হাসনাহেনা রানু এর সকল পোস্ট

উষ্ণ মরুর বুকে স্বপ্ন জড়ানো এক আকাশ

index

কতদিন আমি মেঘের দিকে তাকিয়েছি ঠিক নেই
অত দিনক্ষণ কেউ মনে রাখেনা
আমিও রাখিনি,
সেটাই খুব স্বাভাবিক —
আমার শূন্য দৃষ্টিতে কখনোই আকাশ এতটা লাল হয়ে উঠেনি,
তবে কি এটা কষ্টের লাল আকাশ?
ঠিক মিলছে না
কষ্টের প্রতীক নীল হয় জানি !
যেমন কষ্টের নীল বেদনার গোলাপ হয় ;
লাল আকাশ কি অভিমানী হয়ে উঠেছে?
এতো হৃদয়ের রক্তক্ষরণ…..

আজ সেই যে শৈশবের মেঘমুক্ত আকাশ দেখেছি
আকাশের কোথাও এক বিন্দু মেঘ নেই
একফোঁটা নীল নেই:
পুরো আকাশ এখন ধবধবে দুধ সাদা।
হতে পারে আকাশের রং মন্ত্র মুগ্ধ শুভ্র কাশফুল :
নদীর জলে নির্বাক চোখে চেয়ে দেখছে সবুজ প্রকৃতি ;
এমন মায়াবী দৃশ্যে আমার অভিমানী চোখ ভিজে গেছে —
আমার চোখের পাতায় লেগে আছে
কাশফুলের কোমল শুভ্রতায় লেগে থাকা শীতের উষ্ণ মরুর বুকে এক আকাশ নীল ভালবাসা —
সব শরতের কাশফুল নিয়তির অমোঘ নিয়মে সুন্দর সাদা হয়-ই !

তারিখ 12.12.2021

সূতো কাটা ঘুড়ি

03hjj

এই সেই একমুঠো বিষণ্ন রোদ
যা আকাশ নিতে পারেনি বুকে,
দিগন্ত জোড়া শূন‍্যে ফেলে দিয়েছে —-
রোদ এখন উল্টো সূতো কাটা ঘুড়ি হয়ে উড়ে গেছে
নগ্ন আকাশে।

দূরের সমুদ্র বুকে ভেসে গেছে সঘন মেঘ
একদিন সন্ধ্যেবেলা মেঘের মন খারাপ ছিল ভীষণ
মেঘে মেঘে ঢাকা ছিল সুদূরের শালবন,
আসেপাশের বনফুল তখন ফুলের মতন —
শুধু তুমি বলছ না একটি কথাও
বৈশাখের মাতাল বিকেল কৃষ্ণচূড়ায় রঙিন হল ;
তুমি দু’, হাতের দশ নখে অকারণে দূর্বা ঘাস ছিঁড়ছ ,
ঘাস ও ব‍্যথা পায় মনে
মৃত সমুদ্র মেয়ে !

বিশ কোটি বছর একগ্লাস রাত খেয়ে বেঁচে আছ
কেমন করে পার তুমি বলো?
চৈত্র দিনে তোমার দুঃখ ভরা চোখ ছুঁয়েছে অশ্রু মেঘ;
বুনোহাঁস দল বেঁধে নেমেছিল সমুদ্র জলে
অথচ মেঘ বৃষ্টিতে পাখির চোখ ভিঁজেছে !

এখানেই শেষ নয়, আরও আছে
যা ইচ্ছে বলুক লোকে —
এক চোখে নেমেছে আঁধার
দুই ঠোঁট মৃত,
পলক পড়ে না অন্য চোখে
তুমি মৃত; প্রতিনিয়ত কষ্টের কথা বলেছিলে,
তুমিই মৃত এক সমুদ্র মেয়ে।

কৃষ্ণচূড়া বিকেলের অন্য এক পৃথিবী

402078

বহুদিন পর আমি প্রিয় আকাশ দেখলাম
ঠিক কতদিন আকাশ দেখিনি মনে নেই,
আকাশ কি একটু বেশি নীল হয়েছে ?

একটু বেশি সুন্দর …
হয়তো আকাশ আগের মতই আছে –
বহুদিন পর আকাশে মেঘ করেছে
সে মেঘে আমার দুচোখ ভিজে গেছে
তবে কি এ দুঃখের প্রকাশ এই অশ্রুজল ;
সবুজ পাতার গাঢ় সবুজাভা মধ্যরাতে শিশির শিহরণ তোলে।

শীত মৌসুমে হলুদ সরিষার দিন প্রায় শেষ
অতিথি পাখিরা উড়ছে
ডানায় সোনালী রোদের গন্ধ মেখে –
খোলা আকাশের নিচে,
এই শীতে আমি যেতে চেয়েছিলাম নীলগিরি কিম্বা বালুদ্বীপ
যাওয়া হলো না।

শীতের শেষ বিকেলে নীল বরফ ঢাকা সমুদ্র দেখতে চেয়েছিলাম
তাও হলো না,
বাড়ির পাশে ছোট্ট এক নদী পার হতে পারলাম না
সমুদ্র তো অনেক দূরের কথা
একান্তই আমার দুরন্ত ইচ্ছে গুলো জমাখরচার ডায়েরিতে জমা থাক :
অন্যকোন এক কনকনে শীতে ঠিক ঠিক যাব –
বহুদূরের পথে যেতে যেতে সর তোলা দুধ চা আর কফির সাথে জমবে বেশ
মাটির ভাঁড়ে খেজুরের রস;
শীতার্ত ভোরের দূর্বাঘাসে শিশির ভেজা পায়ে হারাব অচেনা কোন পথে –
চারদিকে সবুজ প্রকৃতি
কিছুই চিনি না আমি,
তখন কি আমার দূরের আকাশটা কে দুর্বোধ্য মনে হবে ?

