অণুগল্পগুচ্ছ
___________
★
গ ল আর প – তিন ভাই একদিন জীবনবোধের সন্ধানে পথের শেষে এসে পৌঁছায়। সামনে নদী। বড় ভাই গ মেজ ভাই প কে সাঁতার শিখিয়েছিলো তাদের বাবার জীবদ্দশায়-ই। কিন্তু ল জানতো না। পানিকে ভীষণ ভয় ছিলো ওর।
শেষে গ নেতৃত্ব দেয়। ল কে প পিঠে নিয়ে তিনভাই ওপারে আসে। জীবন নামের এক্কা গাড়ি ওপারে বিষম বিষন্নতায় ধুঁকছিলো। কোনো বোধ ছিলো না। তিনভাই জীবনের এক্কা গাড়িতে আরোহণ করে।
গাড়িতে ছিলো হারিয়ে যাওয়া সেই প্যান্ডোরার বাক্স। গ ল আর প প্যান্ডোরার বাক্সকে সাথে নিয়ে পথহীন পথে জীবনের এক্কা গাড়িতে পথ তৈরী করে চলে। ধীরে ধীরে জীবনের গাড়ি পথে পথে চলে.. ক্রমশ: বোধ লাভ করে। ওদের ফেলে আসা পথে ছোট ছোট প্ল্যাটফরম তৈরী হয়.. ছোট গাড়ি -মাঝারি- বড়- ধারাবাহিক এভাবে ধীরে ধীরে সমগ্র জীবন। বোধের পরতে পরতে গল্প গলপ আর গল্পে ভরে যেতে থাকে। জীবনের বিস্তার ঘটে.. তার বোধোদয় ঘটে। জীবনবোধকে উপলব্ধি করে তিনভাই ও খুশী হয়।
আমি ওদের ফেলে আশা ছোট্ট একটি প্ল্যাটফর্মের একজন ছোট স্টেশনমাস্টার। ওদের ক্লোন অতি ক্ষুদ্র এক প্যান্ডোরার বাক্স থেকে, আশায় জড়ানো সুখ-দু:খের অণুমুহূর্তকে সাথে নিয়ে ক্ষুদ্র এক ভাবনার বাতিঘর!
#গল্পের_গল্প
★★
পঞ্চম দিনের মতো চেয়ারম্যানের সদর দরোজায় দাঁড়িয়ে থেকে অপেক্ষার প্রহর গোনে বৃদ্ধ কফিল, ঠায় ঘন্টাখানিক দাঁড়িয়ে থাকে তবুও ক্ষমতাধর মানুষটির সময় হয় না বের হবার। বয়স্ক ভাতা পাচ্ছে না এই পঁয়ষট্টি উর্ধ বৃদ্ধটি তাই এই ইচ্ছেকৃত অবহেলা সয়েও, হেলায় অবহেলায় সয়ে যায় কষ্টকর ক্ষণগুলি… দিন দিন প্রতিদিন।
আগুন…বারুদ… আর্তনাদ…রক্ত…বিচ্ছেদ …অশ্রু … হাহাকার… ক্ষোভ … ঘৃণা … আক্রোশ … জেদ … প্রত্যয় … প্রতিজ্ঞা … যুদ্ধ … বিজয়… সৃষ্টির প্রেরণা … সবকিছু মিলেমিশে এই বৃদ্ধ সার্টিফিকেটহীন মুক্তিযোদ্ধা, তাঁর হৃদয়ে বাংলাদেশ নিয়ে অপেক্ষার মুহুর্তগুলিতে ভেবে ভেবে উদাস হয়, ‘এই জন্যই কি যুদ্ধ করেছিলাম…’ লাখো শহীদের আত্মারাও দেখে আর তাদের নির্দিষ্ট জায়গায় বসে ভাবে, ‘এই জন্যই কি…?’
#এই_জন্যই_কি?
★★★
‘ঈদের দিন তোমার মেয়েকে নিয়ে সারাদিন আমার বাসায় বেড়াও’…হঠাৎ তরকারি কুটা থামিয়ে দিয়ে ফাতুর মা বাড়িওয়ালির দিকে তাকালে তিনি আবার বলেন- ‘বলছিলাম ঈদের দিনে তোমার বাসায় রান্না-বান্নার আর আয়োজন করো না, মেয়েকে নিয়ে সকালে এখানে চলে এসো।’
কিছুই না বলে চুপ থাকে ফাতুর মা এবং কল্পনায় ওর ভেসে উঠে ঈদের একটি দিনে সে এবং তার মেয়ে ফাতু দিনভর এই বাসায় কোরবানির গোশত নিয়ে বাড়িওয়ালির ফরমাশ মত কাজ করে যাচ্ছে।
বাহ! কি সুন্দর বেড়ানোর দাওয়াত… গরীবের ভিতরে ওরা আরো গরীব বলেই নিজেদের একান্ত একটি দিন ও যেন ওদের থাকতে নেই.. তাইতো বাড়িওয়ালির এই আগাম দাওয়াত!
