আসলে আমার সবাই চিঠি লেখা ভুলতে বসেছি। তাই আমি ঠিক করেছি আমরা যারা ব্লগে আসি তারা যদি একজন অন্যজনকে চিঠি লিখি তবে তা কেমন হয় !! মানে যে কেউ যদি আমার কাছে চিঠি লেখে (তা হোক কবিতা কিংবা গল্প অথবা সাধারণ বাজারের লিষ্ট বা টাকা চাহিয়া পুত্রের পত্র) আমি তার প্রতি উত্তর দেবো।
যেমন দেয়া হয়েছে। আপনারা যারা চিঠি লিখবেন তারা একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন যেমন, চিঠি -১, চিঠি -২ এই ভাবে। আর আমি উত্তর দেবো পত্র-১, পত্র-২ এই ভাবে। সুন্দর হোক ব্লগিং।
আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে শুরু করছি চিঠির পত্র এর ৬ষ্ট পর্ব। আজকের চিঠি নিয়েছি – দীলখুশ মিঞা‘র লেখা থেকে এবং আমি তার উত্তর দিতে চেষ্টা করছি।
চিঠি
দীলখুশ মিঞার পক্ষ থেকে লাল গোলাপের শুভেচ্ছা।
হাই হ্যালো।
পর সমাচার এই যে, ইহা আমার দ্বিতীয় চিঠি, এর আগে আমার পাঠানো চিঠির কোন উত্তর পাই নি। যা হোক আবারও লিখলাম, হু এবারও যদি চিঠির উত্তর না দেন তবে মনে বড় দুঃখ পাবো। আর সেই দুঃখে আপনাদের এই চিঠি চলাচালি পোষ্টে এসে কড়া ভাষায় চিঠি লিখেই যাব।
আপনাদের এই পোষ্টে আমি জানিয়ে যাই, একটি বিখ্যাত লেখার ভূমিকা। আপনাকে জানাতে হবে লেখাটি কার এবং কেন আমি এ ধরনের উদ্যেগে এমন চিঠি আপনাদের লিখলাম। ভূমিকাটি নিম্নরূপ।
“এই রচনাটির একটু ভূমিকা আবশ্যক। ১৯৩৬ সালে একটি বাঙ্গালী যুবক লন্ডনে ব্যারিস্টারি পড়িতে যায়। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে গাওয়ার স্ট্রিটের ভারতীয় আবাসটি জার্মান বোমার আঘাতে বিধ্বস্ত হইলে আত্মীয়বর্গের নির্বন্ধাতিশয্যে যুবকটি ভারতবর্ষে ফিরিয়া আসে। স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রীপসের আলোচনার প্রাক্কালে বিলাতের একটি প্রাদেশিক পত্রিকা তাহাকে তাহাদের নিজস্ব সংবাদদাতা নিযুক্ত করিয়া দিল্লীতে পাঠান। লন্ডনে অবস্থানকালে এই পত্রিকায় সে মাঝে মাঝে প্রবন্ধ লিখিত।
দিল্লীতে যাইয়া যুবকটি তাহার এক বান্ধবীকে কতগুলো পত্র লেখে। বর্তমান রচনাটি সেই পত্রগুলি হইতে সংকলিত …
এই স্বল্প পরিসর পত্র রচনার মধ্যে লেখকের যে সাহিত্যিক প্রতিভার আভাস আছে, হয়তো উত্তরকালে বিস্তৃত সাহিত্য চর্চার মধ্যে একদা তাহা যথার্থ পরিণতি লাভ করিতে পারিত। গভীর পরিতাপের বিষয়, কিছুকাল পূর্বে এক আকস্মিক দুর্ঘটনায় তার অকালমৃত্যু সেই সম্ভাবনার উপরে নিশ্চিত যবনিকা টানিয়া দিয়াছে।”
এই বইয়ের একটি অংশও দিলাম যাতে চিঠি উত্তর দিতে আপনার সুবিধা হয়।
