এক যে ছিল রাণী। তিনি কুকুর পুষতে ভালোবাসেন। ঈশপের গল্পের পশুপাখির মত তার পোষা কুকুরগুলো কথা বলতে পারতো। কুকুরগুলো কি না রাণীর খুব আদরের তাই তিনি তাদের মন্ত্রী করে নিলেন।
শোষক রাণী জানেন কপট ভালোবাসা দিয়ে কুকুর পোষা যায়, প্রজা পোষা যায়না। প্রজারা কুকুর নয় যে রাণী শোষণ করলেও মুখ বুঝে সহ্য করবে, রাণীর মিষ্টি মিষ্টি মিথ্যে কথায় খুশীতে লেজ নাড়াবে। প্রজাদের লেজ নেই, তেজ আছে। তাদের শাসন করতে হয় ভয় দেখিয়ে। রাণী প্রজাদের ভয় দেখানোর ব্যবস্থা করলেন-
রাণী: দেশ জঙ্গীতে ভরে গেছে, আমিই তোমাদের রক্ষা করব।
রাণীর সাথে এক ধাপ এগিয়ে গলা মিলালো পোষা কুকুরের দল-
ইনু: দেশ জঙ্গীতে ভরে গেছে, রাণীমা ছাড়া উপায় নাই… উপায় নাই…
মিনু: দেশ জঙ্গীতে ভরে গেছে, রাণীমা ছাড়া উপায় নাই.. উপায় নাই…
হানু: দেশ জঙ্গীতে ভরে গেছে, রাণীমা ছাড়া উপায় নাই.. উপায় নাই…
হামু: দেশ জঙ্গীতে ভরে গেছে, রাণীমা ছাড়া উপায় নাই.. উপায় নাই…
নাসু: দেশ জঙ্গীতে ভরে গেছে, রাণীমা ছাড়া উপায় নাই.. উপায় নাই..
রাণী আর পোষা কুকুরদের দিন সুখেই কাটছিল। হঠাত এক বড় রাজ্যের রাজা বললেন “জঙ্গীদের আমরা মেরে দিব- ভয় পেওনা।” রাণী জানেন ঐ রাজা শুধু জঙ্গীই মারবে না, তাকেও ক্ষমতা থেকে তাড়াবে। তাই রাণী ভোল পাল্টালেন-
: এই রাজ্যে জঙ্গী নাই, যারা বলে জঙ্গী আছে তারা সবাই দুষ্ট লোক।
রাণীর থেকে এক ধাপ এগিয়ে গলা মিলালো পোষা কুকুরের দল-
ইনু: দেশে কোন জঙ্গী নেই। যারা বলে জঙ্গী আছে তারা সবাই কুত্তার বাচ্চা…
মিনু: দেশে কোন জঙ্গী নেই। যারা বলে জঙ্গী আছে তারা সবাই কুত্তার বাচ্চা…
হানু: দেশে কোন জঙ্গী নেই। যারা বলে জঙ্গী আছে তারা সবাই কুত্তার বাচ্চা…
হামু: দেশে কোন জঙ্গী নেই। যারা বলে জঙ্গী আছে তারা সবাই কুত্তার বাচ্চা…
নাসু: দেশে কোন জঙ্গী নেই। যারা বলে জঙ্গী আছে তারা সবাই কুত্তার বাচ্চা…
কুকুরদের চিৎকারে অতিষ্ঠ প্রজারা ভেবে পাচ্ছেনা রাণী পোষা কুকুরগুলোকে থামতে বলছেন না কেন। কুকুরগুলো তো রাণীকেই “কুত্তার বাচ্চা” বলে গাল দিচ্ছে। কারণ জঙ্গী থাকার কথা রাণী সব থেকে বেশী বলেছেন।
রাণীর কি আর এতকিছু ভাবার সময় আছে! পোষা কুকুরদের চিৎকার শুনে তিনি নিশ্চিন্ত হন। প্রবল আনন্দের একটা অনুভূতি মাথা হতে মেরুদন্ড বেয়ে নামে। মেরুদন্ডের নিম্নপ্রান্তে পরম আনন্দের তীব্র অনুভূতি জমে জমে ছন্দে ছন্দে দোলা খায়। সেই দোলায় দোলায়িত হয় কুকুর পুষতে পুষতে, কুকুরদের সাথে থাকতে থাকতে রাণীর বেড়ে ওঠা লেজ।
অসাধারণ। এবং অসাধারণ।
প্রতীকী লিখাটি পড়লাম দাদা। বরাবরের মতো সাইলেন্ট লাইক।
আরে! সাইদ ভাই যে! মাস তিন/চারেক আগে নারায়ণ গঞ্জ গিয়েছিলাম একটা ফ্যাক্টরী ভিজিটে। মনে হলো আপনি আপনার সন্তান কে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছেন বা আসছেন। ডাক দিতে গিয়েও পারলাম না। ভিড়ের মধ্যে কোথায় যে হারিয়ে গেলেন! আমি নারায়ণ গঞ্জে আপনাকেই দেখেছিলাম নাকি আপনার মতো অন্য কাউকে তা আজও অজানা রয়ে গেলো। সেই বই মেলার পর আর দেখাই হলো না। শুভকামনা ও শুভেচ্ছা!!!