আমার চোখে থাকবে এক নতুন পৃথিবী।
রাতে ফোঁটা গোলাপের কোন তুলনা হয় না
আমি অজস্র গোলাপ তুলতে তুলতে বয়ে যাবে বেলা,
কিছু দিন পর গোলাপ গুলো ঝরে যাবে
অকস্মাৎ ছায়াচ্ছন্ন নিবিড় নীড়ে বৃষ্টির শব্দ
এখন আমি মেঘের সাথে বলব কথা
ও মেঘমালা, হঠাৎ বৃষ্টি!

তুমি কি আমার সঙ্গী হয়েছ ?
আমি শোনাব তোমাকে আগামী শীতের গোলাপ পাখি আর সমুদ্রের কথা।

ফেরা

55772

— সোনালি
আজ তপ্ত আগুন দুপুর খুলবো খরা জৈষ্ঠে তোমার বুকে
ইচ্ছেরা বাঁধা দেবে
তুমিহীন পৃথিবী এক কষ্ট সমুদ্রে ডুবে আছে,
তোমার মনের পর্দায় বাসনার নীল রং
ছড়াবো অনুরাগে
জল রঙে আঁকবো ছবি মেঘের গায়ে
অবাক কবি — তোমারই ছবি
হিমেল হাওয়ায় জড়িয়ে থাকবে
সবুজ ঘাসে মেঠো অনুভূতি ;
থোকা থোকা ঘাস ফুলের ফাঁকে মোহনীয় ভোর
নিঃশব্দ শিশির ঠোঁটে ডুব সাঁতার খেলবে
ভালোলাগা প্রহর শ্রাবণ মেঘ ছুঁয়ে আছে,
এলোমেলো বাতাসে
কবিতার আবাসে..
বহুদিন পর আবার ——–
এক অন্য রকম কবিতার বিকেল নিয়ে এসেছি
তোমার শিশির ভেজা কোমল ঠোঁটে,
স্বপ্নরা পুড়বে লেবু ফুলে
কামিনী ফুলে,
থোকা থোকা হাসনাহেনার মোহনীয় সুঘ্রাণে বসন্ত রাত পুড়ে যাবে
খরা চৈত্রের আগুন দুপুর ও ঝলসে যাবে।

তোমার জন্য পৃথিবী সুন্দর

272629

শুধু তুমি বলছ না আর একটি কথাও
বৈশাখের মাতাল বিকেলে কৃষ্ণচূড়ার তলায় বসে,
দু’হাতের দশ নখে অকারণে দূর্বাঘাস ছিঁড়ছো —
জানতো ঘাস ও ব্যথা পায় মনে!

বিশ কোটি বছর আমি এক গ্লাস রাত খেয়ে বেঁচে আছি
কবিতার খুব কাছাকাছি থেকেছি
খুব বুঝেছি কবিতা ছাড়া আমার একটা দিনও চলবে না ;
আমি একটা উপন্যাসে প্রেমের গল্প জন্ম দিয়েছিলাম
এ সেই নায়কের কথা।
কি জানি কিসের টানে উপন্যাসের নায়ক নায়িকাকে ছেড়ে চলে গেল
একদিন ভর দুপুরে নীল ডায়েরিতে নিঃশব্দে
সুইসাইড নোট লিখে নায়িকা আত্মহত্যা করল —
তার দুই বছর পর নায়ক ঠিকই নায়িকার খোঁজে ফিরে এসেছিল
কিন্তু ততদিনে সব শেষ;
কি হত ? ক’দিন অপেক্ষা করলে ?
এখন এখানে পড়ে আছে শকুনের বিষাক্ত দৃষ্টি –
পড়ে আছে ঘোর অন্ধকার রাত্রি :
সন্ধ্যার বাতাসে তোমার হৃদয় পোড়া বিরহ গন্ধ
তুমি এখন নেই পৃথিবীতে ইয়ানা
হাই ইয়ানা ! তুমি কেন চলে গেলে?
আজ বলো তুমি নীল আকাশের কোন শুকতারা টা ?
আজ তুমি হীন পৃথিবী
বর্ণময় রঙিন বিষাদে ঢেকেছে
বেদনার রঙ দিয়ে আমি উপন্যাসের পরি সমাপ্তি টেনেছি।
নিষ্ঠুর নিয়তি সম্মুখে এসে দাঁড়িয়েছে
এছাড়া আমার আর কিইবা করার ছিল
গভীর রাত্রির মতো আমার দু’চোখে স্তব্ধতা এক পৃথিবী জুড়ে
তোমার না থাকা শূন্যতা হাহাকার করে ফিরছে।

তারিখ 23.01.2022

স্বপ্ন সিঁড়ির শূন্যতায়

pk-f4-640

কতদিন তোমাকে বলেছি, আকাশ তোমার বুকের ডিভানে
একটা স্বপ্ন আঁকো__
দুঃখের নির্যাস দিয়ে,
সে স্বপ্নের হৃদপিণ্ড ছুঁয়ে থাকব
আমি_
আমি…
শুধুই আমি!