“পুরুষের জীবনে আজ গৃহ ও গৃহিনীর প্রয়োজন সামান্যই। তার খাওয়ার জন্য আছে রেস্তোরা, শোয়ার জন্য হোটেল, রোগে পরিচর্যার জন্য হাসপাতাল ও নার্স। সন্তান সন্ততিদের লালন পালন ও শিক্ষার জন্য স্ত্রীর যে অপরিহার্যতা ছিল, বোর্ডিং স্কুল ও চিলড্রেন্স হোমের উদ্ভব হয়ে তারও সমাধা হয়েছে। তাই স্ত্রীর প্রভাব ক্রমশঃ সঙ্কুচিত হয়ে ঠেকেছে সাহচর্যে। সে পত্নীর চাইতে বেশিটা বান্ধবী। সে কর্ত্রীও নয়, ধাত্রীও নয়, -সে সহচরী।
নারীর পক্ষেও স্বামীর সম্পর্ক এখন পূর্বের ন্যায় ব্যাপক নয়। একদিন স্বামীর প্রয়োজন মুখ্যতঃ ছিল ভরণ, পোষণ ও রক্ষণাবেক্ষনের। কিন্তু এ যুগের স্ত্রীরা একান্তভাবে স্বামী-উপজীবিনী নয়। দরকার হলে তারা আপিসে খেটে টাকা আনতে পারে।
তাই স্বামীর গুরুত্ব এখন প্রধানতঃ কর্তারুপে নয়, বন্ধুরুপে।”
আপনার ভালো হোক।
______________
আমার উত্তরঃ
দীলখুশ মিঞা আপকা খুশ বচনে আমি মুগ্ধ ।
আমি প্রথমেই আন্তরিক ভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি এই জন্য যে, আমি তার প্রথম চিঠিটির উত্তর দিতে পারিনি, যা আমার উচিৎ হয়নি সত্যি বলতে কি আমার পথচলাটা অন্য সবার মত নয়, সময় করে সময় বের করা আমার খুব কষ্টের সেই কষ্টটা যত না মনের তার থেকে অধিক অর্থে অর্থের। আমি সহজ ভাবেই আমার সমস্যা সবার সামনে তুলে ধরি বা পরিষ্কার করি, যা আমি করিনি বা পারিনি তার দায় আমার, কিন্তু বিব্রত হইনা এটা ভেবে “আধুনিক বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ, কিন্তু কেড়ে নিয়েছে আবেগ। তাতে আছে গতির আনন্দ, নেই যতির আয়েশ।”
প্রতিটি মানুষের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে; আমারো আছে সেই দিক দিয়ে বিচার করলে অনেক ভাগ্যবান থাকেন, যারা সকল কিছু জানেন কিংবা বোঝেন এবং বুঝেও টোকা দিয়ে পরখ করতে চান জীবনের কলসীতে কার কতটা জল বহন করার ক্ষমতা আছে। আসলে “প্রেম ভালো, বিদ্বেষ দুঃখের কিন্তু সবচেয়ে মারাত্মক ইন্ডিফারেন্স- যে কাছেও টানে না- দূরেও ঠেলে না- শুধু ভুলে থাকে।” বা ভুলে যাবার অবকাশ থেকে বঞ্চিত রাখে।
প্রিয় দিলখুশ
আপনার কড়া ভাষার চিঠি আমাকে ভীষন ভাবে টানবে সত্যি কিন্তু হয়তো নিতে পারবো না বলেই উ্ত্তর দেয়াটা জরুরী হয়ে দাঁড়ালো। মনে পরে গেল বিনয় মুখোপাধ্যায় এর লেখা একটা বইয়ের বইয়ের শেষের প্যারাঃ প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে মহিমা। কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কি? তাকে দেয় দাহ। যে আগুন আলো দেয় না অথচ দহন করে, সেই দীপ্তিহীন অগ্নির নির্দয় দাহনে পলে পলে দহন হলেন কাণ্ডজ্ঞানহীন হতভাগ্য চারুদত্ত আধারকার।।
