দীপঙ্কর মল্লিক এর সকল পোস্ট

আমিও প্রেমিক হতে চাই

আমি চাই,
একটা বিকেল- দোতলার বেলকুনি- মাঝের গোলটেবিলে ধোঁয়া ওঠা দুটো কফির কাপ- মুখোমুখি দুটো চেয়ার- দুটি মানুষ- কিছুটা সময়- অনেকখানি সাহস…

আমি চাই,
একটা সন্ধ্যা- বেলিফুলের সুবাস জড়ানো, পশ্চিমের কমলা রঙের আকাশে চেয়ে থাকা মুহূর্ত- ঘরে ফেরা পাখিদের মতো একটা আশ্রয়- ল্যাম্পপোস্টের মতো দাড়িয়ে থাকা অপেক্ষারত একটা মানুষ….

আমি চাই,
একটা রাত- একটা অদ্ভুত রাত- অদৃশ্য ভালোবাসার হাত ধরে অচেনা স্পর্শের স্বাধ…
আমিও প্রেমিক হতে চাই.. প্রেমিক হতে চাই.. প্রেমিক হতে চাই…

সাদামাটা প্রেমের গল্প

মনে আছে, পড়ন্ত বিকেলে, চুপিসারে ক্যামেরা বন্দী করেছিলাম তোমাকে….!
বলেছিলাম, সাদামাটা সাজে তুমি সত্যিই সুন্দর.. আর জানোই তো- আমার কাছে সাদামাটা মানে “দু’মুঠো ভাত, আলুভর্তা আর দুটো কাঁচামরিচ”…

তুমি বলেছিলে, এ আবার কেমন উপমা…!

আমি বলেছিলাম, লোক দেখানো অপূর্ব কথা আর মেয়ে পটানো ছন্দগাথা একঘেয়ে বড্ড..
আমার তো একটাই তুমি, তুমি বদলালেই বদলাবে তোমার উপমা..
সেই তুমিটাই যখন একই আছো, তখন আমার দেওয়া সাদামাটা এই উপমার সুখের ব্যাখ্যা টাও হয়তো বুঝতে পারছো..

মনে আছে, “ভাল্লাগেনা’ ব্যামোতে আক্রান্ত হয়ে একদিন তোমার হাতটা শক্ত করে ধরেছিলাম…!
বলেছিলাম, চলো না পালিয়ে যাই.. এই সমাজ আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকুক হাভাতের মতো, কুৎসা রটিয়ে বেড়াক দিক্বিদিক..

তোমার সেদিন মন খারাপ ছিলো, লজ্জা ভয়ে চুপ করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলে অসহায়ের মতো..

আর আমি…! উন্মাদ পাগলের মতো অট্টহাসি হেসে তোমাকে বলেছিলাম,
আর কবে, আর কতদিন পরে তোমার ডাকে ভাঙ্গবে আমার সকালের ঘুম….!!!
আর কতদিন পর, তোমার এই লজ্জাবতীর লজ্জা আর মিথ্যে ভয়টুকু কেবল আমার হবে…!!!

মনে পড়ে, সেদিনের সেই আমিটাকে…! যে আমিটাই আজকের আমি.. অথচ তুমি…!

ইচ্ছে করছে

ইচ্ছে করছে, পুরো শহরটাকে আধারের কাছে জিম্মি করে তোকে দেখি..
প্রেমের জলপুকুর থেকে তুলে আনি, পদ্মফুলের নির্যাস..
আর তোকে দিয়ে বলি, অমাবস্যার এই রাতে ছাঁদে জ্যোৎস্না ফুটানোর ফর্মুলা আমার জানা নেই….
তবে রক্তের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সংক্রামিত করতে পারি বিশুদ্ধ প্রেম..
ঠিক তোর মতো, চুপচাপ- শান্ত- কমকথা বলা একটা প্রেম.. বুকের বাপাশ থেকে ধুকফুক আওয়াজের মতো আমিও আমার বুকে মিলিয়ে মিশিয়ে নিতে পারি তোকে…
ইচ্ছে করছে, খুব ইচ্ছে করছে…
তোকে একটু ছুয়ে দেখতে, কলঙ্ক…! না না কলঙ্কিত না করে যে স্পর্শ করা যায়.. যে অদৃশ্য স্পর্শে তোকে বুঝতে পারা যায়, ঠিক তেমনই…
হয়তো, এটাই ভালোবাসা..
তাই বলে কি সব কিছু খোলামেলা বলে দিতে হয়…!
বুঝেও তো নিবি…!