কেন না আমিই___ আমি তো এক দুঃখ মানবী
সুখের নির্যাস ও থাকবে দুঃখের বিপরীতে__
ওটুকু কেবল তোমার ;
আমি চাইনা তুমি ও ঠিক আমার মতো, সারাক্ষণ ব‍্যথার নির্যাস ছুঁয়ে থাক …
আমি তোমাকে বড় বেশি ভালবাসি __
যদি তুমি আমাকেই ভালবাসো,
তাহলে প্রতিনিয়ত কেন বলছ আমি একা.
আমি তো তোমার সঙ্গেই আছি _
হ‍্যা, বিশ্বাস করো আমি সবই বুঝি__
তবু কেন যেন ভীষণ ভয় হয়
তোমাকে হারাবার ভয়__
সে জন্যই তোমাকে বলেছি,
একটা স্বপ্ন আঁকো …
স্বপ্নের সিঁড়ির ডিভানে গভীর শূন্যতায় আমি দাঁড়িয়ে থাকবো …
অনন্ত কাল, তোমার ফেরার অপেক্ষায়,
যদি তুমি কখনো আমার পথে পা রাখো!!

হৃদয় গহীনে একলা তুমি

20200-1

বুকের ভেতর এক সমুদ্র চাপা কান্না
কখনো ঢেউ ভাঙে
কখনো দুর্নিবার ঢেউ হয়ে ছুটে যায় বহুদূরে
কখনো নিঃশব্দ বিচরণ।

যদি এ চোখে এক সমুদ্র জল শুকোয়
তাতে তোমার কি যায় আসে?
তুমি ভালবাস আমাকে?

ছুঁয়ে দাও কান্নার জল এ চোখে ;
ভালবাসতে আমার কেমন ভয় …
কিন্তু হলে কি হবে ?
তুমি তো আর কোথাও আমার নেই –
বুকের ভেতর এক আকাশ নীল কষ্ট
ফেরারী দিনের মত ছুঁয়ে যায় আমাকে :

আজ ও তোমায় আমি খুঁজি
শুকিয়ে যাওয়া স্তব্দ বিকেলের হলুদ রোদের মায়ায়
সমুদ্র বুকে পাথরের জল পিপাসায়,
তৃষ্ণার্ত মনে উড়ন্ত মেঘ আর নরম বৃষ্টির ঝাপটা।

থমকে থাকা নীরব রাত্রির ঠৌটে চুঁইয়ে চুঁইয়ে ঝরে পড়ছে ভোরের অব্যর্থ শিশির,
দুর্নিবার সমুদ্র আকর্ষণে বিমোহিত শিশির স্বপ্ন ;
কম অবাক হইনি আমিও
একটু একটু করে ব্যাপৃত করেছ তুমি আমার বিমুগ্ধ হৃদয়।

কৃষ্ণচূড়া আগুন

krishnachura

মোহনীয় বিকেলের কৃষ্ণচূড়া রোদ্রে আগুন লেগেছে
এ আগুন গোলাপের মত নরম
মেঘের মত তরল,
মেঘ গলে বৃষ্টি নামে
ডানা সুদ্ধ পাখির পালক ও হার মেনেছে
পাথর চোখে বৃষ্টি জমেছিল এক শতাব্দী আগে,
প্রতিটা কঠিন শব্দের দিকে আমি হাত বাড়াই
হেঁটে যাই
মুঠো মুঠো তুলে নিই;

বাগানের প্রতিটা গোলাপ শাদা বরফের মত ঠান্ডা ছিল
গোলাপের চোখে কান্না;
শান্ত শাদা মেঘে তুষার বৃষ্টির জল,
মাথার উপরে ভেসে যায় এক আকাশ নীল মেঘ
অবরুদ্ধ সমুদ্রের চেয়ে মুক্ত সে মেঘ,
মেঘের সাদা রং ধনু ডানা খসে বৃষ্টি পড়ে —
টিপটিপ বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যা মুখর হয়ে উঠেছে।

সন্ধ্যার ল্যাম্পপোস্টের সোডিয়াম আলোয় পর্দার আড়ালে
অদম‍্য দৃষ্টি ছিল যেন কার
নক্ষত্রদের এক হলুদ শহর সারারাত্রি জেগে আছে
কিছু পাখি বিকেলেই উড়ে গেছে এ শহর ছেড়ে,
এখানে কিছুক্ষণ পর বরফ রাত্রির মৃত্যু হবে,
মৃত্যু হবে সমুদ্রের
কিছু অস্পষ্ট শব্দ আর ফুল পাখি পাতাদের।

কৃষ্ণচূড়া রোদ আগুনে পুড়ে গেছে এক সমুদ্র
এক সমুদ্র জল দাউ দাউ আগুনে পুড়েছে,
বাতাসে শোকের মিছিল
দূরের আকাশ কাঁদে।
নির্জন রাতে রৌদ্দুরে পুড়েছে জ‍্যোৎস্না শাদা খইর মত
বৃষ্টি ভেজা রাত থামাতে পারেনি এ শোক !

