হাসনাহেনা রানু এর সকল পোস্ট

এক কাপ চা

20201

এক কাপ চায়ের নেশায়
কবিতার মঞ্চে যোগ দিলাম
সাথে এক যুবক
সেখানে কবিতা পড়ি
অন্যদের পড়াও শুনি,
ভালোলাগে সবই

ইদানিং জীবন গুলো হয়ে উঠেছে
ব্যস্ত সময়ের মতো,
জীবন এবং সময় আলাদা দুটি সত্ত্বায় গাঁথা
জীবন থেমে থাকে না কারো জন্য
সময় ও তাই !

আজ কাল মানুষ গুলো বড় বেশি স্বার্থপর হয়ে গেছে
যেন কেউ কারো নয়।

সামনে একটা মিছিল
মিছিলে মরা নদীর গতি
নিত্য দিনের মতো
হঠাৎ করে ময়লাপোতা চৌরাস্তার মোড়ে
জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক,
যুবক ভড়কিয়ে যায়
যুবতীকে গুলি করে
মুখোশ পরা ট্যাঙ্কের কালো হাত ধারী
যুবতীর লাশ পড়ে যায় মাটিতে
চিৎকার করে ওঠে যুবক!

যুবকের একবার ফিরে যেতে ইচ্ছে হলো
যুবতীর লাশ ফেলে কবিতার মঞ্চে
এক কাপ চায়ের নেশায়
যুবতীর লাশ ফেলে যুবক যেতে পারে না,
বিবেক তার বাঁধা দেয়
দুর্ভেদ্য প্রাচীর তুলে,
এক কাপ চায়ের জন্য এভাবে আত্মদান ?
মানুষ হয়ে এমনটি সে করতে পারে না,
তবু
চা খাওয়ার নেশাটা তার কাটে না।

অস্তরঙে আঁকা স্বপ্ন

20181

কৃষ্ণচূড়া তলায় কে তুমি? কথা বলছ না কেন?
ওহ্ সন্ধ্যা রাতের শুকতারা …
দেখো শুকতারা তোমার পাশে চাঁদের বুকে মেঘ
কেমন নরম চুলের গোছা ছড়িয়েছে
এক আকাশে,
ওই মেঘ শ্রাবণ বিকেলে বৃষ্টি হয়ে ঝরবে কথা দিয়েছে।

অচেনা পথের ভিড়ে এই কে তুমি? চুপ করে আছ কেন?
ওহ্ সুখলতা …
কেমন আছ ?
আমি দু’চোখ ফেরালেই তুমি ছুঁয়ে দাও দৃষ্টি
আমার বুকের বাম পাশের বুনো পথের শেষে তোমার বসবাস,
অথচ ওই পথে আমার কখনোই পা রাখা হয়নি
যদি ভুলে কখনো রাখি
সেদিন সুখ বলে মনে হবে তোমাকে;

গভীর রাতে শুভ্র জ‍্যোৎস্না অরণ্যে কে তুমি ?
নিঃশব্দে চোখের জল ফেলছো কেন ?
ওহ্ গোলাপ বিনোদিনী মালবিকা ?
তুমি কেন নক্ষত্র’র মত একটি শব্দ
গোলাপ বিনোদিনী:
তোমার চোখের বৃষ্টির স্রোতে আমি ডুবে যাচ্ছি
ডুবে যাচ্ছি এক সমুদ্র জলে;

গোলাপ তুমি জানোনা
তোমার সৌন্দর্যে পৃথিবীর সব আলো জ্বলে ওঠে –
সেই তোমার এত দুঃখ ?
কতটা নিষ্প্রাণ তুমি…
তোমার দুঃখ কি এক শ্রাবণ মেঘ আকাশের চেয়েও ভারি ?
তোমার জন্য লেখা হয়েছে শোককথা
ওই মেঘ হার মেনেছে
গোলাপ তুমি এখন অনেক সুখী।