#আগাম_দাওয়াত
★★★★
তৃতীয়বারের মত পাত্রপক্ষ এসে লায়লাকে যখন নাকচ করে চলে গেল, কাছের আত্মীয়স্বজন আর দূরের পড়শিদের অদৃশ্য হুলের সাথে সাথে এলাকার লোলুপ কিছু চোখের লালা ঝরানো ধারালো ফলায় রক্তাক্ত হয়ে সে প্রসূনদের বুড়ো আমগাছটির নিচে এসে দাঁড়ায়।
কালো মেয়ের আলো ঝরানো হাসির ঝলকে গাছের পাতায় পাতায় আন্দোলনের ঢেউ জাগে, একটু একটু ছুঁয়ে যায় লায়লার হৃদয়.. নারীর রং এবং দেহ কে কেন্দ্র করে বেঁচে থাকা এই পুরুষশাসিত সমাজের বর্ণিল মানুষগুলোর প্রতি এক তীব্র করুণা অনুভব করে সে।
এক কালো নারীর বুকের গভীর থেকে বের হয়ে আসা উষ্ণ প্রশ্বাসে এই শীতের সকালে গাছের পাতারা আরো উষ্ণতায় বুঁদ হয়.. কালো মেয়ের দ্বন্দ্ব ঘুচাতে এই জীবনে বুঝি আর কেউ এলো না.. ঘুণেধরা সমাজের দোদুল্যমান শেকড়ের গভীর থেকে জীবনবোধের পলেস্তারা সেই উষ্ণতায় ক্ষয়ে ক্ষয়ে পড়ে… খোকলা বানায়.. ধীরে ধীরে।।
#দীপ_জ্বেলে_যাও
★ ছবি: নেট থেকে নেয়া।
বাহ,
বেশ ভাল।
আপনার ভালো লাগার অনুভূতি জেনে আনন্দ পেলাম প্রিয় কবি।
মুগ্ধতার সাথে পড়লাম প্রিয় কথা শিল্পী মি. মামুন।
অনবদ্য ভাবে উপস্থাপনে আপনার জুড়ি খুব কম দেখা যায়। অল দ্য বেস্ট।
আপনার অণুপ্রেরণা সবসময়-ই আমাকে লেখতে অনেক সাহায্য করে ভাইয়া।
অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।
ভালো থাকুন সবসময়।
ধন্যবাদ।
স্বাগত আপনাকে।
বেশ অনুপ্রেরণা পাচ্ছি দাদা
জেনে অনেক ভালো লাগলো লিটন ভাই।
ভালো থাকুন।
* বেশ ভালো লাগলো গল্পগুলো…
ভালো থাকুন মামুন ভাই।
ধন্যবাদ আপনাকে প্রিয় ভাই।
আপনার ভালোলাগা আমার লেখার প্রেরণা জানবেন।
আপনিও ভালো থাকুন সবসময়।
চমৎকার হয়েছে মিতা! গল্পগুচ্ছ যেন প্রতিবাদী সুরে বেজে উঠছে বারবার…
অনেক ভালো লাগা এবং ভালবাসা রইলো।
ভালোলাগার সুন্দর অনুভূতি রেখে গেলেন মিতা। অনেক ভালো লাগলো।
ভালো থাকুন সবসময়।
অনেক ভালো লাগা এবং শ্রদ্ধা রইল….
ধন্যবাদ প্রিয় ভাই। ভালোবাসা আপনার জন্য নিরন্তর।
ভিন্ন ধাচের উপস্থাপন, বেশ!
ধন্যবাদ প্রিয় খালিদ ভাই। ভালো থাকবেন।
ভালো হয়েছে । কিন্তু সম্ভবত আরো ভালো এন্ডিং হতে পারতো গল্পগুলোর ।
যদিও আমি খুব বুঝি না ।তবু মনে হলো ।
ভালো থাকবেন । শুভকামনা জানবেন ।