ট্যাগ আর্কাইভঃ ব্লগভাবনা

সার্থক ব্লগিং ও ব্লগিংয়ের সার্থকতা !!!

শব্দনীড়ের বন্ধুদের প্রতি আমার একটা প্রশ্ন-?
আমরা যারা কম বেশী লেখা লেখি করি তারা ব্লগে কেন আসি ? লেখা প্রকাশের তো আরও অনেক মাধ্যম আছে। তবে ব্লগিং কেন ?

এর উত্তরে আমার মনে হয়, একমাত্র ব্লগ ছাড়া অন্য কোন মাধ্যমে নিজের লেখাকে অন্যের দৃষ্টিতে দেখবার এমন সহজ ও সুন্দর সুযোগ আর নাই। এত বেশী পাঠক, লেখক ও বোদ্ধাদের মন্তব্য, আলোচনা, সমালোচনা ও উৎসাহ, অনুপ্রেরণা অন্য কোন মাধ্যমে লাভ করা যায় না। একই সাথে সমসাময়িক লেখকদের সাথে ও তাদের সদ্য তরতাজা লেখার সাথে পরিচিত হওয়ার এমন সুযোগও অন্য কোন মাধ্যমে নাই তাই আমরা ব্লগে আসি।

উপরোক্ত আলোচনার আলোকে আরও সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারি আমরা চাই ব্লগে আমাদের সবাই চিনুক, আমাদের লিখা পড়ুক, ভুলগুলো ধরিয়ে দিক এবং অনুপ্রাণিত করুক।

আমার আবার প্রশ্ন, কিভাবে তা সম্ভব ? আমাদের সবার লিখা তো বহুল পঠিত না বা সবাই আলোচনা, সমালোচনা বা মন্তব্য ও খুব বেশী পাই না। তাহলে ?

আমি আমার মত করে বলছি ধাপে ধাপে।

প্রথম কথাই হচ্ছে আমার লিখা সবাই পড়ুক চাইলে আমাকেও ভালো লিখতে হবে। ভালো লিখলে অন্যান্য সব গুলো নির্ভরশীলতা বা সীমাবদ্ধতা কাটিয়েও আমরা ভালো লেখক হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠতে পারি। ভালো লিখতে হলে ভালো বই পড়ার কোন বিকল্প নাই। স্বনামধন্য সব লেখক ও সাহিত্যিকদের বিষয় ভিত্তিক প্রচুর বই আমাদের পড়তে হবে বাংলা সাহিত্যের অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ ও সাহিত্যের গতি প্রকৃতি বোঝার জন্য। সমসাময়িক নতুন ও স্বনামধন্য লেখকদের বই পড়তে হবে বর্তমান আধুনিক সাহিত্যের ভাব ধারা বোঝার জন্য। চলমান সময়ের লিখা সম্পর্কে জানতে চাইলে পড়তে হবে দৈনিক পত্রিকা, পাক্ষিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক, ষাণ্মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ও লিটল ম্যগ। আর যদি চাই ঠিক আজকে কোন কবি বা সাহিত্যিক কি ভাবছে বা কি লিখছে তার জন্য পড়তে হবে সাহিত্য ব্লগ।

কিন্তু আমরা যদি বিখ্যাত লেখকদের মত ভালো না লিখি তবে কি আমাদের লিখা কেউ পড়বে না ? আমাদেরকে কেউ চিনবে না ? আমরাই বা ভালো লেখা কিভাবে লিখতে পারি যে আমাদের লেখা সবাই পড়বে ? আমাদেরকে সবাই জানবে ?