রোদ মুছে গেলে

index

এই রোদ মুছে গেলে দিনের মৃত্যু হবে নিশ্চিত
এটাই স্বাভাবিক ছিল,
প্রতিদিন সূর্যের চোখ গলে আকাশ থেকে নেমে আসে রোদ
এ রোদের ও মৃত্যু হয়:
আমি চাই না, চাই না কষ্ট পেতে
এই রোদ থাক,
দিন থাক সারাবেলা জুড়ে;
একমুঠো রোদ আমার হাত ছুঁয়ে হারিয়ে যায়
নিদ্রাহীন রাত্রি শিষ কেটে চলে যায়!
বাইরে লুট হচ্ছে ঝকঝকে সাদা, কমলা, সোনালী রোদ্দুর
ক্ষেত্র বিশেষে রোদ্দুর ও রং বদলায়
এটাই প্রকৃতির নিয়ম,
ইচ্ছে ঝিনুকে লুকিয়ে আছে একশো সমুদ্র:
নগ্ন বিকেল স্বপ্ন ভেঙে দু’চোখ মেলেছে
বেদনার বিবর্ণ রৌদ্দুরে পুড়েছে কালসিটে সন্ধ্যা;
মসৃণ পথ আগলে তবু দিন থাক
কালো রাজপথ ঢেকে যাক শোকার্ত শতাব্দীর বিষণ্ন রাতের আকাশের মত কবিতার শব্দাবলীতে!

একদিন সোনালী সকাল কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে শিউরে উঠেছিল,
পৃথিবী তখন শীতের কুয়াশামাখা বিকেলে নিদ্রা দেবীর কোলে অচেতন ছিল
আর দিনের বুকে ক্ষত শুকোবার রৌদ্দুর তখন লুট হচ্ছিল;
কেউ কোন কথা বলেনি সেদিন
মেঘাচ্ছন্ন আকাশ যেন মুখোশ পরে ছিল
প্রকাশ‍্যে দিন দুপুরে রোদ লুট হয়েছে কত:
সেই দিন মধ‍্য দুপূরে ক্ষতচিহ্ন বুকে নিয়ে কড়া রোদ্দুর একা একা ঘরে ফেরে,
রোদের রঙ অবিকল উজ্জ্বল নক্ষত্র’র মত কাঁচা হলুদ হয়েছে
আকাশ ক্ষয়ে গেছে ঠিকই;
দিনের কোথাও কোথাও আবার সূর্য উঠে
প্রতিদিন কাঁচা সোনা রঙ রোদ বুকে নিয়ে তবু পৃথিবী বাঁচে!

অ‍্যালুমিনিয়াম মন

gyuii

আকাশের বুকে নীলের আঁচড় কেটে কেটে কি করছ তুমি?
কেন কবিতা আঁকার চেষ্টা করছি
মানে?
কবিতা আবার আঁকে নাকি কেউ ?
কবিতা লিখতে হয়
বড় জটিল রহস্য
ভাব আসে
ভাবনা আসে,
কবিতা কেন আসে না?
কবিতা আমার কামনা বাসনা
এই দ্যাখো,
কবিতার জন্য আমার কত কি আয়োজন
ডায়েরি, কলম, ছন্দ
অলংকার
গুচ্ছ গুচ্ছ শব্দ
দু’হাতে নীল সরিয়ে আকাশের বাতিঘর খুলেছি আমি,
এখন বন্ধ আকাশের দুয়ার খুলে
ভেতরে প্রবেশ করে দেখব কি আছে
গুচ্ছ গুচ্ছ শব্দমালা:
মেঘের বুকে রোদ শুয়ে আছে,
আলো- ছায়ার খেলা
দেখার মত
আলোর রোশনি ঘুরে ঘুরে নিচে নামছে,
এভাবেই আমি কবিতা আঁকতে চেয়েছি
আকাশ বুকে
মেঘের রঙে;
কত কি আয়োজন আমার!

