খেয়ালী মন এর সকল পোস্ট

বাবা দিবসে … বিনিদ্র রাতের ভাবনা

স্তব্ধ শ্রাবণ রাতে
পেলাম না কবিতার দেখা,
মেঘেদের ডাকে বিদ্যুৎ রেখায়
অালোর নৃত্য চলে অন্ধকারের দুয়ারে।
মনে পড়ে……
বাবার বা হাতে আমার ডান হাত বন্দী
বাবা ডান হাতের ছাতাতে বৃষ্টির ঝাপটা সামলাতেন
আমার চেষ্টা ছিলো হাত মুক্ত করে এক দৌড়ে
পাকা রাস্তায় যাবো।

ভবিতব্য এনে ছেড়ে দিয়েছে
বর্তমানকালের চৌরাস্তা মাঝে;
বাবার ছাতাটি আজ আর কোথাও খুঁজে পাই না
আমার ছাতার নীচে নতুন প্রজন্ম সেই একই গল্পের নতুন শিল্পী।

বর্ষায় যেমন পুরাতন হলুদ পাতা খসে পড়ে মাটির বুকে তেমনি
স্মৃতির পাতা খসে খসে জন্ম নিচ্ছে আগামী প্রজন্ম

তবু কিছু রেখেছি মুষ্টিবদ্ধ হাতে….
পুরাতন গান নতুনের খাতায় কালো কালিতে এঁকেছি
বাবার চশমার মোটা ফ্রেমটির আমার চোখে
থেকে গেছে!
থেকে যায়?

অামার ছেলেবেলা রাতের শিশির হয়ে সবুজ ঘাসে ঝড়ে পড়ে
বাবার চশমা অমূল্য ভালোবাসার স্মারক বানিয়ে হৃদয়ে জমা রেখেছি
যখন সারা রাত জেগে বসে বসে
শিকড়ে স্মৃতির গল্প খুঁজি
গল্প খুঁজি!
জীবন খুঁজি?

শ্রাবণে রাতের মত আমিও রাত হয়ে যাই
চোখের বৃষ্টিজল শ্রাবণ রাতের বৃষ্টিজলে ধুয়ে নিয়েছি
আমি!!
খাঁচায় আমি?

বাবার সেই পুরাতন সাদা পাঞ্জাবি
কোথায় যেন হারিয়ে ফেলেছি
সেই থেকে…….. সেই থেকে
রক্তজবা চোখে নিয়ে বসে আছি…
আমার আর ঘুম আসে না।
==================♣♠

হিরন্ময় ঘৃণা

2869

রাতের তীব্রতায় উড়ে যায় গৃধিনীর
ডানার নীচে থাকা শ্বেতশুভ্র বরফের নির্মাণ।
আকীর্ণ শহরের প্রলুব্ধ রঙ চোখের কোণে
রক্তজবা হয়ে জেগে ওঠে স্বপ্নের ঘোরে।
নিস্তব্ধতা জানিয়েছে আজ ইন্দ্রচাপ ছুঁড়ে দিলে
রামধনুর বুকে আঘাত লাগে না কোন।
ইচ্ছের নীলাভতম সুর জন্মে বিষণ্ন শহরের মিছিলে মিছিলে,
তারপর ছড়িয়ে পড়ে, গেরুয়া মাটির সাথে মানুষের পায়ের নীচে।

আমার বুকের মাঝে চাপাপড়া সবুজ ঘাস
উজাগর হয়ে জেগে থাকে শিশিরজলে মুখ ভিজাবে বলে।
তবু আমি অনাকাঙ্ক্ষার বেড়াজাল ছিঁড়ে আগাগোড়া
শরীরটা নিয়ে হেঁটে যেতে পারি না বুনোহাঁসের ডানার নীচে।
রাতের কিনারায় পড়ে থাকা বিশাল আকাশ তার
সমস্ত শরীর জুড়ে অসংখ্য নক্ষত্র নিয়ে
হারিয়ে যায় আগুনের আস্তাবলে।