ইচ্ছে করছে,
পুরো শহরটাকে আধারের কাছে জিম্মি করে তোকে দেখি..
শুধু তোকে, স্রেফ তোকেই…

মনকথা ১

ক্ষুদ্র আমার এই বিশাল পৃথিবী,
তাইতো পরের মুখে খুঁজি প্রিয় মানুষের মুখ..

টোল পড়া গালে, ঠোঁটের কোণঘেঁষা একটা তিল, কপালের একপাশে একগোছা চুল ঝুলে আছে ঠিক যেন আত্মহত্যার প্রবনতা নিয়ে…

জীবন ১

যে রোদ্দুর লুকিয়ে পড়লো তোমার শাড়ির আঁচলে,
সে কে জানো…..!
সে আমার ভবঘুরে জীবনের ছায়ামানবটাকে খেয়ে ফেলা এক ক্ষুধার্ত রাক্ষসী…
তাই বুঝি,এই মালাবদল….! শুভদৃষ্টি….! বাসররাত্রি যাপনের আড়ম্বর প্রিয়….!
নাকি তুমিও….! তুমিও সেই সূর্যের মতো আমার থেকে আদায় করবে খাজনা….!
এতোদিন ভালোবাসা দিয়ে,একে একে নিয়ে নিবে আমার অবাধ্য জীবন….! আমার দুরন্তপনা….! আমার ছেলেমানুষী….!
নাকি অন্য সব বিবাহিত সৈনিকদের মতো আমাকেও বানাবে তোমার ক্রীতদাস….!
যদি এমনই হয়,তবে আমিও গায়ে জড়াবো ঘরছাড়া সন্ন্যাসীর স্ট্যাটাস….
তারপর………………
তারপর হাজার কবিতা থেকে তুলে নিবো হাহাকার, পথের ধুলোয় কাটিয়ে দিবো বাকি জীবন…..

একটাই তুমির জন্য

শ্রতি,
গল্পটা আমার জীবনের,সেখানে একটা চরিত্র সে তুমিই….
যদিও তুমি হলে,অন্য সব প্রেমিকের মনে বেড়ে ওঠা হাজার তুমি থেকে আলাদা…
কেননা,আমার গল্পে আমি তোমার প্রেমিক নই বা তুমি আমার প্রেমিকা নও…
তাহলে গল্পের এই তুমিটা আসলে কে….!
তুমি আসলে আমার ভালোলাগা একটা মুখ, বাকিটুকু কল্পনা… কথায় আছে তো, মানুষ বাঁচে কল্পনায়। ঠিক তেমনই আমি, আমি বেঁচে আছি হাজারটা না বলা কথা নিয়ে,তুমি নামক এক চরিত্র নিয়ে…
ভালো আছি, ঠোটের কোনে এক চিলতে মিষ্টি হাসি নিয়ে- মিথ্যে ভালো থাকার অভিনয়ে…..

খোলা চিঠি ২

প্রিয়তমা;
এবার তুমি ইচ্ছে মৃত্যুর অভিশাপ দাও,
তারপর আমি তোমার কৃষ্ণচুড়ার বনে কোকিল হয়ে আসবো….
নয়তো কালো মেঘ হবো,বৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে যাবো তোমার মরুভূমি মন….
হয়তো,সে মনে দিতে পারবো সবুজ.. নয়তো স্যাঁতসেঁতে মনে পিচ্ছিল খেয়ে ফিরে যেতে পারবো তুমিহীন আমার পুরানো অতীতে…..

খোলা চিঠি ১

নীলান্তি;
ঘড়িতে যখন ৫ টার কাটা ছুই ছুই, তখন তুমি বেলকুনিতে এসে দাড়িও…
আমি তোমায় পড়ন্ত বিকেলের সোনালী আলোয় সাজাবো, মেহেদী রাঙা দুটি হাতে তুলে দিয়ে যাবো আমার কবিতার খাতা….
যেখানে একদিন তুমি খুজে নিও আরেক বিশ্ব,আর তোমার নিরবতার কষ্ট, সেদিন হয়তো তুমিও বুঝতে পারবে আমাকে…….
পারবে তো খুজে নিতে…..! দূরে, হাজার লোকের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া এক অদ্ভুত মানুষটাকে……!