কাশফুলে বৃষ্টির ছোঁয়া

Screenyy

প্রকৃতির উষ্ণ ঠোঁটে এখন কাশফুল ঘ্রাণ
সাথে বৃষ্টি ভেজা অনুভূতি,
শ্রাবণ চলে গেছে
বৃষ্টি যায়নি …
এক আকাশ নিয়ে আমি ভীষণ খুশি,
যখন তখন মেঘ হয় আকাশে
মেঘ গলে ঝুম বৃষ্টি …
বৃষ্টির কোন বাঁধা ধরা নিয়ম নেই
ভিন্নভাবে কত রূপে বৃষ্টি হয়।

মনের আকাশে মেঘ জমলে দু’চোখে আমি ও ঝরাই বৃষ্টি…
অবাধ স্রোতের মতো
এ বৃষ্টি খুব অসাধারণ
আগুন বৃষ্টি কষ্ট দহনে …
মেঘ গলে যে বৃষ্টি হয় বলছি না …
সে বৃষ্টি অতি সাধারণ,
মনে হয় সাদা মেঘের ঠোঁট গলে বৃষ্টি ধরেছিল হয়তো…
কাশফুল এসেছে শুভ্রতার আঁচল উড়িয়ে স্বপ্নের শহরে
কাশফুল তোমাকে বলছি, তোমার চেনা শহরে আমি ভালো থাকব,
দুঃখ বিলাসী এই আমি
কষ্ট গুলো গায়ে মাখবো …
বৃষ্টি ভেজা অনুভব বাড়িয়ে দেয় শত বেদনা,
এখন আর বৃষ্টি এলে হাত বাড়াই না ….
মন ভিজিয়ে নিই ষোল আনা;
বৃষ্টি আমার ভীষণ প্রিয় !
বৃষ্টির সাথে এ আমার এক জন্মের সখ‍্যতা।

এক বৃষ্টিই পারে এক পৃথিবী সৌন্দর্য হতে
অপার্থিব পৃথিবীর সাদা ঠোঁটে বৃষ্টির ঢল নেমেছে,
এমন মুগ্ধ করা দৃশ্য আর কোথায় পাব ?
নৈঃশব্দ্য রাতে কাশফুলে বৃষ্টির কোলাহল —
গাঙচিলের খয়েরি ডানা খসে বৃষ্টির টুপটাপ শব্দ আছড়ে পড়ছে উত্তাল সমুদ্র বুকে,
এ এক অপূর্ব নান্দনিক সৌন্দর্যের দৃশ্য
শব্দহীন চেনা সুর ..!

রৌদ্র শুকোয় বৃষ্টির আঁচলে
আমার চোখে অন‍্য আকাশ ইচ্ছে ঘুড়ির নাটাই হাতে স্বপ্ন বোনে
অনুভবের ছড়া ছড়া কাশফুলের বৃষ্টির ঘ্রাণে …..!!

এক ঘড়া বিশুদ্ধ প্রেমে সাত সমুদ্র তের নদী ডুবে গেছে

desrt

সেদিন কৃষ্ণচূড়া স্বপ্ন ঘুম ভেঙ্গে নিঃশব্দ কবাঞ্চ ভোরের ঠোঁটে
দেখি’নি ঘাস বুকে
এক ফোঁটা শিশির…
অন্তহীন ভোরের নীড় ছেড়ে ভয়ার্ত শীতেরা রোদ
পোহাতে গেছে,
পৃথিবীর ভূগর্ভে বেড়ে ওঠা দারুচিনি দ্বীপে…
অভিমানী শিশির জমে গেছে ঘাস ঠোঁটে
চোখে পড়েনি –
আমি দূর থেকেই অচেনা শহরটাকে দেখেছি
শিশিরের চেয়ে ও নীরব স্তব্ধ সে তুমি …

সেদিন বিকেলে ধোঁয়া ওঠা মেঘে মেঘে দেখি’নি
দিনের কোন চিহ্ন –
রাত্রির চাঁদের মতো ধোঁয়া ধোঁয়া কুয়াশায় নেমে মেঘ
বৃষ্টিরা ঢেকেছিল অচেনা এক স্বপ্নীল শহর:
প্রকৃতি ছিল বড় বেশি বিষণ্ন
সেই শহর আমার ভাল লেগেছিল,
পোড় খাওয়া বাতাসে তোমার গল্পরা সবুজ উচ্ছ্বাসে জমে উঠেছিল;
আমি দূর থেকে মুগ্ধ চোখে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছি তোমার
তুমির ভেতরের অচেনা এক সত্ত্বাকে !
রূপকথার গল্পের চেয়েও সুন্দর মেঘ বৃষ্টি ভালবাসা,

পৃথিবী সৃষ্টির কাল থেকেই কবিতা ছিল একথা কেউ না জানুক, বা মানুক
তাতে কিছুই আসে যায় না;
সেদিন থেকেই কবিতা নিজের অস্তিত্বের জন্য লড়াই করেছে …
অনেক যুদ্ধ শেষে কবিতা নিজস্ব একটা স্থান করে নিয়েছে
সব মানুষের মনের মাঝে কবিতা ঘুমিয়ে আছে।
স্বপ্ন দেখে, কষ্ট পায়…. হাঁটে, হাসে কাঁদে খেলে
সুখের নায়ে যে একটুও ভাসে না সেটা নয়,

আদিম যুগে কবিতা অদ্ভুত নির্জন পৃথিবীর স্বপ্ন চোখে শুয়েছিল
জানিনা কবে বা কে প্রথম পৃথিবীর চোখ থেকে কবিতাকে জাগিয়েছিল:
সেই তাঁর কাছেই আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞ
সেই পৃথিবীর প্রথম কবির চোখে কবিতার জন্য স্বপ্ন ছিল,
ভাললাগা ছিল … ছিল অনন্ত ভালবাসা;