ব্লগের একটা সুবিধা হল বিখ্যাত লেখকদের মত ভালো না লিখেও আপনি সবার কাছে পরিচিত হতে পারেন। পেতে পারেন সবার মূল্যবান মন্তব্য, আলোচনা, সমালোচনা, পরামর্শ ও অনুপ্রেরণা। যা আপনাকে ধীরে ধীরে বা রাতারাতি খুবই ভালো মানের লেখক হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। আর তা হচ্ছে অন্যের পোষ্টে মন্তব্য করা। অন্যের লিখা পড়ে, বুঝে একটা উপযুক্ত মন্তব্য করতে পারা একটা ভালো লিখার চেয়ে কোন অংশে কম নয়। এ চর্চা আপনার লিখার হাতকে দক্ষ ও শানিত করবে নিশ্চিত। আর তাইতো আমাদের ছোট বেলায় ভাবসম্প্রসারণ ও সারাংশ লিখার প্রতি এত জোর দেয়া হতো।

এই পোস্টের প্রথম স্ক্রিনশট এ শব্দনীড়ের ব্লগারদের মন্তব্য করার একটা চিত্র দেখতে পাবেন এবং বেশী (যদিও তা অপ্রতুল) মন্তব্যকারীদের উপর এর প্রভাবও একটু যত্ন নিয়ে দেখলেই পরবর্তী দুটি স্ক্রিনশটে সহজেই বুঝতে পারবেন।

আমরা অনেকেই উদ্বিগ্ন যে শব্দনীড় কি শুধু মাত্র একটা কবিতা নির্ভর ব্লগ হয়ে যাচ্ছে ? এ প্রশ্নের উত্তরে আমি বলতে চাই আমরা কি শুধু কবিতাই ভালোবাসি ? বা আমরা কি শুধু কবিতাই লিখি ? শব্দনীড় আমার ব্লগ, আপনার ব্লগ, আমাদের সবার ব্লগ। আমরা একে যেভাবে দেখতে চাই সেভাবেই সাজিয়ে নিতে পারি। আসুন, আমরা আমাদের নিজেদের রুচি ও পছন্দমত আমাদের ব্লগকে সাজাই হরেক রুপে, নানান ঢঙে, নানার অলংকারে।

পরিশেষে প্রত্যাশা আমাদের সবার স্বতঃস্ফূর্ত ও আন্তরিক অংশ গ্রহনে শব্দনীড়ে আমাদের একক ব্লগিং হয়ে উঠুক সার্থক এবং আমরা সমন্বিত ভাবে উপভোগ করি ব্লগিংয়ের সার্থকতা।

শব্দনীড় এর পুরাতন বন্ধুরা নীড়ে ফিরুন আমাদের জন্য

আমার এবং আমাদের সবার প্রিয় সাহিত্য ব্লগ শব্দনীড়‘কে নিয়ে দুটি কথা-

শুরুতেই শব্দনীড়-এর সকল স্বনামধন্য ও নতুন ব্লগার, কবি, লেখক, গল্পকার, সাহিত্যিক, উপন্যাসিক সহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই শব্দনীড়ে’র প্রতি তাদের ভালোবাসা এবং বিগত পোস্টগুলোতে স্ব স্বকীয় অবদানের জন্য। যথেষ্ঠ মেধা শ্রম মনন এবং রুচির যে অসাধারণ সম্মিলন ঘটিয়েছেন তার জন্য।

আমরা জানি শব্দনীড় বাংলাদেশে বাংলা সাহিত্যের বহুল পঠিত, পাঠক প্রিয় ও পুরাতন ব্লগ গুলোর একটি। যদিও এখন শব্দনীড় নতুন আঙ্গিকে নতুন করে যাত্রা শুরু করেছে, কিন্তু শব্দনীড়ে’র পুরাতন ব্লগার, কবি, লেখক, গল্পকার, সাহিত্যিক, উপন্যাসিক সবাই শব্দনীড়’কে ভুলে যাননি, ভুলতে পারেন না এবং আবার শব্দনীড়ে ফিরে আসবেন বলে আমার বিশ্বাস। বিশ্বাসটি কে ধরে রাখতেও চাই।

একজন নতুন ব্লগার হিসেবে আমি আপনাদেরকে শব্দনীড়ে স্বাগতম জানাচ্ছি। আসুন আবার জমিয়ে তুলি শব্দনীড়’কে আমাদের নিজেদের স্বার্থে, আমাদের সবার স্বার্থে, সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসার স্বার্থে। শব্দনীড় থাকুক ভালোবাসায়।