নাটোরের বনলতা সেন

নাটোরের বনলতা সেন;
কোথায় তোমার কালো কেশের বাহার….!
কোথায় তোমার কাজল কালো চোখ…!
কোথায় তোমার সেই রূপের জৌলুস….!
আজ তুমি বড্ড বেশিই রঙিন, আধুনিকতার ছোঁয়ায় তোমার চুল হয়েছে ছোট-চোখের কালো আইবল লেন্সের ব্যবহারে হয়েছে নীল, রূপের সেই জৌলুস নামিদামী ব্যান্ডের আদলে পড়েছে ঢাকা…..
তুমি কি সেই নাটোরের বনলতা সেন….!
নাকি আধুনিকা হতে হতে তুমি পাল্টে ফেলেছো নিজেকেই, নিজের নাম, নিজের সবকিছু….!

নাটোরের বনলতা সেন….!
তুমি ফিরে এসো কবির কবিতায়, সেই ছন্দে, সেই উপমায়…
নয়তো তুমিও পেয়ে যাবে ছলনার খেতাব, আধুনিক প্রতারণায়….

হাবিজাবি চিন্তা ও আমি

আমি হারিয়ে যেতে চাই পথ আর পদচারণায় মুখর যান্ত্রিক নগরের চোরা গলিতে, নয়তো ভাবুক চোখে দেখতে চাই খোলা আকাশ মুক্ত পাখি আর তোমাদের মতো স্বার্থপর সুন্দরী ললনাদের…..
তারপর একদিন ঘরে ফিরে,ক্লান্ত শরীরে কাঁপাকাঁপা হাতে কলম তুলে ডায়েরীর পাতা খুলে লিখে রাখবো নামহীন পতিতাদের বিবরন। নয়তো কাটাকুটির খেলায় বাদ দিবো ১৬ কলা পূর্ণ কিছু স্বার্থান্ধ প্রেমিকাদের নাম…..
এরপর ঘুম ঘুম চোখে হাতে তুলে নিবো এ্যালকোহলের গ্লাস, জলন্ত সিগারেটের ধুকধুকে আগুনে রাঙিয়ে নিবো আমার নির্বাসিত জীবনটাকে…
একদিনের জন্য, শুধু একবারের জন্য মানিব্যাগে জমিয়ে রাখা প্রাক্তন প্রেমিকার চিঠি খানা পাশে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়বো… সেই ঘুম, হাজার বছরের পুরানো ঘুমের মতোই সরিয়ে দিবে আমাকে… হাজার মানুষের চোখে করে রেখে যাবে উন্মাদ অদ্ভুত…..

বি দ্রঃ → মাদককে না বলুন।
→ বিরহ বা প্রেম, সবই বাস্তবতার সাথে তুলনা করুন।
→ বাস্তবতায় আসল।

সুবোধ সূর্যটাকে নিয়ে চল

কাটাতারের ব্যারিকেড ভেঙ্গে
সুবোধ,তুই নিয়ে যেতে পারলি না রক্তিম সূর্যটাকে!
হায়নার হিংস্র থাবা আজ তাই,
গেথে গেছে বাংলার এই মানচিত্রে।
আজ সবুজ ঝাচ্ছে ঝরে-
বির্বণ বাংলার বুকে রক্ত হচ্ছে ফ্যাকাশে,
ঘোটালে ভবিষৎ নিয়ে দেশ উড়ছে মহাকাশে।
ফিরলে এবার দেখিস তুই,
সুবোধহীন এই বাংলা পড়ে আছে ইতিহাসের ডাস্টবিনে।
কাটাতারের ব্যারিকেড ভেঙ্গে
সুবোধ,তুই নিয়ে যেতে পারলি না রক্তিম সূর্যটাকে!!
ক্রসফারায়ের নাটকে সন্তান হারাচ্ছে পিতাকে,
করুন সেই আর্তনাদ-কেউ কি শুনেছে কান পেতে..!
সুবোধ তুই ফিরে আয় এই বাংলার মাটিতে,
সূর্যটাকে স্বাধীন করে তুলে রাখ তুই- ঐ দূর আকাশে ।।

স্মৃতির পিছুটান-১

প্রিয় “ম”, কেমন আছো..!
অনেক দিন বাদেই তোমায় মনে পড়লো,
কত সূর্য ওঠা দিন গেল,কত নির্ঘুম রাত গেল-
হিসেব করলে বছর খানেক হবে হয়তো..।।

আজ অনেকদিন বাদেই, বিশেষ কোনো প্রয়োজনে নয়-
অনাকাঙ্খিত কোনো অতিথির প্রশ্নোত্তরে তোমার জন্ম হলো,
গল্পে গল্পেই পরিচয়-ঠিক তোমার আমার মতো..।।
আজ শুধু তুমি নও, মনে পড়লো নীল রঙে টিশার্টে কাটানো-
শীতার্ত কপোত কপোতীর কয়েকটা অদ্ভুত শীতের সকাল।

