আজকাল নিজেকে বড় অপরাধী মনে হয়, যূথিকা।
সদ্য বিচার হওয়া ফাঁসিতে ঝুলানো আসামীর মত অপরাধী মনে হয় নিজেকে।
আজকাল আয়নায় আর নিজেকে দেখতে পাই না
আমি। চোখের মাঝে বরফের স্তূপ জমে গেছে।
মুখটাও অন্য কারুর করুণ মুখ হয়, এক আকাশ
আকুতি নিয়ে চেয়ে আছে আমার দিকে।
আমি কি করে তোমার সাথে ভালো সময় কাটাবো?
আমি পারবে না যূথিকা, আমি পারবো না কখনো।
ছোট ভাইটা রোজ এক শার্ট আর এক প্যান্ট পরে
কলেজে যায়। পায়ে জুতাও নেই নতুন কোনো।
বাবার পুরনো একটা শার্ট শেলাই করেই চলে দিনের পর দিন। কেউ বললে, বুক ফুলিয়ে বলে সামনে মাসে বড় খোকা টাকা পাঠালে ই নতুন একটা নিবো। এটা তো আরও কয়েক মাস দিব্যি চলে যাবে, এখন লাগবে না।
বাবারা বুঝি এমনই হয়। তাই না যূথিকা।
আমি কি করে তোমাকে শপিং করে দেই যূথিকা?
আমি কি করে তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যায়,
বলতে পারো কি তুমি।
আমি পারবো না যূথিকা,আমি পারবো না এসব।
পাশের বাড়ি চাচি যখন তার ছেলের দেওয়া নতুন
কাপড় দেখিয়ে দেখিয়ে বলে এটা আমার ছেলে পাঠিয়েছে ঢাকা থেকে। আমি ত চাই নি, তাও জোর করে দিয়ে পাঠিয়েছে। তখন আমার মা আঁচলের ছেঁড়া
টুকু সযতনে লুকিয়ে বলে আমার ছেলেটাও সামনে ঈদে আমার জন্যে শাড়ি কিনে আনবে।গোপনে চোখের পানি মুছে সবার কাছে আমাকে বড় করবে।
আমি কি করে তোমাকে কসমেটিকস আর প্রসাধনী কিনে দিই যূথিকা।
আমি কি করে তোমাকে সাজিয়ে মা”কে রাখি
পাগলিনীর বেশে বলতে পারো কি?
আমি পারবো না যূথিকা, আমি পারবো না কখনোই।
পাগল ভাইয়ের দুই ছেলে মেয়ে যখন খেলার সহপাঠীর
কাছে কাঁদে।নতুন জামা আর খেলার পুতুলে হাত দেওয়ার জন্যে অকথ্য গালিগালাজ আর মার খেয়ে দূর থেকে চেয়ে দেখা। মনে মনে বলা আমার চাচ্চুও আমাদের জন্যে এর চেয়ে সুন্দর পুতুল আনবে।
এর চেয়েও সুন্দর জামা আনবে। আর কাঁদবে।
আমি কি করে তোমাকে রেস্টুরেন্ট নিয়ে গিয়ে কোল্ড ড্রিঙ্ক আর রাস্তার পাশে ফুচকা খায় যূথিকা।
আমি কি করে ওদের স্বপ্নকে মেরে ফেলি নিজ হাতে
একবারও কি বলতে পারো যূথিকা?
আমি পারবো না যূথিকা,আমি পারবো না
কাউকে খুন করতে।
আমি পারবো না তোমাকে খুশি করতে সবার খুশি গুলো নিজ হাতে গলাটিপে মারতে।
আমি পারবো না কখনোই মা’র চোখের জল মাটিতে
ফেলতে তোমার সুখ বিলাসের জন্যে।
আমি পারবো না কখনোই বাবার গায়ে ছেঁড়া শার্ট দিয়ে
নিজেকে নামীদামি ভাবতে।
আমি পারবো না কখনোই নিজের সুখের কথা ভেবে
ছোট্ট ভাইয়ের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে।
আমি পারবো না যূথিকা, আমি পারবো না।
আজকাল নিজেকে বড় অপরাধী মনে হয়, যূথিকা।
সদ্য বিচার হওয়া ফাঁসিতে ঝুলানো আসামীর মত অপরাধী মনে হয় নিজেকে।
২৬/০৬/১৯
আবেগঘন জীবন কবিতা। আমাদের জীবনের অনুভূতি গুলোন একত্র করে ডানে বাঁয়ে সামান্য ছাঁটাই বাছাই করলে সব লিখাই হয়ে উঠতে পারে একেকটি অসাধারণ জীবন কাব্য। আপনি সার্থক। অভিনন্দন মি. পথিক সুজন।
আন্তরিক ধন্যবাদ ও শ্রদ্ধা জানবেন প্রিয় স্যার।
মাঝে মাঝে আপনার হাতে অসাধারণ কিছু উঠে আছে। এই লেখাটি তেমন। অভিনন্দন কবি দা।
প্রেরণা পেলাম শ্রদ্ধেয়,, শুভেচ্ছা জানবেন অফুরান।
এমন কবিতাকে নিজের ভাবতে ভীষণ ইচ্ছে হয় কবি সুজন ভাই।
আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানবেন প্রিয় কবি,,
আমি পারবো না যূথিকা,আমি পারবো না এসব।
কবিতাটি যেন জীবন থেকে উঠে এসেছে কবি পথিক সুজন ভাই। ভালোবাসা।
আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানবেন শ্রদ্ধেয় কবি ।
ভালো লিখেছেন।
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন শ্রদ্ধেয়
এখানে অপরাধের কিছু নাই। সাহসী হোন কবি।
জ্বী শ্রদ্ধেয় কবি,,, শুভেচ্ছা জানবেন অবিরাম
আমি পারবো না তোমাকে খুশি করতে সবার খুশি গুলো নিজ হাতে গলাটিপে মারতে।
আমি পারবো না কখনোই মা’র চোখের জল মাটিতে
ফেলতে তোমার সুখ বিলাসের জন্যে।
আমি পারবো না কখনোই বাবার গায়ে ছেঁড়া শার্ট দিয়ে
নিজেকে নামীদামি ভাবতে।
আমি পারবো না কখনোই নিজের সুখের কথা ভেবে
ছোট্ট ভাইয়ের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে।
যতই অপরাধী হউক তবুও আমি চাইনা যূথিকার জন্য ছোট ভাই / মা / বাবার স্বপ্নের মৃত্যু হউক। শুভ কামনা সতত।
সুন্দর মতামতে প্রেরণা পেলাম, ,,শুভেচ্ছা জানবেন প্রিয়
সত্যি কবিতায় এক মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবন ফুটে উঠেছে। শুভকামনা কবি।