কেউ একজন বললেন সবাই যখন হ্যাশট্যাগ মি টু নিয়ে সরব তখন আমি কিছু বলছি না কেন ?
একটা মেয়ের জন্ম হলো এবং সে জানেনা চারপাশে কি পাইথন তার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। মা তাকে আগলিয়ে রাখেন, বাবাও আগলিয়ে রাখেন। কিন্তু ওর যদি অনেকগুলো ভাইবোন হয় তবে তাকে আগলে রাখার সময় কই এতো ?
অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিটি বাচ্চাকে সে সমজেন্ডার হলেও ধরা ছোঁয়া নিষেধ। ফুলের মতোন বাচ্চা কিন্তু কেউ ছুঁয়ে আদর করতে পারবে না। দূরে থেকে শুধু একটু হাসি দিয়ে আদর দেখানো যাবে।
সেদিন একটা সিনেমা দেখলাম – এক টিনেজ মেয়েকে এই পৃথিবীতে একা রেখে তার মা মারা গেলেন। তার বাবা অলরেডি তার মাকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে তার বাবার বাসায় গেলো। বাবা তার নতুন স্ত্রী নিয়ে সংসার পেতেছেন। সে সংসারে আবার নতুন অতিথি আসবে। তাই তার বাবা আর তার সৎ মা অপরাগতা প্রকাশ করলেন তাকে এই সংসারে আশ্রয় দিতে। ঘর থেকে বের হবার সময় তার বাবা বললেন – মামনি ভালোবাসি তোমাকে। সেও বললো আমিও তোমাকে ভালোবাসি বাবা। বাবার অকৃত্রিম ভালোবাসা দেখে আপ্লুত হয়েছিলাম। একবারো ভাবলেন না এই বাচ্চা মেয়েটা কোথায় যাবে ! তিনি নিজেও পুরুষ। তিনি জানেন এই পুরুষকুল এই মেয়েকে আস্ত রাখবেনা। অথচ তিনি তার মেয়েকে বাঘ সিংহের খাঁচার দিকে ঠেলে দিলেন। যাই হোক উপায়ান্তর না দেখে চোখের পানি মুছতে মুছতে সে এলো তার আত্মীয়ার বাসায়। ভদ্রমহিলা তাকে খুব যত্ন করেন। তার স্বামীও যত্ন করেন। কিন্তু ভদ্রলোক যত্ন করতে করতে একদিন বেশিই যত্ন করে ফেলেন। সে বের হয়ে গেলো। ঘরের বাইরে পুরো বিশ্ব তার জন্য ডেঞ্জারজোন। তবু এক ভদ্রলোক সহানুভূতি পরায়ণ হয়ে তার বাসায় নিয়ে গেলেন। সেখানে দেখা গেলো তার কাতর স্ত্রীকে। ভদ্রলোক এবং তার স্ত্রী তাকে যথেষ্ট যত্ন আত্তি করলেন। এবং ভদ্রলোক নিজেই তার শরীরের সুবিধা নেয়া শুরু করলেন। মেয়েটা এবার রাগ করে বের হয়ে যেতে পারলো না। সে আর কত জায়গায় ফিরবে !!