জেনে রেখো
ক্ষেতের শস্য তুমিও কেটে ফেলে দিয়েছিলে কাদাজলে
সেই থেকে অভুক্ত হাড় ও করোটি পড়ে আছে পায়ের নীচে;
একে তুমি রুচি বলো, সংস্কৃতি বলো কিংবা হুলিয়া কিচ্ছু যায় আসে না।
কিছু পুরুষের ঔরসে জন্মনেয়া জন্মগত দাগ
আজন্ম থেকে যাবে শিরকাটা নির্বোধ প্রেমিক হয়ে।

পিট্টান

33992

ঠিক একদিন চলে যাব
সব সুখ ভালোবাসা, আর
দুঃখ কষ্টকে সাথী করে।
চলে যাব বসন্তের বাতাসে মত
চলে যাব গোধূলি রক্তিম আলো অঙ্গে মেখে।
অবক্ষয়ে সুর বুকে নিয়ে চলে যাব যে দিন
তোমার অমলিন লাজুক হাতের ইশারা,
বাঁকা চোখের শাসন আমাকে ফিরাতে পারবে না।

আমাকে নিয়ে যাবে কোন রোদ্রউজ্জল দিন,
আমাকে সঙ্গ দেবে দীর্ঘ গাঢ়তম শ্যমল রাত।
ঠিক চলে যাব একদিন
শানবাঁধানো পুকুর ঘাটকে পিছে ফেলে,
তপ্ত দিনের ঝিঁঝিঁ ডাকা দুপুরের মাঝ বরাবর;
বাঁশের সাঁকোটির দিকে ফিরেও তাকাবোনা।
অতলান্ত সুখের ঘুমে তোমার পাশ ফিরে শুয়ে থাকা মুখটি
আমাকে আর ফেরাতে পারবে না বাসনার রাজ্যে।

মেঠো পথের মোরে, চায়ের টোং ঘরটি
পিছে ফেলে চলে যাব,
পাখিদের ডানার শব্দ সাথে নিয়ে
ঠিক চলে যাব বেহুলার ভাসান পালা হয়ে।
খুব সকালে শিশির ভেজা ঘাসে খালি পা’য়ে হেঁটে চলে যাব,
গাঁদাফুলের মাতাল করা সুবাস পড়ে রবে তোমার অঙ্গনে,
আমি বেমালুম ভুলে যাবো প্রাগৈতিহাসিক কোন প্রেম কিংবা
অধিক ভালোবাসায় হারানো রাজ্যের কষ্টবোধ।
এক দিন চলে যাব
এক দিন ঠিক চলে যাব
ঠিকই একদিন চলে যাব।

সমস্ত রকম ভালোবাসার সূতোর টান ছিন্ন করে
সমস্ত প্রকার যন্ত্রণার বোঝা বুকে নিয়ে
সমস্ত কিছুর অবলম্বন অবলীলায় ভেঙে দিয়ে
চলে যাব দূর থেকে আরো দূরে
হাজারো আলোক বর্ষ ব্যবধানে,
ঠিক চলে যাব
ঠিকই চলে যাব
একদিন, একা।

সত্যের আধারে অভিমান

2698

মুক্তাগুলো অশ্রু হলো আজ
পরবে কোথায় ময়ূরকণ্ঠী হার?
চোখের কোণে এক সাগরের জল
হৃদয় তবু সাগর জাহাজ খোঁজে।

পাল ছেঁড়া সেই জাহাজ সাগর জলে
খুঁজেফিরে ছোটো কোনো দ্বীপ,
কম্পাসটি তার কাজ করে না আজ
কী লাভ বলো অভিমানী হলে?

