ওরে আমার কুলশিত মন রে!
আমার জন্মভূমি, আমার মাতৃভূমি, আমার বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে আমার সোনার বাংলাদেশ। এই হচ্ছে আমার প্রিয় জন্মভূমি। যদি সত্যিকার অর্থে আমার প্রিয় জন্মভূমিই হয়ে থাকে। তবে এই দেশের যা কিছু আছে, সবই আমার প্রিয় হতে হবে। যেমন: এই দেশের মাটি ও মানুষ, বন-জঙ্গল, খাল-বিল, নদী-নালা, পরিবেশ, খাওয়া-দাওয়া সহ খেলা-ধুলা ইত্যাদি ইত্যাদি সবই। এসবের মধ্যে যদি এই দেশের সর্বস্তরের মানুষের প্রিয় (ক্রিকেট খেলা) আমার অপ্রিয় থাকে, তো আমি কী করে গর্ব করে বলি আমার প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ? মনে হয় এটা আমার মনের কথা নয়। এটা শুধু এদেশের কিছু মানসিক রুগীদের বুঝানোর জন্যই মুখের বুলি মাত্র। কিন্তু সবাই তো আর মানসিক রুগী নয়! অনেকেই বুঝে যে আমি প্রিয় প্রিয় বলে কী বুঝাতে চাচ্ছি।
এতে করে অনেকেই বুঝে নেয় আমি এদেশে জন্মগ্রহন করেও, এখনো সত্যিকারের একজন দেশপ্রেমিক হতে পারিনি। আমার মনে বাজছে অন্য দেশের জয়ধ্বনি। প্রিয় হয়ে থাকবে অন্য দেশ। আর হাতে একটা জাতীয় পরিচয়পত্র (স্মার্ট কার্ড) প্রদর্শন করে লেকচার দিয়ে যাচ্ছি, “আমার প্রিয় বাংলাদেশ!” তাহলে কি তা হবে? না হলেও কিন্তু হয়েই যাচ্ছে। অন্য দেশের সাথে আমার প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাথে অন্য দেশের খেলা শুরু হলে দেশের দলের সাপোর্ট না করে অন্যদেশের সাপোর্ট করে যাচ্ছি। আমি একজন জুয়াড়ি হয়ে অন্যদেশের সাপোর্ট নিয়ে নিজ দেশের দলের বিপক্ষে বাজিও ধরছি। কখনো হারছি, কখনো বা জিতছি!
তা হোক, কিন্তু এদেশের অগণিত মানুষই আমার এহেন কর্মকাণ্ড দেখে শুধু আফসোসই করে যাচ্ছে। অনেকে বলা-বলিও করে যে, “সরকার কর্তৃক আমাকে দেওয়া জাতীয় স্মার্ট কার্ডখানা আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া নাকি সরকারের উচিৎ।”
তাই আমিও এখন সরকার কর্তৃক দেওয়া জাতীয় স্মার্ট কার্ড সাথে রাখতে কেমন যেন লজ্জা পাই। আর বর্তমান সময়ের এতো মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচিত জাতীয় স্মার্ট কার্ড খুবই গোপনে ঘরের কোণে রেখে দেই। সময়ের প্রয়োজনে বের করি। কাজ শেষে আবার গোপন জায়গায় রেখে দেই। ভয় হয়, যদি এই ক্রিকেট খেলার সাপোর্ট নিয়ে কেউ যদি আমার মূল্যবান সম্পদ স্মার্ট কার্ডখানা কেড়ে নিয়ে যায়, তাই। নেওয়াটাও উচিৎ বলে আমি মনেও করি। তাহলেই আমার এই কলঙ্কিত মনের ন্যায্য বিচার হতো। কারণ, “আমার মতো এমন কোটি কোটি জুয়াড়িগণ যখন অন্যদেশের পক্ষে বাজি ধরে, তখন জুয়াড়িগণ দেশের দলের পরাজয় কামনা করে মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে ফরিয়াদ করতে শুরু করে।”
এর ফলে অনেকসময় আমার বাংলাদেশ দল জিতেও জিততে পারে না, আমার মতো এমন কুলাঙ্গারদের বদদোয়ার কারণে। তাই অনেক সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দলের সাথে খেলে পরাজয় বরণ করতে হচ্ছে। তাই আমার বিচার হওয়া দরকার। তা আজ হোক আর কাল হোক, একদিন-না-একিদিন হবে বলে আশা করি।
