জামাই-ষষ্ঠীর মূল বৃত্তান্ত:
মা ষষ্ঠী হলেন সন্তানাদির দেবী। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে তাঁকে সন্তুষ্ট করতে হয়, যাতে তিনি কন্যাকে সন্তানবতী হওয়ার আশীর্বাদ দেন। এখন মা ষষ্ঠীর সঙ্গে জামাই জুড়ে দিয়ে এর নাম হয়েছে ‘জামাই ষষ্ঠী’। প্রকৃত পক্ষে জামাইষষ্ঠীর আসল উদ্দেশ্য হল মাতৃত্ব, সন্তান ধারণ এবং বংশবৃদ্ধি। মেয়ে যাতে সুখে শান্তিতে দাম্পত্য জীবন যাপন করতে পারে, তার জন্য মঙ্গল কামনা।
ষষ্ঠী পূজার উপকরণ: আম্রপল্লব, তালপাখার পাখা, ধান, দূর্বা, পাঁচ থেকে নয় রকমের ফল, ফুল এবং বেলপাতা, সাদা সুতো ও হলুদ।
এখন দেখে নেওয়া যাক শ্বাশুড়িরা কী ভাবে মা ষষ্ঠীর আরাধনা করেন:
ষষ্ঠীপুজো উপলক্ষ্যে শ্বাশুড়িরা ভোরবেলা স্নান করে ঘটে জল ভরে নেন এবং ঘটের ওপর স্থাপন করেন আম্রপল্লব। সঙ্গে রাখেন তালপাতার পাখা। ১০৮টি দূর্বা বাঁধা আঁটি দিয়ে পূজোর উপকরণ সাজানো হয়। করমচা ফল-সহ পাঁচ থেকে সাত বা নয় রকমের ফল কেটে কাঁঠাল পাতার ওপর সাজিয়ে রাখতে হয় শ্বাশুড়িকে।
এরপর একটি সুতো হলুদে রাঙিয়ে তাতে ফুল, বেলপাতা দিয়ে গিট বেঁধে সাজানো হয়। এর পর মা ষষ্ঠীর পুজো করা হয়। জামাই এলে তাঁকে বসিয়ে সুতোটা হাতে বেঁধে দিয়ে শ্বাশুড়ি পাখার হাওয়া দিয়ে ‘ষাট-ষাট-ষাট’ বলে ধান-দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করেন।
বর্তমানে শহরাঞ্চলে অনেকেই এ ধরনের নিয়ম পালন না করলেও জামাইষষ্ঠীর দিন অবশ্যই জামাইদের নিমন্ত্রণ করেন। কোথাও কোথাও আবার শ্যালিকারা বাঁশের কঞ্চি বেঁকিয়ে ‘হার্ট শেপ’ তৈরি করে তাতে লালসুতো দিয়ে ধান বেঁধে সুন্দর আকৃতি করে ভগ্নিপতিকে উপহার দেন।
জামাই-ষষ্ঠীর অনুষ্ঠানের আচরণগুলোর প্রত্যেকটিই অর্থবহ।
যেমন:
ফুল, বেলপাতা দিয়ে সুতো বেঁধে দেওয়ার অর্থ, তোমার সঙ্গে আমাদের পরিবারের বন্ধন এবং আমার মেয়ের সঙ্গে তোমার বন্ধন অটুট থাকুক ও সুখপ্রদ হোক।
পাখা দিয়ে হাওয়া করার অর্থ, তোমার সমস্ত আপদ-বিপদ দূরে যাক, শান্ত থাকুক পরিবেশ।
তিন বার ‘ষাট-ষাট-ষাট’ বলার অর্থ দীর্ঘায়ু কামনা করা।
ধান সমৃদ্ধি ও বহু সন্তানের প্রতীক। দূর্বা চিরসবুজ ও চির সতেজতার প্রতীক।
এ সব কিছুই জামাইয়ের মঙ্গলের জন্য যেমন শুভ কামনা, তেমনই মেয়ের সুখে-শান্তিতে থাকার জন্য মঙ্গল চিন্তা এবং সুন্দর সাংসারিক জীবন যাপনের জন্য মা ষষ্ঠীর কাছে প্রার্থনা।
এটা একটা সামাজিক প্রথা মাত্র। জামাই-এর সাথে আপ্যায়ন করতে হবে মেয়েকেও। তা না হলে সমাজজীবন ও পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধি আসে না। আসতে পারে না। আজকের জামাইষষ্ঠীর পূণ্য শুভক্ষণে সব জামাইবাবুদের জানাই আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
জয়গুরু!