ফুলের বুকে লুকিয়ে থাকা ভ্রুণ
পায় কী সদা মেঘপরীদের দেখা?
কিছু মানুষ একলা জীবন খোঁজে
মরূদ্যানে হাঁটে একলা একা।

বীণাবাদক হারায় যদি সুর
কিংবা ধরো ছিন্ন বীণার তার
কী করে সে গাঁথবে বাসর মালা?
তারচেয়ে ভালো যাও অভিমান ভুলে
প্রেম মানেই বিষবৃক্ষের জ্বালা।

কী হবে আর অভিমানী হয়ে
অস্তাচলে শুকিয়ে গেছে ফুল,
উপায় বিহীন শর্ত যত ছিলো
স্রোতে ভেসে হারিয়েছে তার কূল।

গেঁথো না আর হীরক কুচির মালা
মুছে ফেলো চোখের শুভ্র জল,
অভিমানের সকল শীলালিপি
সত্যের আধারে ফিরে পাবে সব
খসে পড়া সম্বল।

ছবির গিয়ারঃ ক্যানন ৬০ডি

আমার বয়সি স্বভাব ♥

জীবনপথে বিভাজন সমর্পিত বিষ
বালু দাগ মুছে দেয় বাতাসের শীষ;
তবু আমি জেগে থাকি ভাঙ্গনের পথে
স্বপ্নের চলাচল নির্ভীক রথে।
পথ হাসে, রথ হাসে, হাসে কত জন
বেখেয়ালে পণ্য যাপিত জীবন;
কষ্টের সখা আসে গাঢ়তর রাত
দু কলম লিখে রাখে আমার বরাত।

চোখ জ্বলে জলপরে সুখ খোঁজে মন
সুখের বেহাগী সুরে মগজে কাঁপন;
কাঁপন ধরায় শীত বয়সি অভাব
ঘরজুড়ে বাস করে বিষধর সাপ;
পথেপথে ঘোরে জীব জীবনের যানে
কতটা পেলে বলো উত্তর ও মানে!

হয় না পূরণ সব থাকে কিছু বাদ
সুরের সাগরতলে করুণ আবাদ
ডুবে আছে বেশভূষা সৌখিন রসে
হয়না আপন প্রেম অাসে না সে বশে।

.
** নিজের তোলা প্রিয় একটি ছবি।

হারানো অলকানন্দা

প্রথম হলুদ রঙের অলকানন্দা দেখেছিলাম
চিম্বুক পাহাড়ে শ্রাবণের এক ক্ষণে।
বৃষ্টির বারি’তে ভেজা পাহাড়ে ফোটা ফুল
কেমন যেন আড় চোখে তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে।

তার স্নিগ্ধতায় আমি
বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম সময়ের পদযাত্রা,
কতটা সময় চলে গিয়েছিলো মনে নেই আজ
ঝিরঝির বাতাসে ঝরে পড়া ফুল তুলে নিয়েছিলাম,
সাজিয়ে ছিলাম দু’হাতের আঙ্গুলে নিজের অজান্তে
তারপর… অনেকটা সময় তাকে নিয়েই ঘুরে বেড়িয়েছি
বন জঙ্গলে, নদীর তীর ঘেসে জেগে ওঠা কাশফুলের ঘরে,
আকাশের দিকে চোখ রেখে দেখেছি সাদা মেঘের পালকি
নদীর পালতোলা নৌকা গুলোকে মনে হয়েছে বাসরশয্যা …

সময়; হায়রে সময়…
ধীরে খুব ধীরে ফুলের বুকে জমে যায় সময়ের মলিনতা
হাতের আঙ্গুল থেকে খসে পড়ে শুকনো অলকানন্দা ছোট নদীটির বুকে,
ভেসে যায়.. ভেসে ভেসে চলে গেছে স্রোতস্বিনী বহমান জলে
আমার বুকের জলের জলছবি শুকনো বালুর মাঝে;
বাতাস ছোঁয়াইয়াছিল বিষয়ের বিষ, সেই বিষ বালুর একটি কণা
চোখের খু্ব গভীরে আজো আটকে আছে ফুলের অতীত হয়ে।