আমরা এখনো সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হতে পারিনি। না হলেও কিন্তু হয়েই যাচ্ছে। আমাদের বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাথে অন্য দেশের খেলা শুরু হলে দেশের দলের সাপোর্ট না করে অন্যদেশের সাপোর্ট করে যাচ্ছি। একজন জুয়াড়ি হয়ে অন্যদেশের সাপোর্ট নিয়ে নিজ দেশের দলের বিপক্ষে বাজিও ধরছি। কখনো হারছি, কখনো বা জিতছি! দুঃসংবাদ বটে।
আপনার সুন্দর মূল্যবান মন্তব্যের জন্য শ্রদ্ধার সাথে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সাথে ঘৃণ্য দেশপ্রেমিক জুয়াড়িদের জন্য আফসোসের সাথে সমবেদনাও জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় দাদা।
নিবন্ধ এবং কবিতা অথবা জীবনের গল্প সব খানেই আপনার কলম বেশ ক্ষুরধার।
কুলাঙ্গার জুয়াড়িগণ যদি এই দেশের সত্যিকারের নাগরিক হয়ে থাকে, তো যেদিন বাংলাদেশের সাথে বিশ্বের যেকোনো দেশের সাথে খেলা হবে; সেদিন অন্তত জুয়া খেলা থেকে বিরত থাকাটাই ভালো বলে আমি মনে করি। যেহেতু জুয়াড়িগণ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রতি এখনো বিশ্বাসী হতে পারেনি, তাই। অন্যদেশের পক্ষ নিয়ে জুয়া বা বাজি ধরলেই মহাবিপদের সম্মুখীন হতে হয়! কারণ, সেদিন কুলাঙ্গার জুয়াড়িগণ বাজিতে জেতার আশায় বাংলাদেশের জন্য বদদোয়ায় মগ্ন থাকে। তখন কোটি জুয়াড়ির বদদোয়া কিছু-না-কিছু কাজে লেগে যায়। তাই অনেক সময় জেতা টিমও হেরে যায়! আমার দুঃখ শুধু এখানেই।
সুন্দর একটি বিষয় তুলে এনেছেন,,,শুভেচ্ছা জানবেন,,,
খেলে দেখতে বসে যদি দেখি বাংলাদেশে জন্ম নিয়ে অন্যদেশের সাপোর্ট করে, তখন কেমনটা লাগে, বলুন?
এই বাস্তবতা ভারতে সবচেয়ে বেশী মনে হয়। যতদূর চোখ যায় গাছপালার চাইতে বুকিই বেশী পাই।
আমি ১৯৯১ সালের মাঝামাঝি সময়ে ভারত গিয়েছিলাম শ্রদ্ধেয় কবি দাদা। আমি দেখেছি, ওরা বেশিভাগ মানুষই দেশের সাপোর্টই করে থাকে। আর জুয়া তো কিছু থাকবেই! তবে আমাদের দেশের চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন! দুঃখ শুধু এখানেই থেকে যায়।
সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া সমাজের এই আবর্জনা সরানো আমার আপনার দ্বারা হবেনা।
কষ্ট হয় শ্রদ্ধেয় দিদি! যখন দেখি দেশের মানুষ হয়ে অন্যদেশের সাপোর্ট নিয়ে হইহই করতে থাকে।
আমার প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ? মনে হয় এটা আমার মনের কথা নয়। এটা শুধু এদেশের কিছু মানসিক রুগীদের বুঝানোর জন্যই মুখের বুলি মাত্র। সমর্থন করলাম দাদা।
আপনার সুন্দর মন্তব্যে ধন্য হলাম শ্রদ্ধেয় দাদা। আশা করি ভালো থাকবেন।
এই পরিস্থিতি থেকে আমাদের মুক্তি কবে?
মুক্তি পাওয়া যাবে না বলে মনে হয় শ্রদ্ধেয় শাকিলা দিদি। কারণ, এখনো আমাদের মনমানসিকতার অনেক অভাব রয়েছে। তাই লেখার শিরোনাম দিয়েছি, "ওরে আমার কুলশিত মন রে!"
নিতাইদা,
মানুষ রাশনাল প্রাণী । লাভ ক্ষতি হিসেবে করবেই । এই ওপেন মার্কেট ইকোনোমিতে এটাইতো হবে ।থামাবার পথ নেই মনে হয় । এটাই আমরা শেখাচ্ছি সবাইকে । শুধু লাভের কারবার ! দেশের আবেগ ভালোবাসা নিয়েও লাভ ক্ষতির চিন্তা । দেশের উঁচু থেকে নিচু সব তলাতেই এই একই গলদ । সিস্টেম লস হিসেবেই ধরতে হবে পুরো ব্যাপারটা। এর বাইরে ভেবে শুধু মনই খারাপ হবে ।