আজিকে জামাই ষষ্ঠী
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
আজিকে জামাই-ষষ্ঠী পূণ্য শুভদিনে,
জামাইকে দিতে হয় নব বস্ত্র কিনে।
জামাই ষষ্ঠীর দিন ভারি ধূম পড়ে,
হাসিখুশি বাক্যালাপ সারাদিন ধরে।
সামাজিক প্রথা এই জানি ভালমতে,
এ নিয়ম আসে চলে যুগ যুগ হতে।
আনন্দের স্রোত বয় প্রতি ঘরে ঘরে,
আয়োজন করে কত জামাতার তরে।
বেগুন পটল ভাজা, ঝোল ইলিশের,
আলুভাজা উচ্ছেভাজা, চাটনি আমের।
যত্ন সহকারে কত হয়েছে রন্ধন,
ইলিশের মাথা দিয়ে সুস্বাদু ব্যঞ্জন।
চিনিপাতা দই আর সাথে রাজভোগ,
খিলিপান তার সাথে করা হয় যোগ।
আজিকে জামাই-ষষ্ঠী পূণ্য শুভক্ষণ,
কবিতা লিখেন কবি শ্রীমান লক্ষ্মণ।
ধান সমৃদ্ধি ও বহু সন্তানের প্রতীক। দূর্বা চিরসবুজ ও চির সতেজতার প্রতীক। ঐতিহ্যের ব্যাখ্যা এতোটা বিশদ জানা ছিলো না। জানলাম। কবিতাও সুন্দর হয়েছে।
সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ করেছেন প্রিয়কবি। শুভেচ্ছা আর প্রীতির অমোঘ
বন্ধনে সুদৃঢ় হোক বন্ধুত্বের বন্ধন।
আজ শুভ জামাই-ষষ্ঠী। এই দিনটি পালনের উদ্দেশ্য হল কন্যার সন্তান উৎপাদনের জন্য শাশুড়ি কর্তৃক জামাইকে অভিনন্দন জানানো অথবা সেই কাজের জন্য উৎসাহিত করে জামাইয়ের দীর্ঘজীবন কামনা করা।
ভালো থাকবেন। পাতায় আসার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সাথেই থাকুন। প্রত্যাশা রইলো।
জয়গুরু!
আজিকে জামাই-ষষ্ঠী পূণ্য শুভদিনে,
জামাইকে দিতে হয় নব বস্ত্র কিনে।
জামাই ষষ্ঠীর দিন ভারি ধূম পড়ে,
হাসিখুশি বাক্যালাপ সারাদিন ধরে।
বাহ দারুণ মনে হলো লিখাটি কবি ভাই।
সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি। শুভেচ্ছা আর প্রীতির অমোঘ
বন্ধনে সুদৃঢ় হোক বন্ধুত্বের বন্ধন।
আজ শুভ জামাই-ষষ্ঠী। এই দিনটি পালনের উদ্দেশ্য হল কন্যার সন্তান উৎপাদনের জন্য শাশুড়ি কর্তৃক জামাইকে অভিনন্দন জানানো অথবা সেই কাজের জন্য উৎসাহিত করে জামাইয়ের দীর্ঘজীবন কামনা করা।
ফলে ষষ্ঠী পূজায় উপবাস করা ব্রতীরা সকালে স্নান করে আম্রপল্লব, আমসহ পাঁচফল আর ১০৮টি দুর্বাবাঁধা আঁটি দিয়ে পূজার উপকরণ সাজান। এক্ষেত্রে ধান সমৃদ্ধির প্রতীক এবং বহু সন্তানের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়৷
তাছাড়া দুর্বা চিরসবুজ ও দীর্ঘ জীবনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাই এমন দিনে শাশুড়ি মেয়ে-জামাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করে ধানদুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করেন৷
ভালো থাকবেন। পাতায় আসার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সাথেই থাকুন। প্রত্যাশা রইলো।
জয়গুরু!