সেই থেকে সব বাঁধন স্বাধীন হয়ে গেছে
সেই থেকে সব ইচ্ছা মুক্ত খাঁচায় বন্দী
সেই থেক সব প্রেম তারা হয়ে খসে
সেই থেকে শব ভালোবাসা নবীন চন্দ্রে জাগে
সেই থেকে আমার হাতের মাঝে কারো হাত আর বন্দী হয় না।

নন্দিত দুঃখবোধ

Melicope

পাল্টে যাওয়া নদীর শরীর আজ
জোয়ার ভাটায় মাটির শরীর ভাঙ্গে,
অঙ্গনে থাকা কনক সুগন্ধ হৃদয়;
থেকে থেকে সুখের স্বপ্ন আঁকে।
স্বপ্নে দেখা সকল সুখের দিন
বসবাস করে প্রলয় জতুগৃহে
সব সুখ বন্দী হয় না খাঁচায়
কিছু ভালোবাসা শব হয়ে যায় ভুলে।

অতলান্ত শব্দের গভীরতায়
জীবন তৃষ্ণা আঁধারের পথে চলে,
বিভাজন যতটা সহজ মনে হয়
জীবন বৃক্ষের পাতা ততটা সবুজ নয়;
তবুও চিন্তার আগুন দাবানল হয়ে জ্বলে
পোড়ায় বনানী বুকের গহীন তলে।

চিতার ছাই আজো ভেসে যায় জলে,
পেয়ে যায় পথ অজানা স্রোতের টানে
চিন্তার আগুন যতটা পোড়ায় মন
ভস্ম জমে না হৃদয়ের গৃহ কোণে।

গঙ্গার জল যতটা প্রাণ পায়
পা’য়ে বাঁধা থাকে হাজার বিদায়ের ব্যথিত কান্নার সুর
গল্পের ছবি সর্বদা মিলন রেখায়
বাস্তবতা, অতলান্ত ভালোবাসার চাষ ভূমি;
সুখের সাথে দুঃখ’ও থাকে মধুর।
=========================♥

বিচ্ছেদের সঙ্গীত

2328790_n

বুকে জমে আছে শ্রাবস্তীর ইতিহাস
বয়ে গেছে কত অলকানন্দার জল
ভেসে যাওয়া দিনের শুভ্র মেঘের দল
শ্যামল গাঢ় হয়ে ঝরে ঝড়ের কোলাহলে;
বেঁচে থাকা দিনে তপ্ত বালির দহন
থেকে থেকে আজ জীবনের কথা বলে।

কাব্যের প্রেমে শব্দের সংস্কারে
ক্লান্তির ফুল ঝরে পড়ে আঙ্গিনায়
জাগ্রত প্রেমের প্রার্থনা সঙ্গীত
পার্থিব সুখ খোঁজ করে দ্রাঘিমায়।

আমাদের দেখা তিমির তাম্রলিপি
লুকিয়ে রেখেছি পৃথ্বীর গহীন বুকে
অজানা আগামী খুঁজে পাবে একদিন
প্রেমের যুগল উড়েছিলো কোন সুখে।

সূর্যের বুকে গ্রহণ যখন হয়
চাঁদের অলো পায় না ধরণী
বিকাশিত ক্ষণ স্থবির পাথর হয়ে
খোঁজ করে শুধু তৃষিত মরমী।
চোখের কোণে সলিল মুক্তো তবু
বিলোড়ন হয় মনের সবুজ ছায়ায়
আমাদের মাঝে বৈশাখ থেকে বিচ্ছেদ
এনে দিয়েছিলো বিধাতা অনেক মায়ায়।
======================== ♣

