তিতলির বাবা মারা যাওয়ার তিন দিন পরে তিতলি পালিয়ে যায়, অথচ এর প্রয়োজন ছিল না। রাহুলের সাথে তার সম্পর্কের বাধা বাবাই ছিলেন, মায়ের অমত ছিল না। এখন তাদের সম্পর্ক নির্বিঘ্নে বিয়ের দিকে গড়াতে পারতো। মৃত্যুর তিন দিন পরে পালিয়ে যাওয়া একটা বিরাট ধাঁধা হয়ে দেখা দিয়েছে। একদিকে স্বামীর শোক অন্যদিকে মেয়ের পালিয়ে যাওয়ার কলঙ্ক, দিশেহারা তিতলির মা।
পালিয়ে যাওয়ার একুশ দিন পরে তিতলি ফিরেছে, কিন্তু বিধ্বস্ত হয়ে ফিরেছে। রাহুলের সাথে যে স্বপ্ন দেখেছিল; সে স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রেমিক রাহুলের সাথে বর্তমান রাহুলকে তিতলি মিলাতে পারছে না। তিতলি বুঝতে পেরেছে বাকিজীবন রাহুলের সাথে কাটানো অসম্ভব, সে ফিরে এসেছে।
মায়ের সাথে তিতলির সম্পর্ক সবসময় ভালো ছিল, মা-মেয়ে জমতো বেশ কিন্তু পালিয়ে যাওয়া এবং ফিরে আসার পরে সম্পর্ক আগের পর্যায়ে নেই। তিতলি অনুশোচনায় পুড়ছে, মায়ের কাছে অনেকবার মাফ চেয়েছে। মায়ের রাগ কমছে না, তিতলি না ফিরলেই যেন ভালো হতো।
তিতলির বাবার মৃত্যুর আড়াই মাস পরে মায়ের বিয়ে হয়, তিতলির অমতেই হয়। তার মতের তোয়াক্কা কেউ করেনি। তিতলির পছন্দের মত মায়েরও পছন্দ ছিল, বাবার মৃত্যু মায়ের পছন্দকে সহজ পরিনাম দিয়েছে।
তিতলি মায়ের সাথেই থাকে কিন্তু এ থাকা মায়ের পছন্দ নয় সে অন্য আবাসনের খোঁজ নিচ্ছে।
তিতলির বাবার মৃত্যুর চার মাস সতের দিন পরে পুলিশ তাদের বাড়ির দরজায় কড়া নাড়ে। তিতলি এবং তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে এসেছে, তারা খবর পেয়েছে তিতলির বাবার মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। তারা কোর্টের অনুমতি নিয়ে লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্ত করবে।
তিতলি ভয়ে কাঁপছে, বাবার মৃত্যুতে তার হাত আছে। তিতলির মাও ভয়ে কাঁপছে স্বামীর মৃত্যুতে তার হাত আছে। মা মেয়ের মধ্যে বিস্তর দূরত্ব ছিল, এই দূরত্ব এখন নাই। দুজন এক হয়ে পরামর্শ করছে কিভাবে খুনের মামলা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
অণূগল্পটি পড়লাম প্রিয় কবি। মুগ্ধপাঠ।