গাছের একটি পাতা হালকা বাতাসে
তিরতির করে কাঁপছে
পাতার কম্পনে আমি কবিতা দেখি।
বহু পথ অতিক্রম করে পাহাড়ি ঝর্ণা
ছুটছে সমুদ্রের টানে
ঝর্ণার স্বচ্ছ জলে আমি কবিতা দেখি।
নুয়ে পড়া লেবুর গাছে ধ্যানী মাছরাঙা
টুপ করে ডুবে যায় জলে
মাছরাঙার ঠোঁটের মাছে আমি কবিতা দেখি।
ক্লান্ত দুপুরে মায়ের কোলে ঘুমন্ত শিশু
মায়ের ঘুম ঘুম চোখ
মায়ের অলস ঘুমে আমি কবিতা দেখি।
জানালায় পর্দায় লাজুক কিশোরী, ওপাশে
নম্র কিশোর
বয়ো-সন্ধি ভালবাসায় আমি কবিতা দেখি।
মসজিদের চাপকলে তৃষার্ত পথিক
আঁজলা আঁজলা জল
তার পরিতৃপ্ত মুখে আমি কবিতা দেখি।
ইটের ঝাকা বয়ে পরিশ্রান্ত শ্রমিকের
দুদণ্ড অবসর
শ্রমিকের গুড়-রুটিতে আমি কবিতা দেখি।
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া তরুণীর
বিব্রত ঠোঁটের হাসি
চোখের অনাবিল আনন্দে আমি কবিতা দেখি।
পাতাকুড়ুনির ফোকলা দাঁতে রোদের ঝিলিক
তুলতুলে গাল
আগুন পোহানো ভোরে আমি কবিতা দেখি।
মাটির সমীহে হাঁটা নুজ্জ্ব বয়োবৃদ্ধ দাদা
তার হাতের লাটি
দাদার পায়ের ছাপে আমি কবিতা দেখি।
পিতার কনিষ্ঠ আঙুল ছেড়ে ছুটে যাওয়া শিশু
মায়ার উদ্বিগ্ন চোখ
বুকের তোলপাড়ে আমি কবিতা দেখি।
দমকা বাতাসে সরে যাওয়া সহপাঠিনীর ওড়না
সহপাঠীর নত মুখ
পারস্পরিক বিশ্বাসে আমি কবিতা দেখি।
ভিখারির থালায় চকচকে নোটের ঝিলিক
ভুবন বিজয়ী হাসি
তার আশ্বস্ত মুখে আমি কবিতা দেখি।
শীতে ফেটে যাওয়া চামড়ায় আগুনের তাপ
খড়কুটোয় মেলে দেয়া হাত
শীতার্থ মানুষের ওমে আমি কবিতা দেখি।
উঠোনের বাঁশঝাড় বেয়ে ওঠা পানের বরজ
বাহারি মশলার পানদান
দাদীর লাল ঠোঁটে আমি কবিতা দেখি।
পুকুরের মাছের ঘাই ধ্যাননেত্র শিকারি
বড়শিতে পুঁটিমাছ
ধনেপাতা তরকারিতে আমি কবিতা দেখি।
মসজিদের লাগোয়া মন্দিরে ঘণ্টাধ্বনি
টুপি, পৈতার প্রার্থনা
ধর্মের সম্প্রীতিতে আমি কবিতা দেখি।
বেদনায় কাতরাতে থাকা মানুষের পাশে
সহমর্মি মানুষের হাত
মানুষের মানবিক কর্মে আমি কবিতা দেখি।
আমার কবিতা যাপন প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ
মানুষের চোখ, মুখ, শ্বাস
মাঠের অবারিত সবুজ
আমার প্রতিদিনের কবিতা, প্রতিক্ষণের কবিতা।
'আমার কবিতা যাপন প্রতিদিন,
প্রতিক্ষণ মানুষের চোখ, মুখ, শ্বাস
মাঠের অবারিত সবুজ
আমার প্রতিদিনের কবিতা, প্রতিক্ষণের কবিতা।' ___ বিমুগ্ধ পাঠ।
চমৎকার উপলদ্ধিকর কবি দা
অতীব সুন্দর লিখেছেন ,