শব্দঋণ

1943317

নিঃশব্দের শব্দঋণ জমে আছে
বুকের গভীরে গাঢ় রাতের মত,
চোখের কোণে টলটলে বৃষ্টিজল তবুও
কোথাও বৃষ্টি হয়নি;
অাশাহত স্নিগ্ধতা জেগে আছে অপ্রাপ্তির সবুজ ঘাসে।

একদিন সোনালী বিকেলে হলুদ পাখি
হারিয়েছে তার নীড়ে ফেরার স্বাধীন ইচ্ছা,
একদিন ঘরের চৌকাঠ পেরিয়ে দেখি
উঠানের কোলঘেঁষা কৃষ্ণচূড়া গাছটি শুকিয়ে গেছে,
একদিন সিগারেটের ধোঁয়া অাটকে পড়ে
বুকের ফুসফুসবিহীন চিন্তার জালে,
একদিন মৌলিক রঙে সমস্ত অতীত
শব্দঋণ জন্মদেয় নিঃশব্দের ক্ষরণে

একদিন…
একদিন…
এক একটি দিন…
সব কিছু ফেলেদিয়ে রাত্রি ডেকে আনে
আমি গভীর অন্ধকারে পা ভিজিয়ে বসে থাকি
আমি নীরবতাকে দু’হাতে ঢেকে দেই
আমি আনন্দের বিষণ্ণচিত্তে ভেঙে দেই শালিকের নীড়

আমি…
আমি…
আমিই আমার..?
আমার সকল ক্লান্ত বাতাস
অামার সকল পৌঢ় ছায়া
আমার সকল শিকারী সময়
আমার সকল সবুজ পাতা
আমার সকল স্বপ্ন জন্ম লয়

নিঃশব্দের শব্দঋণে জমে আছে
বুকের গভীরে গাঢ় রাতের মত
তোমার শান্ত দিনের রোদের অালোয়
নিঃশব্দতার ক্ষয়।
======================♠♠

নীল খামের ভালবাসা

1864726

নীল খামে ভরে পাঠিয়েছিলে যে ভালোবাসা
আজ তাকে মনে হয় কলমী লতার ফুল
ভেসে থাকা প্রাণ চোখের জলের সাথে
স্বপ্নের মাঝে হারায় অমরাবতী।

ফাগুনের আগুনে হৃদয়ে দাবানল
সবুজ পাতারা হলুদ হয়ে ঝরে
তোমার আমার জীবনের দোলাচল
অচল গল্পের মুলতবি টেনে আনে।

রাতের আকাশে আঁধারের ঘোরে
নক্ষত্রপথে চপলা চঞ্চল আলো,
দূর থেকে দেখে তৃষ্ণা শুধুই বারে
তার থেকে ভালো, হয়ে যাও এক নদী
সম্পূরক প্রেম ভাসে যাবে নোনা জলে।

শরাবের পেয়ালায় একাকি মানব জাগে
শিহরণ খোঁজে লাজুক রাঙা জলে
খাঁচায় বন্দী ময়না পাখিটা আজ
শেখানো কথা নিজেকেই নিজে বলে।

এখনো ফাগুনের হয়নি অবসান
শুকানো পাতা পায়ের চাপে ভাঙে
অঙ্গনে থাকা নীল হওয়া কলমী ফুল
চিরবিদায়ের সুর জাগে তার গানে।
======================= ♥

হতভাগা চাঁদ

asman4

আজকে রাতে চাঁদ খেয়েছে আমাকে
আমিও এক আধপোড়া রুটি চাই
ঘুমিয়ে যাবো ভেবেও জেগে আছি
বুকের ভিতরে ছুঁচোর কেত্তন
শুনছি বসে ঠায়।

আজকে রাতে চাঁদের হামাগুড়ি
শরীরে বেশ লাগছিল সুড়সুড়ি:
মাঝে মাঝে হাসির কাঁপুনি এসে
জ্বরের বেশে ছড়িয়ে পড়ে গায়,
চাঁদ জানে না নিজের উষ্ণতা
বিপদ সীমায় জোৎস্না যতই ঢালুক
মাঝ রাতে আমারো শীত পায়।

