সেই সাতসকালে সূর্য যখন পিছলে এল টার্মিনাসে
লাল নীল হলদে বিনুনি ফুলের দল
ফিচেল হাসি, মুখে ঝুলিয়ে তাকাল আড়চোখে,
সব্বাইকে অবাক করে জানলার গরাদ গলে
মুখে কানে পালকের সুড়সুড়ি দিয়ে
তুই আমাকে আদর করলি নীলপাখি,
ঘুম সমুদ্রে বুড়বুড়ি কাটতে কাটতে শ্রবণযন্ত্র বিবশ
করা মাউথঅর্গ্যান মায়া লুকোচুরি খেলে নিল
-‘পুচুমুনু ওঠ, গুড মর্নি ই ই ইং…!’
ঘুমের পরত পাতলা করতে করতে তোর টুই টুই স্বর-
‘এই নাও তোমার জন্যে নুনি নদীর সুগন্ধ!’
হঠাৎ ঘুম ভেঙে এতদিনের অভ্যেসে আমিও
বলে ফেললাম ‘সুপ্রভাত!’ ভুলেই গেলাম
তোর সঙ্গে তো আমার আড়ি,
তোর সঙ্গে তো আমার কথা বন্ধ নীলপাখি!
কবে যেন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম
আর কোনোদিন কথা বলবনা তোর সঙ্গে! কবে যেন?
চোখ খুলতেই ধুরন্ধর ম্যাজিসিয়ানের পর্দা উধাও।
আমার সমস্ত রাগ, সব অভিমান
দুঃখ দিয়ে তৈরী বালির প্রাসাদ
তোর টুকটুকে ঠোঁট দেখেই ধসে চূরমার
আর মূহুর্তে সব জমা জল উধাও হয়ে রোদ উঠলো।
বুকের মধ্যে জ্যাজ পপ ক্ল্যাসিক্যাল একসঙ্গে ঝমঝম,
নিঃশ্বাসে সেঁধিয়ে যাচ্ছে মহুল ফুলের তরল আগুন।
মস্করার একতারায় টিং টিং সুর তুলে-
‘এই শোনো, আমার কিন্তু তিন তিরিক্কে নজন নয়
তিন নয় সাতাশ জন প্রেমিক!’
বুকের তিন পরত নিচে জ্বলছে দাউদাউ ভিসুভিয়াস
তার মধ্যেই আছড়ে পড়লো নায়েগ্রার রামধনু রঙ,
এক দিগন্তপ্রসারী হুসহুস আওয়াজের ফাঁকে
তোর ঘন নির্মেদ স্বরের ঠুমরী
নাচতে নাচতে এগিয়ে এল-
‘শোনো, আমার একটাই প্রেমিক, নিশ্চিত জেনো-
আমি শুধু ভালবাসি তোমাকেই!’
হঠাৎই এ গ্রহ বোবা হয়ে গেল।
আর আমি উন্মাদ হয়ে গেলাম…
কিভাবে বোঝাবো আমার কন্ঠ আমারই সঙ্গে
বেইমানি করে তাৎক্ষণিক ধর্মঘট করল,
এ সাজানো পৃথিবীর সবাই যে জেনে গেল
আমার হৃদয়ের শব্দ কোন তালে বাজে,
এ উন্মাদরোগ আজীবন সঙ্গী হয়ে গেল আমার।
নীলপাখি! আমি তো গুছিয়ে নিয়েছিলাম সব
আমার সব অভিমান, সব দুঃখবোধ,
চলেই গেছিলাম চির প্রবাসের পথে,
সেখান থেকে কেন ফিরিয়ে আনলি তুই-
কেন এমন পাগল করলি বল-
নীলপাখি, কেন এত ভালবাসলি আমাকেই!
(আমার নীলপাখিকে উড়ো চিঠি কাব্যগ্রন্থের কবিতা। এখন আর এটা পাওয়া যায় না। সেই সময়ে প্রায় ষোলহাজার পাঠকের স্নেহধন্য হয়েছিল এই কাব্যগ্রন্থ।)
আমার সমস্ত রাগ, সব অভিমান
দুঃখ দিয়ে তৈরী বালির প্রাসাদ
তোর টুকটুকে ঠোঁট দেখেই ধসে চূরমার
আর মূহুর্তে সব জমা জল উধাও হয়ে রোদ উঠলো।
অভিনন্দন প্রিয় কবি সৌমিত্র চক্রবর্তী।
সেই যোল হাজার পাঠকের একজন কিন্তু আমিও।
অনেক কৃতজ্ঞতা প্রিয় ভাই। ভালো থেকো।
খুবই সুন্দর কবিতা,বেশ সাবলীল ভাষায় প্রকাশ,,,
ভালো লাগলো,,,
অনেক ধন্যবাদ কবি সুজন ভাই। কেমন আছেন ?
