বাদল। আট বছরের বালক। বাড়ি সিরাজগঞ্জ। বাবা-মার সাথে টংগীতে এসেছে। বাবা ভ্যান চালায়, মা আর বাদল কার্টন বক্স বানানোর কারখানায় চাকুরী পায়। শুরু হয় নতুন জীবন, সুদিনের সংগ্রাম।
হরতাল চলছে। ভ্যান চালানো বন্ধ। কার্টনের কারখানায় কাজের চাপ। রাত ১১টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। একরাতে ঘটে যায় দূর্ঘটনা। বাদলের ছোট পা কারখানার বড় ফ্যানে আটকে যায়। হাটুর নিচের মাংস থেতলে যায় আর হাড় ভেংগে যায় কয়েক টুকরায়। কারখানার মালিক আর বাদলের মা মিলে বাদলকে নিয়ে আসেন ঢাকার পংগু হসপিটালে। বাদলকে হসপিটালে ভর্তি করিয়েই মালিক কেটে পড়েন। অবশ্য তার আগে বাদলের মায়ের হাতে দিয়ে যান কয়েক দিন কাজ করার মজুরী বাবদ পাঁচশো টাকা।
হসপিটালের দ্বিতীয় দিন। সকাল থেকেই বাদল বাবাকে দেখতে চাইছে। বাবা এলেন শেষ বিকেলে, ক্লান্ত পরিশ্রান্ত বিধ্বস্ত। টংগী থেকে হেটে হেটে আগারগাওয়ে এসেছেন। হাতে একটা মাত্র উজ্বল কমলা লেবু। হরতালে ভ্যান চালাতে পারেন নাই, কূলির কাজ করে সামান্য যা পেয়েছেন তাতে এর বেশী কিছু সাধ্যে কূলায়নি। ভূগোল বইয়ে আছে পৃথিবীর আকার কমলা লেবুর মত, বাদলের বাবার হাতের কমলা লেবুটাই যেন পৃথিবী হয়ে ওঠে।
(গল্প নয় সত্যি)
সত্য না হয়ে গল্প হলে … মনটা এতো খারাপ হতো না।
ভূগোল বইয়ে আছে পৃথিবীর আকার কমলা লেবুর মত, বাদলের বাবার হাতের কমলা লেবুটাই যেন পৃথিবী হয়ে ওঠে।
**

ভীষণ মনখারাপী লেখা
অসাধারণ হরবোলা আবু সাঈদ আহমেদ ভাই।
জীবন।
পৃথিবী।