আজকে রাতে চাঁদের মৌন আলো
আছড়ে পড়ে আমার বিটঙ্কে,
চোখের মাঝে উষ্ণ সূর্য নিয়ে
মৌন মিছিল লাগে না আর ভালো।
দূর হয়ে যা হতভাগা চাঁদ
আলো মানেই তপ্ত কাঞ্চন ক্ষেত্র
বাঁচার জন্য চাইনা বল্লরী
ঘুমের জন্য অন্ধকারই আলো।
====================♠

পালক ঝরে পড়া বসন্তকাল

167595324_102

এই বসন্তেও আমার আরো একটি পালক খসে পড়েছে
শুক্লা দশমীর আদুরে চাঁদ যেমন তাঁর রাত কাটিয়ে
হেঁটে যায় শেষ মৃত্যু পূর্ণিমার দিকে ঠিক তেমনই
এই আলোর অানন্দ শেষে শুরু হবে নূতন যাত্রা
হীম অাঁধারে পথে অনুভূতিহীন শরীর ফেলে রেখে
হেঁটে হেঁটে চলে যাবো কোন কল্পিত জগতে।

প্রশ্নেরা জেগে থাকে তবু অপূর্ণ বাসনায়…
আমি কী ভালোবাসতে পেরেছিলাম;
আমাকে তৈরীর সেই সৃষ্টিকর্তাকে, আমার মা’কে
বাবা’কে, আমার শিক্ষা গুরুদের
আমি কতটা ভালোবেসেছিলাম
আমার সন্তানদের, ভাই, বোন, বন্ধুগন
কিংবা সহধর্মিণীকে…
তার উত্তর শরীর আর দিতে পারবে না তখন,
আর প্রাণ……
সে তো এক বন্দীদশা থেকে মুক্তি নিয়ে
অন্য এক চির বন্দী নিবাস যাবে।

এই অপার সুন্দর দুনিয়ায় অামি কে!
শুধু আমি কেন!
পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণ এক একটি পপঅাপ
মাত্র কয়েক সেকেন্ড স্থায়িত্ব
এর মধ্যেও কত শত নিজেরই বিজ্ঞাপন প্রচার কিংবা
ক্ষমতা নামের পণ্যটির প্রসার নিয়ে ব্যাস্ত।
আমি, তুমি কিংবা আমরা কেউই এই
চক্রের বাহিরে যেতে পারিনি, পারিনা, পারবো না, তবে
হয়তো হতে পারে আমাদের প্রকাশের ধরনটা ভিন্ন।
এই বসন্তে আমি আরো একটি পালক হারালাম
যেমন প্রতিটা দিন তার সময়ের ক্ষয়ে যাওয়া
আলো নিয়ে হেঁটে যায় রাতের
অন্ধকারের গহব্বরে।
=============♠♠============

**ছবিটি কক্সবাজার থেকে তুলেছিলাম।

অন্ধকারের ক্ষরণ

শরীরে জেগেছিলো বিষধর কেউটের ছোবল
জীবনের পোড়খাওয়া অাগুন
বিভাজনে টানে ভেসে যায়
সময়ের মাঝ সমুদ্রে,
বিধাতার ভাগ্যলিখন দোষে দুষ্ট
সমর্পিত সময়,
আমি কোথাও পরিকল্পিত
সুখের জীবন দেখিনা।

