অমর একুশের কবিতা

অমর একুশের কবিতা
কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

1

বাংলাকে মাতৃভাষার দাবিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিকদের মত অগণিত ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি। শত শহীদের রক্তে লেখা মাতৃভাষা এই বাংলা ভাষা। আমরা হারি নি, হারতে পারি না, আমরা লড়াই করতে জানি, আমরা ভাষার তরে প্রাণ উত্সর্গ করতে জানি, আমরা ভীরু নই, আমরা কাপুরুষ নই, আমরা লড়াই করে মরতে পারি। আমরা বাঙালী, বাংলা আমাদের জন্মভূমি। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা, আমাদের মায়ের ভাষা।

আসুন, আজকের মাতৃভাষা দিবসে, শত শহীদদের স্মরণে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা আর সম্মান জানাই। মাতৃভাষার মান ও সম্মান রক্ষার জন্য আমরা সংকল্প করি। আমাদের পরিচয় আমরা হিন্দু নই, আমরা মুসলমান নই, আমাদের পরিচয় আমরা বাঙ্গালী, বাংলা ভাষাভাষী সকলেই আমরা এক জাতি এক প্রাণ। আসুন, আমরা মাতৃভাষাকে যথাযোগ্য সম্মান দিই, সোচ্চার কণ্ঠে বলি-বাংলা ভাষা আমার গর্ব, আমার অহংকার। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!

2

অমর একুশের কবিতা
কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

বাংলা মায়ের ভাষা মেটায় মনের আশা
বাংলার গানে আছে সুর,
বাংলার যাত্রাপালা কান করে ঝালাপালা
বাংলা তাই এত সুমধুর।

কত না বছর ধরে বাংলা ভাষার তরে
কত প্রাণ হলো বলিদান,
দিবারাতি জেগে রই কান পেতে শুনি ওই
অমর একুশের আহ্বান।

যায় যাবে যাক প্রাণ মাতৃভাষার সম্মান
সবাকার এই হোক ব্রত,
মাতৃভাষা স্বাধীনতা ঘুচাবো মায়ের ব্যথা
আজি মোরা নিলাম শপথ।

বাংলা হলো রাষ্ট্রভাষা পুরিল সকল আশা
কত শহীদের রক্ত-দান,
শত প্রাণ বলিদান রাখিল ভাষার মান
ইতিহাস আছে তা প্রমাণ।

আজি হাতে হাত রেখে ফাগুন পরাগ মেখে
অমর একুশে দেয় ডাক,
মাতৃভাষা জয়গান জাতি ও ভাষার মান
হিংসা দ্বেষ সব মুছে যাক।

3

রক্ত দিয়ে লেখা মাতৃভাষা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

শত শহীদের রক্ত দিয়ে লেখা
আমাদের মাতৃভাষা,
মাতৃভাষার তরে জীবন দিয়ে যাঁরা
দিয়ে গেল ভালবাসা।

হাসিমুখে প্রাণ দিল বলিদান
বাংলা ভাষার তরে,
তাদের শোকে বাংলা মায়ের
দুই চোখে অশ্রু ঝরে।

বাংলা আমাদের জন্মভূমি মা
বাংলা আমাদের ভাষা,
বাংলার গর্বে ফুলে উঠে বুক
জাগে নব নব আশা।

রক্তমূল্য দিয়ে কিনেছি আমরা
মাতৃভাষা স্বাধীনতা,
বহুদিন পরে মায়ের আজিকে
ঘুচিল দুঃখ ব্যথা।

বাংলায় মোরা কথা বলি আর
বাংলায় গাহি গান,
বাংলার শ্যামল মাটিতে ফলে
সোনার ফসল ধান।

আসিছে অমর একুশে ফেব্রুয়ারী
শুনি তারই আহ্বান,
মাতৃভাষা দিবসে নিলাম শপথ
রাখিব ভাষার মান।

4

রক্তে লেখা মাতৃভাষা
– লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

আমার তরুণ ভাইদের
তাজা রক্তে রাঙানো
সেই একুশে ফেব্রুয়ারী।

কবিতার পাতায়
কথা বলে আজি
কালো অক্ষরের সারি।

বিপ্লবী এই বাংলায়
বারুদের গন্ধ আজ
সৌরভ ছড়ানো বাতাসে ।

আজও এই বাংলায়
নীল আকাশের গায়
চাঁদ ও তারারা হাসে।

আকাশে তারা আছে,
কিন্তু তারা নেই, যারা
ভাষার তরে দিয়েছে প্রাণ।

বুলেট বিদ্ধ তাজা
তরুণের রক্তে লেখা
বাংলা মাতৃভাষার গান।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

1 thought on “অমর একুশের কবিতা

  1. বাংলা ভাষাভাষী সকলেই আমরা এক জাতি এক প্রাণ। আসুন, আমরা মাতৃভাষাকে যথাযোগ্য সম্মান দিই, সোচ্চার কণ্ঠে বলি-বাংলা ভাষা আমার গর্ব, আমার অহংকার। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু! https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।