অথচ তুমি থামিয়ে দিচ্ছ আমায়
ওই দেখো, কবিতা মেঘের আলতো চুলের হাত খোঁপায় আধ ফোঁটা বকুল মালা জড়িয়ে আছে
চড়া রঙ শাড়ি জড়ানো সুঠাম দেহে
রাতের মোহিনী চোখ
ও চোখে প্রেম আছে,
আকুতি আছে
সামনে অশান্ত এক সমুদ্র দূর্বার ঢেউ ভাঙছে
মানে তুমি কি বোঝাতে চেয়েছ ?
কেন বোঝ না ?
বলছি কোন কিছুর শেষ নেই
রূপান্তর আছে:
আমি একটু একটু জানি
সবটা জানি না
ভেবে বলো,
কি হবে ?
ওহ্! কবি
ভেবে কি হবে ?
একটু যখন ভাবনা
তখন কবিই হব বরং আমি
ওহ্! তোমার অ‍্যানুমিলিয়াম মন;
কখনো বুঝতে চাইবে না
আঁকি বুকি করে কখনো কবিতা লেখা যায় না,
গুচ্ছ গুচ্ছ শব্দে কবিতা লিখতে হয়
তোমাকে দিয়ে কিছুই হবে না
তুমি বরং কবি হওয়ার আশা বাদ দাও,
তোমার জন্য এ দূরাশা:
চলো আমরা প্রসঙ্গ চেঞ্জ করি
কি দেখছ ওমন করে ?
কেন তোমাকে ?
কেন, আমার আবার কি হল ?
একটা আস্ত নীলাকাশ তুমি:
একটা নীল আকাশ খসে খসে পড়ছে
আমার দু’চোখের পাতায়
তোমার তুলনা তুমি প্রাণ, নীল আকাশের!
আকাশের চাঁদ ও কলঙ্ক মাখে গায়ে
কলঙ্ক ছলে:
সুন্দর আর সৌন্দর্যে
কে তবে তুলনা হবে ?
চাঁদের চোখ বেয়ে জল গড়াচ্ছে
রূপালী পৃথিবীর পড়ন্ত বিকেলে
ঢেউ ভেঙে ভেঙে অচেনা সমুদ্রে,
ইশ্! তুমি কি সুন্দর
অপেক্ষারত পৃথিবীর বাইরে
বাইরে মিশ কালো অন্ধকার
নীচে সমুদ্র,
তির তির করে ঢেউ ভাঙছে বাতাসে
আকাশে অসহায় তারা
রাতের বন্ধু ধ্রুবতারা
সপ্তর্ষি মন্ডল,
উড়ে উড়ে আসছে ঝড়ো বাতাস
তুমি যেন আমার সমুদ্র দীক্ষা;
সদা চঞ্চল এই তুমি
কখনো হীরা পান্না চূন্নির মত সবুজ
কিম্বা নীলার মত নীল
ঠোঁটের বাঁকে ভেঙে পড়া শিশুর সরল হাসির মত:

লাল সূর্যটা এখন সমুদ্র বুকে,
মনে হচ্ছে সহস্র সহস্র গোলাপ হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে আসছে
আবার ফিরে ফিরে যাচ্ছে দূর অজানায়;
শঙ্খচিল ডানা মেলে উড়ে যাচ্ছে
সমুদ্রের বুক চিরে গভীর রাতের মধ্য আকাশে,
হয়তো এভাবেই একদিন কবিতারা ফিরে আসবে
অ‍্যালুমিনিয়াম পৃথিবীর স্বপ্ন নীড়ের কাছে।

বিপন্ন পৃথিবীর কান্না

ttyui

আজ পৃথিবীটা লাশ কাটা ঘর হয়ে গেছে
নর্তকীরা আর ঘোমটার তালে পা মেলাচ্ছে না
চারিদিকে ভয়ঙ্কর অসুখ,
ফসলের ক্ষেতে ধানের শীষে আর স্বপ্ন নেই
রৌদ্দুরে পুড়ে দগ্ধ হচ্ছে রাত
মানুষের চোখের জলে নুনের ঘ্রাণ,
সমুদ্র ঝড় মানুষের বুকে আছড়ে পড়ছে
প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে মানুষ
মানুষ সমুদ্রের মতোই
আহা! মানুষ বনাম সমুদ্র;

