নূপুর, ঘুঙুর ইত্যাদি

আমার মা আর বোন এখনো বিশ্বাস করে
আমার চাচা আসলে মারা যাননি
যেমন যুদ্ধ থেকে না ফেরা বাবার লাশটাও
আদতে তার লাশ ছিল না।

প্রতিবার বলতে বাধ্য হয়েছি, এরা নাবালক
প্রতিবারই আমাদের শিঙ্গারদানীর নীচে
একটা দাড়িওয়ালা ছাগল হেসে উঠতো খুকখুক করে
আর আয়নায় তখন দেখতাম দু’টো লাশের অবয়ব।

আমার মা আর খালার মধ্যে তখনো গলা জড়াজড়ি ভাব
খালার ছোট্ট ফুল ফুল ছেলেটাকে কফিনে শোয়ানোর পর
মা জানিয়ে দিলো, ও আসলে মরে গেছে
খালা বেহুদাই মাকে ধরে একটু কেঁদে পালিয়ে গেল।

দেশে সেবার মরমর দুর্ভিক্ষ
আমাদের সবগুলো আয়না ভেঙে খানখান
জুয়েলারী দোকানে মানুষ নাকি গয়না জমা দিতে ঢুকতো
সেদিকে তাকিয়ে মা বললো, এই বেজন্মাগুলো মরে না কেন?

ততদিনে আমাদের শিঙ্গারদানী বিক্রি হয়ে গেছে খাদ্যাভাবে
এ যাত্রা আর ছাগলদাড়ির হাসি বা কান্না কিছুই শুনতে হলো না।

8 thoughts on “নূপুর, ঘুঙুর ইত্যাদি

  1. অনন্য এবং অসাধারণ লিখন প্রিয় বন্ধু তুবা। সালাম জানবেন। ধন্যবাদ।

  2. একটা দাড়িওয়ালা ছাগল

    পুরো কবিতায় এই শব্দগুলি বেখাপ্পা মনে হলো। আর কেন যেন মনে হলো এই শব্দগুলি ব্যবহার করার জন্যই আপনি এই লেখাটি লিখেছেন।(এটা আমার মনে হওয়া ছাড়া কিছুই না)

    আমার মতে এই ধরনের শব্দগুলি কাব্য মান নষ্ট করে।
    শুভ কামনা।

    1. আপনার দেখার চোখ গভীর, বিশ্লেষণটুকু আমাকে আরো ভেবেচিন্তে লিখবার প্রয়াস জাগালো। ধন্যবাদ আপনাকে।

  3. আপনার কবিতা অসাধারন। এই কবিতাটিও তার ব্যতিক্রম নয়।

    শুভ কামনা।

  4. প্রতিবার বলতে বাধ্য হয়েছি, এরা নাবালক
    প্রতিবারই আমাদের শিঙ্গারদানীর নীচে
    একটা দাড়িওয়ালা ছাগল হেসে উঠতো খুকখুক করে
    আর আয়নায় তখন দেখতাম দু’টো লাশের অবয়ব https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।