ধীরে ধীরে আমরা আধুনিক হচ্ছি, শিক্ষিত হচ্ছি কিন্তু মানুষ হওয়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছি, আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে আমি মনে করি এর পেছনে পারিবারিক শিক্ষার অভাবই মূল কারণ সাথে সামাজিকতা! যা দেখে আমরা শিখছি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় সনদধারী হওয়া সহজ কিন্তু মানুষ হতে গেলে পারিবারিক শিক্ষার বিকল্প কিছু নেই। আমার মতে ‘পৃথিবীর সব চেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে পরিবার, আর সব চেয়ে বড় শিক্ষক হচ্ছে মা’।আগে পরিবারের সবাই এক সাথে বসবাস করতো এই থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারতাম, এখন পরিবার ছোট থেকে ছোট হচ্ছে আর আমাদের বাচ্চাদের পৃথিবীটাও আমরা ছোট করে দিচ্ছি। একটা সীমানার মাঝে ওদের বন্দি করে রাখছি, রুটিন মাফিক একটা যান্ত্রিক জীবন উপহার দিচ্ছি।
শুধু মাত্র পারিবারিক শিক্ষায় ক্যারিয়ার গড়া যাবে না সাথে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাটাও খুব জরুরী, কিন্তু বর্তমানে যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দেয়া হয় তাতে আমাদের শিক্ষার হারই বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু শিক্ষিত মানুষের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে না। বাচ্চাকে ভালো স্কুলে ভর্তি করাতে হবে, শুধু পাশ করতে হবে, ক্লাশে রুল নাম্বার এক হতে হবে, এই চিন্তাই থাকে পিতা-মাতা বা পরিবারের সবার মাথায়। যখন ছাত্র এই সব করতে না পারে তখন চাপ বৃদ্ধি করা হয়, কয়েকটা কোচিং এর ব্যবস্থা করা হয় আর স্কুল যাওয়ার আগে কোচিং স্কুল ফেরত আসার পর অন্য কোচিং আর সন্ধ্যার পর আরেক কোচিং বাচ্চার খেলাধুলার সময়টা কোচিং এর মাঝে হারিয়ে যাচ্ছে ইদানিং মোবাইল, কম্পিউটার, ট্যাব, আইপ্যাড এই গুলোর শিক্ষার উপকরণ বলে চালিয়ে দিচ্ছি কিন্তু একবারও কি খোঁজ নিচ্ছি আমাদের বাচ্চারা এই সব থেকে কি শিক্ষা নিচ্ছে । আর সাথে ৩ থেক ৫ কেজি ওজনের ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে দিচ্ছে, ব্যাগের বোজা বইতে বইতে বাচ্চাটা সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছেনা। এতো রকমের চাপ অনেক বাচ্চাই বহন করতে পারেনা এবং এই থেকে মানুষিক ভাবে ভেঙ্গে পরছে, পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ করলে কেউ কেউ আত্মহননের পথ বেছে নেয়।
আমাদের আগামী প্রজন্মকে “প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষাটার গুরুত্ব দিতে হবে” তাবেই উত্তম প্রজন্ম সৃষ্টি হবে যারা আগামী দিনে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তা না হলে বর্তমানে যে দুর্নীতি পরায়ন “জনগোষ্ঠি!” (যার পরিমান সামান্য যারা আমাদের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন) নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি আঁধারের দিকে সেখান থেকে বাহির হওয়া যাবে না।
আমি সৌদিতে কম্পিউটার ব্যবসায় জড়িত, কম্পিউটার মেন্টেনেস এর কাজ করে থাকি গত কাল দোকানে অনেক কাষ্টমার আসে কম্পিউটার মেন্টেনেস করার জন্য দিয়ে যায় আবার অনেকে উনাদের কম্পিউটার নিয়ে চলে যায় কিন্তু কে যেন হাতের ছোট একটা ব্যাগ ভুলে রেখে যায়, প্রচুর ব্যস্তছিলাম তাই আধা ঘন্টা পর তা আমার নজরে আসে ব্যাগটি আসলে কার তা সঠিক ভাবে নিশ্চত হতে পারতেছিনা, ব্যাগ খুলে দেখতে চেষ্টা করলাম কোন আইডি পেলে তো ছবি দেখে চিনতে পারবো এবং তাই হলো সৌদি সামরিক বাহিনীর এক সদস্যের ব্যাগ যিনি মাগরিবের পরে দোকানে এসেছিল, তার ব্যাগে ৪ হাজার রিয়ালের মতো যা বাংলাদেশী টাকায় ৮০ হাজারের উপরে,সাথে আইফোন ৭, একটি গাড়ীর চাবি, এবং অন্যন জিনিসপত্র, কম্পিউটার নেয়ার সময় ম্যামু করেছিল, সেখান থেকে ২/৩ জনকে ফোন করে তার পর নিশ্চিত হয়ে ব্যাগের আসল মালিককে পেয়েছি, এবং দোকার বন্ধ করার আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করে উনার ব্যাগ উনাকে ফেরত দিয়েছি, এই শিক্ষাটা আমি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নয় আমার পরিবার থেকে পেয়েছি।