মাঝেমধ্যে চোখের পাতায় সোনালি বিকেল শিষ কেটে যায়
তখন খুব মনে পড়ে
ফেলে আসা দিনগুলো কত সুন্দর ছিল,
আজ মানুষ ড্রয়িং রুমে বসে
ভারতীয় টিভি সিরিয়াল দেখতে ভুলে গেছে
যদি সত্যি এমন হয়
তবে করোনা মানুষ কে একটা শিক্ষা দিতে পেরেছে।
আজ মানুষের মনে কি আর প্রেম আছে?

মৃত্যুর ধ্বংসস্তুপ কাঁধে নিয়ে জন্মের ঋণ শোধ করতে যেয়েও
ভয়ঙ্কর হিংস্রতার চোরা ফাঁদে পড়ছে কত স্বজন।
প্রতিটি মানুষই ক্লান্ত সৈনিক
আমরা সবাই নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করছি বেঁচে থাকার এ লড়াইয়ে
ভালবাসা এখানে গৌন হয়ে গেছে।

আজ মানুষ নিজের সঙ্গে নিজেই অভিনয় করেছ
কৃত্রিম সুখ আর কৃত্রিম ভালবাসার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে সবাই,
করোনা হানা দিয়েছে পৃথিবীতে
কবে যে জীবনের ভোরে মৃত্যুর নিসর্গ বয়ে আনবে
তবে কি মানুষের শত্রু এই করোনা?
সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে আবার এই পৃথিবীতে
সুন্দর ভোর ফিরে আসুক
এটাই প্রত্যাশা সবার।

একটা পাখিও নিখোঁজ হয়নি
একটা ফুল পাতা বৃক্ষ থেকে ঝরে পড়েনি,
আকাশ বিষণ্ন হয়নি এতটুকু
হে সুমহান সৃষ্টিকর্তা তুমি ক্ষমা করে দাও,
হে বিধাতা; তুমি দয়া করে
এই ভয়ঙ্কর মহামারী করোনার মৃত্যুকে থামিয়ে দাও
আবার পৃথিবীর বুকে জেগে উঠুক
আগামী দিনের জন্য সুস্থ সুন্দর
একটা প্রত্যাশার কাঙ্ক্ষিত সোনালি ভোর।

অরণ্যে গোলাপ ফোঁটার অভিলাষে

resize

তখনো সন্ধ্যার বাকি আছে
সব পাখি নীড়ে ফিরে গেছে
প্রকৃতির হলুদ চোখে বিষণ্ন জাপটে আছে,

স্তব্ধতার আকাশ জুড়ে শুধু মেঘ আর মেঘ
বিরহী গল্পের মত ভেসে গেছে,
ধীরে ধীরে গাঢ় অন্ধকারের পোশাক পরে রাত্রি নেমে এসেছে –
কথা হীন ক্লান্ত চোখ,
রাত্রির এক চোখে অশ্রু; অন‍্য চোখে পৃথিবী
আজ পৃথিবী বেশ সবুজ হয়েছে।
রাত্রের ঠোঁটে শীতের বিষণ্ন রোদ খেলা করে
নীরব কোলাহল, কচি কলাপাতায় মোড়ানো বিশুদ্ধ প্রকৃতি!

