চিঠির পত্র ২

আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর ২য় পর্ব। আজকের চিঠি নিয়েছি –
নীল সঞ্চিতা এর “কিসের অপেক্ষায়” লেখা থেকে এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।

চিঠি ….. (নীলের লেখা)
সেই সম্বোধনহীন চিঠি অনেকদিন পর আজ আবার লিখতে বসলাম তোমাকে। অসময়ের হঠাৎ বৃষ্টির এই সকালে টেবিলে ছড়িয়ে থাকা কাগজ কলমে চোখ পড়তেই মনে হল তোমাকে লিখি।

চারদিকে কেমন উদাস হাওয়ার ছুটাছুটি। ইট কাঠের শহরের উঁচু দালানের ফাঁকে দেখতে পাওয়া এক চিলতে আকাশের গায়ে কালো মেঘেদের উড়াউড়ি। তাকিয়ে থাকতে গিয়ে গুনগুন করি…

“মেঘ পিয়নের ব্যাগের ভেতর মন খারাপের দিস্তা
মন খারাপ হলে কুয়াশা হয়, ব্যাকুল হলে তিস্তা।”

মন খারাপ ভাব দূর করার জন্য কফি বানিয়ে আনলাম আর তোমাকে লিখতে বসলাম তাতে চুমুক দেয়ার ফাঁকে। তুমিতো জানোই তোমাকে লেখার সময়টুকু কতটা উপভোগ করি আমি।

চারপাশটা বড্ড অদ্ভুত লাগে, জানো? এই যে দেখ আমার বারান্দায় টবের গাছের নতুন গজানো পাতাগুলো এই অপ্রত্যাশিত বৃষ্টিতে ভিজে কেমন আনন্দে ঝলমল করছে। অথচ ঠিক তার উপরে কার্নিশে বসা একটা আধভেজা চড়ুইপাখি জড়সড় হয়ে বৃষ্টি থামার অপেক্ষায় আছে। একটা রোদ ঝলমল দিনের অপেক্ষায় আছে।

“মেঘের দেশে রোদের বাড়ী পাহাড় কিনারায়
যদি মেঘ পিয়নের ডাকে সেই ছায়ার হদিস থাকে
রোদের ফালি তাকিয়ে থাকে আকুল আকাঙ্খায়
কবে মেঘের পিঠে আসবে খবর বাড়ীর বারান্দায়, ছোট্ট বাগানটায়।”

আমি কিসের অপেক্ষায় আছি বলতে পারো?

ভাল থেক।
নীল…

_____________________________

আমার উত্তরঃ

নীল,
তোমার গানের গলা বরাবরই অসাধারন ছিলো, কত দিন অলস বিকেলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে তুমি আকাশ দেখে গান গাইতে আমি চুপি চুপি এসে মোড়াটা টেনে তোমার পিছনে বসে শুনতাম
.
সখি ভালোবাসা করে কয় …
.
তখনো তোমার গানে কোন সম্বোধন পাইনি, আজো খুঁজিনা কিছু চলমান পাতা না হয় সম্বোধনহীন থাক ক্ষতি কি?
.
এখনো তুমি আগেরই মত অপেক্ষায় থাকো একটি প্রহরের যেখানে বসে মন খারাপের ফুলগুলো খাতার পাতায় কবিতা হয়ে যায়, আচ্ছা বলতে পারো কতটা প্রভাবে মনের ক্ষত চোখের কোনে জ্বালা ধরায় কিন্তু বৃষ্টি আনে না। জানি এর উত্তরও তোমার অজানা। অথচ তুমি চাইলেই পেতে হাজার রংয়ের মেলায় জীবনের উল্লাস।

যে চড়ুই পাখি একা ভিজে কর্নিশে বসে থাকে বুঝতে হবে সে তার সঙ্গীর অপেক্ষায় পথচেয়ে আছে. এটাই চড়ই পাখির চরিত্র গত একটা দিক। কোথায় য়েন পাখির চরিত্র খুঁজতে গিয়ে পড়েছিলাম ঠিক মনে নেই তবে একটি বিষয় ঠিক মনে আছে পখি চরিত্রের মানুষ হয় মানুষ চরিতে পাখি মেলে না।
একটি ঝলমলে দিনের থেকে এখন বেশী প্রয়োজন একটি ঝলমলে মানুষের।

”মেঘবালিকা খুব উচাটন বাতাস কেন ধায়!
কোন বাতাসে কোন সে জীবন কোথায় নিয়ে যায়;
রোদ গুলো সব খাচ্ছে খুঁটে আমার শরীর রস
ভালোবাসা কম কি ছিলে ! হলে নাতো বশ।
অপেক্ষার প্রহর গুলো অধিক জ্বালাময়
যে কারনে পথ চাওয়া সেটাই তোমার ভয়।”

ভালো থেকো
এক জীবনে যতটা ভালো থাকা যায়।

খেয়ালী
১২/০৩/২০১৭
IMG_3346 copy (2)

আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয়। মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে ( তা হোক কবিতা কিংবা গল্প বা সাধারণ ) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো। যেমন আজ দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।

12 thoughts on “চিঠির পত্র ২

  1. খুব নস্টালজিক। চিঠিবেলার কথা মনে করিয়ে দেয়।
    এখন তো মুঠোফোন ফেসবুক কত্ত কি। শুভেচ্ছা আপনাকে।

    1. আপনাকেও ধন্যবাদ,
      সত্যি মুঠোভর্তি অথেৃর বাজারে আবেগ গুলো গিলে খেয়েছে সময়।
      ভালো থাকবেন, সাথে থাকবেন।

  2. চিঠির পত্র ২
    এখানে আপনার মেধার তড়িৎ সাক্ষাত আমাদের মুগ্ধ করেছে প্রিয় বন্ধু।
    শ্রদ্ধেয় নীল সঞ্চিতা’র লিখা এবং প্রত্যুত্তরে আপনার সদুত্তর এককথায় ফ্যানটাসটিক। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    1. অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় মুরুব্বী।
      সাথে থাকবেন আশাকরি।

      1. আপনাদের পাশাপাশি আমিও যে চলেছি এই পথ-দূর্গম। :)

  3. কিছু চলমান পাতা না হয় সম্বোধনহীন থাক ক্ষতি কি?
    এত অসাধারণ উত্তর পেয়ে আমি আপ্লুত। আপনার জন্য অনেক বেশি শুভকামনা।
    চিঠি নিয়ে ফিরে আসব আবার কোন একদিন। তার মাঝে অন্যদের চিঠির পত্র দেখার অপেক্ষায় আছি।

  4. বাহ দারুন,,,,,,যেমন চিঠি ছিল,,,,,তেমন উত্তর
    অসাধারণ,,,,,,,,,,,,,https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gifhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

  5. তোমার কণ্ঠের নজরুল গীতি শোনা হয় না। সেদিন নাকি তোমার বাড়িতে গানের আসর বসেছিলো। অনেকে ছিলো শুধু আমি ছিলাম না থাকার কথাও নয়।
    ——–
    তোমার সাথে আবার জোছনা দেখতে যাবো।
    তোমার খুব অভিমান আমি সেই হেমন্তের জোছনা মুখর সন্ধ্যার কথা কেন বলি না। তোমার হাত আমার বুকের বোতামে … ড্রাগনে নিঃশ্বাস
    আমার বুকের মধ্যে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে…।

  6. অনেকদিন পর চিঠি পড়লাম। ভালো লাগল

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।