জামাই-এর সাথে আপ্যায়ন করতে হবে মেয়েকেও। তা না হলে সমাজজীবন ও পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধি আসে না।
সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ করেছেন প্রিয়কবি। শুভেচ্ছা আর প্রীতির অমোঘ
বন্ধনে সুদৃঢ় হোক বন্ধুত্বের বন্ধন।
আজ শুভ জামাই-ষষ্ঠী। এই দিনটি পালনের উদ্দেশ্য হল কন্যার সন্তান উৎপাদনের জন্য শাশুড়ি কর্তৃক জামাইকে অভিনন্দন জানানো অথবা সেই কাজের জন্য উৎসাহিত করে জামাইয়ের দীর্ঘজীবন কামনা করা।
ভালো থাকবেন। পাতায় আসার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সাথেই থাকুন। প্রত্যাশা রইলো।
জয়গুরু!
জামাই-ষষ্ঠীর বৃত্তান্ত আমার ক্লিয়ারলি জানা ছিলো না। আজকে জেনে নিলাম মি. ভাণ্ডারী।
আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি। সাথেই থাকবেন এটা প্রত্যাশা রাখি।
আসুন, আমরা আরো জেনে নিই জামাই-ষষ্ঠী সম্পর্কে:-
কথিত আছে, জনৈক গৃহবধূ শ্বশুরবাড়িতে থাকাকালীন মাছ চুরি করে খেয়ে বারবার বিড়ালের ওপর দোষ দিতেন। এরপর একদিন তার সন্তান হারিয়ে যায়৷ তখন পাপের ফল ভেবে সন্তান ফিরে পেতে সে বনে গিয়ে দেবী ষষ্ঠীর আরাধনা শুরু করে। ওই গৃহবধূর আরাধনায় মা ষষ্ঠী সন্তুষ্ট হলে সেই বনে সন্তান ফিরে পায়।
এই জন্যই নাকি ষষ্ঠীদেবীর অন্য নাম অরণ্যষষ্ঠী। এদিকে মাছ চুরি করে খাওয়ার অপরাধে গৃহবধূর শ্বশুর-শাশুড়ি তাকে বাপের বাড়ি যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে ওই গৃহবধূর মা-বাবা তাঁদের মেয়েকে দেখতে একবার ষষ্ঠীপূজার আয়োজন করে এবং সেই পুজোর দিন শ্বশুরবাড়িতে আসার জন্য জামাইকে নিমন্ত্রণ করেন।
এরপর সেই পুজো উপলক্ষ্যে সস্ত্রীক জামাই হাজির হলে মেয়েকে দেখে তার মা-বাবার মনে আনন্দ আর ধরে না৷ ৷ষষ্ঠী পুজো ঘিরে এমন ঘটনা ঘটায় বাঙালি হিন্দুসমাজে এক নতুন উৎসবের সূচনা হয়৷ কার্যত ষষ্ঠী পুজো রূপান্তরিত হয় সামাজিক অনুষ্ঠান জামাইষষ্ঠীতে ৷ ফলে যে পরিবারে সদ্যোবিবাহিতা কন্যা আছে, সে পরিবারে এ পার্বণটি ঘটা করে পালন করা হয়ে থাকে।
ভালো থাকবেন। পাতায় আসার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সাথেই থাকুন। প্রত্যাশা রইলো।
জয়গুরু!