ফসলের মাঠে নিঃস্ব ক্ষেত শব্দহীন
একমুঠো শাদা দুঃখ
সবুজ মৃত্যুর মত:

বেদনার বিবর্ণ মাটিতে কষ্টার্ত রাত
জানালার ওপাশে গোলাপ ঘ্রাণ,
কাঙ্ক্ষিত পৃথিবীর শাদা ঠোঁটে স্বপ্ন’রা শিষ কেটে চলে গেছে
এলোমেলো সন্ধ্যা বাতাসে।

সব বিস্ময় টুপটাপ শিশির হয়ে ঝরছে
গোলাপ বুকে;
আহা ! আজই গোলাপ ফুটেছে।

আমার নিঃসঙ্গতা

Scre

চারিদিকে এত প্রাচুর্যতার মাঝে বড় নিঃসঙ্গ আমি
যেমন নিঃসঙ্গ, অসংখ্য তারার মাঝে ভোরের সুখতারা;
নিঃসঙ্গ ওই গভীর রাতের আকাশের বিবর্ণ চাঁদ
চাঁদ আর আমি একাকার বিবর্ণ আকাশ এবং পৃথিবীতে…

রাতের পৃথিবীটা ঘুমিয়ে থাকে
অথচ পান্ডুর চাঁদ সারারাত জেগে থাকে আকাশের বুকে,
কেউ দেখে না তার এই নিঃসঙ্গতা
কিন্তু কেন এই নিঃসঙ্গতা ?

আমার এই নিঃসঙ্গতা কি ভোরের শিশির?
অথবা গোধূলি লগ্নে হারিয়ে যাওয়া কোন কান্না?
নাকি পূর্ণিমা চাঁদের মায়াবী কোন স্বপ্ন ?

তুমি কত কাছে আমার ভালবাসা হয়ে আছ আমার ভেতর বাহির জুড়ে
তবু আমি আশ্চর্য এক সমুদ্র জল হয়ে আছি
একা,
আর তুমি সে সমুদ্র আমার বিরহী নিঃশ্বাসে ;
আজ কি খোঁজ আমার দু’ চোখের গভীরে?

ও আমি কতটা একা…
কতখানি নিঃসঙ্গ ?
জানো গোলাপ সুন্দর !

তবু কেন সে গোলাপ ঝরে পড়ে?
আমার ভেতরেও ক্ষয় আছে নৈঃশব্দের ;
হয়ত ভালবাসার মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারিনি বলেই
আমার এই নিঃসঙ্গতা।

আবার এমন ওতো হতে পারে
তোমার কাছ থেকে অনেক ভালবাসা পেয়েছি বলেই
আমার এই নিঃসঙ্গতা !

এক বৈশাখী আমন্ত্রণে

IMG_202

বৈশাখী আমন্ত্রণে সারাদিন একগুচ্ছ কবিতার সাথে হেঁটে হেঁটে
ঘাসের গালিচা পেতে বসেছে সোনালীর বিকেল –
চা খাওয়ার বিলাসী বাসনা,
সাথে আছে এক পৃথিবী গোলাপ নক্ষত্র সমুদ্র
চাঁদ ঘুম ভেঙ্গে তাকিয়ে দেখে
সোনালীর হলুদ বিকেল ছুঁয়ে আছে অনেকেই –
এক আকাশ নীলিমা ঝরে যায় ব্যথায় :
শ্রাবণ মেঘ গলে টিপটিপ বৃষ্টি ঝরে
গোলাপ সৌন্দর্যের স্রোতে ভেসে যায় গভীর রাত্রি;
সমুদ্র বুকে প্রমত্ত জোয়ারে জ্যোৎস্নার ঢেউ জাগছে।

অনিরুদ্ধ নিঃশ্বাসে একটু বিশ্বাসের আঁচলে নীল আকাশ
দিগন্ত রেখায় পথ খোঁজে।

শেষের একদিন

lovewe

প্রেম ছাড়া জীবন পূর্ণ হয় না
আমার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে কবিতা
সে কথা বুঝে গেছে
কবিতা ভালবাসে কাব্যকথার গল্পকে,
আর গল্প ভালবাসে উপন্যাস।

দিব্যি কাব্যকথার গল্প
কবিতাকে ভালবাসতে পারত
বাসে না, সে কী কষ্ট আমার মেয়েটার …
কবিতাকে নিয়ে কী করব আমি ?
বড় অবুঝ মেয়ে ;
কিছুই বুঝতে চায় না।