মনে পড়লো-রংতুলি পুরানো গান পুরানো অভ্যাস সিগারেট,
বরাবরই অপছন্দ জানি-তাইতো এখনো-
অপেশাদারী সিগারেট টানার অভ্যাসটা রেখেই দিয়েছি…।।

প্রিয় “ম”, কেমন আছো..!
মনে পড়ে কি কিছু..!
ভালো থেকো বলেছিলাম,তবুও স্মৃতিগুলো ছাড়ে নি পিছু…।।

তোমার আজ মন খারাপ বালিকা-২

তোমার আজ মন খারাপ বালিকা..!
সেদিনের সেই ছেলেটি আজ বড্ড বেশিই স্বার্থপর তাই না..!
খুব জানতে ইচ্ছে করে, তুমি এখন কি ভাবো তাকে নিয়ে..!
আমি আজ অবাক হই-
একদিন না এই ছেলেটাই তোমার জন্য কেঁদেছিলো..!
খুব ভোরের ট্রেন ধরে এসেছিলো তোমায় দেখবে বলে…!
শুধুমাত্র এক পলক দেখার জন্য হন্যে হয়ে ছুটেছিলো ব্যস্ত রাস্তায়…!
এই না সেই ছেলেটা, যাকে তুমি হ্যা তুমিই বলেছিলে-
বড্ড বেশিই পাগল তুমি-ভালবাসি তোমায়..।।
তোমার আজ মন খারাপ বালিকা…!
আকাশ দেখাতে তোমার বড্ড বেশি উদাসীনতা জানি,
আকাশ না হয় নাইবা দেখলে-
বরং তুমি সেই ছেলেটাকে অভিশাপ দাও-
যে অভিশাপে চোখের ভেতর অন্ধকার নেমে যাবে-
যে অভিশাপে বুকের বা পাশ দিয়ে চলে যাবে বুলেটের মতো কিছু অনুভূতি-
যে অভিশাপে সব হারিয়ে ছেলেটি হবে শূন্য-
দ্বারে দ্বারে ঘুরে চাইবে দুমুঠো অন্ন।।
এমন কিছু চাও বালিকা-
যেন ছেলেটা হয়ে যায় ভবঘুরে-
দেবদাস অথবা ভগ্ন রাজবাড়ীর মতো ভুতুড়ে-
অন্যথায় পোস্টারে দেওয়াল লিখনে পেপারের পাতায়-
একটাই কথা “বিচার চাই, এই প্রতাররকের বিচার চাই”
তোমার আজ মন খারাপ বালিকা…!
খুব জানতে ইচ্ছে করে, কারনটা কে..?
কে…? কে…? কে…….?

তোমার আজ মন খারাপ বালিকা-১

তোমার আজ মন খারাপ বালিকা..!
খুব জানতে ইচ্ছে করে, তোমার মন খারাপের কারনটা কে…?
ইচ্ছে করে অনেক কিছু জেনে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলার-
এটাই ভাগ্যে ছিলো, তুমি মেনে নাও..
তোমার আজ মন খারাপ বালিকা..!
তাহলে আমার মতো চলে যাও-
জানালার কাছে, তারপর আকাশটাকে আলিঙ্গন করতে হাত বাড়াও-
সমস্ত কিছু ভুলে পূর্বে ওঠা সাহসী সূর্যের তেজহীন আলোটাকে আপন করে নাও-
পড়ন্ত কোনো মায়াবী বিকেলে..।।

যে আলো ছুয়ে যাবে আমার দেখতে না পাওয়া সব অন্ধকার গুলোকে-
যে আলো তাড়িয়ে দিবে তোমার অজান্তে জন্ম নেওয়া কষ্টজমা দুঃখগুলোকে-
যে আলো ম্লান মুখে এনে দিবে অনিচ্ছা সত্বেও অদ্ভুত এক হাসি-
সে আলোকে আপন করে নাও বালিকা…।।

তারপর, তারপর তুমি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভুলে যেও আমাকে-
ভুলে যেও আমার সাথে কাটানো একেকটি দিনের কথা-
অদ্ভুত এক হাসি দিয়ে তোমার বুকের ভেতরে জন্ম দাও-
আমি হীন এক নতুন জগতের…।।

তোমার আজ মন খারাপ বালিকা…!
খুব জানতে ইচ্ছে করে,খুব জানতে ইচ্ছে করে-
খুব জানতে ইচ্ছে করে……….