সেই প্রথম বার এক সমুদ্র কবিতার চোখে চোখ রেখে
সব দুঃখ, কষ্ট ভুলে
ছোট ছোট ঢেউয়ে সাঁতার কেটেছিল –
সে সব কথা কেউ না জানলেও আমি জানি:

একটা ধান শালিক স্বপ্ন সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কবিতার সৌন্দর্য দেখছিল …
কাগজের টুকরো হঠাৎ উড়ে গিয়েছিল আকাশে –
সেই থেকে পাখির জম্ম, পাখিরা আকাশে উড়ে;

একটা ক‍্যাকটাস শতাব্দীর শেষ বিকেলে একটা ফুল ফুটিয়েছে
ক‍্যাকটাসের সেকি উচ্ছ্বাস গায়ে মাখামাখি
ফুলের গভীর শূন্যতায় ছিল পৃথিবী!
জীবন কিছুটা কঠিন এবং দুর্বোধ্য হয়ে উঠেছিল।

কতদিন কত কতক্ষণ হাতে, আঙুলে কবিতার শব্দ নিয়ে খেলা করেছি
কবিতারা স্বপ্ন ঘুমে দারুচিনি দ্বীপ ছুঁয়ে স্বপ্নের অন্তর্গত হতে চাই,
কখনো কষ্টের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে মায়াজাল ছিঁড়তে চাই !

জানিনা, পৃথিবী সৃষ্টির আগে কবিতারা ঠিক কেমন ছিল ?
স্বপ্নে নাকি সম্পূর্ণ রূপে
স্বপ্নের বাইরে ছিল …
একদিন আমার একটা ধূসর ডায়েরিতে একটি কবিতা লিখেছিলাম,
– ভালবাসার কবিতা:
কেন জানিনা, কবিতা সেদিন ভীষণ দুঃখ পেল !
কবিতার চোখে একটা বাক্য ছলছল করছিল, ভালবাসা বলে নেই তো কিছুই
ভালবাসা মানেই ফাঁকি –
আমি জানি না,
কবিতা সৃষ্টির আগে রবীঠাকুরের “শেষের কবিতা’র” লাবণ্য কেমন ছিল;
কদম ভালবাসায় কি বৃষ্টির গল্প লেগে আছে সারসের সাদা ডানায় ?
গভীর রাত্রির শিওরে জ‍্যোৎস্নারা হেসে উঠেছিল,
এ কোন স্বপ্ন নয় সত্য…
যদিও হাসির শব্দে বৃষ্টির স্রোত বয়ে গেছে অচেনা স্রোতে !

সেদিন মধ‍্যবর্তী রাতে ঘরের জানালায় দেখি’নি
আকাশে চাঁদ –
মেঘের আচ্ছাদনে ঢেকেছিল এককোটি নক্ষত্র
ওরা এজন্মে চাঁদের বন্ধু হয়েছিল,
আকাশে চাঁদ নেই, নক্ষত্ররা শূন্য প্রায়:
সাদামাটা আকাশটা নীল শূন্য হলে কেমন লাগে
আমার তীক্ষ্ম চোখের কার্নিশে কিছুক্ষণ যন্ত্রণা ধরেছিল …
বুঝেছিলাম চাঁদ বিহীন পৃথিবী অন্ধ হয়ে গেছে!
আকাশের বিন্ত খসে শূন্য সমুদ্র বুকে ক’ফোঁটা শিশির আছড়ে পড়ে কেঁদে উঠেছিল,
সেই থেকে সমুদ্রের জন্ম…

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে একটা পরিচ্ছন্ন কবিতার শহর
ঘুমিয়ে আছে আমার স্বপ্ন ঘুমে –
শহরটা নিঃসঙ্গ রাতের গাঢ় অন্ধকারে তলিয়ে যেতে যেতে
আমার হাত আঁকড়ে ধরে,
একটু তীব্র বাঁচার আকুলতা ঝরে পড়ে শহরের চোখে …
আমি দেখি সে আকুলতা বৃষ্টি হয়ে ঝরে আমার চোখে !
আমি জানি, এ শহর কবিতার – শুধুই কবিতার –
কবিতার এ শহর আমি ধ্বংস হতে দিতে পারি না
আমি স্বপ্ন ঘুমের অঘোরে হাত শক্ত করে ধরি –
আহা! জীবন বাঁচানোর কি এক তীব্র প্রচেষ্টা শহরের চোখে মুখে ফুটে ওঠে:
হবে না ?
কবিতা যে প্রাণ !
এই শহরের হলুদ চোখে কবিতার কত কত স্বপ্ন
মাত্র একুশ বসন্তে কবিতারা স্বপ্ন স্পর্শ করেছিল।
এক রহস্যময় নিঃশব্দ রাত্রির অবগাহনে ডুবে…
আকাশ জুড়ে বৃষ্টি বৃষ্টি মেঘবৃষ্টির খেলা ছিল সারা রাত্রি;
ঝুম বৃষ্টিতে স্বপ্নরা বিবস্ত্র হয়েছিল
তাকে নগ্নতা বলা যাবে না
হয়তো একটু পোশাক বদলানো…
আমি তখন শোকের মিছিলে, মেঘে মেঘে গোলাপ প্রয়াণ!
কিছু গোলাপ ঝরে পড়েছিল অসময়ে:
গোলাপ কষ্টরা মেঘে মেঘে ছড়িয়ে গেছে এক আকাশে
সেই থেকে বৃষ্টির জম্ম!
চাঁদটা নারী আর সূর্য বুঝি পুরুষ হয় আধুনিক কবিতার গদ‍্য রাজ‍্যে
এই নারী পুরুষের লিঙ্গ ভেদের বৈষম্য যাবে না কোন কালে –
আমরা এমনটা কেন ভাবি, বুঝিনা …
একদিন পৃথিবীর শেষ রাস্তায় তোমার হাত ধরে এলোমেলো হেঁটে বেড়াবো কবিতা
একশত এককোটি বছর পর আমি তোমার হাত ছাড়বো, জেনে নাও:
তার আগে নয়!