হায়রে ! গল্পের কত কাহিনী পড়ি
আর উপন্যাস গভীর রাতে
ঘুম জ্যোৎস্নায় স্বপ্ন দেখে আকাশ ছোঁয়ার!
কবিতার মতো এখনো কেউ-ই হয়নি
নিজের মেয়ে বলে বলছি না,
অবশেষে গল্পের কাব্য ফেরে কবিতার কাছে
কবিতার মুখে এখন এক পৃথিবী হাসি।

আমার না বলা কথা গুলো

index

তুমি আছ আবার কোথাও নেই
আমার না বলা কথার শব্দ ফুল
আজ কবিতার মালা হবে,
সেখানে অনেক কথার শব্দ ফুল ফুটবে
আমি গোলাপ, কামিনী, বেলি, রজনীগন্ধা কিম্বা বকুল ফুলের কথা বলছি না
এক কাশফুলের কথা আলাদা
আমি ফুল হবো কখনো সে কথা ভাবিনি
আমি হাসনাহেনা: এ আমার অনেক প্রিয় ফুল;

আমি পৃথিবী হতে পারতাম
কিন্তু হইনি,
হয়তো সৃষ্টিকর্তা চাননি!
আমি সমুদ্র হতে পারতাম
সমুদ্র আমার ভীষণ প্রিয়
আবার ভাললাগার ও বলতে পার –
আমি মৃত্তিকা মাটি কিম্বা অরণ্য হতে পারতাম,
শুধু কি ঘাসফুলের অরণ্য ?
না জ্যোৎস্না ডোবা রাতের অলস চোখে ছুঁয়ে থাকা ছড়া ছড়া কাশফুল হওয়ার খুব ইচ্ছে আমার
সে তো হবার নয়;

সময় গড়িয়ে যায় অতীতের অশান্ত সমুদ্র বুকে –
সমুদ্র থেকে আর কোনদিন ফেরার কোন পথ নেই
সব পথ বন্ধ:
আমার না বলা কথার ফুলঝুরি
আমার ব্যর্থ স্বপ্নের ভাষা
এই বৃষ্টিহীন চৈত্রের সোনালী বিকেল
আজ সব কবিতা হয়ে গেছে।

এই চির সবুজ পৃথিবীর অগনিত সন্ধ্যা গুলো
রৌদ্রে শুকানো সজল বর্ষায় ফেনিয়ে ওঠা নীল আকাশের প্রশান্তি
সবকিছু ঢেকে আছে কবিতার গুচ্ছ গুচ্ছ শব্দে।

ফাগুন মন বৃষ্টির অপেক্ষায়

2842

আজও এক আকাশ মেঘ মহলে ঝড়ো বাতাস ছিল অনুভব করার মতো
শুধু বৃষ্টি ছিল না,
যদি এমন হয় কখনো
টিপটিপ বৃষ্টি, কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি
বৃষ্টির ফোঁটায় বকুল ঘ্রাণ অবাক করেছে আমাকে,
ফাগুন বেলা যায় যে বয়ে
ভাললাগা স্পর্শ করেছে এই মনে।

আষাঢ়ের প্রথম সকালের বৃষ্টি
রিমঝিম বৃষ্টির ফোঁটায় কদম ঘ্রাণ অবাক করেছে আমাকে,
মেঘলা বিকেল
ভাললাগা স্পর্শ করেছে একটু একটু করে:

আজ না হয় বসন্ত বিকেলে বৃষ্টি নামুক
এই মন বৃষ্টির ছোঁয়ায় সিক্ত হোক :
একটু ব্যস্ততার এই শহর ছেড়ে অন্য রকম বৃষ্টি ঝরুক
তবু একটা কিছু হোক :
না হয় শুধু বৃষ্টিই ঝরুক
বৃষ্টির ছোঁয়ায় ভাললাগা স্পর্শ করেছে এই মন
কতদিন কতকাল বৃষ্টির দেখা নেই
আজ সন্ধ্যায় খুব করে গোলাপ শাখায় বৃষ্টি নামুক।

