাবে পারদর্শী। শিক্ষা: প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রতি তাঁর কোনো আগ্রহ নাই। তাঁর কাছে সার্টিফিকেট-সর্বস্ব সাধারণ শিক্ষার চেয়ে কঠোর সাধনায় অর্জিত প্রকৃত জ্ঞানের মূল্য অনেক বেশি। তিনি নিজেকে সবসময় একজন স্বশিক্ষিত মনে করেন। তবে প্রচলিত প্রথার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাভাষা ও সাহিত্যবিষয়ক উচ্চতর গবেষণাকর্মে নিয়োজিত। জন্মস্থান: বাংলাদেশ। তাঁর জীবনের লক্ষ্য: লেখালেখির মাধ্যমে আমৃত্যু দেশ, মানুষ আর মানবতার পক্ষে কাজ করা।

1 thought on “ফুল ফোটে না হিংসার মনোভূমিতে

  1. পুরো লিখাটির আদ্যপান্তে কিন্তু উপসংহার একটিই দাঁড়ায় যেটা আপনি শিরোনামেই বলে দিয়েছেন। সাহিত্যের বিচারে আমার কাছে গদ্য লিখাকে স্বতন্ত্র সম্মানের দৃষ্টিতে দেখি। বলা যায় … আন্তরিক ভাবেই আমি সমীহ করি।

    ফুল ফোটে না হিংসার মনোভূমিতে। চমৎকার বাণী। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।