নারী

বসন্তের আলোয় ঝলমল করে
উঠছে পাহাড়ি নদী।
চুপচাপ গাছের আড়ালে ফিসফাস শব্দ,
আলব্রাট্রাসরা তাদের আস্তানা ছেড়ে
উড়ে গিয়েছিল সুদুর দক্ষিনে,
একটু উষ্ণতার খোঁজে।
ব্যাস্ত তারা নিজ নিজ ঘরে ফেরার জন্য।

সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পরে
রাতে ঘরে ফেরে শিশুটির মা,
অবসন্ন তার শরীর।
উনুনে ফুটছে ভাত আর আলু সেদ্ধ,
রাতের বিছানায় জোর করে
প্রেমের উষ্ণতায় ভেঙে পড়ছে শরীর।

এই ভূতগ্রস্ত জীবনের অন্ধকার
কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত তা –
অঙ্কের কোন সংখ্যা দিয়েই বিচার করা যাবেনা।
সকালে শিশুটি দুহাত মেলে দেয় মায়ের দিকে,
অস্ফুট শব্দে ডাগর চোখে মাকে দেখে
আজ সে কিছুতেই যেন ছাড়বেনা, তবুও
নিবিড় আলিঙ্গন থেকে ছেলেকে নামিয়ে
চলে যায় তার কাজে।

রাতে ফেরার পথে পথ আটকায় চারজন পুরুষ,
জোর করে বিবস্ত্রা করে তাকে লুঠ করে তার অবশিষ্ট লজ্জা।
পথের ধারে পরে রইলো নিথর দেহ
প্রাণ ছেড়ে গেছে বিষাদলোক।

আচ্ছা কবরের আড়ালে
কফিনে গিয়ে পৌঁছোবে তো
বসন্তের এইসব আলো!

26 thoughts on “নারী

  1. এই ভূতগ্রস্ত জীবনের অন্ধকার
    কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত তা –
    অঙ্কের কোন সংখ্যা দিয়েই বিচার করা যাবেনা।

    লিখায় বক্তব্যের গাম্ভীর্যতা অনুধাবন করলে তথাকথিত পুরুষদের জন্য মাথা হেঁট হয়। :(

  2. অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকে..
    শুভকামনা থাকলো।

  3. প্রথমে বলে রাখি আপনার লেখনি শক্তি আমরা যারা ব্লগে লেখালেখি তাদের চেয়ে অনেক উচুতে। এই কবিতাটি আমার বক্তব্যকে সত্যি প্রমানিত করছে নিশ্চয়ই।

    ভাবছেন এভাবে কেন বলছি? কারণ একটা আছে, ইদানিং আমার বাজে একটা অভ্যাস হয়েছে অন্যের সমালোচনা করা। আর দিনে দিনে আমার সাহস একটু বেড়ে গেছে।

    সারা কবিতাটি নিয়ে কোন কথা নয়। অসাধারণ। শধু শেষ প্যারাটা

    আচ্ছা কবরের আড়ালে
    কফিনে গিয়ে পৌঁছোবে তো
    বসন্তের এইসব আলো!

    আচ্ছা শব্দটি বাদ দিলেইতো দারুন হয়। হয় না কি?

    আমি কয়েকবার পড়েছি আপনার কবিতাটি। আমার কাছে তাই মনে হয়েছে।

    শুভ কামনা আপনার জন্য।

    1. ভীষণ সম্মানীত বোধ করলাম আপনার মন্তব্যে .. সমালোচনায় সবসময়ই শিরোধার্য .. নিশ্চয়ই ভেবে দেখবো আপনার কথা শেষের লাইনগুলো যদি পরিবর্তন করা যায় .. শুভেচ্ছা নেবেন ..

  4. সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পরে
    রাতে ঘরে ফেরে শিশুটির মা,
    অবসন্ন তার শরীর।
    উনুনে ফুটছে ভাত আর আলু সেদ্ধ,
    রাতের বিছানায় জোর করে
    প্রেমের উষ্ণতায় ভেঙে পড়ছে শরীর।

    নিজের সংসারের কথাই আপনার কবিতায় খুঁজে পেলাম, শ্রদ্ধেয় কবি রিয়া দিদি। ওঁর শরীরটা বেশি ভালো নেই!  কখন যে কী হয়ে যায়!                

    1. আপনার জন্য শুভকামনা কবি দা। ভাল থাকুন দিবানিশি। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

  5. যথেষ্ঠ ভালো লিখেছেন কবি রিয়া রিয়া চক্রবর্তী। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

  6. বুঝিনা যুদ্ধ আমাদের জীবনের সাথে নাকি সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে?

  7. এই ভূতগ্রস্ত জীবনের অন্ধকার
    কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত তা –
    অঙ্কের কোন সংখ্যা দিয়েই বিচার করা যাবেনা।

     

    * কবিতায় ভাবের গভীরতায় নিয়মিত বিমোহিত হই…. https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gifhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gifhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

  8. ভীষণ দামি বিষয়বস্তু  এবং অসাধারণ চিত্রকল্প দিদি। অপার মুগ্ধতা নিয়ে পড়লাম!

  9. কবিতার ক্যানভাসে আঁকা জীবনের প্রতিচ্ছবি।  অসম্ভব ভালো লেগেছে প্রিয় রিয়া দি।  অভিনন্দন।     

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।