এই লেখকের কিছু লেখা পরার সৌভাগ্য আমার হয়েছিলো, সৌভাগ্য এই জন্য যদি না জানতাম তবে কড়া কথা শুনতে হতো… তাও আবার কাছের লোকের কাছে। আমি দূরের মানুষের কথা দূরে সরিয়ে রাখি যদি সেই অবসর পাই তবে হয়তো খুলি তার ঝাঁপি; দেখি সব পচা আপেলের মাঝে দু একটা পাথরকুচি গাছ আছে কিনা আর কাছের মানুষের কথা থাকে আমার চোখের তারায় চলতে ফিরতে যাকে বন্ধ করা সম্ভব নয়; যদি কখনো ছোট কোন বালুকণা এসেও দাঁড়ায় ভাবি চোখ তো ফেলে দিতে পারবো না বা বন্ধ করেও রাখতে পারবো না।
একটা বিষয় আমার বেশ ভালো লেগেছে, তাহলো আপনার নাম.. যদিও “মানুষের নামের যদি কেবলমাত্র সনাক্তকরণ ছাড়া আর কোন প্রয়োজন না থাকত, তবে নামের বদলে সংখ্যা ব্যবহারের দ্বারাই তা অনায়াসে চলতে পারত। তা হলে মেয়ের জন্ম মাত্রেই মা তার নামনিত্তবাচন নিয়ে ভাবনায় পড়তেন না। নিত্য নতুন নামকরণের অনুরোধ জানিয়ে রবীন্দ্রনাথের কাছে চিঠি আসত না।
আমি বেশ কিছু দিন আগে বাংলাদেশের এক রাজনৈতিক নেতার একটা বই পরেছিলাম, বইটা তিনি লিখেছিলেন যখন তিনি জেলে ছিলেন, অনেকের কাছে বইটি তেমন গ্রহন যোগ্যতা পায়নি, কিন্তু আমার কাছে বইটি অসাধারন লেগেছে, কারন জেলখানার মধ্যের অাসামীদের সাথে বিশেষ করে মহিলা আসামীদের সাথে কি ধরনের ব্যাবহার করা হতো তা নিয়ে বিষদ আলোচনা হয়েছে। আপনার সুবিধার জন্য আরো বলে রাখি বইটি যিনি লিখেছেন তিনি এক জন মহিলা।
কখনো সম্ভব হয় বইটি পড়ে তার রিভিউ করলে অনেক খুশি হবো দিলখুশ ভাই।
ভালো থাকিস নিজের মত করে
এক জীবনে যতটা ভালো থাকা যায়।
আমি
খেয়ালী ….
_________
নোটঃ শেষে এসে ধারাটা একটু পালটে দিলাম… কাছের মানুষকে আপনি বলাটা একটু কষ্টকর লাগে।
ঝরঝরে ভাষা আর যুক্তিসিদ্ধ এই চিঠির পত্র উত্তরের আজকের আয়োজন পড়ে গেলাম।
চিঠির উত্তর দেয়াটাতেও কম মেধা শক্তির প্রয়োজন হয় না। এটাও স্বীকার করে গেলাম।
শুভেচ্ছা মি. খেয়ালী মন। অভিনন্দন মি. দীলখুশ মিঞা।
অনেক ধন্যবাদ মুরুব্বী
শুভকামনা।
দীলখুশ মিঞার পক্ষ থেকে আপনাকে লাল গোলাপের শুভেচ্ছা।
হাই হ্যালো।
আপনাকে সাধুবাদ জানাই যে দীলখুশ মিঞার হুমকিতে পরে শেষ পর্যন্ত তার চিঠির জবাব দিয়েছেন। শুধু জাবাবই দেন নাই তাকে কাছের লোক বলেছেন।
