এক আড্ডায় গেছি বন্ধুর সাথে, সব অপরিচিত মুখ; কারো সাথে দেখা সাক্ষাত হয়েছে বলে মনে হল না। বন্ধু আমাকে কবি বলে পরিচয় দিল। কবি বলার সাথে সাথে সমীহ বেড়ে গেল। ভিআইপি খাতিরে আড্ডার মধ্যমণি করে সবচেয়ে আরামদায়ক চেয়ারে বসানো হল। আড্ডা আড্ডার মত চলতে থাকল। চুটকি, গসিপ, রঙ-তামাশা চলছে সমানতালে। আমি খুব উপভোগ করছি। কিন্তু কবি হিসাবে যেভাবে গুরুত্ব দিয়ে বসানো হল সেভাবে গুরুত্ব দিয়ে আমার কাছে কিছু শুনতে চাওয়া হল না। কিছুটা মন খারাপ, আমার মুখের দিয়ে চেয়ে হয়তো কারো দয়া হল। হঠাৎ একজন সবাইকে থামিয়ে বলল এবার কবি সাহেব বলুন ‘তার কাছ থেকে বাংলা কবিতার গতি প্রকৃতি সম্পর্কে জানি’। আমার বন্ধু বলতে চেয়েছিল বাদ দেন; অন্য কোনদিন বলবে। কিন্তু সবাই অনুরোধ করলে আমি বললাম এখন পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যে কবিতা পদবাচ্য নামে যা হয়েছে শেষ পর্যন্ত কবিতা হয়ে উঠতে পারেনি। কবিতাকে নতুন করে লিখতে হবে, নতুন সময় এসে গেছে, নতুন কবি এসে গেছে, নতুন কবিতা এসে গেছে। বলে নিজের পকেট থেকে সদ্য লেখা কবিতা পড়ে শোনাতে শুরু করলাম…
আমার কবিতা শুনে আড্ডার সবাই একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে থাকল। আড্ডার যে উত্তেজনা ছিল নিমিষেই চুপসে গেল। সবার মুখ হয়ে গেল পেঁচার মতন। তখন পিছনের চেয়ারে বসা একজন হাত তুলে আমাকে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে বলল ‘ভাইজানের কী গ্যাস হয়েছে? লেখা থেকে বদ গন্ধ বেরুচ্ছে; ঘরে গিয়ে বাথরুম সেরে এন্টাসিড খান’। আমার বন্ধু তড়িঘড়ি করে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে এলো। আমি বললাম ‘এরা এমন করল কেন?’ বন্ধু বলল ‘এরা সাহিত্য সমঝদার নয় তোর কবিতা বুঝতে পারেনি, মন খারাপ করিস না…’
.
#সত্য_ঘটনার_গল্পরূপ
সুন্দর প্রকাশ।