সুন্দর আয়োজন পড়লাম।
সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ করেছেন প্রিয়কবি। শুভেচ্ছা আর প্রীতির অমোঘ
বন্ধনে সুদৃঢ় হোক বন্ধুত্বের বন্ধন।
আজ শুভ জামাই-ষষ্ঠী। এই দিনটি পালনের উদ্দেশ্য হল কন্যার সন্তান উৎপাদনের জন্য শাশুড়ি কর্তৃক জামাইকে অভিনন্দন জানানো অথবা সেই কাজের জন্য উৎসাহিত করে জামাইয়ের দীর্ঘজীবন কামনা করা।
জামাইষষ্ঠী মানেই খাওয়া দাওয়া। জামাইয়ের আপ্যায়ণে এই দিনটিতে কোনওরকম ফাঁক রাখতে রাখতে চান না শ্বশুর-শাশুড়িরা। দুপুরে জামাইয়ের পাতে ভাপা ইলিশ, ইলিশ পাতুড়ি তুলে দেওয়ার ইচ্ছা থাকে অনেকেরই। কেউ কেউ সঙ্গে চিংড়ির মালাইকারিও রাখতে চান।
ভালো থাকবেন। পাতায় আসার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সাথেই থাকুন। প্রত্যাশা রইলো।
জয়গুরু!
দারুণ প্রিয় কবি।
সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি বোন আমার। শুভেচ্ছা আর প্রীতির অমোঘ
বন্ধনে সুদৃঢ় হোক বন্ধুত্বের বন্ধন। সাথেই থাকবেন এটা সবসময় প্রত্যাশা করি।
আসুন, আমরা আরও জেনে নিই আজকের দিনটির গুরুত্ব কতখানি।
আজ শুভ জামাই-ষষ্ঠী। এই দিনটি পালনের উদ্দেশ্য হল কন্যার সন্তান উৎপাদনের জন্য শাশুড়ি কর্তৃক জামাইকে অভিনন্দন জানানো অথবা সেই কাজের জন্য উৎসাহিত করে জামাইয়ের দীর্ঘজীবন কামনা করা।
জামাইষষ্ঠীর এই নিয়ম সম্পর্কে পুরাণ বলছে, ধান হলো বহু সন্তান-সমৃদ্ধি-ঐশ্বর্যের প্রতীক। একইসঙ্গে দূর্বা তারুণ্য আর সুস্বাস্থ্যের প্রতীক। তাই জামাইয়ের সুস্বাস্থ্য কামনা করেই নাকি শাশুড়িমায়েররা সবশেষে ধান-দুব্বো দিয়ে দোয়া করতেন জামাইকে।
ভেজা পাখার বাতাস করা হতো, যাতে জামাইয়ের শরীর ঠাণ্ডা হয়। তখন তো আর এসির ব্যবস্থা ছিলো না। আর হলুদ-দই মঙ্গল বা শুভ শক্তির প্রতীক। বাকি ফলের থালা। পাঁচ ধরনের ফল জামাইয়ে হাতে তুলে দেওয়ার অর্থ ফলবান হোক জামাই। তবে সে যাক আজ এতো সব রীতিনীতি মানে না বঙ্গবাসী।
তবু রীতি অনুযায়ী দিনটায় জামাইয়েরা হানা দেবেন শ্বশুরবাড়িতে। শুধু কিছু নিয়ম থাকে জামাইয়ের পক্ষ থেকে। জামাইদের বছরেরর অন্যান্য উৎসবে শ্বশুরবাড়ির উপহার বাধা ধরা থাকলেও এইদিনে খালি হাতে প্রবেশ নিষেধ। শ্বশুর-শাশুড়ির জন্য উপহারসহ আরও কিছু ক্রিয়াচার থাকে জামাইদের।
ফলে ষষ্ঠী পূজায় উপবাস করা ব্রতীরা সকালে স্নান করে আম্রপল্লব, আমসহ পাঁচফল আর ১০৮টি দুর্বাবাঁধা আঁটি দিয়ে পূজার উপকরণ সাজান। এক্ষেত্রে ধান সমৃদ্ধির প্রতীক এবং বহু সন্তানের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়৷
তাছাড়া দুর্বা চিরসবুজ ও দীর্ঘ জীবনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাই এমন দিনে শাশুড়ি মেয়ে-জামাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করে ধানদুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করেন৷
ভালো থাকবেন। পাতায় আসার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সাথেই থাকুন। প্রত্যাশা রইলো।
জয়গুরু!