খসেপড়া সময় বৈদিক যুগের মত ফিরে আসে
মোহনার কাছে,
গাঙচিল ডানার ভাঁজে মেখে নেয়
রোদের বিন্যাস;
বেহুলার ভাসান পালাতেও
জেগে ওঠে প্রাণ।
সবটাই সময়ের ক্ষত
যেখানে
পাতায় শিশিরের মত জমে থাকা স্বস্তিটুকু
ঝরে যায় রোদ্দুরের দৃষ্টিতে
যেখানে
তপ্ত হৃদয়ের পাশে ঝুলে থাকে মহাকাল।
যেখানে
জেগে ওঠে নয়নোৎসব হেমন্তের সকালে তবু
হয়না সকাল মালঞ্চের বনে।
যেখানে
ধরনীর বিষমধু যতটা করেছি পান ততটা
বন্ধ দুয়ার খুলে করনি আহব্বান।
যেখানে
জানালার গ্রীল ধরে ঝুলে থাকা রোদ
পর্দাপ্রথায় দেখেনি গৃহ অভ্যন্তর।

অদ্ভুত অন্ধকারে হৃদয়ের শরীরে
ক্ষরণ সাপের বিষে বেঁচে থাকা মন
একাকি প্রহর গোনে বিসর্জনে আনমনে,
তবু রোদকে সাজাই আজো নয়নের রোষে।

অচির প্রেমের ঝড়

21159-sc

অামার একটি দুপুর নূপুর পায়ে
সন্ধ্যা তারা খোঁজে
আমার এক বিকেলে উদাসি হাওয়া
হৃদয়ের ঘরে তোমাকে না বোঝে।
আমার তুলসি তলার সন্ধ্যা প্রদীপ
রাত জেগে যায় সুখের আশায়
আমার মন গহীনে স্বপ্নের নদী
ভর দুপুরে দু’কুল ভাসায়।

আমি সকালবেলা দুপুর হারাই
সন্ধ্যাকালে রাত
আমি পূবের আলো পশ্চিমে পাই
এমনই বরাত।
আমি জাগরণে ঘুমিয়ে থাকি
ঘুমের মধ্যে জেগে
আমি বদ্ধ ঘরে টর্নেডো পাই
হারানোর আবেগে।

তোমার ললাট বিশাল আকাশ
চাঁদ হলো লাল টিপ
জলবতী মেঘ সেথায় উড়ে
খোঁজ করে তার দিক।
তোমার অচির প্রেম চিরহরিৎ
সময় কিংবা ধ্যানে
পর্ণমোচী করলে আমায়
নিজের প্রয়োজনে।
====================♥♥

শীতল প্রতিফলন

indexa

অামাকে ফিরিয়ে দিয়ে
ঘরে ফিরে গিয়ে অায়নাতে নিজেকে দেখ
দেখতে পাবে তোমার কপালের মাঝ বরাবর
লাল টিপটি আর নেই।
আমাকে ফিরিয়ে দেবার পরে, তোমার
অনুভুতি গুলো হারাবে তার উষ্ণতা
নরোম বিছানায়, বালিশে আর আরাম কেদারায়।

আমি ফিরে আসার পরে, তোমার
কটিবন্ধনীতে থাকা চাবির গোছা
খসে পরবে সুতীব্র চিৎকারে জীবনের অবগাহনে।
আমি চলে আসবার পরে, তোমার
স্বপ্ন থেকে ফিরে যাবে স্মৃতির আহূতি,
নিয়মের বেড়াজাল তুলেনেবে সময়ের ক্ষার;
অদ্বৈত অনুভবে হবে জীবন অপার!
সত্যি আমি চলেগেলে, তোমার
শাড়ির কুচি অযত্নে আলুথালু শরীরের খাঁজে
চোখের কোণে লেপটে থাকবে মায়াবী কাজল
এলো চুল উড়বে হাওয়ায় টুকরো বিস্মৃতির মত।

অামাকে ফিরিয়ে দিয়ে
ঘরে ফিরে গিয়ে অায়নাতে নিজেকে দেখ
তুমি আর তোমাকে খুঁজে পাবে না।
আমাকে ফিরিয়ে দিয়ে
আয়নাতে নিজেকে দেখলে, দেখতে পাবে
সুখের উল্ট পথে হেঁটে যাচ্ছে
জীবনের শীতল কফিন।
========================== ♠♣