রাণীনগর রায়বাহাদুর এস্টেট (কাশিমপুর জমিদার বাড়ী) এর ইতিবৃত্তঃ

নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার ৩ কিঃমিঃ দূরে কাশিম পুর গ্রাম অবস্থিত। গ্রামের নামের উৎপত্তি সম্পর্কে জানা যায় যে সম্রাট আকবরের সময় কাশিম খা নামক এক পাঠান জায়গীরদার বাস করতেন। তার নাম অনুসারে এই গ্রামের নাম হয় কাশিমপুর। মহারাজা মানসিংহ কাশিম খার জায়গীর বাজেয়াপ্ত করে এক হিন্দু ব্রাহ্মণ এর নিকট পত্তন দেন। এই ব্যক্তি ই চৌধুরী জমিদার গনের পূর্বপুরুষ। এই এলাকায় রায় বাহাদুর এস্টেট ই ছিল প্রধান জমিদারী। এই এস্টেট এর পূর্বপুরুষ গিরিশচন্দ্র লাহিড়ীর আমলে জমিদারির শ্রীবৃদ্ধি হয়। গিরিশ চন্দ্র লাহিড়ী ছিলেন বিনয়ী, তেজস্বী ও পরোপকারী। তিনি ১৮৭৪ সালে কাশিম পুরে একটি মাধ্যম ইংরেজী স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

খ্যাতনামা বাংলা ব্যাকরণ প্রণেতা তারিনী চরন স্যানাল এই স্কুলের হেড পণ্ডিত ছিলেন। ১৮৮২ সালে একটি প্রথম শ্রেনীর ডিসপেনসারি স্থাপিত করেন। যা বর্তমান এ ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গিরিশ চন্দ্রের পুত্র কেদার প্রসন্ন লাহিড়ী রায়বাহাদুর উপাধি পান। তাহার সময় হতে এই এস্টেট রায়বাহাদুর এস্টেট নামে পরিচিতি লাভ করে। রায় বাহাদুর এর পুত্র অন্নদা প্রসন্ন লাহিড়ী একজন বিদ্যান ব্যক্তি। তাহার নিজস্ব লাইব্রেরী তে এনসাইক্লোপিডিয়া বৃটানিকার সকল খণ্ড সংগৃহীত ছিল।

শ্রী অন্নদা প্রসন্ন লাহিড়ী ছিলেন এই কাশিমপুর জমিদারির শেষ জমিদার। তার ৪ পুত্র ও ১ কন্যা ছিল।১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর রাজবংশের সকলেই এই রাজত্ব ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চলে যান। শুধু ছোট জমিদার শ্রী শক্তি প্রসন্ন লাহিড়ী বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত এই কাশিমপুর রাজবাড়িতেই বসবাস করতেন। সময়ের বিবর্তনে তিনিও একসময় কিছুটা চুপিসারে জমিদার বাড়ির স্টেটের অঢেল সম্পদ রেখে ভারতে চলে যান।

সুত্রঃ- নওগাঁ মহকুমার ইতিহাস। (খান সাহেব মোহাম্মদ আফজাল)

5 thoughts on “রাণীনগর রায়বাহাদুর এস্টেট (কাশিমপুর জমিদার বাড়ী) এর ইতিবৃত্তঃ

  1. কাশিমপুর জমিদার বাড়ী এর ইতিবৃত্তঃ
    আরও বিস্তারিত আকারে আসলে পাঠকের জানার পরিধি বেড়ে যেতো।

    নিবন্ধটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ মি. পাভেল রহমান।

    1. জনাব, আপনাকে ধন্যবাদ ।চেষ্টা করেছিলাম আরও বিস্তারিত ভাবে লেখার জন্য।কিন্তু তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয় নি ।পরবর্তিতে আর একটা অংশ লেখার ইচ্ছে আছে । উপদেশ দিয়ে অবশ্যই সাহায্য করবেন।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।