শিহাব পারুর চোখগুলো ভাল করে দেখে। শান্ত… স্নিগ্ধ.. শিহাবের পারু! ওর কথাগুলোকে মনে হলো বাতাস, শিহাবের চুল এলোমেলো করে দিয়ে কোথায় যেন উড়ে যাচ্ছে।
ভাবনায় পেয়ে বসে শিহাবকে। ভাবতে থাকে…
জীবন খুব সুন্দর! ভাল লাগার অসহ্য সুখ নিয়ে কত কাছাকাছি আছে দু’জন!! মুহুর্তগুলো চলে যাচ্ছে দ্রুত। জীবনে সময় এতো কম!! তবুও জীবন তো।
পারুর কাঁধে মাথা রেখে বসে রইলো শিহাব। তাঁর হাতে একটা বই… রবীন্দ্রনাথ… গল্পগুচ্ছ। পারু পড়ছে, শিহাব পাশে আছে। যতক্ষণ থাকা যায়।
এক জীবন কতটুকু সময়?
চোখ দিয়ে নেমে এল দু’ফোটা জল। শিহাবের ইচ্ছে করল, পারুর সযত্নে গড়া রুপার ‘প্যান্ডোরার বাক্সটির’ ভেতরে যত্ন করে তা রেখে দেয়। আশার সাথে নিরাশা মিশে একাকার হয়ে যাক!
কতটা কষ্ট পেলে অনুভূতি অশ্রু হয়? ঝরে পড়া প্রতিটি স্বেদ বিন্দুর ভিতর জমাট বাঁধা- এক একটি মহাকাব্য!
কষ্টগুলো নিজের চেতনার সব ক’টি অনুভবে ছুঁয়ে-দেখে অনুভব করা একজন শিহাব, নরম মোম হয়ে গলে যায়। ভেংগে যায়.. কুয়াশার অস্পষ্টতায় ডুবে যায়। আবার জেগে উঠে!
তবে একজন অনুভবক্ষম শিহাবের বেলায় বেদনারা কৃষ্ণচুড়ার সবুজকে লালের লালিমায় ছেয়ে দেয়। বিবর্ণকে বর্ণীল করে। অশ্রু কাব্য?
দূর থেকে ভেসে আসা সন্ধ্যা আরতি, শিহাবকে বিষন্ন করে.. আরও। মন উদাস করা প্রলুব্ধতায় সে ব্যথিত হয়। আবারও দু’ফোটা অশ্রু ওর অগোচরে ঝরে পড়ে পারুর রুপার কৌটায় নিরবে জমা হয়। এত কাছে থেকেও পারু কি শিহাবের ভাবনাগুলো বুঝতে পারে? সে কি শিহাবের অশ্রুগুলো ওর রুপার কৌটায় জমিয়ে রাখতে চাইছে?
বাউরি বাতাসে ভেসে বেড়ানো গল্পগুচ্ছে মগ্ন পারুর কয়েকটি অবাধ্য চুল শিহাবের চিবুক নিয়ে খেলে। আত্মবিস্মৃত শিহাবের দৃশ্যমান দশ দিক সহ অদৃশ্য সকল দিকগুলি মুহুর্তে বন্ধ হয়। একটি দিকই নিজেকে প্রকাশ করে সেদিকে শিহাবকে গিলে নেয়। ওটা পারুর দিক। শিহাবের পারু!
‘ওহ পারু! প্রিয়দর্শিনী আমার।’ ভাবতেই পারু প্রিয় বইকে আলতো করে পাশে রেখে দেয়। চোখ তুলে তাকায়। নিরবে জ্বলে ওঠে। চোখের তারায় ভালোবাসা। শিহাব ডুব দেয়।।
#পারুর_রুপার_কৌটো_মামুনের_অণুগল্প_৫০৬
ওটা পারুর দিক। শিহাবের পারু!
অসাধারণ মি. মামুন। ছোট ছোট কথায় অসম্ভব অনুভব।
ধন্যবাদ ভাইয়া। এক লাইনে এরকম সর্বোচ্চ তিন শব্দ দিয়ে অণুগল্প লিখলে কেমন হবে ভাবছি। শব্দ নিয়ে অনেক ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে ছন্দ বেশী প্রকট হবে। যেমন ধরুন ছন্দের যাদুকরের কবিতার লাইনে-
ছিপখান তিন দাঁড়
তিনজন মাল্লা
চৌপর দিনভর
দেয় দূর পাল্লা
এভাবে লাইনের সাথে লাইনের মিলনে যদি অণুগল্প লেখা যায়, পড়তে গেলে পাঠক অণুগল্পে ছড়ার অনুভবে আনন্দ পাবে না বিরক্ত হবে ভাবছি।
'ফজরের আজান হলো। চোখ খোলে কণা। ডানে তাকায়। দেখে, শিহাব নেই। শূণ্য বিছানা। তারপরও ছুঁয়ে দেয়। শিহাবের জায়গাটায়। বেশ উষ্ণ। এইমাত্র উঠল বোধহয়।
সময় কেটে যায়…
পূবের জানালায়। কারও ছায়া পড়ে। সেদিকে তাকায়। ভেজা চুলে শিহাব। চা'র কাপ হাতে। জগিং শেষ। আজকাল এটাই রুটিন। সাথে টুকটাক কাজ। টেক কেয়ার? শিহাবকে দূর্বোধ্য লাগে। আজকাল। কণার কাছে।
দূর্বোধ্য মানুষটা সামনে। ভূবন ভোলানো হাসি! মুগ্ধ হয় কণা। সময় গড়ায়। মুগ্ধতা বাড়ে। দূর্বোধ্যতা মিলিয়ে যায়। শিহাব সহজ হয়। এভাবেই কাটছে জীবন।কোমলে কঠোরে মিলানো। দূর্বোধ্য শহুরে জীবন।।'
গল্পটির নাম নেই। তিন শব্দের বেশী না নিয়ে অণুগল্প লেকজা যেতে পারে। কেমন হবে ব্যাপারটা- 'মামুনের তিন শব্দের তিন লাইনের অণুগল্প'।
শুভেচ্ছা রইলো।

ধন্যবাদ মি. মামুন। শুভ সকাল।
স্বাগত আপনাকে ভাইয়া।
মুগ্ধ হলাম মহ. আল মামুন ভাই। আপনি জিনিয়াস।
ধন্যবাদ সৌমিত্র দাদা। আমি আপনার ছোট ভাই- এটাই আমার অনেক গর্বের। শুভেচ্ছা রইলো। ভালো থাকুন সবসময়।

শিহাব পারু'র গল্প লেখা গুলোন সবসময়ই আমার ভাল লেগেছে গল্প দা।
ধন্যবাদ রিয়াদি' গল্পগুলোন পড়বার জন্য। শুভেচ্ছা।