পাঠ প্রতিক্রিয়ায় পাঠক থাক ক্রিয়াহীন

আজকাল নিজেকে মাঝে মাঝে সপ্তাহখানিক এর জন্য ছুটি দিয়ে ফেলি। ভালো লাগে দূরে থাকতে। শব্দনীড় ব্লগের একজন একনিষ্ঠ ভক্ত এবং বিরাজমান সকল গুণী শব্দ স্রষ্টাদের শব্দ পাঠক হিসেবে ইতিমধ্যেই আমি বেশ সুনাম কুড়িয়ে ফেলেছি। ভালোই লাগে। একটি ব্লগ অথবা একটি পোস্ট; পোস্ট দাতা নেই; কখনও কখনও উঁকিঝুকি মারছেন এখান ওখান থেকে …. ভিন্নজন না বুঝলেও বোঝার বিশেষ ক্ষমতা নামক তৃতীয় অক্ষি নিয়ে ঝিম মেরে থাকা ব্যক্তিটি মুরুব্বী। মানে আমি মুরুব্বী।

আদিনমান এই ব্লগ সেই ব্লগ। মানে বলতে এটা কিন্তু ধরে নেবেন না যে ভিন্ন কোন ব্লগ; বলতে চাইছি শব্দনীড় ব্লগেরই বিভিন্ন ব্লগে চোখ বুলিয়ে বেশ কেটে যেতো আমার কাজের পাশাপাশি বিশ্রাম সময়। ঘুমেও আমি যেন জেগে থাকি। রাত-বিরাতের অনুচর হানা দিলেও টের পাই কে এলো আর কে গেলো। কে লিখা নিয়ে এলো আর কে বাহারি বিজ্ঞাপনের ডালি নিয়ে এলো। ডালি এনে ফেললেও এটা সেটা ঘাঁটাঘাঁটি করাই অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। কি করা। আমি যে পাঠক। ক্রিয়া থাকা চাই।

দূর্বার গতিতে চলতে থাকে ব্লগ পড়া। সতর্ক থাকি কোন অক্ষর যেন চোখ ফাঁকি না দেয়। দেবে বা দিতে পারে এটা আপন জেনেই চোখকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলি গুণীদের শব্দ দর্পণে। ধন্যবাদ শুভেচ্ছা অভিনন্দন নিয়মিত আছি লিখে যান পড়বো নানা ধরনের আপোষ কামী মন্তব্য। লিখক যখন কিছু লিখেন নিজের সাথে কম্প্রোমাইজ করলেও পাঠক কিন্তু ঠিক ঠিকই বুঝে ফেলেন লিখক তাঁর দায়ভার কোথায় অন্তত সামান্য মনযোগে নিজেকে সরিয়েছেন। পাঠক পাঠকই। পাঠের সঙ্গেই যার সহবাস।

মিনমিন থেকে এবার খানিকটা সোচ্চার হই। আমার এই পোস্ট যারা করুণাভরা দৃষ্টিতে পড়ছেন তাদের কেউ কি বলবেন … যাদের ব্লগ নিয়মিতভাবে শব্দনীড় এ প্রকাশিত হয়ে চলেছে তাঁরা কয়টি স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র ব্লগে নিজের উপস্থিতি জিইয়ে রেখেছেন !! শব্দনীড়ে আপনার পাঠক এসে আপনার ব্লগে কথা বলে চলে গেলেও আপনাকে পায় না, ঠিক এমনি করে কি স্বতন্ত্র সেই ব্লগের পাঠকরাও কি আপনাকে এখানকার মতো করে মিস করে !! সত্য পাঠক নিশ্চয়ই মিস করবেন। নইলে পাঠক কিসের !!

একটি পোস্টের সাথে লিখকের তাৎক্ষণিক সম্পৃক্ততা থাকলে লিখক নিশ্চয়ই অন্যের পোস্টে যাবেন। পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন করবেন। আমন্ত্রণ জানাবেন। করবেন মূল্যায়ণ। তবেই না আসবে ব্লগ লিখার সুপ্ত প্রাপ্তির প্রাথমিক অর্জন। অর্জন আজকাল আমাদের তেমন করে সিরিয়াস করে তোলে না। শব্দনীড় এর আহবান আমার কাছেও আজকাল দুর্বোধ্য বা নিছক মনে হয়, যখন ব্যানারে স্পষ্ট করে লিখে রাখে ‘সহ-ব্লগারের লিখায় আপনার মন্তব্য দিন। মন্তব্য এবং প্রতি-মন্তব্যে ব্লগিং হোক আনন্দের।’

আনন্দ দূরে থাক। আমারও এখন ইচ্ছে করে মহান সব শব্দ স্রষ্টাদের মতো করে চুপচাপ থাকতে। নিজেকে নিয়ে তাঁরা লিখুন। তাঁদের লিখায় শব্দনীড় পাতা অলঙ্কৃত থাক। লগিন বা অতিথি হয়ে বসে থাকুন। যখন ইচ্ছে তখন আসুন। নিজের পোস্ট প্রকাশ করে নিজের মতো করে থাকুন। কারু সাথে কারু সম্পর্কের বালাই না থাক। আমি পাঠক আপনার পোস্টে যাব কি যাবো না তা আমার ‘পরেই থাক। শূন্য থেকে একটি মন্তব্য নিয়ে স্রষ্টা যদি সুখি হোন পাঠকের কী আসে যায়। পাঠক থাক ক্রিয়াহীন।

মুরুব্বী সম্পর্কে

আমি আজাদ কাশ্মীর জামান। আছি মুরুব্বী নামের অন্তরালে। কবিতা পড়ি, কবিতা লিখার চেষ্টা করি। ভেতরে আছে বাউল মন। খুঁজে ফিরি তাকে। জানা হয়নি এখনো। ঘুরতে ঘুরতে আজ পৃথিবীর স্বর্গে। এখানেই পরিচয় হয়েছিলো, কবিতা পাগল এক মানুষের সংগে। নাম জিয়া রায়হান। যার কিছু শব্দকথা, এ্যাতোদিন ভরেছে আমার পাতা। উথাল পাথাল হাওয়া, হৃদয়ে জাগালো দোলা পেলাম কিছু সমমনা মানুষের দ্যাখা। দিনভর আর রাতভর শুধু কবিতায় গেলো বেলা। সব ছেড়েছি- সব পেয়েছি- ভুলতে পারিনি শুধু কবিতার অশ্রুসজল চোখ। ভালো লাগা থেকেই দু’ একটা শব্দ সাজাবার চেষ্টা করি। মাতাল বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মাটির কলসে, তবলার ধ্বণী তুলে গাইতে পারি বেসুরো গান- সুর নামের অন্তরালে। ভালোলাগে পোষা কবুতরের পালক ললাটে ছোঁয়াতে। ফুল থেকে রং নিয়ে, খেলি হোলিখেলা, হৃদয়ের উঠোনে। আজ তারি ধমকে এলাম স্বরূপে- স্বকথায় ভরাবো পাতা।   hits counter