কোন কোন সন্ধ্যায় এ আমি চাই —
কোন এক রাতে মেঘের দিকে তাকিয়ে আমি শুধু বৃষ্টিই চাইব
আমার সম্মুখে তখন বৃষ্টি থৈ থৈ ইচ্ছে জল সমুদ্র।

কাঠ গোলাপের ঘর সংসার

shapnil0

জানি পাশেই আছ
শুধু ছুঁয়ে দেখতে পারিনা
তুমি সবুজ পাতার মত স্বপ্ন আগলে রাখো বুকে,
সবুজ পাতার ঘর সংসার পড়ে আছে এলোমেলো’
আমি উপলব্ধি করতে পারি ঢের
এলোমেলো মন ভাবে শুধু তোমায়
আজো শেষ হবে রাত
শুধু তুমি আমি আজ দু’প্রান্তে :
কোথাও কেউ নেই
ধূধূ শূন্য দৃষ্টি আমার খোঁজে যেন কাকে ….
নীল জ্যোৎস্নায় কষ্ট মাখবো একাকী,
কবিতা পড়ার এক প্রহরে
তবু ধূসর নির্জনতায় মন শুধু তোমাকে চাই
তুমি চাইলে মেঘ গুলো সব গলবে আবেগে
অবাধ শ্রাবণের বৃষ্টি ঝরবে আমার এই দুই চোখে ;
তুমি আমি আমরা কখনো হয়তো হারাব শুভ্র জ্যোৎস্নায় –

আমরা দুটি মানুষ দুই সত্ত্বার
তুমি আমি আর আমাদের
কাঠ গোলাপ ঘর সংসার।

মেঘ কথার গল্প

tyui

পাতা কুড়োতে এসে
আমারই হাত
সবুজ পাতায় ভরে গেছে

পাতার সবুজাভায় অনেক কষ্ট লুকোনো আছে
হলুদ কষ্ট :
আমাকে ভীষণ কষ্ট দিয়েছে
চৈত্রের নগ্ন বিকেলের কষ্টরা মেঘ কথার গল্প হয়ে ছড়িয়ে গেছে,
এক আকাশ…
এ শহর এক জীবনের জীবন্ত গল্প হয়ে উঠেছে –

এক পা’য় নূপুর পরা মেয়েটি বিপন্ন গোধূলির বিষণ্ন সন্ধ্যায় কম্পিত ঠোঁটে –
ভুল জীবনের একটা গল্প বলেছে,
গল্পের গভীরে শিশির পতনের শব্দ ছিল
নষ্ট অতীতের কষ্ট ছিল ;
শিশির কখনও ভোর দেখেনি
সবুজ পাতা বাহার স্বপ্ন ছুঁয়ে আছে স্নিগ্ধ ভোর,
ভোরটা দূর্বা ঘাসে ঘুমিয়ে ছিল..
চুপিচুপি বৃষ্টি এসে ফিরে গেছে চাপা অভিমানে –
নীল মেঘ, সাদা পাতা পোড় খাওয়া জীবনের কথা বলে —
কতগুলো রাত নির্ঘুম থেকেছে
এবং এক সময়..
ক্লান্ত রাত গুলো
নিঃশব্দে ঘুমিয়ে গেছে !