এক ক্ষেত সবজির সবুজ চোখে আমি সোনালী দিনের স্বপ্ন রোপন করতে দেখেছি
গোপনে গোপনে ওরা কেউ কেউ রোবটের মত সংসার চাই,
সন্তান সন্ততি চাই –
আহা ! জীবন বোধ তো এমনই হয় –
এমন হয়ই …!

এক বিকেলের কষ্ট

585x350

সেদিন বৃষ্টি ছিল গোধূলি বেলায়
হালকা মেঘে সাদা বৃষ্টি
মনের আকাশ ছুঁয়ে উড়ছিল শীতের পাখিরা,
পথ হারা কিছু পাখির ডানায় লেখা হল নীল বেদনার গল্প !
লাউয়ের মাচায় ঝিরি ঝিরি হিমেল হাওয়া দোলা দিয়ে যায়
এক বিকেলের কষ্ট মেঘে
হঠাৎ আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে
লকলকে লাউয়ের ডগায়,
চালতার সবুজ পাতার ফাঁকে
কামিনী থোকায় টুপটাপ বৃষ্টির ফোঁটা ঝরে পড়ে :
এ দৃশ্য আমার মন স্পর্শ করে ;

বৃষ্টিস্নাত রাতে দূর অরণ্যে
এক গুচ্ছ গোলাপ ক্ষত – বিক্ষত হচ্ছিল
ঝরে পড়ার মুহূর্তে :
হঠাৎ প্রিয় গোলাপ সংসারে বিরহের ঝড় ওঠে
গোলাপের বিরহ বিচ্ছেদ এই আমাকে
এক সমুদ্র নোনা কষ্টের পারদে ডুবিয়ে দিল,
আমার বুক ফেটে কান্না এল
আমি তখন বুঝে গেছি গোলাপ আমার কত প্রিয় !
এক বিকেলের সবটুকু নীল কষ্ট বিরহের এক পৃথিবী ঢেকে দিল।

তোমার জন্য কবিতা

db-poe

আজ এই তোমাকে লিখেছি বলেই তুমি কবিতা হয়েছ
তোমাকে কেউ কোনদিন আবৃত্তি না করলেও তুমি কবিতা হয়েই থাকবে,
তুমি কবিতা হয়েই এই পৃথিবীর রং দেখেছ
তোমার জন্য আকাশ অনেক সুন্দর।
কবিতায় হারানো দিনগুলি ফিরিয়ে আনতে ভীষণ ইচ্ছে করে —
যদি আনা যেত :
স্বপ্নের বারান্দায়
বিকেলের হলুদ রৌদ্দুর হামাগুড়ি দিয়ে ফিরে যেত!
গতবার আষাঢ়ে নামেনি বৃষ্টি
শরতের কাশফুলের সেকি মন খারাপ
আমার ভাল লাগেনি একটুও
শুধু আকাশ মুগ্ধ হয়ে দেখেছিল নীলিমা রাত্রি ;
পাশেই ছিল দুঃখে মোড়ানো হাসনাহেনার ঘ্রাণ
শুনেছি বৃষ্টি মাসে বাতাস কেমন হেঁয়ালি হয়ে ওঠে –
আজ কি আকাশ একটু নীলহীন ?
হলেই বা ক্ষতি কি ?
জ্যোৎস্না তো আর কবিতা বোঝে না …
জ্যোৎস্নার নীল সমুদ্রে ইচ্ছে ঢেউ টের পায় জল।
একদিন এই ঢেউয়ে ভেসে ছিল কবিতার সোনালী স্বপ্ন।

অচেনা আকাশ

WA0012

এই যে শুনুন, আপনাকে বলছি
আমাকে বলছেন?
জ্বি, আপনার নামটা কি আমি জানতে পারি?
কেন বলুন তো?
আমার নাম দিয়ে আপনার কি দরকার?
আচ্ছা বিরক্ত হচ্ছেন কেন?
আপনার নাম আমার জানা দরকার
বিশ্বাস করুন :
আগে নাম বলুন পরে কারণ বলছি,
ওহ্! ঠিক আছে
আমি নীলা।
ওহ্! তাই বলুন… কি অদ্ভুত মিল
আমি আকাশ ;
নীলা রেগে গিয়ে বলল, কি রকম মিল ?
আকাশ বলল, ওই যে আকাশের মধ্যে নীল অর্থাৎ নীল আকাশ!
নীলা বলল, স্বপ্ন’র শিয়র থেকে আমি এই মাত্র উঠে এসেছি
আপনাকে দু’টো কথা বলবো ভাবছি
জানেন তো আকাশ চিরকাল অচেনা ;
শুধু এই পৃথিবীতে আপনাকেই বলবো
আকাশ আমার ভীষণ প্রিয়!
ভালবাসা ও …….
তুমি সেই আকাশ; ভালবাসার নীলাকাশ।