বরাবরের মতই জোরালো স্পষ্ট উচ্চারণেে মুগ্ধ করলেন দাদা।
শুভেচ্ছা ভরপুর।
খুশি হলাম অর্ক ভাই।
সৌমিত্র দা,
ষোলহাজার পাঠকের স্নেহধন্য হওয়া বইয়ের লিস্টে আমার নাম না থাকলেও অসংখ্য মুগ্ধ পাঠকের তালিকায় কিন্তু একজন হিসেবে আমার নামও থাকবে । খুব ভালো লাগা কবিতায় । কেমন করে যে এতো সুন্দর কবিতা লিখেন !
কবিতাকে কবিতা হিসেবে লিখিনা কবি খন্দকার ইসলাম ভাই। যা মনে আসে আর কি।
অনেক ধন্যবাদ আর শুভেচ্ছা আপনাকে।
আমি ভাগ্যবান যে আমার লিখার দুই লাইন অন্তত পাঠককে বোঝানো গেছে। অভিনন্দন আমাদের দুজনকেই।
ধন্যবাদ মরুভূমি ভাই।
* মুগ্ধতা রেখে গেলাম প্রিয় কবি দা…
ধন্যবাদ কবি হুসাইন ভাই।
দারুণ দারুণ হয়েছে। শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।
ভালোবাসা কবি সাইদুর রহমান ভাই।
কবি ভাষা নেই মন্তব্য করার।
ভালোবাসা ভালোবাসা এস এম হৃদয় রহমান ভাই।
বরাবরের মতো এবারও মুগ্ধ হয়ে গেলাম। শুভেচ্ছা রইল শ্রদ্ধেয় কবি দাদা।
নিয়মিত ভালোবাসা প্রিয় নিতাই বাবু।
অভিনন্দন কবি সৌমিত্র চক্রবর্তী। দারুণ।
ধন্যবাদ কবি সুমন আহমেদ ভাই। ভালোবাসা।
অসাধারণ কবিতা।
কবিতাটি পড়ে আমার 'বাতায়ন পাশে গুবাক তরুর সারি' কে মনে পড়ল।
ভিন্নরকমের স্বাদ পেলাম লেখায়, আসলে বহুকাল চিঠি লিখা হয়না। মনের ভেতরে কোনো সুকোমল ছায়া যদি ভীড় জমতো তবে হয়তো নতুন করে লিখা শুরু করতাম। অনেক কলম বন্ধু ছিলো দেশ বিদেশের তাদের সাথে এখন ইমেল এর ভাষায় কথা হয়। এইতো চলছে বেশ। ভালোবাসা রেখে গেলাম প্রিয় সৌমিত্র দা। জীবন সুন্দর হোক, জীবন হোক বিহঙ্গের মতো।
আপনিও ভালো থাকুন শামীম ভাই। ভালোবাসার জয় হোক।
"বুকের তিন পরত নিচে জ্বলছে দাউদাউ ভিসুভিয়াস
তার মধ্যেই আছড়ে পড়লো নায়েগ্রার রামধনু রঙ,
এক দিগন্তপ্রসারী হুসহুস আওয়াজের ফাঁকে
তোর ঘন নির্মেদ স্বরের ঠুমরী
নাচতে নাচতে এগিয়ে এল-
‘শোনো, আমার একটাই প্রেমিক, নিশ্চিত জেনো-
আমি শুধু ভালবাসি তোমাকেই!’"
বিমুগ্ধতা ! ! ষোল হজার পাঠকের সাথে আমিও একজন দাদা ।শুভকামনা ।
গর্বিত হলাম কবি বোন রুকশানা হক। দীর্ঘদিন ছিলেন না।
অভিনন্দন কবি সৌমিত্র চক্রবর্তী।
ধন্যবাদ কবিবোন শাকিলা তুবা।
কবিতাটি পড়ে নিজেকে সুখি ভাবছি সৌমিত্র ভাই।
হাহাহা। এইটা ভালো মন্তব্য।