শেষ বিকেলের মেয়েটি
মেঘ কথার গল্পের পাশে –
একটি গোলাপ হাতে
প্রতীক্ষার সিঁড়িতে অনন্ত কাল দাঁড়িয়ে আছে।

তারিখ 08.04.2021

নৈঃশব্দ্যের গহীনে

e-it-noo

খুব নির্জন সকালে ঘুম ভেঙ্গে ভেবেছি
তোমাকে ভালবাসব _
শেষ বিকেলের রূপালি পাড়ে নিঃশব্দে নিবিড় অরণ্যে হাঁটতে হাঁটতে ভেবেছি,
তোমাকে ভালবাসব:
কুহেলী রাতের স্বপ্ন ডানায় মাথা রেখে বিশ্বাসী ছায়ায় শুভ্র জ্যোৎস্নায় ভিজতে ভিজতে ভেবেছি,
তোমাকে ভালবাসব _

সারাদিন রাত ভেবে ভেবে কাটিয়েছি সময়
অথচ তোমাকে_ ভালবাসা হয়নি এতটুকু,
বড় আয়োজনে তোমাকে ভালবাসতে চেয়েছি –
দিনের শেষে,
রাতের শুরুতে
নৈঃশব্দ‍্যতার গহীনে ডুবতে ডুবতে,
হলো না …!

একটা গান লিখেছি তোমায় নিয়ে
একটা প্রেমের কবিতা লিখেছি তোমার নামে,
জানি না কি করে –
চিন চিন বিষ ব্যথায় পিষে
দু’ মুঠো কষ্ট বেড়ে গেল
এ বুকে –
বদনাম হয়ে গেলো তোমার জন্য
অথচ তোমাকে ভালবাসতে পারিনি
একতিল –

বুকের ডিভানে গড়ে তুলেছি তিল তিল স্বপ্নে ভালবাসার তাঁতে বোনা
একখানি সবুজ ব- দ্বীপ ;
সে দ্বীপ ছুঁয়ে আছে,
আমার নন্দিত সময়
আমার ভালবাসা..
স্বপ্ন বলো,
পুস্পের ঘ্রাণ বলো সবই আছে
শুধু প্রিয় মুখটা নেই -।

ঘুমহীন কত কত রাতে,
গভীর ব্যথার অনুরাগে হারাতে হারাতে
কত যে ভেবেছি
তোমাকে ভালবাসব,
এই খানে অঘ্রাণের বেলাশেষে
তোমাকে ভালবেসে বেসে
সাজাবো স্বপ্ন কুসুম :
মনের আঙিনায়, ভরা পূর্ণিমায় স্বপ্ন শুসময়
প্রিয় মুখ এঁকে নেব
সন্ধ্যার স্নিগ্ধ আবীর রঙের মেঘে।

নিঃসঙ্গতার পাড়ে একা এই আমি দাঁড়িয়ে
নৈঃশব্দ্যের দেয়াল ভেঙ্গে ভেঙ্গে
আমি তোমাকে ভালবাসব,
তোমাকে ভালবাসতে যত দিন সময় লাগে
আমি অপেক্ষা করবো
তোমাকে শোনাব আমার প্রিয় কথা
ভালবাসি ;
আমার যত গল্প আছে তোমাকে শোনাব
আমার সব স্বপ্নে তোমাকে রাঙাবো
আমার লাল,সবুজ ভালবাসার রঙে তোমায় সাজাবো
কথা দিলাম,
বেলাশেষের পড়ন্ত বেলায় ডুবতে ডুবতে
হলে ও কী ভীষণ তোমায়,
একদিন ঠিক ঠিক ভালবাসব–!

শেষের রাত্রি

রাতগুলো কত কাছাকাছি এসেছে
দিনগুলো দূরে সরে আছে,
আমি মেঘ হব শ্রাবণ রাতের
আকাশে:
এই আমি একমুঠো রৌদ্দুর হব
দিনের আঁচলে
আমার দুচোখ সমুদ্র টলমল জলে
সবুজ শ্যাওলারা বেড়ে ওঠেছে
তোমার চোখে এক খণ্ড নীল মেঘ
অরণ্যের সবুজাভা স্বপ্ন ছুঁয়ে আছে;
গুড়ো গুড়ো মেঘ বৃষ্টি ঝরায়
আমার কালো কাজল চোখে
রাত্রি শেষে
নির্জনা পৃথিবী যে পথে এসে মেশে।