জীবন বোধ তো এমনই হয়

5197454

এক ঘড়া বিশুদ্ধ প্রেমে সাত সমুদ্র তের নদী ডুবে গেছে
একটি দীর্ঘ কবিতা

সেদিন কৃষ্ণচূড়া স্বপ্ন ঘুম ভেঙ্গে নিঃশব্দ কবাঞ্চ ভোরের ঠোঁটে-
দেখি’নি ঘাস বুকে
এক ফোঁটা শিশির…
অন্তহীন ভোরের নীড় ছেড়ে ভয়ার্ত শীতেরা রোদ
পোহাতে গেছে,
পৃথিবীর ভূগর্ভে বেড়ে ওঠা দারুচিনি দ্বীপে…
অভিমানী শিশির জমে গেছে ঘাস ঠোঁটে
চোখে পড়েনি-
আমি দূর থেকেই অচেনা শহরটাকে দেখেছি
শিশিরের চেয়ে ও নীরব স্তব্ধ সে তুমি..
সেদিন বিকেলে ধোঁয়া ওঠা মেঘে মেঘে দেখি’নি
দিনের কোন চিহ্ন –
রাত্রির চাঁদের মতো ধোঁয়া ধোঁয়া কুয়াশায় নেমে মেঘ বৃষ্টিরা ঢেকেছিল অচেনা এক স্বপ্নীল শহর:

প্রকৃতি ছিল বড় বেশি বিষণ্ন
সেই শহর আমার ভাল লেগেছিল,
পোড় খাওয়া বাতাসে তোমার গল্পরা সবুজ উচ্ছ্বাসে জমে উঠেছিল;
আমি দূর থেকে মুগ্ধ চোখে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছি তোমার তুমির ভেতরের অচেনা এক সত্ত্বাকে !

রূপকথার গল্পের চেয়েও সুন্দর মেঘ বৃষ্টি ভালবাসা,
পৃথিবী সৃষ্টির কাল থেকেই কবিতা ছিল একথা কেউ না জানুক, বা মানুক
তাতে কিছুই আসে যায় না;
সেদিন থেকেই কবিতা নিজের অস্তিত্বের জন্য লড়াই করেছে ..
অনেক যুদ্ধ শেষে কবিতা নিজস্ব একটা স্থান করে নিয়েছে —
সব মানুষের মনের মাঝে কবিতা ঘুমিয়ে আছে।

স্বপ্ন দেখে, কষ্ট পায়…. হাঁটে ,হাসে কাঁদে খেলে
সুখের নায়ে যে একটুও ভাসে না সেটা নয়,
আদিম যুগে কবিতা অদ্ভুত নির্জন পৃথিবীর স্বপ্ন চোখে শুয়েছিল
জানিনা কবে বা কে প্রথম পৃথিবীর চোখ থেকে কবিতাকে জাগিয়েছিল:

সেই তাঁর কাছেই আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞ
সেই পৃথিবীর প্রথম কবির চোখে কবিতার জন্য স্বপ্ন ছিল, ভাললাগা ছিল .. ছিল অনন্ত ভালবাসা;
সেই প্রথম বার এক সমুদ্র কবিতার চোখে চোখ রেখে
সব দুঃখ, কষ্ট ভুলে
ছোট ছোট ঢেউয়ে সাঁতার কেটেছিল –
সে সব কথা কেউ না জানলেও আমি জানি:

একটা ধান শালিক স্বপ্ন সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কবিতার সৌন্দর্য দেখছিল …
কাগজের টুকরো হঠাৎ উড়ে গিয়েছিল আকাশে —
সেই থেকে পাখির জম্ম,পাখিরা আকাশে উড়ে ;
একটা ক‍্যাকটাস শতাব্দীর শেষ বিকেলে একটা ফুল ফুটিয়েছে
ক‍্যাকটাসের সেকি উচ্ছ্বাস গায়ে মাখামাখি
ফুলের গভীর শূন্যতায় ছিল পৃথিবী!
জীবন কিছুটা কঠিন এবং দুর্বোধ্য হয়ে উঠেছিল।

কতদিন কত কতক্ষণ হাতে ,আঙুলে কবিতার শব্দ নিয়ে খেলা করেছি –
কবিতারা স্বপ্ন ঘুমে দারুচিনি দ্বীপ ছুঁয়ে স্বপ্নের অন্তর্গত হতে চাই,
কখনো কষ্টের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে মায়াজাল ছিঁড়তে চাই !

জানিনা, পৃথিবী সৃষ্টির আগে কবিতারা ঠিক কেমন ছিল ?
স্বপ্নে নাকি সম্পূর্ণ রূপে
স্বপ্নের বাইরে ছিল …
একদিন আমার একটা ধূসর ডায়েরিতে একটি কবিতা লিখেছিলাম, -ভালবাসার কবিতা :
কেন জানিনা, কবিতা সেদিন ভীষণ দুঃখ পেল !
কবিতার চোখে একটা বাক্য ছলছল করছিল, ভালবাসা বলে নেই তো কিছুই
ভালবাসা মানেই ফাঁকি —

আমি জানি না,
কবিতা সৃষ্টির আগে রবীঠাকুরের “শেষের কবিতা’র” লাবণ্য কেমন ছিল ;
কদম ভালবাসায় কি বৃষ্টির গল্প লেগে আছে সারসের সাদা ডানায় ?
গভীর রাত্রির শিওরে জ‍্যোৎস্নারা হেসে উঠেছিল,
এ কোন স্বপ্ন নয় সত্য…
যদিও হাসির শব্দে বৃষ্টির স্রোত বয়ে গেছে অচেনা স্রোতে !