কিন্তু সমস্যা হলো ভদ্রলোক নিজে ভোগ করেই ক্ষান্ত হলেন না। তিনি তাকে দিয়ে ব্যবসা শুরু করলেন। অসহ্য হয়ে মেয়েটা আবার বের হয়ে এলো। সেই আত্মীয়ার কাছে গেলো পুনরায়। এবং ততদিনে সে ট্রমায় আক্রান্ত হয়েছে। ওর আত্মীয়া তাকে একটা সংস্থায় নিয়ে গেলেন। সেখানে আরো অনেক টিনএজার ছেলেমেয়ে আছে। প্রত্যেকেই দেখা গেছে কোনো না কোনোভাবে সামাজিক বা পারিবারিক বা যৌননিগ্রহের শিকার।
… সিনেমাটা এমেরিকার ব্যাকগ্রাউন্ডে করা। বোঝা যায় পৃথিবীর সব নারী সব মেয়ে শিশু একই ভাবে যৌননিগ্রহের শিকার হয়।
আসলে এটা একটা ঘটনা মাত্র। এরকম হাজারো লক্ষাধিক মেয়ে শিশু, কিশোরী নারীর নিগ্রহের ঘটনা ঘটে যায় মানুষের সামনেই অথবা অগোচরে। কিন্তু যা ঘটে নারীর সাথে নারী ভুলে না। সে তার শৈশব থেকে শুরু করে বড় হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ঘটনার কথা মনে রাখে, আসলে মনে রাখা না তার মনে থাকে। ভুলে যায় না। অভিশাপ দিতে থাকে সেই জানোয়ারদের।
মিটু এর জোয়ারে অন্তত কিছু প্রভাবশালী লোক যারা ক্ষমতার ছত্রছায়ায় আছেন, তাদের বদ উদ্দেশ্য থেকে ক্ষান্ত হবেন। অন্তত কিছু মেয়ে হলেও রক্ষা পাবে। আমরা জানি তবু লোভী আরো বহুলোক তাদের কালো হাত বাড়িয়েই রাখবেন।
আমরা বলি আবু লাহাবের মত তাদেরও হস্তদ্বয় ধ্বংস হোক।
ভালো লাগলো আপু। সত্যি, অত্যন্ত দুঃখজনক। লেখাটা পড়তে পড়তে মনে পড়লো, পথ চলতে চলতে মুম্বাইয়ের কোথাও দেখা, ভীষণ শীর্ণ রূগ্ণ এক কিশোরী গণিকাকে। মাঝ রাত্রিতে সড়কের এক কোণে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে খদ্দেরের। নির্ঘাত তারও আপনার সিনেমায় দেখা মেয়েটির মতোই কোনও বীভৎস গল্প আছে।
মানব সভ্যতায় নারীকে বরাবরই পুরুষের জন্য তৈরি এক ভোগ্য পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আমাদের এ অঞ্চলে তো একেবারে নারী মানেই সেবা দাসী। যা খুশি তাই কর নারীদের সঙ্গে ।
শুভকামনা।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য । ভালো থাকবেন ।
মেয়েদের জীবন মানেই কিছু হিংস্র শ্বাপদের ব্যবহার্য বস্তু। যুগে যুগে নারীরা বিভিন্নভাবে নিগৃহীত হয়েছেন। উল্লিখিত ঘটনাটি কোন হঠাৎ ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা নয়। মি টু যদি কিছু পরিবর্তন না ও আনে তবু এটা তো সমাজের চোখে পরিস্কার হবে মুখোশপরা মানুষ কতটা জানোয়ার ।
সেই আপু । ভালো থাকবেন ।
আমি কোন শতক বা শতাব্দী বুঝি না। মেয়েরা সর্বকালেই অনিরাপদ। আমার ঘরে মেয়ে আছে, আমিও বুঝি বাইরের জগতে সেও আমার থেকে বেশী নিরাপদ কিনা !! কতটা ?
রিয়া সত্যি খুব । তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে নারী আরো বেশী অনিরাপদ । সমাজ পরিবর্তন হোক একি সাথে আইন শক্ত হোক । তবেই হয়তো আমাদের মেয়েরা নিরাপদ হবে অনেকটাই ।
সামাজিক আর পারিবারিক জীবনের অনিশ্চয়তা আমাদের বিবেককে নষ্ট করে ফেলেছে।
আমার মনে হয় অনিশ্চয়তাই একমাত্র সমস্যা নয় । সমস্যা এখানে আইন শক্ত না । আইনের প্রয়োগ যথাযথ হলে অনেকটাই নিরাপদ হবে । আর একই সাথে পুরুষদের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার । সবাই খারাপ তা বলছিনা । যারা খারাপ মানসিকতা লালন করে তাদের বলছি ।
ভালো থাকবেন ।
সামাজিক চেতনা আর দায়িত্ববোধ যাদের হবে না, তাদের কখনই হবে না।
আইনের কঠোর প্রয়োগ আর মেয়েদের সাহসী হওয়া প্রয়োজন । আবার একই সাথে পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় হলে মেয়েরা এতো আনসার্টেন লাইফ কাটাতে হবে না । আরো বহু স্টেপ নিলে হয়তো ঠিক হবে সব । আর সবচাইতে বড় হলো মানসিকতার পরিবর্তন হতে হবে ।
ধন্যবাদ মুরুব্বী । ভালো থাকবেন ।
* নিরাপদ সমাজ বিনির্মাণ আমাদের সবার কর্তব্য…
ধন্যবাদ । ভালো থাকবেন ।
আমিও আপনার সাথে এক হয়ে বলছি-
ধ্বংস হোক ওরা যারা নারীদের সম্মান দিতে যানে না।
ধন্যবাদ মুনা। ভালো থেকো ।