সেদিন_ছিলো_রবিবার

সেদিন_ছিলো_রবিবার

আজ রবিবার,
মেঘবালিকাদের মন কেন জানি বেজায় ভারী!
বিদ্যুৎ মিত্রের চোখ রাঙ্গানি আর জোর ধমকেই
ওরা একটানা কেঁদেই চলে।

আমি তখন আমার ঘরে,
মহাদেব সাহাকে নিয়ে ভী…ষ…ণ মগ্ন!
কোনো এক ফাঁকে কবিতার জানালা গলে
ভরা পূর্ণিমায় বেড়িয়ে পড়ি,
রুপালী নরম আলোয় ভিজে ভিজে
পথ হেঁটে চলি এক বিষণ্ন তটরেখা ধরে।
সেখানে প্রচন্ড বাতাস আর ঊর্মীদের কানাকানি
রাতের নির্জনতাকে আরো গভীর করে তোলে।

এক নিষিদ্ধ প্রণয়ে প্রলুব্ধ হয়ে আমি
ধীরে ধীরে তোমার কাছাকাছি!
তুমি তখন সাগরের বুকে একচিলতে পাথরে বসা এক সাগরকন্যা!
বসেছিলে আমার দিকে পীঠ ফিরিয়ে
মায়াবী আলোর রূপালী স্রোতে
তোমার এলোচুল আরো চকচকে কালো!
কয়েকটি ঝাউ গাছের আড়াল হতে দেখি
সাদা শাড়ীতে শ্বেত শুভ্রতায় জ্বলে ওঠা তোমায়!

নিঃশব্দেরও কি আওয়াজ থাকে?
তোমার কাছে যাবার আগেই তবে কিভাবে ফিরে তাকালে?
তোমার কামনা মদির চোখের সাহারার তপ্ততায়
আমি রওয়ানা হই পারদের উর্ধমুখী ভ্রমনে।
আমার ইচ্ছেগুলো ক্রমশঃ লাল, নীল আর হলুদ হতে হতে
বিবর্ণ ছেড়া পালকের মত উড়ে বেড়ায় তোমায় ঘিরে ঘিরে।

সেদিনও ছিল রবিবার!
আমার সেই ইচ্ছেগুলোকে লাল, নীল আর হলুদ
কাগজের নৌকা বানিয়ে ভাসিয়েছিলে লোনাজলে।
আমি তখন তোমার পাশাপাশি
নিঃশ্বাস দূরত্বে থেকে তোমার শরীরের মাংসল ঘ্রাণে উদ্বেলিত!
ভালোবাসার লোনাজলে ডুবে যেতে দেখছি
এক একটি ইচ্ছের নৌকাকে।

রবিবারগুলো কেন এমন বিষণ্ন হয়?
সপ্তাহ থেকে ওদেরকে বাদ দিয়ে
নতুন একটি বারের সন্ধানে আবার ফিরে আসি
কবিতার জানালা গলে।
আমি আর মহাদেব সাহা-
আবারো ভী…ষ…ণ মগ্ন হই।
বাইরে তুমুল বৃষ্টি!
মেঘবালিকাদের হৃদয়েও হয়ত এমন কোনো রবিবার থাকে!!

#সেদিন_ছিলো_রবিবার

মামুন সম্পর্কে

একজন মানুষ, আজীবন একাকি। লেখালেখির শুরু সেই ছেলেবেলায়। ক্যাডেট কলেজের বন্দী জীবনের একচিলতে 'রিফ্রেশমেন্ট' হিসেবে এই সাহিত্যচর্চাকে কাছে টেনেছিলাম। এরপর দীর্ঘ বিরতি... নিজের চল্লিশ বছরে এসে আবারো লেখালখি ফেসবুকে। পরে ব্লগে প্রবেশ। তারপর সময়ের কাছে নিজেকে ছেড়ে দেয়া। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৬ তে 'অপেক্ষা' নামের প্রথম গল্পগ্রন্থ দিয়ে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ। বইমেলা ২০১৭ তে তিনটি গ্রন্থ- 'ছায়াসঙ্গী'- দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ, 'ঘুঙ্গরু আর মেঙ্গরু'- উপন্যাস এবং 'শেষ তৈলচিত্র'- কাব্যগ্রন্থ নিয়ে সাহিত্যের প্রধান তিনটি প্ল্যাটফর্মে নিজের নাম রেখেছি। কাজ চলছে ১০০০ অণুগল্প নিয়ে 'অণুগল্প সংকলন' নামের গ্রন্থটির। পেশাগত জীবনে বিচিত্র অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। একজন অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। পোষাক শিল্পের কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। লেখালেখির পাশাপাশি সাংবাদিকতা করছি। লেখার ক্ষমতা আমি আমার ঈশ্বরের কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছি। তাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লিখেই যেতে হবে আমাকে।

1 thought on “সেদিন_ছিলো_রবিবার

  1. আপনার কলম থেকে যেটাই উৎসারিত হয় তাতেই যেন সার্থকতা ফলে।
    অসাধারণ লিখন উপহার এই লিখাটি। অভিনন্দন মি. মামুন। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।