সেদিন মধ‍্যবর্তী রাতে ঘরের জানালায় দেখি’নি
আকাশে চাঁদ —
মেঘের আচ্ছাদনে ঢেকেছিল এককোটি নক্ষত্র
ওরা এজম্মে চাঁদের বন্ধু হয়েছিল,
আকাশে চাঁদ নেই, নক্ষত্ররা শূন্য প্রায়:
সাদামাটা আকাশটা নীল শূন্য হলে কেমন লাগে
আমার তীক্ষ্ম চোখের কার্নিশে কিছুক্ষণ যন্ত্রণা ধরেছিল ..
বুঝেছিলাম চাঁদ বিহীন পৃথিবী অন্ধ হয়ে গেছে!

আকাশের বিন্ত খসে শূন্য সমুদ্র বুকে ক’ফোটা শিশির আছড়ে পড়ে কেঁদে উঠেছিল,
সেই থেকে সমুদ্রের জন্ম….
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে একটা পরিচ্ছন্ন কবিতার শহর ঘুমিয়ে আছে আমার স্বপ্ন ঘুমে —
শহরটা নিঃসঙ্গ রাতের গাঢ় অন্ধকারে তলিয়ে যেতে যেতে আমার হাত আঁকড়ে ধরে ,
একটু তীব্র বাঁচার আকুলতা ঝরে পড়ে শহরের চোখে ..
আমি দেখি সে আকুলতা বৃষ্টি হয়ে ঝরে আমার চোখে !

আমি জানি,এ শহর কবিতার — শুধুই কবিতার —
কবিতার এ শহর আমি ধ্বংস হতে দিতে পারি না
আমি স্বপ্ন ঘুমের অঘোরে হাত শক্ত করে ধরি —
আহা! জীবন বাঁচানোর কি এক তীব্র প্রচেষ্টা শহরের চোখে মুখে ফুটে ওঠে:

হবে না ?
কবিতা যে প্রাণ !
এই শহরের হলুদ চোখে কবিতার কত কত স্বপ্ন —
মাত্র একুশ বসন্তে কবিতারা স্বপ্ন স্পর্শ করেছিল।

এক রহস্যময় নিঃশব্দ রাত্রির অবগাহনে ডুবে…
আকাশ জুড়ে বৃষ্টি বৃষ্টি মেঘবৃষ্টির খেলা ছিল সারা রাত্রি;
ঝুম বৃষ্টিতে স্বপ্নরা বিবস্ত্র হয়েছিল
তাকে নগ্নতা বলা যাবে না
হয়তো একটু পোশাক বদলানো..
আমি তখন শোকের মিছিলে,মেঘে মেঘে গোলাপ প্রয়াণ!

কিছু গোলাপ ঝরে পড়েছিল অসময়ে :
গোলাপ কষ্টরা মেঘে মেঘে ছড়িয়ে গেছে এক আকাশে —
সেই থেকে বৃষ্টির জন্ম!
চাঁদটা নারী আর সূর্য বুঝি পুরুষ হয় আধুনিক কবিতার গদ‍্য রাজ‍্যে
এই নারী পুরুষের লিঙ্গ ভেদের বৈষম্য যাবে না কোন কালে —
আমরা এমনটা কেন ভাবি, বুঝিনা …

একদিন পৃথিবীর শেষ রাস্তায় তোমার হাত ধরে এলোমেলো হেঁটে বেড়াবো কবিতা —–
একশত এককোটি বছর পর আমি তোমার হাত ছাড়বো ,জেনে নাও :
তার আগে নয়!
এক ক্ষেত সবজির সবুজ চোখে আমি সোনালী দিনের স্বপ্ন রোপন করতে দেখেছি —
গোপনে গোপনে ওরা কেউ কেউ রোবটের মত সংসার চাই,
সন্তান সন্ততি চাই —

আহা ! জীবন বোধ তো এমনই হয় —-
এমন হয়ই — — —!

তারিখ 03.05.2021

কারুপল্লীর নীল আকাশ

em7WHiwlL

বুকের গাঢ় ভাঁজে লুকিয়ে আছে নীল
সে নীল ছড়িয়ে গেছে এক আকাশে,
প্রকৃতির সবুজাভায় এক আকাশ রৌদ্র ছুঁয়ে আছে
পুড়ে যাওয়ার ভয়ে আলগা হয়েছে মুঠো ভরা স্বপ্ন:
নক্ষত্র দুপুর চোখ মেলেছে
স্তব্ধতার নির্জনতায় ঘুমিয়ে আছে গভীর রাত
বৃক্ষের ফুল পাতায় ভরে গেছে জ‍্যোৎস্না ;
সমুদ্র’র চোখে বৃষ্টির কান্নার শুভ্র জল
জলের স্রোতে কুয়াশার ঢেউ আছড়ে পড়ছে।
এক আকাশ নীল সমুদ্র জলে ঢেউ ভাঙছে —
এ এক অন‍্যরকম নীল কারুকাজের আকাশ সমুদ্র জলে ;
দিনের ক্লান্তি গুলো স্রোতে ভেসে গেছে
আজ আকাশ আংশিক মেঘলা
সবুজ ঘাস
সবুজ ঘাস নীলাভতা ছুঁয়েছে,
আকাশের কোন ব‍্যস্ততা নেই
না মেঘের কাছে
না বৃষ্টির কাছে
ধোঁয়া ধোঁয়া কুয়াশাচ্ছন্ন রাতের নীল আকাশ।