অথৈ

গত কয়েকদিন ধরে সলিল যেন অন্তঃসলিলে হাবুডুবু খাচ্ছে। সামনে কলেজের ফাইনাল। কিছুতেই পড়াতে মন বসছেনা। এদিকে-

ইতিরও মাধ্যমিক। সারাক্ষণ হাজার প্রশ্ন। আকাশের গুমোট ভাবটা অস্বস্তি বাড়িয়েই চলেছে। কলেজের নোটবইটা সামনে। কলজের ধুকপুকুনিটা গগনে।

“মা…. বৃষ্টি এসেছে।”
ইতির ঘোষণায় পড়িমরি করে সলিল বাইরে বেড়িয়ে এলো।
-দাদা বৃষ্টি এসেছে। আর তুই জানলা বন্ধ না-করে এখানে কি জন্য?

মাথাটা নিচু করে সলিল ফিরে গেল।
——————————————————–
এছাড়া আর উপায় কি? ইতিটা খুব পাজি হয়েছে। নিশ্চয় আন্দাজ করেছে গাছের ফাঁক দিয়ে সামনের জানলার সাথে সলিলের ভালই ইশারা চলে।
এই ইশারার বাইরে সলিলের সাথে ওই জানলার মিতুন পাঁচ ছয়দিন আগে (সলিলের মনে হয় যেন আজ অথবা কাল) এক ছাতার তলায় ছিল। তারপর ছাতা উড়িয়ে দিয়ে ভিজেছে। গায়ে গা লেগেছে। চুমুর গভীরে আরও অনেক মণি মুক্তো পেয়েছে। এসব ইতি জানে না। কিন্তু সলিল অথৈ সলিলে।
নিজের ঘরে ফিরে আসে সলিল। আবার নোটবইয়ে ঢোকার চেষ্টা করে। কম্পিটিশনের বাজারে পরীক্ষায় ভাল করতেই হবে। কিছু তো লিখতেই হবে। ওদিকে বাইরের বৃষ্টির ঝমঝম মাথার মধ্যে। সে যে মিতুনকে সাথে করে কত রকমের অনুভূতির সাগর আঁকছে। সলিলের মন সেই সাগরে ডুবছে আর ভাসছে, ভাসছে আর ডুবছে।
ইতি হাতে বই নিয়ে টোকা মারে – দাদা, ভালই হল আজ কোথাও বেরনো নেই। শুধু খিচুড়ি আর ডিম ভাজা। দাদা, পার্থেনোজেনেসিস কি?
এমন সময় ফোনে ভাইব্রেশন। ভলিয়ম জিরো থাকে, তাই।
ফোনটা বাঁ হাতে সরিয়ে সলিল জবাব দিল – যা ভাগ এখান থেকে। বই আছে নিজে পড়ে নে বুঝে যাবি।
মুখ ভেংচে ইতি চলে গেল। বলে গেল – যাই, জানলা খুলে একটু বৃষ্টি দেখি।
আবার মন ছটপট। সলিল দেখল ফোনে ম্যাসেজ। মিতুন লিখেছে – আজ হল না। কালকে কিন্তু ভিজব। বৃষ্টি হোক না হোক। মেঘ শুভেচ্ছা

8 thoughts on “অথৈ

  1. অনেক কবিতার ভীড়ে গল্পটি পড়ে ভাল লাগল। ধন্যবাদ।

    1. ঠিক বলেছেন। অনেক কবিতা।
      ভাল থাকবেন।

  2. ধন্যবাদ কবি দা। আপনার অণুগল্পের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। শুভ সকাল। :)

  3. আজ হল না। কালকে কিন্তু ভিজব। বৃষ্টি হোক না হোক। মেঘ শুভেচ্ছা।
    //খুবই ভালো লাগলো গল্পটা। ধন্যবাদ দাদা সুন্দর গল্পের জন্য !

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।