আপনাকে গোপনে বলি কাউকে বলবেন না, এই দীলখুশ মিঞার দীল নরম কিন্তু কারোর সমালোচা করতে ছাড়ে না। কাউকে আবার বলবেন না যেন, এই ব্লগে লিখতেন কবিতা, বেশ ভাল লিখতেন শুধু তাকে একটু পর।মর্শ দিয়েছিলাম পাঠকের কথাটা একটু বিবেচনায় রাখতে যাতে পাঠক তার লেখা বুঝতে পারে। কোথায় কি, জানতে পাই আমার কথায় দুঃখ পেয়ে তিনি আর ব্লগেই আসবেন না বলে দিয়েছেন। দীলখুশ মিঞার মনটা ব্যাথায় কুকরে উঠলো। আর ভাবলাম আপনি না আবার অভিমান করে বসেন যে কোথাকার কোন দীলখুশ এসে আমাকই প্রশ্ন করে বসে। আসলে আমাদের মাঝে কেউ কেউ নিজেরে অনেক বড় ভাবেন। তা ভাবুক যার যা খুশি, এই যে আপনি বন্ধু বলে আপনার সমালোচনাকারীকে কাছে টেনে নিলেন এতে আমার ছোটবেলার মত ডিগবাজি খেতে ইচ্ছে করছে।
আপনার ভালো হোক।
আর একটা কথা বলি এই আপনি আপনার লেখার শিরোনামে দিয়েছেন চিঠিপত্র, আপনি ব্রেকেটে চিঠি ভাষায় দীলখুশ মিঞাকে কড়া জবাব লিখে, দেখবেন আরো হিট হবে আপনার পোষ্ট।
ইতি
হাই হ্যালো দীলখুশ মিঞা।
বলতে ভুলে গেছি আপনাকে যাযাবরে দৃষ্টিপাত থেকে ধাধা দিয়েছিলাম এই কারণে যে, আমার ধারনা আপনার এই চিঠি চালাচালি প্রয়াশ একসময় তেমন ( অন্তত শব্দনীড়ে) অবস্থান তৈরি করবে যেমনটা করেছে দৃষ্টিপাত যা মূলত কতোগুলি চিঠির সমাহার।
প্রিয় দিলখুশ
পাঠকের কথায় যদি কোন লেখক তার লেখা ছেড়ে দেন বা ব্লগ ছেড়ে চরে যান তবে মনে করা যেতে পারে তিনি কোন দিন লেখকই ছিলেন না।
আমার যা মনে হয় সব সময় সমালোচনা কাম্য নয় মাঝে মাঝে আলোচনাও করা যেতে পারে। আপনি নিশ্চত থাকুন আমাকে যদি গালি দিয়েও বলেন, সম্ভবত ব্লগ ছেরে যাবো না ,কারন কারো গালিতে আমি যে কষ্ট পাবো তার থেকে অনেক বেশী আনন্দ পাবো ব্লগে আপনাদের সাথে আড্ডা দিয়ে।
এই বয়সে ডিগবাজি খাবার সাধ জাগতে পারে কিন্তু খবরদার সেই কাজটি করে আপনি হাসপাতালে থাকলে আমাদের খুব ক্ষতি হবে…
পোষ্ট হিট হোক সেটা আমার কাম্য নয় আমি চাই মানুষ ভালোলাগা নিয়ে পোষ্টটি পড়বে।
আপনার পরবর্তী চিঠির অপেক্ষায় থাকলাম…
……
আমি
খেয়ালী ….
ভাই দিলখুশ
আমি কোনদিনই যাযাবরের মত হতে পারবো না, সেই সময়ের তিনি এখনও সময়ের মাপকাঠিতে চলমান, তার কথার গভীরতা এতটাই প্রানবন্ত যা সব সময় মানুষের মন ছুঁয়ে যেতে বাধ্য, আমি কোন দিনই তার ধারে কাছেও যেতে পারবো না বা আশাও করিনা।
ধাধা কিন্তু আমিও একটা দিয়েছি আপনার জন্য।
শুভকামনা থাকলো ভাই।
হাই হ্যালো দীলখুশ মিঞা খুশ মিজাজে আবারও এই পোষ্টে।
ভীষণ ভালো পাইছি আপনার প্রতিক্রিয়ায়।
আমি কিন্তু হিটের প্রত্যাশী। নিজে হিট থাকি অন্যেকে হিট রাখি।
যেই গরম পরছে তাতে আরো হিটের দরকার কেমনে হয়…..

